Posts

ভিন্ন মত

Image
কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুযায়ী এক বিন্দু থেকে আরেক বিন্দুতে যাবার অসংখ্য পথ আছে আর কোন কণার এসব পথের যেকোন একটা দিয়ে যাবার ননট্রিভিয়াল বা অতুচ্ছ সম্ভাবনা আছে। একই ভাবে প্রতিটি মানুষের, প্রতিটি প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার সম্ভাব্য পথ অসংখ্য ও প্রতিটি পথ অনন্য। সব পথ সবার জন্য সমান কার্যকরী নয়, তবে পরিস্থিতির বিচারে প্রতিটি পথ অপটিমাল। অন্তত সেই পথ তাকে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে পারে বলেই সে মনে করে এমনকি সারা বিশ্ব তার সাথে দ্বিমত পোষণ করলেও। যারা মূল স্রোতে হেঁটে অভ্যস্ত তারা অন্য পথের গুরুত্ব ও সৌন্দর্য বুঝতে বা মানতে চায় না কারণ তাদের সব কিছু বিচারের মাপকাঠি নিজেদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা। অন্য ভাবেও যে সফল হওয়া যায়, ভালো থাকা যায় এটা তাদের ধারণার বাইরে। মানুষের সমাজবদ্ধ জীব হওয়ার এই এক যন্ত্রনা। সে যতটা না নিজের তারচেয়ে বেশি সমাজের। তবে তাঁরা নিজের মত করে নিজের পথে চলতে চায় তাদের জন্য রবি বাবুর ডাক তো মিথ্যে নয় যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে  পথচলা আনন্দের হোক। দুবনা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

আলপনা ও ইলিশের গল্প

Image
নববর্ষের আলপনার ক্ষতিকর দিক নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে। নববর্ষের খাবারের পোস্ট দেখে প্যালেস্টাইনের অভুক্ত শিশুদের মুখ ভেসে উঠছে কারো কারো চোখে। অথচ গত একমাস ধরে ছিল ইফতারের খাবারের প্রাচুর্য। কেন আমরা দুদিনের ব্যবধানে অনুষ্ঠিত এক উৎসবের প্রতি প্রচন্ড সহনশীল অথচ অন্যটার প্রতি কটাক্ষ করি? কেন বাংলাদেশে বাঙালির একান্ত উৎসব নববর্ষ আজও সত্যিকার অর্থে সার্বজনীন হতে পারছে না? কারণ এখানে প্রশ্ন করার সুযোগ আছে, এই সংস্কৃতি প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়।  ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর দাঁড়িয়ে মুসলিম জাতি সত্তা বাঙালি জাতীয়তাবাদ তথা বাঙালি সত্তাকে পরাজিত করে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। একাত্তরে বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ধর্মীয় পরিচয়কে পেছনে ফেলে সামনে চলে আসে। আমরা বাঙালি - এটাই হয় আমাদের প্রথম পরিচয়। পঁচাত্তর পরবর্তী শাসকদের ইতিহাসের মোড় ঘোরানো ও বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর আপোষের নীতি ধর্মীয় পরিচয়কে আবার সামনে আসতে সাহায্য করে। মুরগি না ডিমের মত এখানেও আমরা আগে মুসলমান না আগে বাঙালি এই বিতর্ক অসমাপ্ত থেকে যায় যদিও যেকোন চিন্তাশীল মানুষের জন্য এটা বিতর্কের কোন বিষয় নয়।

শুভ নববর্ষ ১৪৩১

Image
না মহাবিশ্ব, না প্রকৃতি - এদের কারো কোন বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ নেই, নেই জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি বা অন্য কোন মাস বা পঞ্জিকা। টিকে থাকার জন্যই সবাইকে গতিশীল থাকতে হয়, ঘুরতে হয় নিজের অক্ষকে কেন্দ্র করে, বড় পরিবারের কেন্দ্রের চারিদিকে। সৌর পরিবারের সদস্যরা সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে, আবার সৌর জগৎ ঘুরে মিল্কি ওয়ের কেন্দ্রের চারিদিকে। এক কথায় এই গতিই জীবন। আর ঘুর্ণনের কারণেই প্রকৃতিতে ঘটনাবলীর পুনরাবৃত্তি। এ থেকেই জন্ম বিভিন্ন পঞ্জিকার। সেটা ধর্ম নির্ভর নয়, ভূগোল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ধর্মের নিয়মে চলে না, বরং এদের চলাচল ধর্মের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্ধারণ করে। তাই পয়লা বৈশাখ বা বাংলা পঞ্জিকাকে ধর্মের সাথে জড়ানোর চেষ্টা আসলে এক ধরনের অজ্ঞতা বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ঠিক যেমনটা অন্য যেকোনো পঞ্জিকা কোন ধর্মের সাথে গুলিয়ে ফেলা। চন্দ্র ও সূর্য পৃথিবীর আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল আলোক বর্তিকা হবার কারণে বহু আগে, এমনকি ধর্মের উৎপত্তি হবার আগেই সৌর ও চান্দ্র দু ধরনের পঞ্জিকার জন্ম। বিভিন্ন সময়ে মূলত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক, কখনো ধর্মীয় কারণে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় পঞ্জিকার গুরুত্ব কমে

নির্বাচন

Image
নির্বাচন নিয়ে জটিলতা মনে হয় বাংলাদেশের ক্রনিক্যাল অসুখে পরিণত হয়েছে। তা সে সংসদ নির্বাচন হোক আর অন্য কোন সংগঠনের কমিটির নির্বাচন হোক। কথায় বলে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। ঢেঁকির কথা জানি না, তবে বাঙালি নির্বাচনে নামলেই জটলা পাকায় এটা মনে হয় পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্রে পরিণত হতে চলছে। তবে এর একটা ভালো দিক হল এটাকে কেন্দ্র করে অনেক হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা ভেসে উঠছে, অনেকের সাথে নতুন করে যোগাযোগ হচ্ছে। সেদিন এক বন্ধু ফোন করল কিরে, কী মনে হচ্ছে? কী আর মনে হবে। ক্ষমতা চুম্বকের মত। বিপরীত মেরুর মানে ক্ষমতার মোহের বিরুদ্ধে যাদের প্রতিষেধক নেই তাদের আকর্ষণ করে। তাই। এক কাজ কর, দেশে চলে আয়। কেন? তোকে আমাদের সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বানিয়ে দিই। এত ছোট পোস্টে তো আমার পোষাবে নারে। কী পোস্ট চাস তুই? অপেক্ষায় আছি কবে ভগবানের পোস্টটা খালি হবে। তুই আর মানুষ হলি নারে। তোদের দেখে মানুষ হবার ইচ্ছেটা অনেক আগেই উবে গেছে। দুবনা, ১০ এপ্রিল ২০২৪

উপলব্ধি

Image
ধারণা করা হয় যে খৃষ্টপূর্ব কয়েক শ' বছর আগে রামায়ণ ও মহাভারত রচিত হয়েছিল। এই দুই মহাকাব্যের কলাকুশলীরা ঐতিহাসিক চরিত্র ছিলেন কিনা এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এদের রচয়িতাদের নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। এটাও সত্য যে ঐতিহাসিক হোক আর কাল্পনিক হোক এসব কাব্যের মহারথীরা রচয়িতাদের কাঁধে ভর করেই আমাদের কাছে এসেছেন। একদিন আমরা থাকব না কিন্তু বাল্মিকী বা ব্যাসদেব ঠিকই থাকবেন আরও হাজার হাজার বছর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্ম নেন ১৮৬১ সালে। ৮০ বছরের দীর্ঘ জীবনে তিনি দেশ বিদেশের মানুষের মনোজগতে সাহিত্য ও সংস্কৃতির যে সৌধ নির্মাণ করেছেন সেটাই তাঁকে অমর করে রাখবে অনন্ত কাল। আজ তাঁর বিরুদ্ধে কিছু মানুষের যে বিষোদগার সেটা রবীন্দ্রনাথকে যতটা না ছোট করার লক্ষ্যে তারচেয়ে বেশি তাঁকে খরকূটার মত ব্যবহার করে নিজেদের ভেসে থাকার চেষ্টা। এটা সবলের বীরগাথা নয়, দুর্বলের বেঁচে থাকার একান্ত আকুতি। রবি ঠাকুর মহান। তাই এত কিছুর পরেও এদের ক্ষমা করে টেনে তুলবেন। শুধু এসব মূর্খরা সেটা কোনদিন বুঝবে না, বুঝলেও স্বীকার করবে না। কারণ দুর্বলরা কখনো সত্যকে স্বীকার করে না। দুবনা, ০৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিক্রিয়া

Image
অনেক দিন পরে মস্কোয় বেশ কিছু বাংলাদেশী বন্ধুদের সাথে দেখা হল। বিভিন্ন বিষয়ে কথা বার্তা। একজন জিজ্ঞেস করল দাদা সলিমুল্লা খান রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে কি বলেছে শুনেছেন? তার কথা শুনতে হবে, তাকে এত গুরুত্ব দিতে হবে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু তিনি তো একজন উঁচু মানের গবেষক। অনেক পড়াশুনা করেন। কথায় কথায় বিভিন্ন নামকরা লেখকদের রেফারেন্স দেন।  আমি ২০১১ সালে প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলামের সেমিনারে কসমোলজির উপর প্রবন্ধ পাঠ করেছিলাম। পরে স্থানীয় এক ছাত্রী বলেছিল আমি যা বললাম সব কোরআনে লেখা আছে। সলিমুল্লা খান যদি ভালো গবেষক হতেন তাহলে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে সব মন্তব্যের রেফারেন্স কোরআনেই খুঁজে বের করতেন। যতদিন না পারে ততদিন ওকে গুরুত্ব দেবার কিছু দেখি না। এ আবার কেমন কথা? দেখ, এরা খুবই ধূর্ত। ইনিয়ে বিনিয়ে নিজ ধর্মের মাহাত্ম্য প্রচার করে। কিন্তু সব সময় ব্যবহার করে ভিনধর্মী মানুষের কথা যুক্তি হিসেবে। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মত। তাই এদের যত এড়িয়ে চলবে তত ভালো। আমাদের প্রতিক্রিয়াই তাদের জনপ্রিয়তার ভিত্তি। এড়িয়ে যাও, দেখবে এদের পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে গেছে। মস্কো, ০১ এপ্রিল ২০২৪

একটি পর্যবেক্ষণ

Image
ক্রকুসে সন্ত্রাসী হামলার উপর বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করছে। পশ্চিমা বিশ্ব কাছা দিয়ে নেমেছে এই ঘটনায় ইউক্রেন জড়িত নেই সেটা প্রচার ও প্রমাণ করতে। কারণ সবাই মিলে বার বার একই মিথ্যা বললে সেটা সত্য বলে বিশ্বাস করানো যায়। তবে আইএস সম্পর্কিত তাদের প্রচার এমনকি পশ্চিমা বিশ্বের অনেক পর্যবেক্ষক গ্রহণযোগ্য মনে করছে না। বিশেষ করে কয়েক মাস আগে জেনারেল মিলির সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে রুশদের জীবন নরকে পরিণত করার আহ্বানে আর নুল্যান্ডে পদত্যাগের আগে পুতিনের জন্য সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে এ কথা বলায়। এরা এখনও কোন সিদ্ধান্তে উপনীত না হলেও ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আঙ্গুল দেখাচ্ছে। আপাতত সেসব লিংকের উপর ভিত্তি করে। তবে এর পেছনে যে তথ্য আছে সেটা বোঝা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে এরা কতদূর পর্যন্ত যাবে? কারণ এতে যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কিছু কিছু মানুষ যারা এক সময় মস্কোয় বৃষ্টি হলে ঢাকায় ছাতা ধরতেন পশ্চিমা ভার্সনকে বাইবেলের বাণী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে এক সময় যারা সোভিয়েত ইউনিয়নের গুন গান করে আর পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে মুখে ফ