Posts

Showing posts from 2022

ট্যাটু

Image
গতকাল একজন প্রশ্ন করল কিসের ট্যাটু আঁকা যায়। যাতে আধুনিকও লাগে আবার খুব ভালগার মনে না হয়। নববর্ষের প্রাক্কালে এ ব্যাপারে কিছু সাজেশন -  করোনা দীর্ঘস্থায়ী হলে মুখে মাস্কের ট্যাটু আঁকা যায়। তাতে ভাইরাস ও মানুষ দু'টোকেই জব্দ করা যায়। টেকোরা মাথায় চুলের ট্যাটু আঁকতে পারে। যারা ধর্ম কর্মে তেমন বিশ্বাসী নয় অথচ ধার্মিক বন্ধু বান্ধব বা প্রতিবেশীদের জন্য অজুহাত খোঁজে তারা মুসলিম হলে কপালে কালো দাগ আর হিন্দু হলে তিলকের ট্যাটু আঁকতে পারে।  যাদের প্রগতিশীল হওয়ার চেয়ে নিজেদের প্রগতিশীল দেখানোটাই বেশি জরুরি তারা কাস্তে হাতুড়ি বা চে র ট্যাটু আঁকতে পারে।  আসলে সবকিছুর মত ট্যাটুও যেন উপকারী ও উপভোগ্য হয় সেটা মাথায় রেখে ট্যাটু আঁকতে পারেন।  দুবাই, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২

শুভ নববর্ষ ২০২৩

Image
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে সে চলে। তাই ইচ্ছায় হোক, অনিচ্ছায় হোক প্রতিটি মানুষকে তার টিকে থাকার জন্য অন্যদের উপর নির্ভর করতে হয়। সবচেয়ে ধনী লোক তার সম্পদের জন্য কোটি কোটি গরীবের উপর নির্ভরশীল। যে লোক নিজেকে সবচেয়ে স্বাধীন মনে করে সেও তেলটা, নুনটার জন্য অন্যের কাছে ঋণী কারণ অন্য কেউ সেটা উৎপাদন বা বিক্রি করে। মানব সমাজের প্রতিটি সদস্য এভাবেই বিভিন্ন ভাবে হাজারো বন্ধনে হাজার জনের সাথে জড়িত। আর তাই মানুষে মানুষে বন্ধুত্ব হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। এই সূত্র ধরে মানুষ মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে। বন্ধুত্ব করে স্কুল কলেজে, কর্মক্ষেত্রে, সামাজিক মাধ্যমে, জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে। কিন্তু অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় অধিকাংশ মানুষ অন্যের সাথে বন্ধুত্ব করলেও নিজের মাথার সাথে, নিজের বিচার বুদ্ধির সাথে বন্ধুত্ব করে না। মাথা যে শুধু মুখ, চোখ, নাক, কানের হোস্টেল নয় সেটা অনেকেই ভাবে না। কান দিয়ে অন্যের কথা শুনে, চোখ দিয়ে চারিদিক দেখে মুখ খোলার আগে যে মাথার পেছনে লুকিয়ে থাকা মগজের সাথে একটু পরামর্শ করতে হয় সেটা অনেকে জানেই না। আর মানুষ যদি সেটা করতো তাহলে অনেক বিপদ সে এড়িয়ে চলতে পারত। নববর্ষে তাই স

সোভিয়েত

Image
আজ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২। আজ থেকে ঠিক এক শ বছর আগে ১৯২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর গঠিত হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। রাশিয়ায় এ নিয়ে কোনো উৎসব হয়নি। সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর বেশ ভালো কিছু ডকুমেন্টারি দেখাল। আসলে লেনিনের বিশাল রুশ ভূমি ইউক্রেনকে দিয়ে দেবার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক পজিটিভ দিকের সাথে সাথে আজকের সমস্যার পেছনে বলশেভিক নেতৃত্ব, বিশেষ করে লেনিনের ভূমিকা সমালোচিত হয়েছে। লেনিন কখনোই রুশ জাতীয়তাবাদী ছিলেন না। তিনি রুশ সাম্রাজ্য ভেঙে দিতে পিছপা হননি। তাঁর কাছে এসব দেশের শ্রমিকদের পারস্পরিক সহযোগিতা ছিল গুরুত্বপূর্ণ যা বুর্জোয়া শ্রেণীর ধ্বংস নিয়ে আসবে। আজ সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই। তবে তার বিভিন্ন ধরণের উত্তরাধিকার রয়ে গেছে। ইউক্রেন রকেটের গতিতে ডিসোভিয়েতিজাইশন চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নিয়তির নির্মম পরিহাস এই যে এখনও পর্যন্ত সোভিয়েত অস্ত্র আর সেই সময়ের কলকারখানা যা তারা এখনও ভাঙতে পারেনি এসবই তাদের রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখা দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করে রাশিয়া কেন বিভিন্ন ব্রীজ ধ্বংস করে ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে না। আন্তনভ ব্রীজে হাইমার্স ১৪২ বার সরাসরি আঘাত করেও ধ্বংস করতে পারেনি।

অসমাপ্ত আলোচনা

Image
পলিক্লিনিকে বসে ছিলাম ডাক্তারের অপেক্ষায়। ইদানীং কালে প্রেসারটা প্রায়ই অধঃপতিত হচ্ছে। তাই একটু কনসালট করা আর কি। আরও একজন ভদ্রলোক সেখানে।  হার্টের সমস্যা?  এই প্রেসারটা একটু ওঠানামা করছে। তেমন কিছু না।  হ্যাঁ, একে তো হেঁয়ালি আবহাওয়া তার উপর পারিপার্শ্বিক অবস্থা। সব মিলিয়ে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন।  এটা হয় আমাদের লোভ থেকে। আমরা সব সময় বেশি বেশি পেতে চাই।  হ্যাঁ। সবার যদি যথেষ্ট পরিমাণ সবকিছু থাকতো তাহলে হয়তো এত সমস্যা থাকত না।  সমস্যা কোন কিছু থাকা না থাকার মধ্যে নয়, সমস্যা মানুষের লাগামহীন চাহিদার জন্য।  কেন এমন ভাবছ?  আমি এ দেশে ১৯৮৩ সাল থেকে। আমাদের দেশে তখন অধিকাংশ মানুষের মৌলিক জিনিসপত্র পর্যন্ত ছিল না। সেখানে এদেশে সবার অন্তত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষ, চিকিৎসা এসব ছিল। হয়তো সবকিছু খুব উন্নত মানের ছিল না, তবে ছিল। কিন্তু মানুষ তাতে খুশি ছিল না। আর খুশি ছিল না মূলত সেইসব মানুষ যাদের অনেক ছিল। চাহিদা এমন এক জিনিস যার শেষ নেই। যার যত আছে, সে তত বেশি চায়। আর তারাই একদিন দেশটাকে ধ্বংস করে ফেলল। সুতরাং শুধুমাত্র ভোগের বস্তু দিয়ে সবাইকে খুশি করা যাবে না, মানুষকে মানসিক ভাবে উন্নত

মানুষ ও মানসিকতা

Image
কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে মেট্রোরেলের চালক হয়েছেন বলে এক নারী আলোচনায় উঠে এসেছেন। কেউ কেউ বলছেন দেশ একজন ইঞ্জিনিয়ারের কাছ থেকে আরও বেশি আশা করে। আমার মনে হল হাজার হাজার বিশেষজ্ঞের কথা যারা বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে আমলা হন, ব্যবসায়ী হন, রাজনীতিবিদ হন, ঘুষখোর হন, ঠগবাজ হন। এবং তারচেয়ে বেশি মানুষ ইউনিভার্সিটির উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে বেকার হন। বর্তমান বিশ্বে যেখানে একদিকে বাড়ছে টিকে থাকার প্রতিযোগিতা আর অন্য দিকে খুলে যাচ্ছে নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার সেখানে বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষা প্রাপ্ত মানুষ প্রায়ই নিজেদের বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করছেন। অনেকেই নিরুপায় হয়ে, অনেকেই নিজেদের শক্তি পরীক্ষা করতে। কারণ এসব পেশার মানুষ নিজেদের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করাতে পছন্দ করে। সবচেয়ে বড় কথা এটা তার নিজস্ব চয়েজ। আসুন অন্যের মতামতকে সম্মান করতে শিখি। আমার ধারণা এটা একটা ঘুষ দুর্নীতি মুক্ত পেশা। আমাদের সমাজের জন্য সত্যিকার অর্থেই চ্যালেঞ্জ। আমাদের দেশের অনেক মানুষ উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে বিদেশে অড জব করে। সেক্ষেত্রে মরিয়ম হতে পারে

মানসিকতা

Image
গতকাল ফেসবুকে সোনিয়া মির্জা নামে এক মেয়ে ভারতে যুদ্ধ বিমানের প্রথম মহিলা চালক সেই খবর দেখলাম। মেয়েটি মুসলিম পরিবারের। কেউ তার ধর্মের উপর গুরুত্ব আরোপ করছে, কেউ তার লিঙ্গের। মধ্য থেকে হারিয়ে গেছে মানুষটা, তার মেধা, তার অধ্যাবসায়, স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তার অক্লান্ত পরিশ্রম। কেন এমন হয়? আমাদের সমাজ ব্যবস্থা আর মানসিকতার জন্য। আমাদের সব কিছুই হয় ভাগ্যের ফেরে, ঈশ্বরের কৃপায়। লিঙ্গ, ধর্ম এসব ঈশ্বর প্রদত্ত। এসবের উপর সাফল্যের দায় ছেড়ে দিলে পক্ষান্তরে ঈশ্বরের উপর ছেড়ে দেয়া হয়। যদি মেধাকে সামনে আনা হয় তবে ঈশ্বর নয় মানুষকেই তার ভাগ্য বিধাতা বলে মেনে নিতে হয়। এটা করতে যে সাহসের দরকার সেটা আমাদের অনেকেরই নেই। মস্কোর পথে, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২

চিন্তার স্বাধীনতা

Image
আমরা প্রায়ই মুক্তচিন্তা, চিন্তার স্বাধীনতা এসব কথা বলি। বলি জাতীয়, ধর্মীয় এসব ব্যাপারে স্বাধীনতা যতই থাকুক না কেন চিন্তার স্বাধীনতা না থাকলে এ সবই অর্থহীন। কিন্তু চিন্তার স্বাধীনতা কি আদৌ সম্ভব? আমার ধারণা সেটা অসম্ভব। কারণ চিন্তার স্বাধীনতা আপেক্ষিক। আমাদের চিন্তা অনেকাংশে আমাদের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা দ্বারা সীমাবদ্ধ বা অনুপ্রাণিত। আর সেই শিক্ষা আমরা কোথায় পাই? পরিবারে, সমাজে, স্কুলে, রাস্তায়। অর্থাৎ যা কিছু আমাদের ঘিরে আছে তা থেকে আমরা জীবনে বিভিন্ন ধরণের অভিজ্ঞতা অর্জন করি। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমরা শুধু নিজেরাই পথ চলি না, অন্যদের পথ দেখাই। এভাবেই সমাজে জন্ম নেয় গড়পড়তা মানুষ। এভাবেই সমাজে জন্ম নেয় ভালো মন্দের সংজ্ঞা। সে অর্থে প্রতিটি সমাজই এক একটা ধোলাই মেশিন যেখানে মানুষের মগজ ধোলাই করা হয়। আর মগজ ধোলাই মানে সমাজে প্রচলিত কিছু নিয়মকানুনে অন্ধভাবে বিশ্বাস করানো, সেসব কিছু বেদ বাক্য হিসেবে মেনে নেয়া। অন্য দিকে স্বাধীনতার মূল মন্ত্র হওয়া উচিত কোন কিছুতেই অন্ধভাবে বিশ্বাস না করা কারণ অন্ধ বিশ্বাস তা সে যেকোন আদর্শেই হোক না কেন মৌলবাদের জন্ম দেয়। তাই চিন্তায় স্বাধীন হওয়া ব

দেশ

Image
প্রায়ই একটা প্রশ্ন অনেকের মুখেই শুনতে পাই "স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পরেও আমরা কেন পাকিস্তানের ভূত ঘাড়ে করে ঘুরে বেড়াচ্ছি?"   আমরা পাকিস্তানের দ্বিজাতিতত্ত্বের বিপরীতে ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শে নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলাম" এটাই দেশের প্রচলিত ভাষায়। কিন্তু একটু ভেবে দেখলে? সাধারণ মানুষ, যাদের উপর যুদ্ধটা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল তারা শুধুই শান্তিতে বসবাস করার জন্য যুদ্ধ করেছিল। রাজনীতির হিসাব নিকাশ তাদের ছিল না। তাদের বলা হয়েছিল তাদের সমস্ত দুর্দশার মূলে আছে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা নব্য উপনিবেশবাদীদের শোষণ। তাই শাসনটা একবার নিজের হাতে তুলে নিতে পারলেই সব দুঃখের অবসান ঘটবে। সাধারণ মানুষ সব সময়ই নেতাদের বিশ্বাস করে, তখনও করেছিল। শেখ মুজিব সহ তার ঘনিষ্ঠ কিছু সহযোগী, বামপন্থী রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে সিপিবি, ন্যাপ, ছাত্র ইউনিয়ন ও স্বাধীনতাকামী বুদ্ধিজীবীরা সত্যিকার অর্থেই দেশটার খোলনলচে বদলানোর জন্য লড়াই করেছিলেন। তারা সত্যি চেয়েছিলেন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে। তবে আওয়ামী লীগের মধ্য সারির নেতা কর্মীদের সিংহ ভাগ শুধু ক্ষমতার প

জয় বিজয়ের খেলা

Image
সেই বয়সে দেশ, স্বাধীনতা, বিজয় এসবের গুরুত্ব ঠিক ততটা বুঝতাম না। বিজয়ের মানে ছিল যুদ্ধ শেষ, ভয়ের অবসান, আবার নিজের গ্রাম তরায় ফিরে যাওয়া, গ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়া পাড়ার খেলার সাথীদের আবার দেখা পাওয়া, যেসব রাজাকাররা গ্রাম লুট করেছে আর মানুষ মেরেছে তাদের বিচার - সেই ছোট বেলায় এসব নিয়েই বিজয় এসেছিল। একটা জীবন কেটে গেল - রাজাকাররা বহাল তবিয়তে, পাড়ার বন্ধুদের অনেকেই আবার বাধ্য হয়েছে দেশত্যাগে। আগে দেশের সম্পদ পাচার হত পাকিস্তানে, এখন কানাডা, ইউরোপ, আমেরিকায়। সাধারণ মানুষ তখন যেমন, এখনও তেমনি রিসিভিং এন্ডে পড়ে আছে। তার পরেও আমরা স্বাধীন। এটাই শান্তনা। সবচেয়ে বেশি স্বাধীন শহীদদের দেয়া প্রতিশ্রুতি থেকে।  সবাইকে শুভেচ্ছা। মস্কো, ১৬ ডিসেম্বর ২০২২

কথোপকথন

Image
আমাদের ফটো ক্লাবে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ সাথে করে বাচ্চাদের নিয়ে আসে। কিছু দিন আগে এরকম এক বাচ্চার সাথে কথা হচ্ছিল। ও খুব মনোযোগ দিয়ে কি একটা ছবি দেখছিল। আমি ওর একটা ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা ঘোরাতেই ও আমাকে অবাক করে প্রশ্ন করল আঙ্কেল, ঈশ্বর আছে? যে বিশ্বাস করে তার জন্য আছে, যে বিশ্বাস করে না তার জন্য নেই।  তুমি ঈশ্বরকে দেখেছ? না।  মামা বলে তাঁকে নাকি দেখা যায় না। মামা আর কি বলে? বলে তিনি সব দেখতে পান আর তিনি সর্ব শক্তিমান।  তুমি মামাকে জিজ্ঞেস কর ঈশ্বর যদি সর্ব শক্তিমান হন, সব পারেন তাহলে আমাদের দেখা দিতে পারেন না কেন? পরের বার উত্তরটা জেনে আমাকে জানিও।  মস্কোর পথে, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২

গণতন্ত্র

Image
ছাত্র জীবনে আমরা মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার কথা বলতাম। সেটা কী? খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা। মানুষের এই মৌলিক অধিকারগুলো অর্জনের জন্য দরকার কাজ বা উপার্জনের নিশ্চয়তা। কারণ সেটা থাকলে মানুষ নিজে তার মৌলিক অধিকারগুলো পূর্ণ বা আংশিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে। সেদিক থেকে দেখলে সবার জন্য কাজ নিশ্চিত করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক আগে পৃথিবীতে এরকম একটা দেশ ছিল। এরপর আমাদের সামনে চলে এলো বাকস্বাধীনতার মহা মন্ত্র। প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ তাতে সন্দেহ নেই। তবে দেখা গেল সেটাও সবার জন্য নয় বা সব কথা বলার জন্য নয়। স্বার্থের পরিপন্থী হলে কর্তা ব্যক্তিরা সেখানে ফতোয়া দিতে পারে, দেয়। দরকারে সামাজিক মাধ্যমে একাউন্ট লক করে। তারপরেও এসব দেশ গণতান্ত্রিক। কীভাবে? এর উত্তরে এক বন্ধু বলল - যতদিন পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ক্ষমতায় ততদিন আমেরিকা বাই ডিফল্ট ডেমোক্র্যাটিক।  হ্যাঁ, আজকাল ভেজাল ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না, এমনকি গণতন্ত্রের মত একটা নিষ্পাপ নির্বিরোধী ধারণা পর্যন্ত না।    দুবনা, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ 

সম্ভাবনা

Image
আপনি মাঝেমধ্যে বলেন ঈশ্বর মানুষের সৃষ্টি। কিন্তু তার কোন প্রমাণ আছে?  না। তবে সবকিছুর প্রমাণ যে হাতে নাতে থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। তাছাড়া আমি একথা বলি একটা সম্ভাবনা হিসেবে, একমাত্র সত্য বলে দাবি করি না।  কিন্তু এটা বলার পেছনে নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে? সে তো বটেই। কেউ যখন কিছু সৃষ্টি করে সে চেষ্টা করে যতদূর সম্ভব নিখুঁত ভাবে সেটা তৈরি করতে। অন্তত দায়িত্বশীল কেউ সেটাই করে। মানুষ ঈশ্বরকে পরম করুণাময়, সর্বশক্তিমান, সর্ব ভূতে বিদ্যমান, সর্বজ্ঞ ইত্যাদি হাজার হাজার ভালো গুনে ভূষিত করে। কিন্তু পৃথিবীতে আজ একজন পারফেক্ট মানুষ পাবে? আমাদের অধিকাংশ যাচ্ছেতাই রকমের খারাপ। ঈশ্বর যদি মানুষ সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে বলতে হবে তিনি খুবই নিম্নমানের স্রষ্টা। তাই আমি মনে করি ঈশ্বর কর্তৃক মানুষ সৃষ্টি করার চেয়ে উল্টোটা ঘটার সম্ভাবনা বেশি। মস্কো, ১২ ডিসেম্বর ২০২২

সাব পিকনিক

Image
ফেসবুক ও অন্যান্য গণ মাধ্যমে কয়েকদিন ধরে SAAB এর আগামী পিকনিকের খবর ঘুরে বেড়াচ্ছে। কুপন সংগ্রহ করার আমন্ত্রণ। এটা নিঃসন্দেহে আনন্দের ব্যাপার যে বন্ধুরা আবার মিলবে মিলন মেলায়। সোভিয়েত ইউনিয়নে আমরা অনেকেই যেমন অল সোভিয়েত সম্মেলনের অপেক্ষায় থাকতাম সাবের পিকনিক অনেকটা তাই। তবে সেই সাথে আর যে ব্যাপারটা চোখে পড়ল তা হল এই পিকনিক আর মাঝেমধ্যে রুশ দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান আর কোন ভিপুস্কনিক বা তাদের আত্মীয় স্বজনদের মৃত্যু সংবাদ ছাড়া অন্য কোন খবর এখানে থাকে না। অথচ আমাদের বন্ধুরা বিভিন্ন জায়গায় খুবই সাফল্যের সাথে নিজের কাজ তো বটেই অনেক সামাজিক কাজকর্ম করছেন। আমাদের এই ঐক্যকে ব্যবহার করে আমার ধারণা আমরা সমাজের জন্য অনেক কিছুই করতে পারতাম। জানি নিজে বাইরে থাকি বলে এসব নিয়ে কথা বলার অধিকার অনেকটাই সীমিত। তবে ভিপুস্কনিকদের সাফল্য দেখে সব সময়ই আনন্দে বুক ভরে ওঠে। তাই এই কথা। দেশে যতদূর মনে হয় ঢাকার বাইরেও চট্টগ্রাম, খুলনা, রূপপুর এসব এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণ ভিপুস্কনিক বাস করেন। রাশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে যেখানে সাব জাতীয় সংগঠন আছে এসব জায়গায় কি হতে পারে ন

মানবতা

Image
ধারণা করা হচ্ছে যে ইউরোপে ঠাণ্ডায় এবার তিন লাখ পর্যন্ত মানুষ মারা যেতে পারে। কারা মরবে? গরীব মানুষ যারা সরকারের প্রতি বিরূপ। অনেকদিন থেকে পশ্চিমা বিশ্ব গোল্ডেন বিলিয়নের কথা বলছে। এই তিন লাখ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া কি সেই প্ল্যানের অংশ? বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে স্যাঙ্কশন উঠিয়ে নেবার জন্য। কিন্তু সব প্রশাসন অটল। বরং নতুন করে স্যাঙ্কশন আরোপ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের বাঁচার দাবি নাকি পুতিনের হাত শক্তিশালী করবে। তাই সাধারণ মানুষকে সাহায্য করার চেয়ে ইউক্রেনের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া বেশি জরুরি। বিবেকানন্দ বলেছিলেন যে ধর্ম মানুষ হত্যা করে সে ধর্ম ত্যাগ করা শ্রেয়। যে মানবতা মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় সেই মেকি মানবতা কি আমাদের দরকার? নাকি এটা বিশাল হত্যা যজ্ঞের রিহার্সাল?একবার নিজেদের মানুষ মারতে পারলে পরে অন্যদের মারা মানসিক দিক থেকে অনেক সহজ হবে। দুবনা, ১১ ডিসেম্বর ২০২২

বেকার

Image
সেদিন কথা প্রসঙ্গে এক বন্ধু জানতে চাইল কে কাকে সৃষ্টি করেছে - ঈশ্বর মানুষকে নাকি উল্টোটা। কে কাকে সৃষ্টি করেছে সেটা বলতে পারব না বা বলতে পার প্রমাণ করতে পারব না তবে এটা ঠিক তাঁর থাকা না থাকার উপরে আমাদের বায়োলজিক্যাল অস্তিত্ব নির্ভর করে না যদিও আমাদের সামাজিক ও ক্ষেত্র বিশেষে রাজনৈতিক অস্তিত্ব অনেকাংশে তাঁর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশীল। তার মানে কি এই নয় যে তিনি আছেন? কোন কিছু থাকা মানে সেটার ফিজিক্যাল উপস্থিতি নয়, অনেক সময় ধারণা অনেক বেশি শক্তিশালী। যেমন?  ধর একজন মানুষ কখনোই বিভিন্ন রকমের সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে নয় কিন্তু অন্যেরা তাঁকে অসীম শক্তিশালী বা সর্ব কর্মে পারদর্শী মনে করতেই পারে। এভাবেই মানুষ নেতা বা ধর্মীয় গুরুদের ভাবমূর্তি গড়ে তুলে। এই ভাবমূর্তিতে আট আনা ভাব আর আট আনা মূর্তি মানে সেই মানুষকে দেবতা বানিয়ে পূজা করা। কিন্তু এর সাথে ঈশ্বরের থাকা না থাকার সম্পর্ক কোথায়? ভগবান বা ঈশ্বর না থাকলেও তাঁকে তৈরি করতে হত। না হলে আস্তিকেরা তাদের সমস্ত সাফল্যের জন্য ধন্যবাদ দিত কাকে আর ব্যর্থতার ব্যথার উপশম খুঁজত কার মধ্যে? অন্য দিকে নাস্তিকরা নির্ভয়ে সৃষ্টিকর্তাকে গালি

আইন নাকি আই ইন

Image
আমেরিকায় ফেডারেল পর্যায়ে ছেলে ছেলে ও মেয়ে মেয়ের বিয়ের আইন পাশ হয়েছে। বিয়ে করা না করা নিয়ে মাথা ঘামাই না, তবে যদি সম্পত্তি বা দত্তক জনিত কারণে এটা হয়, তবে সে সমস্যা সমাধানের জন্য বিয়ে অবশ্যম্ভাবী নয়। বিয়ের সংস্কৃতি মানুষের তৈরি। মানুষ চাইলেই সেই সমস্যা সমাধানের জন্য অন্য আইন প্রনয়নের কথা ভাবতে পারত। এটা আসলে প্রচলিত সামাজিক রীতি নীতিকে চ্যালেঞ্জ করা। মহাভারতে বিভিন্ন মুনি ঋষি রেগে গেলে নির্বংশ হবার অভিশাপ দিতেন। কে জানে আমেরিকা কোন ভারতীয় মুনির কোপে পড়ল কি না?  সোভিয়েত ইউনিয়নে ছিল প্রলেতারিয়েতের ডিক্টেটরশিপ, আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বে এখন মনে হয় এলজিবিটির ডিক্টেটরশিপ। কোনটা ভালো শুধু সময়ই বলতে পারবে। দুবনা, ০৯ ডিসেম্বর ২০২২

মানুষ

Image
মানুষের সমস্যা তার মানবিক (?) গুণাবলী, তার বুদ্ধি। এই বুদ্ধি বলেই সে ঈশ্বর আবিষ্কার করেছিল, তবে দুষ্ট লোকের হাতে সেই ধারণা ব্ল্যাকমেইল হয়ে গেছে। প্রাণী জগৎ এসব থেকে মুক্ত। ফলে প্রাকৃতিক নিয়মেই সেখানে সব হয়। সবাই হয় নিজের নিজের মত করে বাঁচে অথবা মিলেমিশে। কেউ কারো প্রতি দায়বদ্ধ নয় আবার সবাই সবার বিপদে এগিয়ে আসে। দশজনকে বাঁচাতে একজন অনায়াসে আত্মত্যাগ করতে পারে। সেখানে কাউকে চাকরি দেবার প্রশ্ন নেই, ঘুষ দেবার বা নেবার প্রশ্ন নেই। মানুষ সেটা পারে না। তাকে বসের মন রাখতে হয়, ঘুষ দিতে হয়, ঘুষ নিতে হয়। সামাজিক রীতি নীতি একদিকে তাকে যেমন মানুষ করে তোলে, অন্য দিকে তাকে দুর্নীতি করার দিকেও ঠেলে দেয়। মানুষ চাইলেই সবাইকে খুশি ও সুখী করতে পারে না। কারণ সবার চাহিদা ভিন্ন। গড়পড়তা সবাইকে খুশি করতে গেলে অসুখী লোকের সংখ্যা কমে না। এই অসন্তোষ ভাঙ্গে দেশ, ভাঙ্গে সমাজ। এ এক অদ্ভুত চক্র। দুবনা, ০৯ ডিসেম্বর ২০২২

যুদ্ধের বাজার খরচ

Image
শোনা যাচ্ছে যে ব্রিটেন ও কানাডার সহায়তায় কিয়েভ তলিয়াতি - ওদেসা পাইপ লাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাশিয়ার উপর দোষ চাপাতে চাইছে। তবে রাশিয়ার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেয়েও বড় এর অর্থনৈতিক দিক। এর ফলে রাশিয়ার এমোনিয়া বাজারজাত হবে না। পশ্চিমা বিশ্ব বলবে এটা রাশিয়ার আয় কমিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তার যুদ্ধ চালিয়ে যাবার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তারা যেটা বলবে না তা হল এই সারের বেশির ভাগ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যেত তুলনামূলক কম দামে। বাজারে সারের অভাব দেখা দেবে। বাড়বে দাম। আর এ থেকে লাভবান হবে আমেরিকা ও ব্রিটেনের কোম্পানিগুলো। নাথিং পার্সোনাল, ওনলি বিজনেস। এবং এটাও গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের প্রসার ও রক্ষার জন্য অর্থ দরকার। অনেক অর্থের। কার? তার উপর পৃথিবীর মানুষ এই দায়িত্ব দিয়েছে বা যে নিজে নিজেই নিজেকে এই দায়িত্বে নিয়োজিত করেছে (তেমন করে সামরিক জান্তা) সেই আমেরিকার। তাই আয় যে পথেই হোক না কেন সেটা হক আয়। আচ্ছা আমাদের লোকজন কি ঘুষ নেবার সময়, দুর্নীতি করার সময় এভাবেই ভাবে যে মন্দির মসজিদে কিছু দান করলেই এসব আয় হালাল হয়ে যাবে? দুবাই, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২

যুদ্ধ

Image
শুনলাম আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রধান টমাস বাখ নাকি বলেছেন যেকোনো দেশের অলিম্পিক দলে কম করে হলেও ১০% এলজিবিটি কমিউনিটির সদস্য থাকতে হবে। সন্দেহ নেই যে দেশে দেশে এই কমিউনিটির সদস্যরা যাতে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় আন্তর্জাতিক কমিউনিটির সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অর্থাৎ যদি কোন দেশ এ কারণে কাউকে দলে না রাখে সেটা নিয়ে সোচ্চার হতে হবে। কিন্তু যদি কোন দেশে যদি এই কমিউনিটির যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না যায় তাহলে? এখন যেভাবে ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজের চেয়েও মানুষের বর্ণ, সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশন ইত্যাদি যোগ্যতার মাপকাঠি হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাতে করে পশ্চিমা বিশ্ব এ ধরণের আইন চাপিয়ে দিলে অবাক হবার কিছু থাকবে না। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় পশ্চিমা বিশ্ব এখন সারা বিশ্বের বিরুদ্ধেই যুদ্ধে নেমেছে। কিন্তু সেক্ষত্রে শেষ পর্যন্ত অলিম্পিক গেম কি অবিভক্ত থাকবে নাকি এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো নিজেদের জন্য আলাদা অলিম্পিক গেম চালু করবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন আর আমেরিকার খেলোয়াড়রা যাতে নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে সেজন্যে এক সময় গুড উইল গেল চালু হয়েছিল। দুবনা, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ 

খেলা

Image
বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে কথা হচ্ছিল এক বন্ধুর সাথে। কথায় কথায় জার্মানির পারফরম্যান্স প্রসঙ্গ উঠে এল। বললাম  আসলে জার্মানি ফুটবলের চেয়ে এলজিবিটি সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে এত বেশি মেতে ছিল যে ভুলেই গেছিল তারা কেন কাতারে এসেছে। আচ্ছা এই যে পশ্চিমা বিশ্ব এলজিবিটি সহ বিভিন্ন আন্দোলন দেশে দেশে ছড়িয়ে দিতে চাইছে এর শেষ কোথায়? ন্যাচারাল সিলেকশন বলে একটা ব্যাপার আছে প্রকৃতিতে। এখনও বংশ বিস্তারের প্রধান উপায় নারী পুরুষের স্বাভাবিক মিলন। সেটা না থাকলে এরকম পরিবার খুব বেশি দূর যাবে না। দেখবেন অদূর ভবিষ্যতে এসব দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগন হবে এশিয়া, আফ্রিকা থেকে আগত মানুষ যারা হয় ট্র্যাডিশনাল সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে অথবা খুব কনজারভেটিভ। তাই কয়েক প্রজন্ম পরে এরা যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে গণতান্ত্রিক উপায়েই ক্ষমতা দখল করে আর এসব দেশে ধর্মীয় শাসন শুরু করে অবাক হব না। কয়েক বছর আগে জার্মানিতে যখন ইমিগ্র্যান্টরা কিছু মেয়েকে ধর্ষণ করে আর ছেলেরা অসহায় ভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখে তখনই বুঝেছি এদের ভবিষ্যত অন্ধকার। এরা নিজ দেশে পরবাসী। যুগ যুগ ধরে পুরুষ তার মহিলাদের রক্ষা করেছে, মহিলাকে কেন্দ্র করে ঘ

ছায়া

Image
আমার পুরানো অফিসে একটা পোস্টার ছিল যাতে লেখা ছিল আলেকসান্দর ব্লকের কবিতার দুটো লাইন  আমরা কি নৃত্যরত ছায়া?  নাকি আমরাই এই ছায়া ফেলি?   ইউরোপিয়ান কমিশনের সভাপতি উরসুলা ফন ডের লাইএন কয়েকদিন আগে বলেছিলেন  রাশিয়া ও ইউক্রেনের এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত এক লাখ ইউক্রেন সেনা মারা গেছে। বেসামরিক লোক ২০ হাজার আর ক্ষয়ক্ষতি ৬০০ বিলিয়ন ইউরো।  এরপরে ইউক্রেন এর প্রতিবাদ করে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী মৃত সেনাদের সংখ্যা গোপন ব্যাপার। ইউক্রেন ক্ষতিপূরণে বা দেশ গড়ার জন্য ইতিমধ্যে এক ট্রিলিয়ন ডলার দাবি করেছে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে। তাই বুঝতে হবে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। আর সেনাদের হিসাব দিয়েছে ১০ হাজার, যদিও সেপ্টেম্বরে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা সেটা ৬০ - ৭০ হাজার বলেছিল।  এ থেকে বোঝা যায় কেউ না কেউ মিথ্যা বলছে। রুশরা সরকারি ভাবে এ নিয়ে কিছু বলেনি, তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় সেটা ১ লাখের বেশি।  এটা সবাই বুঝে যে জেলেনস্কি এখানে পুতুল মাত্র, পশ্চিমা বিশ্ব তার হাত দিয়ে ইউক্রেন ও ইউরোপ ধ্বংস করছে। কারণ অ্যাংলো-স্যাক্সদের কাছে ভালো স্লাভিক বলে কিছু নেই তা সে রুশ, ইউক্রেনিয়ান, বেলারুশ, পোলিশ, চেখ, স্লোভাক, সার্ব - যেই হোক। এখন

কথোপকথন

Image
সেদিন এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল। আমাদের কথা ব্যক্তিগত ভালোমন্দ থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় বিশ্ব রাজনীতি দিয়ে। কথায় কথায় ও জিজ্ঞেস করল - আমাদের সোভিয়েত ফেরৎ বন্ধু বান্ধবদের অনেকেই পরিবেশ আন্দোলন করে। আপনি করেন না কেন? - দেখ অনেকেই জিজ্ঞেস করে আমাদের বন্ধুদের অনেকই পূজা অর্চনা করে, নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, আমি কেন পূজা করি না, ঈশ্বরের উপাসনা করি না। তাদের বলি আমি পাপ করি না, তাই পূণ্য নিয়ে মাথা ঘামাই না। - কিন্তু পাপ পূণ্যের সাথে পরিবেশ আন্দোলনের কি সম্পর্ক? - আমি পায়ে হেঁটে চলি অথবা সাইকেল চালাই। শুধু অন্য শহরে যেতে হলে ট্রেন বা বাসে চড়ি। প্রায় সব সময়ই এক পদ দিয়ে খাই। যতদূর সম্ভব সহজ সরল জীবনযাপন করি। পরিবেশ দূষণ করি না। উল্টো প্রকৃতি ভালোবাসি। আমার ছবি দেখলেই সেটা কিছুটা হলেও টের পাবে। রোগের চিকিৎসা করার চেয়ে রোগ যাতে না হয় সে চেষ্টা করাই কি ভালো নয়? - কিন্তু অন্য লোকেরা যদি পরিবেশ দূষণ করে তার বিরুদ্ধে তো দাঁড়াতে হবে।  - তা ঠিক। তবে আমরা আন্দোলন করি কিন্তু যে জন্যে আন্দোলন করি সেটা অর্জনের জন্য ব্যক্তি জীবনে খুব কমই সচেষ্ট হই। আমাদের অধিকাংশের জন্য আন্দোলন এক ধরনের পেশা, নিজেক

তহবিল

Image
একসময় ঢাকা এয়ারপোর্টে ভিখারিরা টাকা নিতে চাইত না, ডলার চাইত।  জিলেনস্কি ইউক্রেন পুনর্গঠনের জন্য এক ট্রিলিয়ন ডলার দাবি করেছে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে। সৃষ্টি ধ্বংস নয়, দেশ গড়া যুদ্ধ করা নয়। যুদ্ধের জন্য ট্রিলিয়ন ডলার দিলেও দেশ গড়ার জন্য সভ্য পৃথিবী এ টাকা দেবে না, দেয়নি। এটা তাদের রণ নীতি ও রণ কৌশল কোনটার সাথেই যায় না। আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া - এত গরম গরম উদাহরণ চোখের সামনে থাকার পরেও এই সহজ সত্যটি যদি কেউ না বোঝে তবে বুঝতে হবে সে হয় অতি চালাক অথবা বোকার হদ্দ। বাংলা প্রবাদ বলে অতি চালাকের গলায় দড়ি। তাই দিনের শেষে এরা বোকা বনে।  তাই জেলেনস্কির জন্য উত্তম পথ যুদ্ধের জন্য টাকা চাওয়া। অনেক টাকা। তহবিল বড় বড় তা তছরুপ করার সুযোগ তত বেশি। এসব রাজনীতিবিদদের জন্য দেশ নয় তহবিল আসল। দুবনা, ৩০ নভেম্বর ২০২২

প্রশ্ন

Image
হঠাৎ করেই মনে প্রশ্ন জাগল কী হত যদি বিশ্বকাপ ফুটবল কাতারে না হয়ে ইংল্যান্ডে হত। যদি ভুল না করি কাতারের পাশাপাশি ইংল্যান্ড ছিল এই বিশ্বকাপের আরও এক শক্তিশালী দাবিদার। ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ হলে কি তারা বলতে গেলে জোর করেই এই যুদ্ধ লাগাতে রাশিয়াকে বাধ্য করত? হয়তোবা করত কারণ তাদের ধারণা ছিল কয়েক দফা স্যাঙ্কশন আরোপ করলেই রাশিয়া লেজ গুটিয়ে চলে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা এর ফলে নিজেদের যে এমন লেজেগোবরে অবস্থা হবে সেটা তাদের ব্লুপ্রিন্টের কোথাও উল্লেখ করা ছিল না। বর্তমানে ইউরোপে যে জ্বালানি ঘাটতি, যে ইনফ্ল্যাশন, যে জন অসন্তোষ তাতে কি তাদের পক্ষে সেভাবে এই বিশ্বকাপের আয়োজন করা সম্ভব হত? হত। কারণ ভালো মন্দ এসব মান তারাই নির্ধারণ করে। তবে বিবেক আর বুকের পাটা থাকলে তারা উল্টা কাতারকে ধন্যবাদ দিত এ অসময়ে তাদের বিরাট লজ্জা থেকে রক্ষা করার জন্য। দুবনা, ২৯ নভেম্বর ২০২২

শিক্ষা

Image
অনেক দিন আগের কথা। আন্তন সবে মাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছে। ওরা মস্কো থাকে। আমি শুক্রবার দুবনা থেকে ফিরি ছুটি কাটাতে। সেই সময় এ দেশের অন্যান্য বাচ্চাদের মত আন্তনও বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলাম স্টাডি সার্কেলে যেত। এর একটা ছিল দাবা। বাসায় ফিরে খেলার ফলাফল নিয়ে বলত। একদিন এসে বলল সেদিন খেলায় হেরে গেছে। গুলিয়া ওকে না বকে বুকে টেনে নিয়ে বলল হেরেছ তাতে কি হয়েছে। না হারলে জিতবে কিভাবে? হারটাকেও সহজ ভাবে নিতে হয় আর পরে জেতার জন্য প্রস্তুত হতে হয়। ঐ কথা শুনে আমি প্রচন্ড অবাক হয়েছিলাম। আমাদের দেশে হারা মানে তিরস্কৃত হওয়া। হারাটা যে খেলার অংশ, জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ সেটা কেউ শেখায় না। ইউরোপ, আমেরিকায়ও না মনে হয়। অন্ততঃ তাদের পররাষ্ট্র নীতি দেখলে সেটাই মনে হয়। দুবনার পথে, ২৮ নভেম্বর ২০২২

ফুটবলে গোল মাল

Image
ছাত্র জীবনে সবাই মিলে ফুটবল খেলা দেখতাম। এমনকি খেলার পরে মিছিল পর্যন্ত করেছি মিকলুখো-মাকলায়ায় সোভিয়েত ইউনিয়নের জনগণকে হতবাক করে দিয়ে। তবে হোস্টেল ছাড়ার পর খেলা তেমন আর দেখা হয় না। মাঝে সেভা ফুটবল নিয়ে মেতে ওঠায় ২০১৪ সালে অনেক খেলা দেখেছি। ২০১৮ সালে রাশিয়ায় খেলা হলে সেভাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যেতে চায় কিনা। তবে ইতিমধ্যে ওর আগ্রহে ভাটা পড়েছে। দেখা হয়নি কিছুই। এবার হত কিনা জানিনা, তবে কনফারেন্সে আমার রুমমেট ছিল আলেক্সেই। ও যেহেতু দেখতে, তাই ওকে কোম্পানি দিতাম রাত ১০ টার খেলায় (১, ৪ ও ৭ টার খেলা কনফারেন্সের কাজে ব্যস্ত থাকায় দেখার সুযোগ ছিল না)। তবে ব্যাপারটা ভালো লেগেছে। তাই এখনও মাঝেমধ্যে দেখি কাজের ফাঁকে ফাঁকে।  এবারের বিশ্বকাপে নতুন সংযোজন দীর্ঘ অতিরিক্ত সময়। অনেকটা আইস হকির মত, শুধু পিওর খেলার সময়টা হিসেবে রাখার মত। প্রথম দিকে মনে কিছু প্রশ্ন জাগলেও পরে মনে হল খুব এফেক্টিভ। এর ফলে সময় নষ্ট করার প্রবণতা কমেছে বা বলা যায় সময় নষ্ট করে প্রতিপক্ষের উপর যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হত সেটা নাই হয়ে গেছে। অন্য দিকে আগে গোলের পর খেলোয়াড়রা মন খুলে সেলিব্রেশন করতে পারত না হলুদ ক

অন্ধ

Image
ইউরোপের ঘরে ঘরে আজ মিতব্যয়ী হবার ডাক। কম খাও, কম আলো জ্বালাও, কম জল খরচ কর। এক কথায় আরাম আয়েশ যতদূর সম্ভব বর্জন কর। কৃচ্ছ সাধন কর। হঠাৎ যেন সবাই মহাত্মা গান্ধীর শিষ্য বনে গেছে (যদি যুদ্ধ ও হত্যা বাদ দিতে পারত?)। করোনা কালে যেমন প্রকৃতি একটু অবসর পেয়েছিল, এখন এই বিলাসবহুল জীবনযাপন সরকারিভাবে হারাম ঘোষণা করায় প্রকৃতি আবার ফুলে ফুলে সেজে উঠবে। কত সম্মেলন, কত রাজা মহারাজা আর সভাসদদের ভিড়। কত খাদ্য আর পানীয়ের শ্রাদ্ধ। কোন কিছুই কোন কাজ দিল না। আর এক পুতিন একাই এসব কিছু করে ফেললেন। কোথায় এ জন্য তাঁকে পুরস্কৃত করা তা না সবাই উঠে পড়ে লেগেছে তাঁকে নাই করে দিতে। এত দ্বিচারিতা নিয়ে লোকজন ঘুমায় কীভাবে? নাকি তারা আর ঘুমায় না? স্বার্থের জন্য অন্ধদের হাতে ক্ষমতার লাগাম গেলে এমনটাই হয়। মস্কো, ২৭ নভেম্বর ২০২২

দুষ্ট চক্র

Image
পঁচিশ হাজার টাকা ঋণ শোধ না করায় বারো জন কৃষক জেলে অথচ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি করে অনেকেই দিব্যি আরামে ইউরোপ আমেরিকায় প্রাসাদ তৈরি করে বসবাস করছে।  তুলনামূলক ভাবে অল্প সংখ্যক লোক হত্যা করে অন্যান্য দেশের নেতারা অচ্ছুত বা কারাবন্দী। লাখ লাখ মানুষ হত্যা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা শান্তির দূত।  যতদিন পর্যন্ত বিচার পক্ষপাতদুষ্ট থাকবে ততদিন এসব ঘটনা ঘটতেই থাকবে, ঘটতেই থাকবে। সব একই চক্র পথে ঘোরে। মস্কো, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

প্রশ্ন

Image
রাশিয়ায় স্তালিনের হাতে নির্যাতিত মানুষের মেমোরিয়াল আছে। সরকারের পক্ষ থেকে এদের স্মৃতি প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অনেক সময় অন্য দেশের নেতারা ও সাধারণ মানুষ সেখানে যায়। আচ্ছা আমেরিকায় কি ইন্ডিয়ানদের মেমোরিয়াল আছে? কানাডায়? বা অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ডে স্থানীয় নির্যাতিতদের? সেখানে কি দেশের সরকার শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল দেয়? বিদেশীরা সেখানে যায়? মানে এরা সব সময়ই তো মানবাধিকার, গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ইত্যাদির গান গায় তাই প্রশ্নটা মনে এল। অবশ্য সাম্যের কথা তো বলে না, তাই সবাইকে সমান হতে হবে এমন তো নয়! কাজান, ২৫ নভেম্বর ২০২২

মানুষ ও খেলা

Image
সৌদি আরব বিশ্বকাপ ফুটবলে আর্জন্টিনাকে হারালো ২-১ গোলে। ব্যস্ততার কারণে খেলা দেখা হয়নি। পরে খবরে দেখলাম সৌদি আরবের গোল দুটো কোন দুর্ঘটনা নয়, ভালো খেলার ফল। এ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মন খারাপ। এই সুযোগে ব্রাজিলের সমর্থকরা ওদের নিয়ে ট্রল করতে ছাড়ছে না। একদল সৌদি বিজয়কে ইসলামের জয় হিসেবে দেখছে, আরেক দল ফুটবল খেলা, হাফ প্যান্ট পরে সেজদা করা হারাম কি হারাম নয় এ নিয়ে কথা তুলছে। সৌদি আরবের এই জয় যে তাদের খেলোয়াড়দের কঠোর প্রশিক্ষণের ফল সেটা নিয়ে কেউ বলছে না। পাকিস্তানের ক্রিকেটার যখন অনেক রান করে বা উইকেট পায় সেটা যে তাদের কঠোর প্রশিক্ষণের ও পরিশ্রমের ফল সেটাও অনেকেই ভুলে যাই। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা মানুষের সাফল্যের পেছনে তার প্রতিভা, তার শ্রম এসব না দেখে তার ধর্মীয় পরিচয় আর ঈশ্বরের কৃপা ইত্যাদি দেখব ততদিন পর্যন্ত আমরা না পারব মানুষকে সম্মান করতে না পারব নিজেদের সম্মান করতে। আর মানুষকে, মানুষের ক্ষমতাকে সম্মান করতে না পারলে মানুষ হব কীভাবে? কাজান, ২৪ নভেম্বর ২০২২

রাজনীতি

Image
সিলেটে বিএনপির সমাবেশে মানুষের ঢল। কী মনে হয়? এক বন্ধু জিজ্ঞেস করল। মানুষ বা দল কখনো ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না।  মানে?  এর আগে এক সময় মানুষ এই বিএনপিকেই না করেছিল তার দুঃশাসনের জন্য। আজ আওয়ামী লীগকে না করছে সেই একই কারণে। আর এই দল বদলের খেলা চলছে গত তিরিশ বছর ধরে। অথচ কেউ বিকল্প খুঁজছে না। আবার এই দলগুলোও অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের বদলাতে পারছে না। অন্যেরাও কোন বিকল্প গড়ে তুলতে পারছে না। রাজনৈতিক দলগুলো ভাবছে না যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে সামাজিক নিরাপত্তা না দিতে পারলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর লড়াই না চালাতে পারলে মানুষ কয়েক দিন পরেই তাদের ত্যাগ করবে। কাজ দিয়ে মানুষের সমর্থন ও ভালোবাসা অর্জন করার চেয়ে গায়ের জোরে সেটা করতেই রাজনৈতিক দলগুলো বেশি আগ্রহী। ক্ষমতা হল দেশের উন্নয়নের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার হাতিয়ার কিন্তু ক্ষমতা যদি হয় দেশের উন্নয়নকে ব্ল্যাকমেইল করার হাতিয়ার তাহলেই সমস্যা। তাই মিটিং মিছিলের লোকসংখ্যা নয়, রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা ও পরিবেশ যদি না বদলায় তাহলে ক্ষমতায় দল বদল হবে, মানুষের ভাগ্য বদল হবে না। কাজান, ২৩ নভেম্বর ২০২২

দেয়া নেয়া

Image
গতকাল আমার এক স্ট্যাটাসে একজন মন্তব্য করলেন ইউরোপ আমেরিকায় বাইরে থেকে আসা মুসলমানরা অনেক জায়গায় নিজেদের আইনে চলে তাহলে এরা কেন কাতারে এলজিবিটি সোসাইটির অধিকার নিয়ে দাবি তুলতে পারবে না। এটা নিয়ে ভাবতে গিয়ে আমার এরকম একটা উদাহরণ মনে পড়ল।  হিন্দু ধর্মে যে মে ভাবে চায় সেভাবে ঈশ্বরের উপাসনা করে। তাই আমাদের বাড়িতে খদ্দের এলে অথবা বাড়ির কাজের লোকেরা নামাজ পড়তে চাইলে কোন সমস্যা হত না। অনেক হিন্দু বাড়িতে জায়নামাজ রাখা হত তাদের মুসলিম বন্ধুদের জন্য। এতে কোন ধর্মীয় বাধানিষেধ নেই। কিন্তু কেউ হিন্দু বাড়িতে গরু জবাই করতে চাইলে বা গরুর মাংস খেতে চাইলে সেটার অনুমতি পাবে কি? এটা হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক। পক্ষান্তরে কোন হিন্দু মুসলিম বাড়িতে গিয়ে পূজা করতে চাইলে সেটা তার ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক বিধায় মানে ইসলামে মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ সেটা করতে পারে না। তাই যে হিন্দু তার মুসলিম বন্ধুদের জন্য জায়নামাজ রাখে সে যদি নিজের জন্য মুসলিম বন্ধুদের বাড়িতে পূজার উপকরণ ও বিগ্রহ আশা করে সেটা ঠিক হবে না। প্রতিটি ধর্মের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। একই ভাবে প্রতিটি সমাজের নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য, ঐতিহাস

খেলার রাজনীতি, রাজনীতির খেলা

Image
বিশ্বকাপ ফুটবল কাতারে আয়োজিত হলেও খেলাটা সবার। অন্য অনেক কিছুর মত খেলাটা যেহেতু অনলাইনে আয়োজন করা যায় না তাই ইচ্ছা অনিচ্ছায় কোন একটা দেশকে আয়োজক হতে হবেই।  প্রতিটি দেশের নিজের ঐতিহাসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য আছে, আছে স্বকীয়তা। এসব অজানা কিছু নয়। তাই আয়োজন করার অধিকার দেবার সময়ই এসব ব্যাপার নিয়ে ভাবা উচিত। আমার বিশ্বাস কাতার যদি নিজের ক্ষতি করে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করত তাহলে আজ এসব প্রশ্ন আসতে না। পশ্চিমা দেশগুলো নিজেদের স্বার্থে সব কিছুর মধ্যে রাজনীতি নিয়ে আসে আর সময়ে অসময়ে বয়কট স্যাঙ্কশন এসবের ডাক দিয়ে বিশ্বকে বিপদে ফেলে। দিনের শেষে বরাবরের মত রিসিভিং এন্ডে থাকে সাধারণ মানুষ। সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর। কারণ বিশ্বকাপ বয়কট শুধু কাতারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নয় পশ্চিমা বিশ্বের অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া। মনে রাখতে হবে যে শ্রমিকের মৃত্যু, এলজিবিটি নারী অধিকার এসব গালভরা বুলি শুধু নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য টেনে আনা। যদি এদের মঙ্গলের কথা ভেবে এসব বিষয় সামনে আনা হত তাহলে পশ্চিমা বিশ্ব শোষণমুক্ত সমাজের কথা বলত।  কাজান, ২১ নভেম্বর ২০২২

প্রশ্ন

Image
  ফেসবুকে প্রায়ই দেখি বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের গুগলে চাকরি পাওয়ার,  আমেরিকার কোন নামকরা  ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হবার খবর। এ নিয়ে আমাদের গর্বের কোন সীমা থাকে না। একদিকে আমরা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করছি আবার এই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা বিশেষজ্ঞরা যখন পশ্চিমা বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠানে বড় বেতনের চাকরি পাচ্ছেন আমরা আনন্দে ভেসে যাচ্ছি। এতে অবশ্য ক্ষতির কিছু নেই। এটা নিঃসন্দেহে গর্বের ব্যাপার আর যারা এসব সুযোগ পাচ্ছেন তারা নিঃসন্দেহে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা পাবার যোগ্য। নিজে বাইরে থাকি এবং ভালো ভাবেই জানি যে বাইরে  কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায় দেশে সেটা সম্ভব হয় না। আর সেটা হয় না মূলতঃ শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাবের কারণে। তাই যারা বাইরে যাচ্ছেন তারা যে নিজেদের পেশাগত ভাবে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন তাতে সন্দেহ নেই। তবে যারা বাইরে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে খুব কম লোকই দেশে ফিরবেন ফলে দেশ তার যোগ্য সন্তানদের সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। এরপর আমরা বলব শিক্ষা ব্যবস্থার কেন উন্নতি হয় না, রাজনীতি কেন স্বচ্ছ নয় ব্লা ব্লা ব্লা। কিন্তু এই সোনার সন্তানরা য

আই এস এ

Image
ছোটবেলায় বন্ধুদের বলতে শুনেছি যে ইসলাম সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম। অনেকেই সেটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে। ফলে অন্য ধর্মের মানুষেরা যে তাদের চেয়ে কোন বিষয়ে বড় হতে পারে সেটা এরা মেনে নিতে পারে না। এ কারণে বিভিন্ন ভাবে অন্য ধর্মের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ছোট করার চেষ্টা করে। এর একটা বড় প্রমাণ রবীন্দ্র বিরোধী অপপ্রচার। অন্য ধর্মে যে সেটা হয় না তা নয় তবে অন্য ধর্ম নিজেদের সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করে বলে জানা নেই যদিও ইহুদিরা নিজেদের ঈশ্বর কর্তৃক নির্বাচিত জাতি বলে মনে করে।  বর্তমানে আমেরিকার এলিটদের অনেকেই আমেরিকাকে সব বিষয়ে একচেটিয়া অধিকার প্রাপ্ত দেশ ও আমেরিকানদের বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী জাতি বলে মনে করে আর এ কারণে অন্যান্য দেশ ও জাতিকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখে।  মনে হয় সময় এসেছে নিজেকে ইসলামিক স্টেটস অফ আমেরিকা ঘোষণা করার। দুবনা, ১৭ নভেম্বর ২০২২

স্বপ্ন

Image
আজ আমেরিকায় মধ্যবর্তী নির্বাচন। কংগ্রেস নির্বাচন। স্থানীয়রা ভালো বলতে পারবে তবে মস্কোয় বসে যা দেখি, যা পড়ি এবং যা হতে পারে প্রোপ্যাগান্ডার রং মেশানো তাতে আমি বাংলাদেশী হিসেবে বেশ আশাবাদী।  কিছু দিন আগে আমাদের মন্ত্রীরা বলতেন অচিরেই বাংলাদেশ আমেরিকার মত হবে। এখন মনে হয় আরো দ্রুত গতিতে আমেরিকা বাংলাদেশ হচ্ছে। ঠিক যেমনটা ইউক্রেনকে ইউরোপ করতে না পেরে ইউরোপ নিজেই কী নৈতিক, কী অর্থনৈতিক সব দিক থেকেই ইউক্রেন হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোর দ্রুত গতিতে পরিবর্তিত হবার ক্ষমতাই হয়তো এই উল্টো স্রোতের সৃষ্টি করছে।  হ্যাঁ নির্বাচন শুরুর আগেই বাংলাদেশের মত আমেরিকায় সরকারি ও বিরোধী দল নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। যেহেতু ভারত ও পাকিস্তান নামক কোন বড় ভাই (সত্যি বলতে কি আমেরিকা নিজেই সবার বড় ভাই যদিও মনি সিংহ নন) নেই তাই সব আবেদন গণতন্ত্রের কাছে। মানে অন্য দল জিতলে গণতন্ত্রের কি অবস্থা হবে সেটা (গণতন্ত্র মনে হয় সংখ্যালঘু বা নাস্তিকের চরিত্রে অভিনয় করছে সেখানে)। এককথায় গাধা ও হাতির ঘাড়ে আম্লীগ আর বিম্পির ভূত চেপেছে। দরকার একটা বাম জোটের যারা সেখানে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন

শান্তি

Image
৩১ ফেব্রুয়ারি ২০৩০।  সকাল থেকেই একের পর এক মেসেজ আসছে। টাইম লাইন, ইনবক্স সব উপছে পড়ছে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত অপরিচিত হাজার মানুষের শুভেচ্ছা বার্তায়। সবাই মনের গভীর থেকে একটা কথাই লিখছে রেস্ট ইন পিস।  অথচ ২০২৪ সালের আগে সে কতবার চেয়েছে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও শান্তিতে ঘুমাতে। পারেনি। দেয়নি। না আত্মীয়-স্বজন, না বন্ধু-বান্ধব, না পাওনাদারের দল। কিন্তু ২০২৫ সাল থেকে সেই যে শুরু হল। এরপর থেকে প্রতি বছর ৩১ ফেব্রুয়ারি ভোর ১২.০১ থেকে রাত ১১.৫৯ পর্যন্ত সেই যে শান্তিতে ঘুমানোর আদেশ, অনুরোধ, কামনা, উপদেশ ইত্যাদির ঢল নামে যে বেঁচে থাকাটাই প্রচন্ড লজ্জাকর এক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এরচেয়ে মরে যাওয়াই অনেক বেশি শান্তির। কারণ শেষ বিচারের অপেক্ষায় অনির্দিষ্টকালের জন্য হাজত বাস করা আর যাই হোক শান্তির হতে পারে বলে মনে হয় না।  চাহিদা, এমনকি সে চাওয়া যদি শান্তির জন্যেও হয়, একটা সময় সেটাও অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানুষকে শান্তিতে বাঁচতে দিন। শান্তিতে ঘুমাতে দিন। আর সেজন্য জাতীয় সম্পদের সুষম না হলেও ন্যায্য বন্টনের ব্যবস্থা করুন। মস্কো, ০৭ নভেম্বর ২০২২

প্রশ্ন

Image
আজ ০৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস। আমাদের চার জাতীয় নেতার কথা মনে করে কতগুলো প্রশ্ন মনে জাগল। ভারতের স্বাধীনতার পেছনে অনেকেরই অবদান ছিল। সরকারি ভাবে গান্ধীজী জাতির জনক। নেহেরু, প্যাটেল, বোস এঁদের জাতীয় ভাবে মর্যাদা দেয়া হয় যদিও বোসের প্রাপ্তি এসেছে অনেক পরে। আবার বিভিন্ন দল, গ্রুপ এদের কাউকে কাউকে বিশ্বাসঘাতক বলে গালি দেয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নেতা স্বাধীনতার অন্যতম স্থপতি হিসেবে পরিগণিত হন। পাকিস্তানে জিন্নাহ একক ভাবে চ্যাম্পিয়ন। অন্যদের কথা খুব একটা বলা হয় না। বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার স্থপতি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে সেটা কংক্রিটের উপরে লেখা। বিএনপির শাসনামলে জিয়াউর রহমানের নাম সামনে আনার চেষ্টা করা হয়। তবে যুদ্ধকালীন ৯ মাসে যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব অর্থাৎ চার জাতীয় নেতা স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করলেন, তাঁরা কেন যেন এই সমীকরণের বাইরে থেকে যান। কেন? আমাদের উপমহাদেশে আধুনিক রাজনীতি এসেছে ব্রিটিশদের হাতে ধরে। যারা এই তিন দেশের স্বাধীনতা অর্জনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাঁদের সবার রাজনৈতিক জীবনের শুরু সেই ব্রিটিশ ভারতে। তার পরেও এরকম ভাগ্য বা দু

গণতন্ত্র

Image
হঠাৎ করেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল - নিজের আর বাচ্চাদের। গণতান্ত্রিক উপায়ে কি আমাদের চিরতা পাতা বা পাট পাতার জল খাওয়ানো যেত অথবা মাসে মাসে বাচ্চাদের বিভিন্ন ইঞ্জেকশন দেয়া যেত? আসলে জীবনটাই এমন যে গণতান্ত্রিক অধিকারের পাশাপাশি অনেক সময় দরকার একনায়কতন্ত্র, জোর জবরদস্তি। শুধু অন্যের সাথে নয়, নিজের সাথেও। আমাদের অনেক সময় অনেক কিছুই করতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে জোর করে অনেক কিছুই করি। তাই অন্য লোক যখন আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে বেশি বেশি গলাবাজি করে বুঝতে হবে এখানে সে যতটা না আপনার স্বার্থে বলছে তার চেয়ে বেশি বলছে নিজের স্বার্থে। গণতন্ত্র এমন একটি অধরা জিনিস যা সব সময় অন্যদের দরকার। প্রতিটি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক মানুষের নিজের বাড়িতে আসলে লৌহ কঠিন একনায়কতন্ত্র যেখানে পান থেকে চুন খসার উপায় নেই। আর এ জন্যেই এশিয়া আফ্রিকার দেশে দেশে যেকোন আন্দোলন গণতন্ত্রের জন্য স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আর ইউরোপ আমেরিকার রাস্তায় প্রতিবাদ অগণতান্ত্রিক।  দুবনা, ০৩ নভেম্বর ২০২২

বর্তমান ভূত

Image
  গতকাল বাসা থেকে বেরুব, হঠাৎ মনিকার ওখানে হইচই। ক্রিস্টিনা চিৎকার করছে। একটু ভয়ই পেলাম। সবেমাত্র ভূত তাড়িয়ে বাসায় ফিরেছি তিনজন। মানে ওরা ভূত সেজে ভূত তাড়িয়েছে আর পাপা ওদের সাথে গেছে ছবি তুলতে। আজকাল এসব ঘটনার ছবি ইনস্টাগ্রামে না দিলে ওদের পেটের ভাত হজম হয় না। সেভাকে ডেকেছিল, যায়নি। মনিকার বন্ধু মিশাও না। অন্ধের যষ্টি পাপা। না গিয়ে কি আর পারা যায়। ভয় এ জন্যে যে আবার আগুন টাগুন ধরিয়ে না দেয়। কি হল তোদের? টেবিলে তারাকান মানে তেলাপোকা। কেন? তোদের সাজ দেখে ভয় ও পেয়েছে নাকি? তোমার কি কথা? ক্রিস্টিনার গা বেয়ে উঠছে তাই ও ভয় পেয়ে চিৎকার। বারে। এইমাত্র ভূত তাড়িয়ে এলি এখন তেলেপোকার ভয়ে অস্থির? তুমি তো বলেই শেষ। তাহলে এক কাজ কর। তোদের বিড়াল কুকুরদের তেলাপোকা খেতে শেখা, দেখবি ইদুরের মত বাড়ি থেকে তেলাপোকাও পালিয়ে যাবে। শুনেছি কোরিয়ার লোকদের গন্ধে কুকুর পালায়। তোমার যত বাজে কথা। মনিকার এই কথার কোন উত্তর দিলাম না। আসলে আমার আর সময় ছিল না কথা বলার। তাহলে দুবনার বাস ফেল করব। মেট্রোতে যেতে যেতে ভাবলাম - ছাত্রও ছাত্রীরাই ভাল। মাস্টাররা কিছু বললে করে আর না করলেও তর্ক করে না। অবশ্য নিজের ছেলেমেয়েদের

হা ভগবান

Image
সেদিন একজন কথা প্রসঙ্গে জানতে চাইল ভগবান আছেন কি না। এদের ধারণা আমরা যারা কসমোলজিস্ট মানে সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন করার জন্য গবেষণা করছি তারা এসব প্রশ্নের উত্তর জানি আর না জানলেও খুঁজি। কিন্তু যেহেতু ভগবানের থাকা না থাকার কোন পরীক্ষামূলক প্রমাণ আমার নেই তাই বললাম ভগবান বা ঈশ্বর না থাকলেও তাঁকে তৈরি করতে হত। না হলে নাস্তিকরা নির্ভয়ে সৃষ্টিকর্তাকে গালি দিত কিভাবে? জাপান কোরিয়ায় শুনেছি অফিসের সামনে মালিকের পাপেট থাকে ক্ষুব্ধ কর্মচারীদের কিল ঘুষি খাওয়ার জন্য। ভগবানও মনে হয় এই দায়িত্বে নিয়োজিত। রাজনীতি না করলেও মাঝেমধ্যে রাজনীতিবিদদের মত প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় যা শাঁখের করাতের দু দিকেই কাটে। হা ভগবান! দুবনা, ২৮ অক্টোবর ২০২২

মাস্তান

Image
আমরা প্রায়ই বিচারহীনতার সংস্কৃতির কথা বলি। বলি আমাদের সব দেশের মূল সমস্যা এই বিচারহীনতা। আর সেই সাথে জবাবদিহিতার অনুপস্থিতি। সেটা গেল আমাদের দেশের ক্ষেত্রে। কিন্তু বিশ্ব রাজনীতিতে আমরা কি দেখি? বিশ্বের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জবাবদিহিতা পরিপূর্ণ ভাবে অনুপস্থিত। সে দেশ বিশ্ব রাজনীতিতে নিজেকে সমস্ত রকমের বিচারের ঊর্ধ্বে মনে করে। আর এই মাস্তান মাস্তান ভাবই বর্তমান বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। চিকাতিলোর মত অনেক সিরিয়াল কিলার ও ধর্ষকরা শুনেছি নিজেদের পরিবারের প্রতি খুবই যত্নশীল ছিল। নিজ দেশে গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী যুক্তরাষ্ট্র ঘরের বাইরে সকলের ঘুম কেড়ে নেয়। এটা যতদিন থাকবে বিশ্বে শান্তি নিজের কানের মত অগোচরেই থেকে যাবে।  দুবনা, ২৭ অক্টোবর ২০২২

হাড্ডি কাহিনী

Image
ঢাকা ভার্সিটির এক রসায়ন শিক্ষক নাকি মানুষের হাড়ে আরবি হরফ দেখতে পান। রসায়ন শিক্ষক তাই রসের অভাব যে নেই সেটা বোঝাই যাচ্ছে। মানুষের কল্পনা সীমাহীন। তাই হাড়ে শব্দ আবিষ্কার সেটা তার সমস্যা। সোভিয়েত ইউনিয়নে অনেকেই সব কিছুতেই মার্ক্সবাদী ব্যাখ্যা খুঁজতেন। তবে অধিকাংশ শিক্ষক সাবজেক্টটা ঠিকঠাক পড়াতেন। ঝামেলা হত যখন কোন কোন তত্ত্বের মার্ক্সবাদী ব্যাখ্যা সেটাকে প্রতিক্রিয়াশীল বললে সেই তত্ত্বের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি হত। জেনেটিক্স এই নিষেধাজ্ঞায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিষয়ের একটি। আমাদের দেশের সরকারি হৃদয় হাড়ের আরবি গঠনে কতটুকু উত্তেজিত, কতটুকু আবেগ তাড়িত সেটাই দেখার বিষয়। তবে শিক্ষক যদি নিজের বিষয়ের পরিবর্তে আরবি ক্লাস নিতে শুরু করেন তাহলে তাকে মাদ্রাসায় স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন। দুষ্ট লোকেরা বলে ঢাকা ভার্সিটি এখন আসলে বৃহৎ মাদ্রাসা। সেটা হলে তিনি স্বস্থানে আছেন। আরও দুটি কথা। আলিফ, বে এসব শব্দের সাথে গ্রিক আলফা, বেটা এসবের মিল দেখে আর আরব বিশ্বের প্রাচীন গ্রিক, চীন, ভারত থেকে অনেক কিছু গ্রহণ করার ইতিহাস থেকে অনেকের ধারণা আরবি বর্ণমালা গ্রিক থেকে নেয়া। তাছাড়া

ঋষি তুমি কার?

Image
ঋষি সুনাক বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভুত তো বটেই, বৃটেনের প্রথম অশেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রীও তিনিই। তবে গায়ের রং আর নামে পদবীতে ভারতীয় (যদিও তাঁর পিতা মাতা দু'জনেই আফ্রিকা থেকে আসা) হলেও এবং যতদূর শোনা যায় পকেটে আমেরিকার গ্রীন কার্ড ধারণ করলেও তিনি একজন বৃটিশ এবং বৃটেনের স্বার্থেই কাজ করবেন বলে আশা করা যায়। যারা তাঁর ভারতীয় অরিজিন দেখে উচ্ছ্বসিত হচ্ছেন তাদের বলব ১৯৯২ থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় পুরো সময়টাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নারী, ২০০৮ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দীর্ঘ আট বছর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন একজন আফ্রো আমেরিকান। কিন্তু না বাংলাদেশ, না আমেরিকা - কোথাও বিড়ালের ভাগ্যে শিকা ছিঁড়ে নাই, বাংলাদেশের নারীরা এখনও সামাজিক ভাবে নির্যাতিত, হেয় যেমনটা আমেরিকার আফ্রো আমেরিকানরা। ঋষি এসেছেন বৃটিশদের সমস্যার সমাধান করতে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার চোরাবালি থেকে তাদের টেনে বের করতে। আসুন এসব কাজে আমরা তাঁর সাফল্য কামনা করি। দুবনার পথে, ২৪ অক্টোবর ২০২২

ঘন্টা

Image
ফেসবুকে আবার কেউ কেউ ইনবক্সে মঞ্জুরুল আহসান খানের হজ্বের ছবি পাঠিয়েছেন। অনেক আগে প্রথম বার (জানি না এই ছবি তখনকার না নতুন) তিনি হজ্ব করতে গেলে বড় একটা নোট লিখেছিলাম। উনি হজ্বে গেছেন সেজন্য নয়, উনি কমিউনিস্টদের পক্ষ থেকে মাফ চেয়েছিলেন বলে। এবারকার ছবি দেখে আমার হেমিংওয়ের সেই কথা মনে পড়ে গেল - কার জন্য ঘন্টা বাজছে সেটা জিজ্ঞেস কর না, এটা হয়তো তোমার জন্যই বাজছে। এখন যারা এ নিয়ে লিখেছেন তারাই যে একদিন হজ্ব করবেন না বা নামাবলী গায়ে কীর্তন করবেন না সেটাই বা কি করে বলব? আপনি যদি কাউকে দেখে রাজনীতি করেন এটা আপনাকে কষ্ট দেবে কিন্তু আদর্শের জন্য রাজনীতি করলে এসব ছবি অনায়াসে পাশে সরিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে‌ন। তাছাড়া এটা তো পার্টির সিদ্ধান্ত নয়, তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সেটাকে শ্রদ্ধা না করতে পারলেও মনে হয় এড়িয়ে যেতে পারি। জানি এটা সোজা নয়। একদিন যাকে নেতা মেনেছিলাম তিনি পথভ্রুষ্ট হলে আমাদের দিকেও আঙ্গুল তোলা হয়। কিন্তু আমাদের শক্তি তো আমাদের আদর্শ। তাই এসব থেকে শিক্ষা নেয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এনিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি করার চেয়ে। অন্যের ভুল খোঁজার চেয়ে নিজে যাতে ভুল না করি সে

শেষ যুদ্ধ

Image
খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে নজরুলের এই গান হয়তো সত্য হতে যাচ্ছে আর এই শিশুর ভূমিকায় অভিনয় করছেন জোসেফ বাইডেন। তবে যে মহাসাগর এক সময়ে আমেরিকাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখত আজ সেই মহাসাগর তার ভালনারেবলিটির কারণ। পারমাণবিক শক্তিতে চলা পারমাণবিক অস্ত্রবাহী সাবমেরিন দুদিক থেকেই আমেরিকার নাকের ডগায় বসে সে দেশ ধ্বংস করতে সক্ষম। সেদিক থেকে রাশিয়া ও চীন অন্তত অনেক দিক থেকে রক্ষিত। তাছাড়া রাশিয়ার আকার এক্ষেত্রে পজিটিভ রোল প্লে করে।  খবরে প্রকাশ ইউক্রেন এখন নিজের এলাকায় আর সঠিক ভাবে বললে দনেপ্রোপেত্রভস্ক এলাকায় ডার্টি পারমানবিক বোমা বিস্ফোরণ করে ন্যাটোকে যুদ্ধে নামানোর অজুহাতে তৈরি করছে। খনি শ্রমিক আর নিউক্লিয়ার ফিজিক্স ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এ কাজে নিযুক্ত। ন্যাটো ও আমেরিকার নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই এটা যে তাদের যুদ্ধ সেটা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন। তাই আমরা যে পারমাণবিক যুদ্ধের সাক্ষী হতে যাচ্ছি সে ব্যাপারে আমার সন্দেহ দিন দিন কমছে। রাশিয়া আক্রান্ত হবে, আমেরিকা দুদিক থেকে পারমাণবিক সুনামীর আঘাত অনুভব করবে যাতে সেদেশ ভবিষ্যতে বাসের অযোগ্য হবে আর ইংল্যান্ড হারিয়ে যাবে পৃথিবীর মানচিত্র থেক

ভূত

Image
সেদিন একজনের সাথে ফোনালাপ হচ্ছিল। পশ্চিমা মাধ্যম থেকে প্রায়ই বলে রুশরা নাকি নিজেদের উপর নিজেরাই আক্রমণ করে, পাইপ লাইনে বিস্ফোরণ ঘটায়, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রকেট আক্রমণ করে। এসব কি সত্য?  সত্য কি? মানুষ যা বিশ্বাস করে তাইতো? পশ্চিমারা আগে হয়তো এসব নেহায়েৎ প্রোপ্যাগান্ডা ভাবত, এখন মনে হয় বিশ্বাস করে। অনেকটা এরকম। তুমি একজনকে ভয় দেখানোর জন্য ভূত ভূত বলে চিৎকার করলে আর একসময় নিজে নিজের কাল্পনিক ভূতে বিশ্বাস করে ভয় পেয়ে গেলে। এখন ওদের অবস্থা অনেকটা এরকম। সে অর্থে আপনি যা বলছেন সেটা সত্য। কেন? কিভাবে কল্পনা সত্য হয়? দেখুন আগে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা ছিল - জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, জনগণের জন্য, জনগণের সরকার। এখন আমরা বাস্তবে কি দেখছি? জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, এলিটদের জন্য গণ বিরোধী সরকার। এটাই বর্তমান গণতন্ত্র। এসব দেশে বাস্তবে সেটাই ঘটছে আর এরা নিজেদের গণতন্ত্রী মনে করছে। সেটা ইউরোপের যেকোনো দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে। যেহেতু আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের পৃথিবীর শাসক বলে মনে করে আর রাশিয়া তথা অন্যান্য দেশকে তারা নিজেদের প্রজা বা জনগণ বলে মনে করে তাই গণতন্ত্

ঠিকানা চাই

Image
শুনতে পেলাম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লোকজন কম খেতে শুরু করেছে। কেউ কেউ বিকেলে টিফিন করা থেকে বিরত থাকছে। হয়তোবা কিছু লোক এর থেকে উপকৃত হবে। শিখবে মিতব্যয়ী হতে। হয়তোবা এই সুযোগে কেউ কেউ দু চার কেজি ওজন হারিয়ে স্বাস্থ্যের যত্ন নেবে। তবে বেশির ভাগ মানুষ আসলে এটা করবে নিরূপায় হয়ে। আমি অবশ্য এ পথে যাব না। উল্টো ক্রেডিটে খাবার খাচ্ছি। এদেশে আম অনেকটা সৌখিন খাবার। সাধারণত কালেভদ্রে একটা মাঝারি সাইজের আম কিনে সবাই মিলে খাই। এবার অনেকগুলো আম কিনলাম, বাচ্চাদেরও কিনতে বললাম। বড় বড় ফজলি আমি। এত মিষ্টি ও সুস্বাদু আম এদেশে আগে কখনও পাইনি। কে জানে এসব রাজশাহীর আম কি না? বৌ জিজ্ঞেস করল এত আম খাচ্ছি কেন? বললাম, খেয়ে নাও। যে যুদ্ধ শুরু হল বলা যায় না এর শেষ কোথায়। সবাই যদি এক সাথে স্বর্গে বা নরকে যাত্রা করি কতদিন যে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে কে জানে। তাই বেশি করে খেয়ে নাও যাতে পরলোকের কাস্টমস পার হতে হতেই অনাহারে না মর।  কিন্তু এখন আমার অন্য সমস্যা। যেহেতু দাড়ি আর টিকিওয়ালা মানুষের ভীড়ে স্বর্গ গিজগিজ করবে তাই ওমুখো হবার ইচ্ছে আমার কোন দিনই ছিল না। আবার সব দেখে মনে হয় নরক থাকবে বর্তমান রাজনীতি

রাজনীতি

Image
লিজা চলে গেলেন। না না, ভয় পাবার কারণ নেই, তিনি পৃথিবী থেকে চলে যাননি, চলে গেলেন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রীট থেকে - ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদকে নিকুচি করে। সে জন্য গাট দরকার। উনি প্রমাণ করলেন যে উনি সত্যিকার অর্থেই ঝাঁঝালো মহিলা। এমনি এমনি তো ট্যাঙ্কে চড়ে রাশিয়াকে ভয় দেখাননি! তবে দুষ্ট লোকেরা বিভিন্ন কথা বলে। তাই এই লেখার অবতারণা। অনেক দিন আগের কথা। খুব সম্ভব ১৯৯৬ সাল। বিশ্ব হেভি ওয়েট বক্সিং চ্যালেঞ্জ ম্যাচ। জানেন তো এসব খেলা মানে টাকার ছড়াছড়ি। জিতলেও লাখ টাকা, হারলেও লাখ। কথায় বলে হাতি মরলেও লাখ টাকা, বাঁচলেও লাখ টাকা। অনেকটা হাতির মত। তাছাড়া হেভি ওয়েট বক্সাররা হাতির চেয়ে কম কিসে? যাহোক, সেবার প্রাইজ মানি ছিল বেশ বড় - জিতলে ৪ মিলিয়ন ডলার, হারলে ৩, এরকম কিছু একটা। যে চ্যালেঞ্জ করেছে সে অবশ্য মোহাম্মদ আলী, ফোরম্যান, টাইসন এদের মত জনপ্রিয় ছিল না, তবে ভালো বক্সার ছিল। তাই খেলা যে জমবে এটা সবাই ধরেই নিয়েছিল। কিন্তু যখন প্রথম রাউন্ডের কয়েক সেকেন্ডের মাথায় সে নক আউট হল, দুর্জনেরা বলতে শুরু করল যে সে খেলতে নামেনি, শুধু টাকার জন্য লড়াইয়ের ভান করেছে। হতে পারে। মারামারি না করেই যদি ৩ মিলিয়ন ডলার

নাগর

Image
আমার স্বল্পায়ুর দেশীয় জীবনে বাংলাদেশে তিন তিনটে দলের শাসনে বাস করার সুযোগ পেয়েছি। পাকিস্তান আমলে সামরিক শাসন ছিল। বাংলাদেশ আমলেও তাই, তবে এর মধ্যেও আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জাতীয় পার্টির পরশ কিছুটা হলেও পেয়েছি। তবে কথাটা অন্য জায়গায়। প্রায় প্রতিটি সরকার বদলের সময় কিছু লোককে দেখেছি দল বদল করতে। তখন এদের দলছুট, বিশ্বাসঘাতক এসব বলে মনে হত। এখন মনে হয় না। এখন বুঝি এরা আসলে দল বদলায় না, বিভিন্ন দল বিভিন্ন সময়ে সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়ে বিদায় নেয় আর এসব লোক তাদের আদর্শে অটল থেকে সব সময়ই সরকারি দলে থেকে যায়। এটা কি বাংলাদেশের ইউনিক বৈশিষ্ট্য নাকি বিশ্ব রাজনীতিতে এটা ডাল ভাত ঠিক জানি না। যাহোক, বাংলাদেশের মানুষের এই ধারা অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বজায় রাখে। এদের অনেককেই দেখি যখন যে দেশে থাকে তখন অন্ধভাবে সেই দেশের ন্যারেশনকে বিশ্বাস করে। বিশ্বাস করে বললে ভুল হবে, এরা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া আর কোন কিছুতেই বিশ্বাস করে না। তবে চার্চিলের সাথে গলা মিলিয়ে এরা বলে, আমার কোন আদর্শ নেই আছে স্বার্থ (ব্রিটেনের কোন বন্ধু নেই আছে জাতীয় স্বার্থ)। আসলে এদের চরিত্রই এমন - নিজের স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায়