Posts

Showing posts from September, 2016

আজাইরা প্যাচাল

Image
জীবনে কখন যে কি ঘটে, অনেক সময় তা গল্পের মতোই মনে হয়। একটা গল্প শুনেছিলাম অনেকদিন আগে, জানি না সত্য  কিনা, তবে আমাদের নিজেদের সাথেও কখনো সখনো এসব ঘটে। এক বয়স্ক প্রফেসর থাকেন হোস্টেলে। পাশের রুমেই থাকে এক ছাত্র।  সাধারণত যেটা হয়, ছাত্রটা অনেক রাতে ঘরে ফিরে  আর জুতো খুলে ছুড়ে মারে দেয়ালে।  প্রথম দিকে একটু রাগলেও প্রফেসর সেটা মানিয়ে নিয়েছেন।  এখন উনি অপেক্ষা করেন কখন ছাত্রটা জুতা খুলে দেয়ালে ছুঁড়বে, তার পরেই যান ঘুমুতে।  একদিন রাতে ওই ছেলে ঘরে ফিরলো, কিন্তু জুতা ছোড়ার কোনো কোনো লক্ষণ নেই। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করে ধৈর্য্য  হারিয়ে ফেললেন প্রফেসর, তারপর নিজেই জুতা দিয়ে দেয়াল চাপড়াতে শুরু করলেন, "শুনছিস, কখন তুই জুতা খুলে দেয়ালে ছুড়বি, আমি যে ঘুমুতে পারছি না।" ছেলেটা একটু মাফ চেয়ে বললো,  "আপনাকে আর ডিস্টার্ব করবো না, আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন।" কয়েকদিন পরে তাদের দুজনার দেখা বিশ্ববিদ্যালয়ে।  একটু আলাপ জমাবার জন্য ছেলেটা জিজ্ঞেস করলো, "প্রফেসর, ঘুমানোর সময় আপনি দাঁড়িটা  লেপের নীচে রাখেন, নাকি উপরে রাখেন?" "তাতো খেয়াল করিনি।" রাতে আর প্রফেসরের ঘুম আসছে না, দাঁড়ি  লেপের

ঐশ্বরিক ঝামেলা

Image
অনেকদিন আগে, তখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ি, চতুর্থ বা পঞ্চম বর্ষে, ঠিক মনে নেই। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একটা প্রব্লেম নিয়ে কাজ করছিলাম। অনেক দিনের চেষ্টাতেও যখন সমাধানটা ঠিক বের করতে পারছিলাম না, আমার সুপারভাইজার ইউরি পেত্রোভিচকে বললাম  -আমি ওখানে একটা টার্ম অ্যাড করতে চাই। উনি বললেন, "তুমি ভগবান, যা খুশি তাই যোগ করতে পার।" কথাটা অবশ্য আক্ষরিক অর্থে বলা নয়।  আমরা যখন গাণিতিক মডেল তৈরী করি, আমরা নিজেরাই তার সৃষ্টিকর্তা। ওই অর্থে সৃষ্টিকর্তা হওয়া  সহজ, কঠিন হচ্ছে ওই সৃষ্টিকে অন্যদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা।  দুবনায় আমার সাথে ভিক্টর  নাম এক লোক কাজ করে, ও গণিতের লোক, প্রোগ্রাম খুব ভালো করে। একসাথে কাজ করছি দশ বছরেরও বেশী,  কিন্তু এখনো পর্যন্ত একে অন্যকে বুঝে উঠতে পারি না। ওর জন্য সমীকরণই মূল, আমার জন্য আশেপাশের অনেক কিছুই। মানে ফিজিক্যাল কন্ডিশন। সেভাকে আগে যদি জিজ্ঞেস করতাম, মস্কো থেকে দুবনার দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। মস্কো থেকে একটা গাড়ি চলছে ৮০ কিলোমিটার বেগে, দুবনা থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে - কখন ওরা মিলিত হবে। সেভা বলে দিতো এক ঘন্টা পরে। আমি বলতাম, এটা আংশিক সত্য - যদিও এটার সম্ভাবনা ৯৯.৯

পূজার বিষন্নতা

Image
জানালার বাইরে রোদ হাসছে। শরতের মেঘলা আকাশ ভেদ করে সূর্য আজকাল তেমন আর বেড়াতে আসতে পারে না আমাদের পাড়ায়। তবুও যখন রোদ উঠে আর সূর্যকে স্বাগত জানায় লাল-হলদে পূজার পোষাকে স্বজ্জিত প্রকৃতি, মনটা ভরে যায়। মনে হয়, শারদীয়া উৎসবটা বঙ্গ দেশে না হয়ে এই রঙে রঙে রঞ্জিত মস্কোয় হলেই বেশ হতো।  অনেক আগে, যখন ছোট ছিলাম, সারা বছর অপেক্ষা করতাম পূজার দিনগুলোর জন্য। ছোট ছিলাম বলেই হয়তো করতাম। বিশ্বাস করতাম নির্মল আনন্দকে। বড় হলে মানুষ যখন প্রশ্ন করতে শেখে, প্রশ্নাতীত বিশ্বাসগুলো যখন একটু একটু করে ভাঙতে শুরু করে, তখন আনন্দের নির্মলতায় খাঁদ পরে।   আমার ছোট বেলায় আমাদের বাড়ীতে দূর্গা পূজা হতো। ওটা হতো বাড়ী থেকে একটু দূরে বড় খালের অন্য দিকে রামার ভিটায়।  রাম  বসাক অনেক আগেই ভারত চলে গেছিলো, তার কাছ থেকে বাড়ীটা  বাবা কিনে রেখেছিলো, তবে ওটা কখনোই আমাদের বাড়ী হতে পারে নি, রামার ভিটাই  রয়ে গেছিলো। দক্ষিণের চক দিয়ে বড় খালে যখন জল আসতো, বুঝতাম পূজা আসন্ন। বদু ভাই, নালু ভাই সবাই লেগে যেত খালের উপর কাঠের সাঁকো মেরামতে। তারপর একদিন নিয়ে আসতো আঠা মাটি, শন, কুচি কুচি করে কাটতো পাট। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কুমোর এক দিকে শন্ দিয়

Бардак в Аду

Image
У меня зазвонил телефон. "Кто это за пр-ка?" - суровый женский голос на проводе. "Это ты о ком?" спрашиваю я. "Фото, что ты выложил." "Но причем тут пр-ка? Фото как фото. Снимал на днях." "В глазах я вижу что то ни так. Убери его немедленно." "Что стряслось?" "Убери, а то убью." "Тебе может быть билет прислать?" - смеясь говорю я. "Чего ты такой добреньким стал?" "Просто показалось, это лучший шанс для попадания в рай." "От чего ты так решил? Ад за тебя плачет." "Я знаю. Просто, если ты меня убьешь, не может же твой бог тебя в рай пустить. А если он меня с тобой поселит в ад, мы опять там бардак устроим. Так что, если у него хватит ума, он меня в рай-то и посадит."   Дубна, 26 сентября 2016

মরলে কাজে দেবে

Image
- কিরে কি খবর? ভালো আছিস? অনেক দিন পরে দেখা হওয়া এক বন্ধুর সাদা দাঁতের পাটি  ভেদ করে বেড়িয়ে  এলো  প্রশ্নটা।  - ভালো থাকার কি কোনো বিকল্প আছে? যতই বলিস, খারাপ থেকে তোদের মাগনা আনন্দ দিতে আমি অন্ততঃ  রাজি নই। হেসে বললাম আমি। অনেক দিন পর দেখা।  কথায় কথায় অনেক কথাই হলো, কত মানুষের যে হাড্ডি-মাংস ধুয়ে মুছে বিভিন্ন সেলফে রাখা হলো, তার শেষ নেই। - তুই তো আমাদের ব্যাচে সবচেয়ে না হলেও সবচেয়ে ট্যালেন্টেড যারা তাদের একজন ছিলি। ভেবে পাইনা, তুই সাইন করতে পারলি না কেন? - আমি তো বরাবরই একটু কালো। জানিস না কালো বস্তু সাইন করে না? ওহ, ভুলেই গেছিলাম, তুই  ফিজিক্স পড়িস নি। - আবার ঠাট্টা। তুই তোর এই চাকরীতে  কত দিন আছিস? - ১৯৯৪ থেকে, পি এইচ ডি থিসিস ডিফেন্ড করেই জয়েন  করেছি। কেন? - আমি এই সময়ে অনেক গুলো চাকরী  বদলিয়েছি।  কোনো ভালো অফার পেলেই চলে যাই। - ভালো অফার মানে? - ভালো বেতন। - তাই বল। আমি তো কাজ খুঁজি, মনের মতো কাজ। আর তুই খুঁজিস বেতন। শুধু তুই কেন? নিজের ছেলেমেয়েদের দেখি কাজটা মনের মতো হবে কিনা, মানসিক প্ৰশান্তি দেবে কিনা না দেখে খুঁজে কোথায় বেতন বেশী। - কেন তুই বেতন খুঁজিস না? - দেখ, কাজ - এ

অনু পরমাণু

Image
হঠাৎই ফোনটা বেঁজে  উঠলো। "নমস্কার দাদা।" আমি এতো দিনেও এই দুটো শব্দের সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারিনি। দেশে আমরা সব সময়ই "কি খবর? কেমন আছেন?" এ ভাবেই কথা শুরু করতাম।  সোভিয়েত  দেশে আসার পর "Привет! Здравствуйте!" এসব শব্দই ব্যবহার করি।  নমস্কারটা এখনও ঠিক রপ্ত  করতে পারিনি। আর ছাত্রজীবনে সবাই, মানে জুনিয়ররা বিজনদা বলেই ডাকতো। দাদাটা বেশ গুরুগম্ভীর, আমাকে ঠিক মানায় না।  তবে বেশ কয়েক বছর হলো অনেকেই দাদা বলেই ডাকে, বুড়ো হয়ে যাচ্ছি মনে হয়। এ ছাড়াও আরেকটা কারণ আছে। বাড়িতেও আমরা তপনদা, শ্যামলদা, এভাবেই ডাকতাম।  ব্যতিক্রম ছিল বড়দা।  তবে দিদি পর্যন্ত এসে ওটাও থমকে দাঁড়ায়।  দিদির পরে কল্যাণ, রতন দুজনেই দিদিকে দিদি না ডেকে ঐ  বলে ডাকতো। আমি ছিলাম আরেক কাঠি সরেস। দিদিকে দিদি বলে ডাকতাম, আর দিদি আমাকে ভাই বলে ডাকতো। ওর পরে যারা ছিল, মানে কল্যাণ, রতন আর চন্দনা (আমার কাকাতো বোন) - ওদের আমি বিদেশী স্টাইলে নাম ধরে ডাকতাম।  বাবা-মা আমার এই বিদ্রোহ মেনে নিলেও আত্মীয়-স্বজন আর পাড়াপড়শীরা  এটাকে বেয়াদপী বলেই মনে করতো। তবে আমার ভুবনে আমিই ছিলাম মন্ত্রী আর রাজা, সেপাই আর প্রজা - তা

প্যাচাল

Image
কয়েকদিন হলো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভাবছিলাম। তবে যেহেতু ব্যাপারগুলো আপাতঃ দৃষ্টিতে ছন্নছাড়া, তাই ভাবলাম নামটা প্যাচাল হলে কেমন হয়। আবার প্রায় একই রকম শুনতে একটা রুশ শব্দ আছে "পেচাল" (печаль) যার অর্থ দুঃখ বা কষ্ট।  যেহেতু লেখাটা কিছু কষ্টের কথা, সব মিলিয়ে নামটা তাই প্যাচালই  থাক। দুদিন আগে বন্ধু আহসান একটি পোস্ট দিয়েছে যেখানে দুটো গরু প্রচন্ড ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরেছে তার মালিককে। বাসায় কুকুর বিড়াল থাকায় ঘটনাটা আমার খুবই জানা, কিভাবে লেজ নাড়িয়ে, গায়ে মুখ ঘষে ওরা  ওদের ভালোবাসার কথা জানায়। আর আহসান তাতে লিখেছে "শিশির ভেজা মেঠো পথে গরু খেয়ে যেত ঘাস, আজ আমাদের খুশীর ঈদ আর গরুর সর্বনাশ।" গতকাল ঢাকার রক্তাক্ত ছবি দেখে নিজের অজান্তেই আহসানের দেয়া ছবির নিচে লিখলাম "আজ আমাদের গরুর ঈদ আর খুশীর সর্বনাশ" হ্যা, ঠিক তাই। জানি কোটি কোটি মানুষ এই ঈদের জন্য অপেক্ষা করে, ছেলে-বুড়ো সবাই দিন গুনে - কবে আসবে ঈদ। দোকানে দোকানে ঝলমলে আলো, রঙ-বেরঙের পোশাক পরে রাস্তায় নামে মানুষের ঢল, আবার এই আনন্দের মধ্যেই হাজার হাজার প্রাণীর রক্ত দেখে কেঁপে উঠে মানুষের মন, হঠাৎই ফানুশের মতো চুপসে যায় আন

রামপালে রামের জমি

Image
কয়েক দিন আগে আমাদের একটা সেমিনার ছিল সন্ত্রাসবাদের উপর। ওটা নিয়ে ভাবতে গিয়ে অনেকগুলো কারণের মধ্যে দেখলাম বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতিতে তথ্যের সহজ লভ্যতা আর সেই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের প্রতি বিভিন্ন শ্রেণীর নিস্পৃহতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শক্তিশালী দেশগুলো বা গ্রুপগুলো খবর রটিয়ে ছাপোষা মিডিয়া ব্যবহার করে তাকে ঘটনায় পরিণত করে।  যদিও পরে মিথ্যেটা বেরিয়ে আসে, এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রূপগুলো তাদের কাজ ঠিকই হাসিল করে নেয়। কলিন্স পাওয়েলের সেই টেস্ট-টিউব বা রাশিয়ান অলিম্পিক দলকে নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা এসবই প্রমান করে। দেশেও দেখি একই উপায়ে কারো বিরুদ্ধে ইসলাম বিরোধী লেখা প্রকাশের অপরাধে ঘটে চাপাতির রাজনীতি। এসব মাথায় রেখেই একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম "গাঁধাকে মানুষ বললে গাঁধা মানুষ হয় না, গাঁধাকে গাঁধা বললেই বরং ওর মানুষ হবার একটা সম্ভাবনা থাকে।" ভেবেছিলাম বন্ধুরা বুঝবে, তবে অনেকেই মিস করেছে।  তাই লিখছি। এখানে একটা কথাই  বলতে চেয়েছিলাম, "মিথ্যাকে সত্য বললেই তা সত্য হয়ে যায়না, মিথ্যাকে মিথ্যা বললেই বরং সেটা সত্য হয় আর এর মধ্য দিয়েই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা থাকে।" জানি