Posts

Showing posts from November, 2022

কথোপকথন

Image
সেদিন এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল। আমাদের কথা ব্যক্তিগত ভালোমন্দ থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় বিশ্ব রাজনীতি দিয়ে। কথায় কথায় ও জিজ্ঞেস করল - আমাদের সোভিয়েত ফেরৎ বন্ধু বান্ধবদের অনেকেই পরিবেশ আন্দোলন করে। আপনি করেন না কেন? - দেখ অনেকেই জিজ্ঞেস করে আমাদের বন্ধুদের অনেকই পূজা অর্চনা করে, নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, আমি কেন পূজা করি না, ঈশ্বরের উপাসনা করি না। তাদের বলি আমি পাপ করি না, তাই পূণ্য নিয়ে মাথা ঘামাই না। - কিন্তু পাপ পূণ্যের সাথে পরিবেশ আন্দোলনের কি সম্পর্ক? - আমি পায়ে হেঁটে চলি অথবা সাইকেল চালাই। শুধু অন্য শহরে যেতে হলে ট্রেন বা বাসে চড়ি। প্রায় সব সময়ই এক পদ দিয়ে খাই। যতদূর সম্ভব সহজ সরল জীবনযাপন করি। পরিবেশ দূষণ করি না। উল্টো প্রকৃতি ভালোবাসি। আমার ছবি দেখলেই সেটা কিছুটা হলেও টের পাবে। রোগের চিকিৎসা করার চেয়ে রোগ যাতে না হয় সে চেষ্টা করাই কি ভালো নয়? - কিন্তু অন্য লোকেরা যদি পরিবেশ দূষণ করে তার বিরুদ্ধে তো দাঁড়াতে হবে।  - তা ঠিক। তবে আমরা আন্দোলন করি কিন্তু যে জন্যে আন্দোলন করি সেটা অর্জনের জন্য ব্যক্তি জীবনে খুব কমই সচেষ্ট হই। আমাদের অধিকাংশের জন্য আন্দোলন এক ধরনের পেশা, নিজেক

তহবিল

Image
একসময় ঢাকা এয়ারপোর্টে ভিখারিরা টাকা নিতে চাইত না, ডলার চাইত।  জিলেনস্কি ইউক্রেন পুনর্গঠনের জন্য এক ট্রিলিয়ন ডলার দাবি করেছে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে। সৃষ্টি ধ্বংস নয়, দেশ গড়া যুদ্ধ করা নয়। যুদ্ধের জন্য ট্রিলিয়ন ডলার দিলেও দেশ গড়ার জন্য সভ্য পৃথিবী এ টাকা দেবে না, দেয়নি। এটা তাদের রণ নীতি ও রণ কৌশল কোনটার সাথেই যায় না। আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া - এত গরম গরম উদাহরণ চোখের সামনে থাকার পরেও এই সহজ সত্যটি যদি কেউ না বোঝে তবে বুঝতে হবে সে হয় অতি চালাক অথবা বোকার হদ্দ। বাংলা প্রবাদ বলে অতি চালাকের গলায় দড়ি। তাই দিনের শেষে এরা বোকা বনে।  তাই জেলেনস্কির জন্য উত্তম পথ যুদ্ধের জন্য টাকা চাওয়া। অনেক টাকা। তহবিল বড় বড় তা তছরুপ করার সুযোগ তত বেশি। এসব রাজনীতিবিদদের জন্য দেশ নয় তহবিল আসল। দুবনা, ৩০ নভেম্বর ২০২২

প্রশ্ন

Image
হঠাৎ করেই মনে প্রশ্ন জাগল কী হত যদি বিশ্বকাপ ফুটবল কাতারে না হয়ে ইংল্যান্ডে হত। যদি ভুল না করি কাতারের পাশাপাশি ইংল্যান্ড ছিল এই বিশ্বকাপের আরও এক শক্তিশালী দাবিদার। ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ হলে কি তারা বলতে গেলে জোর করেই এই যুদ্ধ লাগাতে রাশিয়াকে বাধ্য করত? হয়তোবা করত কারণ তাদের ধারণা ছিল কয়েক দফা স্যাঙ্কশন আরোপ করলেই রাশিয়া লেজ গুটিয়ে চলে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা এর ফলে নিজেদের যে এমন লেজেগোবরে অবস্থা হবে সেটা তাদের ব্লুপ্রিন্টের কোথাও উল্লেখ করা ছিল না। বর্তমানে ইউরোপে যে জ্বালানি ঘাটতি, যে ইনফ্ল্যাশন, যে জন অসন্তোষ তাতে কি তাদের পক্ষে সেভাবে এই বিশ্বকাপের আয়োজন করা সম্ভব হত? হত। কারণ ভালো মন্দ এসব মান তারাই নির্ধারণ করে। তবে বিবেক আর বুকের পাটা থাকলে তারা উল্টা কাতারকে ধন্যবাদ দিত এ অসময়ে তাদের বিরাট লজ্জা থেকে রক্ষা করার জন্য। দুবনা, ২৯ নভেম্বর ২০২২

শিক্ষা

Image
অনেক দিন আগের কথা। আন্তন সবে মাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছে। ওরা মস্কো থাকে। আমি শুক্রবার দুবনা থেকে ফিরি ছুটি কাটাতে। সেই সময় এ দেশের অন্যান্য বাচ্চাদের মত আন্তনও বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলাম স্টাডি সার্কেলে যেত। এর একটা ছিল দাবা। বাসায় ফিরে খেলার ফলাফল নিয়ে বলত। একদিন এসে বলল সেদিন খেলায় হেরে গেছে। গুলিয়া ওকে না বকে বুকে টেনে নিয়ে বলল হেরেছ তাতে কি হয়েছে। না হারলে জিতবে কিভাবে? হারটাকেও সহজ ভাবে নিতে হয় আর পরে জেতার জন্য প্রস্তুত হতে হয়। ঐ কথা শুনে আমি প্রচন্ড অবাক হয়েছিলাম। আমাদের দেশে হারা মানে তিরস্কৃত হওয়া। হারাটা যে খেলার অংশ, জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ সেটা কেউ শেখায় না। ইউরোপ, আমেরিকায়ও না মনে হয়। অন্ততঃ তাদের পররাষ্ট্র নীতি দেখলে সেটাই মনে হয়। দুবনার পথে, ২৮ নভেম্বর ২০২২

ফুটবলে গোল মাল

Image
ছাত্র জীবনে সবাই মিলে ফুটবল খেলা দেখতাম। এমনকি খেলার পরে মিছিল পর্যন্ত করেছি মিকলুখো-মাকলায়ায় সোভিয়েত ইউনিয়নের জনগণকে হতবাক করে দিয়ে। তবে হোস্টেল ছাড়ার পর খেলা তেমন আর দেখা হয় না। মাঝে সেভা ফুটবল নিয়ে মেতে ওঠায় ২০১৪ সালে অনেক খেলা দেখেছি। ২০১৮ সালে রাশিয়ায় খেলা হলে সেভাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যেতে চায় কিনা। তবে ইতিমধ্যে ওর আগ্রহে ভাটা পড়েছে। দেখা হয়নি কিছুই। এবার হত কিনা জানিনা, তবে কনফারেন্সে আমার রুমমেট ছিল আলেক্সেই। ও যেহেতু দেখতে, তাই ওকে কোম্পানি দিতাম রাত ১০ টার খেলায় (১, ৪ ও ৭ টার খেলা কনফারেন্সের কাজে ব্যস্ত থাকায় দেখার সুযোগ ছিল না)। তবে ব্যাপারটা ভালো লেগেছে। তাই এখনও মাঝেমধ্যে দেখি কাজের ফাঁকে ফাঁকে।  এবারের বিশ্বকাপে নতুন সংযোজন দীর্ঘ অতিরিক্ত সময়। অনেকটা আইস হকির মত, শুধু পিওর খেলার সময়টা হিসেবে রাখার মত। প্রথম দিকে মনে কিছু প্রশ্ন জাগলেও পরে মনে হল খুব এফেক্টিভ। এর ফলে সময় নষ্ট করার প্রবণতা কমেছে বা বলা যায় সময় নষ্ট করে প্রতিপক্ষের উপর যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হত সেটা নাই হয়ে গেছে। অন্য দিকে আগে গোলের পর খেলোয়াড়রা মন খুলে সেলিব্রেশন করতে পারত না হলুদ ক

অন্ধ

Image
ইউরোপের ঘরে ঘরে আজ মিতব্যয়ী হবার ডাক। কম খাও, কম আলো জ্বালাও, কম জল খরচ কর। এক কথায় আরাম আয়েশ যতদূর সম্ভব বর্জন কর। কৃচ্ছ সাধন কর। হঠাৎ যেন সবাই মহাত্মা গান্ধীর শিষ্য বনে গেছে (যদি যুদ্ধ ও হত্যা বাদ দিতে পারত?)। করোনা কালে যেমন প্রকৃতি একটু অবসর পেয়েছিল, এখন এই বিলাসবহুল জীবনযাপন সরকারিভাবে হারাম ঘোষণা করায় প্রকৃতি আবার ফুলে ফুলে সেজে উঠবে। কত সম্মেলন, কত রাজা মহারাজা আর সভাসদদের ভিড়। কত খাদ্য আর পানীয়ের শ্রাদ্ধ। কোন কিছুই কোন কাজ দিল না। আর এক পুতিন একাই এসব কিছু করে ফেললেন। কোথায় এ জন্য তাঁকে পুরস্কৃত করা তা না সবাই উঠে পড়ে লেগেছে তাঁকে নাই করে দিতে। এত দ্বিচারিতা নিয়ে লোকজন ঘুমায় কীভাবে? নাকি তারা আর ঘুমায় না? স্বার্থের জন্য অন্ধদের হাতে ক্ষমতার লাগাম গেলে এমনটাই হয়। মস্কো, ২৭ নভেম্বর ২০২২

দুষ্ট চক্র

Image
পঁচিশ হাজার টাকা ঋণ শোধ না করায় বারো জন কৃষক জেলে অথচ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি করে অনেকেই দিব্যি আরামে ইউরোপ আমেরিকায় প্রাসাদ তৈরি করে বসবাস করছে।  তুলনামূলক ভাবে অল্প সংখ্যক লোক হত্যা করে অন্যান্য দেশের নেতারা অচ্ছুত বা কারাবন্দী। লাখ লাখ মানুষ হত্যা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা শান্তির দূত।  যতদিন পর্যন্ত বিচার পক্ষপাতদুষ্ট থাকবে ততদিন এসব ঘটনা ঘটতেই থাকবে, ঘটতেই থাকবে। সব একই চক্র পথে ঘোরে। মস্কো, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

প্রশ্ন

Image
রাশিয়ায় স্তালিনের হাতে নির্যাতিত মানুষের মেমোরিয়াল আছে। সরকারের পক্ষ থেকে এদের স্মৃতি প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অনেক সময় অন্য দেশের নেতারা ও সাধারণ মানুষ সেখানে যায়। আচ্ছা আমেরিকায় কি ইন্ডিয়ানদের মেমোরিয়াল আছে? কানাডায়? বা অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ডে স্থানীয় নির্যাতিতদের? সেখানে কি দেশের সরকার শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল দেয়? বিদেশীরা সেখানে যায়? মানে এরা সব সময়ই তো মানবাধিকার, গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ইত্যাদির গান গায় তাই প্রশ্নটা মনে এল। অবশ্য সাম্যের কথা তো বলে না, তাই সবাইকে সমান হতে হবে এমন তো নয়! কাজান, ২৫ নভেম্বর ২০২২

মানুষ ও খেলা

Image
সৌদি আরব বিশ্বকাপ ফুটবলে আর্জন্টিনাকে হারালো ২-১ গোলে। ব্যস্ততার কারণে খেলা দেখা হয়নি। পরে খবরে দেখলাম সৌদি আরবের গোল দুটো কোন দুর্ঘটনা নয়, ভালো খেলার ফল। এ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মন খারাপ। এই সুযোগে ব্রাজিলের সমর্থকরা ওদের নিয়ে ট্রল করতে ছাড়ছে না। একদল সৌদি বিজয়কে ইসলামের জয় হিসেবে দেখছে, আরেক দল ফুটবল খেলা, হাফ প্যান্ট পরে সেজদা করা হারাম কি হারাম নয় এ নিয়ে কথা তুলছে। সৌদি আরবের এই জয় যে তাদের খেলোয়াড়দের কঠোর প্রশিক্ষণের ফল সেটা নিয়ে কেউ বলছে না। পাকিস্তানের ক্রিকেটার যখন অনেক রান করে বা উইকেট পায় সেটা যে তাদের কঠোর প্রশিক্ষণের ও পরিশ্রমের ফল সেটাও অনেকেই ভুলে যাই। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা মানুষের সাফল্যের পেছনে তার প্রতিভা, তার শ্রম এসব না দেখে তার ধর্মীয় পরিচয় আর ঈশ্বরের কৃপা ইত্যাদি দেখব ততদিন পর্যন্ত আমরা না পারব মানুষকে সম্মান করতে না পারব নিজেদের সম্মান করতে। আর মানুষকে, মানুষের ক্ষমতাকে সম্মান করতে না পারলে মানুষ হব কীভাবে? কাজান, ২৪ নভেম্বর ২০২২

রাজনীতি

Image
সিলেটে বিএনপির সমাবেশে মানুষের ঢল। কী মনে হয়? এক বন্ধু জিজ্ঞেস করল। মানুষ বা দল কখনো ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না।  মানে?  এর আগে এক সময় মানুষ এই বিএনপিকেই না করেছিল তার দুঃশাসনের জন্য। আজ আওয়ামী লীগকে না করছে সেই একই কারণে। আর এই দল বদলের খেলা চলছে গত তিরিশ বছর ধরে। অথচ কেউ বিকল্প খুঁজছে না। আবার এই দলগুলোও অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের বদলাতে পারছে না। অন্যেরাও কোন বিকল্প গড়ে তুলতে পারছে না। রাজনৈতিক দলগুলো ভাবছে না যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে সামাজিক নিরাপত্তা না দিতে পারলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর লড়াই না চালাতে পারলে মানুষ কয়েক দিন পরেই তাদের ত্যাগ করবে। কাজ দিয়ে মানুষের সমর্থন ও ভালোবাসা অর্জন করার চেয়ে গায়ের জোরে সেটা করতেই রাজনৈতিক দলগুলো বেশি আগ্রহী। ক্ষমতা হল দেশের উন্নয়নের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার হাতিয়ার কিন্তু ক্ষমতা যদি হয় দেশের উন্নয়নকে ব্ল্যাকমেইল করার হাতিয়ার তাহলেই সমস্যা। তাই মিটিং মিছিলের লোকসংখ্যা নয়, রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা ও পরিবেশ যদি না বদলায় তাহলে ক্ষমতায় দল বদল হবে, মানুষের ভাগ্য বদল হবে না। কাজান, ২৩ নভেম্বর ২০২২

দেয়া নেয়া

Image
গতকাল আমার এক স্ট্যাটাসে একজন মন্তব্য করলেন ইউরোপ আমেরিকায় বাইরে থেকে আসা মুসলমানরা অনেক জায়গায় নিজেদের আইনে চলে তাহলে এরা কেন কাতারে এলজিবিটি সোসাইটির অধিকার নিয়ে দাবি তুলতে পারবে না। এটা নিয়ে ভাবতে গিয়ে আমার এরকম একটা উদাহরণ মনে পড়ল।  হিন্দু ধর্মে যে মে ভাবে চায় সেভাবে ঈশ্বরের উপাসনা করে। তাই আমাদের বাড়িতে খদ্দের এলে অথবা বাড়ির কাজের লোকেরা নামাজ পড়তে চাইলে কোন সমস্যা হত না। অনেক হিন্দু বাড়িতে জায়নামাজ রাখা হত তাদের মুসলিম বন্ধুদের জন্য। এতে কোন ধর্মীয় বাধানিষেধ নেই। কিন্তু কেউ হিন্দু বাড়িতে গরু জবাই করতে চাইলে বা গরুর মাংস খেতে চাইলে সেটার অনুমতি পাবে কি? এটা হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক। পক্ষান্তরে কোন হিন্দু মুসলিম বাড়িতে গিয়ে পূজা করতে চাইলে সেটা তার ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক বিধায় মানে ইসলামে মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ সেটা করতে পারে না। তাই যে হিন্দু তার মুসলিম বন্ধুদের জন্য জায়নামাজ রাখে সে যদি নিজের জন্য মুসলিম বন্ধুদের বাড়িতে পূজার উপকরণ ও বিগ্রহ আশা করে সেটা ঠিক হবে না। প্রতিটি ধর্মের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। একই ভাবে প্রতিটি সমাজের নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য, ঐতিহাস

খেলার রাজনীতি, রাজনীতির খেলা

Image
বিশ্বকাপ ফুটবল কাতারে আয়োজিত হলেও খেলাটা সবার। অন্য অনেক কিছুর মত খেলাটা যেহেতু অনলাইনে আয়োজন করা যায় না তাই ইচ্ছা অনিচ্ছায় কোন একটা দেশকে আয়োজক হতে হবেই।  প্রতিটি দেশের নিজের ঐতিহাসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য আছে, আছে স্বকীয়তা। এসব অজানা কিছু নয়। তাই আয়োজন করার অধিকার দেবার সময়ই এসব ব্যাপার নিয়ে ভাবা উচিত। আমার বিশ্বাস কাতার যদি নিজের ক্ষতি করে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করত তাহলে আজ এসব প্রশ্ন আসতে না। পশ্চিমা দেশগুলো নিজেদের স্বার্থে সব কিছুর মধ্যে রাজনীতি নিয়ে আসে আর সময়ে অসময়ে বয়কট স্যাঙ্কশন এসবের ডাক দিয়ে বিশ্বকে বিপদে ফেলে। দিনের শেষে বরাবরের মত রিসিভিং এন্ডে থাকে সাধারণ মানুষ। সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর। কারণ বিশ্বকাপ বয়কট শুধু কাতারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নয় পশ্চিমা বিশ্বের অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া। মনে রাখতে হবে যে শ্রমিকের মৃত্যু, এলজিবিটি নারী অধিকার এসব গালভরা বুলি শুধু নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য টেনে আনা। যদি এদের মঙ্গলের কথা ভেবে এসব বিষয় সামনে আনা হত তাহলে পশ্চিমা বিশ্ব শোষণমুক্ত সমাজের কথা বলত।  কাজান, ২১ নভেম্বর ২০২২

প্রশ্ন

Image
  ফেসবুকে প্রায়ই দেখি বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের গুগলে চাকরি পাওয়ার,  আমেরিকার কোন নামকরা  ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হবার খবর। এ নিয়ে আমাদের গর্বের কোন সীমা থাকে না। একদিকে আমরা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করছি আবার এই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা বিশেষজ্ঞরা যখন পশ্চিমা বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠানে বড় বেতনের চাকরি পাচ্ছেন আমরা আনন্দে ভেসে যাচ্ছি। এতে অবশ্য ক্ষতির কিছু নেই। এটা নিঃসন্দেহে গর্বের ব্যাপার আর যারা এসব সুযোগ পাচ্ছেন তারা নিঃসন্দেহে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা পাবার যোগ্য। নিজে বাইরে থাকি এবং ভালো ভাবেই জানি যে বাইরে  কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায় দেশে সেটা সম্ভব হয় না। আর সেটা হয় না মূলতঃ শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাবের কারণে। তাই যারা বাইরে যাচ্ছেন তারা যে নিজেদের পেশাগত ভাবে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন তাতে সন্দেহ নেই। তবে যারা বাইরে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে খুব কম লোকই দেশে ফিরবেন ফলে দেশ তার যোগ্য সন্তানদের সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। এরপর আমরা বলব শিক্ষা ব্যবস্থার কেন উন্নতি হয় না, রাজনীতি কেন স্বচ্ছ নয় ব্লা ব্লা ব্লা। কিন্তু এই সোনার সন্তানরা য

আই এস এ

Image
ছোটবেলায় বন্ধুদের বলতে শুনেছি যে ইসলাম সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম। অনেকেই সেটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে। ফলে অন্য ধর্মের মানুষেরা যে তাদের চেয়ে কোন বিষয়ে বড় হতে পারে সেটা এরা মেনে নিতে পারে না। এ কারণে বিভিন্ন ভাবে অন্য ধর্মের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ছোট করার চেষ্টা করে। এর একটা বড় প্রমাণ রবীন্দ্র বিরোধী অপপ্রচার। অন্য ধর্মে যে সেটা হয় না তা নয় তবে অন্য ধর্ম নিজেদের সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করে বলে জানা নেই যদিও ইহুদিরা নিজেদের ঈশ্বর কর্তৃক নির্বাচিত জাতি বলে মনে করে।  বর্তমানে আমেরিকার এলিটদের অনেকেই আমেরিকাকে সব বিষয়ে একচেটিয়া অধিকার প্রাপ্ত দেশ ও আমেরিকানদের বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী জাতি বলে মনে করে আর এ কারণে অন্যান্য দেশ ও জাতিকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখে।  মনে হয় সময় এসেছে নিজেকে ইসলামিক স্টেটস অফ আমেরিকা ঘোষণা করার। দুবনা, ১৭ নভেম্বর ২০২২

স্বপ্ন

Image
আজ আমেরিকায় মধ্যবর্তী নির্বাচন। কংগ্রেস নির্বাচন। স্থানীয়রা ভালো বলতে পারবে তবে মস্কোয় বসে যা দেখি, যা পড়ি এবং যা হতে পারে প্রোপ্যাগান্ডার রং মেশানো তাতে আমি বাংলাদেশী হিসেবে বেশ আশাবাদী।  কিছু দিন আগে আমাদের মন্ত্রীরা বলতেন অচিরেই বাংলাদেশ আমেরিকার মত হবে। এখন মনে হয় আরো দ্রুত গতিতে আমেরিকা বাংলাদেশ হচ্ছে। ঠিক যেমনটা ইউক্রেনকে ইউরোপ করতে না পেরে ইউরোপ নিজেই কী নৈতিক, কী অর্থনৈতিক সব দিক থেকেই ইউক্রেন হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোর দ্রুত গতিতে পরিবর্তিত হবার ক্ষমতাই হয়তো এই উল্টো স্রোতের সৃষ্টি করছে।  হ্যাঁ নির্বাচন শুরুর আগেই বাংলাদেশের মত আমেরিকায় সরকারি ও বিরোধী দল নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। যেহেতু ভারত ও পাকিস্তান নামক কোন বড় ভাই (সত্যি বলতে কি আমেরিকা নিজেই সবার বড় ভাই যদিও মনি সিংহ নন) নেই তাই সব আবেদন গণতন্ত্রের কাছে। মানে অন্য দল জিতলে গণতন্ত্রের কি অবস্থা হবে সেটা (গণতন্ত্র মনে হয় সংখ্যালঘু বা নাস্তিকের চরিত্রে অভিনয় করছে সেখানে)। এককথায় গাধা ও হাতির ঘাড়ে আম্লীগ আর বিম্পির ভূত চেপেছে। দরকার একটা বাম জোটের যারা সেখানে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন

শান্তি

Image
৩১ ফেব্রুয়ারি ২০৩০।  সকাল থেকেই একের পর এক মেসেজ আসছে। টাইম লাইন, ইনবক্স সব উপছে পড়ছে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত অপরিচিত হাজার মানুষের শুভেচ্ছা বার্তায়। সবাই মনের গভীর থেকে একটা কথাই লিখছে রেস্ট ইন পিস।  অথচ ২০২৪ সালের আগে সে কতবার চেয়েছে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও শান্তিতে ঘুমাতে। পারেনি। দেয়নি। না আত্মীয়-স্বজন, না বন্ধু-বান্ধব, না পাওনাদারের দল। কিন্তু ২০২৫ সাল থেকে সেই যে শুরু হল। এরপর থেকে প্রতি বছর ৩১ ফেব্রুয়ারি ভোর ১২.০১ থেকে রাত ১১.৫৯ পর্যন্ত সেই যে শান্তিতে ঘুমানোর আদেশ, অনুরোধ, কামনা, উপদেশ ইত্যাদির ঢল নামে যে বেঁচে থাকাটাই প্রচন্ড লজ্জাকর এক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এরচেয়ে মরে যাওয়াই অনেক বেশি শান্তির। কারণ শেষ বিচারের অপেক্ষায় অনির্দিষ্টকালের জন্য হাজত বাস করা আর যাই হোক শান্তির হতে পারে বলে মনে হয় না।  চাহিদা, এমনকি সে চাওয়া যদি শান্তির জন্যেও হয়, একটা সময় সেটাও অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানুষকে শান্তিতে বাঁচতে দিন। শান্তিতে ঘুমাতে দিন। আর সেজন্য জাতীয় সম্পদের সুষম না হলেও ন্যায্য বন্টনের ব্যবস্থা করুন। মস্কো, ০৭ নভেম্বর ২০২২

প্রশ্ন

Image
আজ ০৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস। আমাদের চার জাতীয় নেতার কথা মনে করে কতগুলো প্রশ্ন মনে জাগল। ভারতের স্বাধীনতার পেছনে অনেকেরই অবদান ছিল। সরকারি ভাবে গান্ধীজী জাতির জনক। নেহেরু, প্যাটেল, বোস এঁদের জাতীয় ভাবে মর্যাদা দেয়া হয় যদিও বোসের প্রাপ্তি এসেছে অনেক পরে। আবার বিভিন্ন দল, গ্রুপ এদের কাউকে কাউকে বিশ্বাসঘাতক বলে গালি দেয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নেতা স্বাধীনতার অন্যতম স্থপতি হিসেবে পরিগণিত হন। পাকিস্তানে জিন্নাহ একক ভাবে চ্যাম্পিয়ন। অন্যদের কথা খুব একটা বলা হয় না। বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার স্থপতি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে সেটা কংক্রিটের উপরে লেখা। বিএনপির শাসনামলে জিয়াউর রহমানের নাম সামনে আনার চেষ্টা করা হয়। তবে যুদ্ধকালীন ৯ মাসে যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব অর্থাৎ চার জাতীয় নেতা স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করলেন, তাঁরা কেন যেন এই সমীকরণের বাইরে থেকে যান। কেন? আমাদের উপমহাদেশে আধুনিক রাজনীতি এসেছে ব্রিটিশদের হাতে ধরে। যারা এই তিন দেশের স্বাধীনতা অর্জনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাঁদের সবার রাজনৈতিক জীবনের শুরু সেই ব্রিটিশ ভারতে। তার পরেও এরকম ভাগ্য বা দু

গণতন্ত্র

Image
হঠাৎ করেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল - নিজের আর বাচ্চাদের। গণতান্ত্রিক উপায়ে কি আমাদের চিরতা পাতা বা পাট পাতার জল খাওয়ানো যেত অথবা মাসে মাসে বাচ্চাদের বিভিন্ন ইঞ্জেকশন দেয়া যেত? আসলে জীবনটাই এমন যে গণতান্ত্রিক অধিকারের পাশাপাশি অনেক সময় দরকার একনায়কতন্ত্র, জোর জবরদস্তি। শুধু অন্যের সাথে নয়, নিজের সাথেও। আমাদের অনেক সময় অনেক কিছুই করতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে জোর করে অনেক কিছুই করি। তাই অন্য লোক যখন আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে বেশি বেশি গলাবাজি করে বুঝতে হবে এখানে সে যতটা না আপনার স্বার্থে বলছে তার চেয়ে বেশি বলছে নিজের স্বার্থে। গণতন্ত্র এমন একটি অধরা জিনিস যা সব সময় অন্যদের দরকার। প্রতিটি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক মানুষের নিজের বাড়িতে আসলে লৌহ কঠিন একনায়কতন্ত্র যেখানে পান থেকে চুন খসার উপায় নেই। আর এ জন্যেই এশিয়া আফ্রিকার দেশে দেশে যেকোন আন্দোলন গণতন্ত্রের জন্য স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আর ইউরোপ আমেরিকার রাস্তায় প্রতিবাদ অগণতান্ত্রিক।  দুবনা, ০৩ নভেম্বর ২০২২

বর্তমান ভূত

Image
  গতকাল বাসা থেকে বেরুব, হঠাৎ মনিকার ওখানে হইচই। ক্রিস্টিনা চিৎকার করছে। একটু ভয়ই পেলাম। সবেমাত্র ভূত তাড়িয়ে বাসায় ফিরেছি তিনজন। মানে ওরা ভূত সেজে ভূত তাড়িয়েছে আর পাপা ওদের সাথে গেছে ছবি তুলতে। আজকাল এসব ঘটনার ছবি ইনস্টাগ্রামে না দিলে ওদের পেটের ভাত হজম হয় না। সেভাকে ডেকেছিল, যায়নি। মনিকার বন্ধু মিশাও না। অন্ধের যষ্টি পাপা। না গিয়ে কি আর পারা যায়। ভয় এ জন্যে যে আবার আগুন টাগুন ধরিয়ে না দেয়। কি হল তোদের? টেবিলে তারাকান মানে তেলাপোকা। কেন? তোদের সাজ দেখে ভয় ও পেয়েছে নাকি? তোমার কি কথা? ক্রিস্টিনার গা বেয়ে উঠছে তাই ও ভয় পেয়ে চিৎকার। বারে। এইমাত্র ভূত তাড়িয়ে এলি এখন তেলেপোকার ভয়ে অস্থির? তুমি তো বলেই শেষ। তাহলে এক কাজ কর। তোদের বিড়াল কুকুরদের তেলাপোকা খেতে শেখা, দেখবি ইদুরের মত বাড়ি থেকে তেলাপোকাও পালিয়ে যাবে। শুনেছি কোরিয়ার লোকদের গন্ধে কুকুর পালায়। তোমার যত বাজে কথা। মনিকার এই কথার কোন উত্তর দিলাম না। আসলে আমার আর সময় ছিল না কথা বলার। তাহলে দুবনার বাস ফেল করব। মেট্রোতে যেতে যেতে ভাবলাম - ছাত্রও ছাত্রীরাই ভাল। মাস্টাররা কিছু বললে করে আর না করলেও তর্ক করে না। অবশ্য নিজের ছেলেমেয়েদের