Posts

Showing posts from June, 2023

বৈচিত্র্য

Image
মানুষের যেমন বাহ্যিক বৈচিত্র্য যেমন নারী-পুরুষ, সাদা - কালো - হলদে এসব আছে ভেতরেও তেমনি বিভিন্ন বৈচিত্র্য আছে যেমন আস্তিক নাস্তিক, সাম্যবাদে বা পুঁজিবাদে বিশ্বাসী ইত্যাদি।‌ কিছু মানুষ যুক্তিবাদী, কিছু ভক্তিবাদী। এ ধরণের বৈচিত্র্য মানুষ তো বটেই মনে হয় যেকোন জীবের ইনহেরেন্ট বৈশিষ্ট্য। আর এর উৎপত্তি মগজে। তাই প্রয়োজন এই বৈচিত্র্য যে জন্মগত সেটা অনুধাবন করা আর এই পৃথিবী যে সবার সেটা মেনে নিয়ে কিভাবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করা যায় সেই ফর্মূলা বের করা। সংখ্যা, অর্থ বা শক্তির জোরে অন্যদের উপর নিজের মতামত চাপিয়ে দেয়া প্রকৃতি বিরুদ্ধ। তার মানে এই নয় যে সবার যা খুশি তাই করার অধিকার আছে কারণ নিজের অধিকারের পাশাপাশি অন্যের অধিকার রক্ষার দায়িত্বও প্রতিটি মানুষের। অধিকার ও দায়িত্ব এই দুয়ের সঠিক প্রয়োগই হতে পারে পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ব শান্তির গ্যারান্টি। দুবনা, ২৭ জুন ২০২৩

বিশ্বাস

Image
প্রায়ই শোনা যায় উপমহাদেশে ধর্মান্ধদের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে সাম্প্রদায়িকতা, ভিন্ন মতের প্রতি অসহিষ্ণুতা। অথচ যেভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা তাতে উল্টোটা হবার কথা ছিল। একসময় ইউরোপের ধর্মান্ধ মানুষের সংখ্যা অনেক ছিল। এখন পরিমানে অনেক কম। এরা কিন্তু নাস্তিক নয়, এরাও রবিবার গির্জায় যায়। তবে জীবনের সব ভালোমন্দের দায় দায়িত্ব ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দেয় না। আমাদের দেশগুলোর লোকজন যেহেতু ঈশ্বরের উপর বেশি নির্ভরশীল তাই নিজেদের ইহকাল ও পরকালের মঙ্গলের জন্য ঈশ্বরকে খুশি করা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে। আর তাদের অনেকের ধারণা ভিন্ন মতের মানুষকে হয় হত্যা করে নয়তো নিজেদের পক্ষে টেনে সেটা করা যায়। এর ফলে বিধর্মী বা ভিন্ন মতের মানুষকে হেনস্তা করা জাতীয় না হলেও গোষ্ঠীর আদর্শে পরিণত হয়। এসবই আমাদের ধর্মান্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে দেয় না। তাছাড়া আমাদের শিক্ষিত জনতাও এক্ষেত্রে নেগেটিভ ভূমিকা পালন করে। যেমন একজন ডাক্তার নিজের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে রুগীকে সুস্থ করে সব প্রশংসা ঈশ্বরের কাঁধে চাপিয়ে দেয়। প্রায় প্রতিটি মানুষ নিজের চেষ্টায়, নিজের

কাজ

Image
সাধারণ মানুষ সাধারণত সমাজের অসাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। তাই সুযোগ পেলেই ভাই, দাদা, মামা এসব বলে ডেকে তাদের সাথে নিজের নৈকট্য প্রকাশ করে আত্মতুষ্টি লাভ করে। তাদের চোখে এই অসাধারণ লোকেরা হতে পারেন রাজা উজির, নেতা বা নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত কেউ। সাধারণ মানুষ নিজেরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসাধারণ হলেও নিজেদের তা ভাবে না বা বলা চলে নিজেদের পরিচয় নিয়ে কুন্ঠাবোধ করে। যদিও একজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ, বিজ্ঞানী, নেতা - এরা নিজেদের অসাধারণ মনে করেন এদের মধ্যে খুব কম জনই কোন সাধারণ মানুষের মত রিক্সা চালাতে পারেন, ফসল লাগাতে বা অন্য কোন কায়িক পরিশ্রমের কাজ করতে পারেন।‌ তবে আমাদের সমাজে মানুষের অবস্থান নির্নয় করা হয় তার পদ দিয়ে, কি করছে সেটা দিয়ে, কেমন করছে সেটা দিয়ে নয়। তাই একজন নিজের পেশায় কুশলী হয়েও শুধুমাত্র পেশার কারণে সমাজে অবহেলিত থেকে যায়। অন্যদিকে আমাদের অসাধারণ লোকেরা সাধারণ মানুষের সাথে আত্মীয়তা সাধারণত স্বীকার করতে চায় না। হ্যান্ডশেক এড়াতে না পারলে প্রথম সুযোগেই হাত ধুতে ভুল করে না। তবে রাজনৈতিক নেতারা যদি ভোটের সময় অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাধারণের মাঝে দর্শন

২৪ জুনের দিনলিপি

Image
শুক্রবার রাতে রুশ টিভিতে সেরকম কোন পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম থাকে না আন্তর্জাতিক রিভিউ ছাড়া। তাই একটা প্রোগ্রামের ফাইনাল দেখে নিউজ চ্যানেল ঘোরালাম। রাত প্রায় দু'টো। ভাগনারদের প্রতি সুরাভিকিনের আবেদন। তবে খুব বেশি কিছু এ নিয়ে জানা গেল না। তাছাড়া ঘুম পেয়ে গেছিল। সকালে উঠে দেখলাম জনগণের প্রতি পুতিনের আহ্বান। ভাগনারের চ্যানেল আমি মাঝেমধ্যে দেখতাম, তবে খবরের চেয়ে অভিযোগ অনুযোগ আর নিজেদের বড় করে দেখানোর প্রবণতা থাকায় তেমন গুরুত্ব দেই নি। তখন থেকেই জানি বর্তমান সামরিক নেতৃত্বের প্রতি গ্রুপ প্রধান প্রিগঝিনের অবিশ্বাস, এদের ধীরে চলার নীতির বিরোধিতা। এর আগেও একাধিকবার অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। এক কথায় ভাগনারের প্রধান প্রিগোঝিন, যিনি নিজে বিলিওনিয়ার, যে অন্যদের নেতৃত্বে সহজে মেনে নিতে পারবেন না সেটা তার সফল বায়োগ্রাফি বলে দেয়। ভাগনার গ্রুপ এর আগে সিরিয়া ও আফ্রিকায় যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। যুদ্ধের শুরুতে, বিশেষ করে বাখমুত বা আর্তিওমভস্ক দখলে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মে মাসের শুরুতে তারা বাখমুত ছেড়ে চলে যাবার কথা ঘোষণা করে। বিগত মাস দেড়েক তারা আ

ইতিহাস

Image
গতকাল ছিল ২২ জুন, বছরের সবচেয়ে বড় দিন। তবে এই দিনটি রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ট্র্যাজিক দিন। ১৯৪১ সালের ২২ জুন ভোর ৪.০০ টায় হিটলারের জার্মানি সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে। যেহেতু ইউরোপের বাঘা বাঘা সব দেশ বলতে গেলে প্রায় বিনা যুদ্ধে জার্মানির বশ্যতা মেনে নিয়েছিল তাই ভাবা হয়েছিল যুদ্ধ বেশিদিন টিকবে না। তবে ব্রেস্ত দুর্গে প্রথমেই তারা বাধার সম্মুখীন হয়, অসম এই যুদ্ধে সেখানকার সেনারা এক মাস প্রতিরোধ করে। এরপর যদিও জার্মান বাহিনী ধীরে ধীরে প্রায় মস্কোর উপকণ্ঠে এসে পৌঁছে, তবে সব জায়গায়ই তাদের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আসতে হয়েছে - কোথাও কোন ওয়াক ওভার ছিল না। ১৪১৮ দিন ব্যাপী এই যুদ্ধ শেষ হয় ০৯ মে ১৯৪৫ সালে বার্লিনে। যুদ্ধে মারা যায় প্রায় ২৭ মিলিয়ন বা ২.৭ কোটি সোভিয়েত মানুষ। এরপর থেকে প্রতি বছরই এরা এই দিনটি স্মরণ করে। বিভিন্ন জায়গার ১৪১৮ টি মোমবাতি জ্বালায়। ২২ জুনকে এরা বলে শোক ও স্মরণ করার দিন। অনেক আগে বাচ্চারা যখন ছোট ছিল আর সবাই একসাথে থাকতাম, সন্ধ্যা ছয়টায় যখন টিভি থেকে ঘোষণা করা হত এক মিনিট নীরবতা পালনের কথা - আমরা সবাই দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানাতাম বীর শহীদদের। এখন বাসায় থাকলে নিজেরাই সেটা করি। যখন ইউরো

মূল্য

Image
শুনেছেন দেশে চিনির দাম কেজি প্রতি ২৫ টাকা বাড়ছে? ভালো তো! ভালো মানে? ডায়াবেটিকসের রোগীর সংখ্যা কমবে। সরকার জনদরদী। মানুষের কথা ভেবেই দাম বাড়ায়। তার মানে আপনি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সমর্থন করেন। না। আমি নেগেটিভের মধ্যেও পজিটিভ খুঁজি।‌ খাবারে দাম বাড়ায় ভালো কি আছে? ফেসবুকে মানুষের স্ট্যাটাস দেখে মনে হয় আজকাল সব কিছুই ভালো খাবার, গাড়ি, বাড়ি, বিদেশ ভ্রমণ আর নামী দামী অসুখকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। খাবারের দাম বাড়লে লোকজন হয় খাবার কম খাবে অথবা বেশি আয়ের জন্য বেশি কাজ করবে। সেটাও স্বাস্হ্যের জন্য ভালো।  তবে এতে করে ঘুষের দাম যে বেড়ে যাবে সেটা জানেন? সবাই তো আর ঘুষ খায় না। বেশির ভাগ মানুষ ঘুষ দেয়। ওদের তো কাজ করতে হয়।  এরা সাধারন মানুষ। গরীব মানুষ। আচ্ছা কোন সরকার কবে গরীবের কথা ভেবেছে? সব সরকার এদের ঘৃণার চোখে দেখে। এদের জন্য সরকারের দুর্নাম হয়। এরা অনেকটা খারাপ ছাত্রদের মত যাদের কারণে শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের রেপুটেশন নষ্ট হয়।  তাহলে কী করা? সবার জন্য কর্মসংস্থান করা। এজন্যে সবাইকে শিক্ষিত করা। তবে সে জন্যে দরকার সমাজের আমূল পরিবর্তন। আর সেটার মূল্য অনেক অনেক বেশি। দুবনা, ২২ জুন ২০২৩

সমস্যা

Image
কয়েক দিন হল ফেসবুকে ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠি নিয়ে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগসহ বিভিন্ন সমস্যায় সরকারের নির্লিপ্তার অভিযোগ এসেছে এই চিঠিতে।‌ তবে ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্ট দেখে মনে হল আমেরিকা প্রবাসী হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে এটা করা হয়নি। এমনকি বৌদ্ধ কমিউনিটির পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে শতাধিক বুদ্ধিজীবীও এই চিঠির বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছেন। যেহেতু আমেরিকায় অর্থের বিনিময়ে সিনেটর বা কংগ্রেসম্যানদের দ্বারা এসব বক্তব্য দেয়ানো যায় তাই ধারণা করা হচ্ছে বিরোধী দল অর্থের বিনিময়ে এসব করিয়েছে আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য। এসব দেখে নিজের মনেই কিছু প্রশ্নের উদ্রেক হল। আমেরিকা একটা গণতান্ত্রিক দেশ বলেই পরিচিত। তাহলে সেই দেশের জনপ্রতিনিধিরা কিভাবে অর্থের বিনিময়ে অন্য দেশের রাজনীতিতে এভাবে হস্তক্ষেপ করে? এমনকি তারা যদি সত্যি সত্যিই আমাদের দেশের সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে চিন্তিত হন, অনেক ক্ষেত্রেই এটা শুধু অর্থের জন্য হতে পারে। তাই এই চর্চা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয় - সেটা না আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য না বাংলাদেশ বা অন্য কো

জীবন

Image
এক বন্ধু জানতে চাইল অভাব হীন, ভাবনাহীন জীবন কি আদৌ পাওয়া সম্ভব? আমার মনে হয় অভাব হীন ও ভাবনাহীন জীবন অর্থহীন। অভাব মানে তো শুধু অর্থাভাব নয়, জীবনের অর্থেরও অভাব। আমাদের অভাব আছে বলেই তো সেটা পূরণ করতে চাই। ভাবনা তো শুধু দুশ্চিন্তা নয়, জীবনের সঠিক অর্থ খোঁজাও ভাবনা। তাই জীবনের অর্থ নিয়ে ভাবাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমস্যা অভাবে বা ভাবনায় নয়, এই অভাব তোমাকে কিভাবে সমৃদ্ধ হতে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে, এই ভাবনা তোমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে সেটাই আসল কথা। চাওয়া ও পাওয়ার, মানে আমদানি ও রপ্তানির, বৈষম্য থেকেই অনেক সমস্যার জন্ম। চাওয়াটা একান্তই‌ আমার, পাওয়াটা অনেক ক্ষেত্রেই অন্যের উপর নির্ভরশীল। নিজের চাহিদা ও না পাওয়ার বেদনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। তবে লোভ লালসাপূর্ণ সমাজে জীবনের গতিপথ সোজা করা খুব কঠিন। মস্কোর পথে, ১৭ জুন ২০২৩

পূজার ফুল

Image
ভারতকে বলা হয় বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র। এর একটাই কারণ - জনসংখ্যা। তবে ভারতের রাজনীতি, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেকেই এই বিশেষণ শুনে মুচকি হাসে।  শোনা যায় বাইডেনের পরিবার বিভিন্ন দেশ থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার ঘুষ হিসেবে পেয়েছে। এটা ওদের তদন্ত। রুশ প্রোপাগান্ডা নয়। এটা শুনে আমার মনে হল বফোর্স কেলেঙ্কারির কথা। রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তখন ভারতের মানুষকে ভি পি সিংহের পেছনে দাড় করিয়েছিল। সমস্ত মূলধারার গণমাধ্যম রাজীবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। এখন? না, বাইডেন পরিবার এসব থোড়াই কেয়ার করে ক্ষমতায় এসেছে, টিকে থাকছে এবং ভবিষ্যতেও বিশ্বের ভআগ্য নিয়ন্ত্রণ করবে।  মানুষ দেবতার পূজা করে। তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য বিভিন্ন উপঢৌকন দেয়। এটাকে কেউ ঘুষ বলে না। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বা এলিটরাও মনে হয় বিশ্বের জন্য দেবতাকূল। তাই এই ৩০ মিলিয়ন এটা ঘুষ নয় পূজার ফুল। দুবনা, ১৬ জুন ২০২৩

হারজিত

Image
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হয়েছে। জয়ের একটা বড় দোষ হল সেক্ষেত্রে মানুষ জয়টাই দেখে, কিভাবে জিতল সেটা মাথায় রাখে না। অনেক সময় জয়ের মধ্যেও যে পরাজয় লুকিয়ে থাকে সেটা হিসেবে রাখে না। নথিভুক্ত আদর্শের দিক থেকে না হলেও ক্ষমতায় টিকে থাকা বা ক্ষমতা ছিনিয়ে নেবার কৌশলে আর দেশ পরিচালনায় দেশের সব প্রধান প্রধান দলই আজ ধর্মকে ব্যবহার করছে। তাই কোন দলের প্রার্থী জয়ী হল, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে বিশ্বাসী মানুষের কাছে সেটা হয়তো স্বল্পকালীন বিবেচনায় খুব একটা গুরুত্ব রাখে না, তবে দীর্ঘ মেয়াদী বিবেচনায় এই ফলাফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা এক ধরণের অশনি সংকেত। বর্তমানে ভোটের যে মেরুকরণ তাতে প্রতিটি ভোট হারানো মানে একাত্তরের চেতনার ভিত্তি আরও নড়ে ওঠা। এতদিন পর্যন্ত সাধারণ ধারণা ছিল যে বিশেষ করে মৌলবাদীদের পক্ষে জন সমর্থন ৫-১০% বেশি নয়। এখন মনে হয় সেটা ২৫% এসে দাঁড়িয়েছে। অন্তত খুলনার ফলাফল সেই ইঙ্গিত করে বলে অনেকেই লিখছেন। যেকোনো ধরণের প্রগতির প্রধান সঙ্গী স্বচ্ছতা। কিন্তু বিগত অনেক দিন সরকার সেটা দিতে পারছে না, বিশেষ করে নির্বাচনের ক্ষেত্রে। একটা কথা আছে - "

প্রশ্ন

Image
প্রায় প্রতিটি চিন্তাশীল মানুষের জীবন বিভিন্ন ধরণের পরস্পর বিরোধী চিন্তায় ভরা। যে আইনস্টাইন স্থান কালের ধারণা বদলে দিলেন তিনিই মহাবিশ্ব অপরিবর্তনীয় সেটা প্রমাণ করতে কসমোলজিক্যাল টার্ম আমদানি করলেন। যে বিবেকানন্দ সব জীবকে ভালোবাসার কথা বলেন তিনিই অন্যত্র হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের কথা বলেন। খারাপ হত যদি তিনি অন্ধভাবে নিজের কোন মতবাদে বিশ্বাসী হতেন। আমাদের দৃষ্টিতে ভুল হলেও তাঁর এসব উক্তি প্রমাণ করে যে তিনি সব সময় অন্বেষণে ছিলেন। এটা মনে হয় বিজ্ঞানমনস্কতার লক্ষণ। সব উত্তর যে সঠিক হবে তা কিন্তু নয়, কিন্তু প্রশ্ন করে যেতেই হবে। বিজ্ঞানে শেষ উত্তর বলে কিছু নেই, আছে প্রতিনিয়ত সত্যের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়া। কোন কিছুকে অন্ধভাবে গ্রহণ করা যেমন ভুল, তেমনি ভুল কোন কিছু অন্ধভাবে বর্জন করা। অন্ধবিশ্বাস জ্ঞানার্জনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা।  দুবনা, ১০ জুন ২০২৩

সংসার

Image
ইদানিং ফেসবুকের বাংলা পোর্টালে (এজন্য বলছি যে আমার টাইম লাইনে অধিকাংশ লেখা বাঙালিদের) স্ট্যাটাস দেখে মনে হয় আমরা এক সামাজিক যুদ্ধে লিপ্ত। হিন্দু মুসলমান, আওয়ামী লীগ বিএনপি এসব তো আগেও ছিল এখনও আছে। কিন্তু যেটা বেশি চোখে পড়ে তা হল পারিবারিক গৃহযুদ্ধ। একদল পোস্টে বাবাকে সবচেয়ে বঞ্চিত লাঞ্ছিত বলে চিহ্নিত করছে, আরেক দল মাকে। একদল বাবার গুনগানে পঞ্চমুখ, অন্যদল মায়ের। একদল স্বামীকে নিয়ে দাস বানালে অন্য দল স্ত্রীকে দাসী করছে। একদল স্বামীকে অত্যাচারী আর মদ্যপ বললে আরেক দল স্ত্রীকে রাস্তায় নামাচ্ছে। আর এই লড়াইয়ে বাবা মা, শ্বশুর শাশুড়ি কেউই বাদ যাচ্ছে না। কেউ ভাবছে না স্বামী স্ত্রী, বাবা মা, ছেলে মেয়ে এরা সবাই মিলেই একটা সংসার গড়ে তোলে, এরা প্রত্যেকেই সংসারের এক এক জন গুরুত্বপূর্ণ মেম্বার। আমরা অধিকার আদায় করতে গিয়ে দায়িত্বের কথা ভুলে যাই। মজা করতে গিয়ে ভুলে যাই সেটা কিভাবে সামাজিক মতামতকে প্রভাবিত করে, কিভাবে সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশ বিষাক্ত করে তোলে।  দুবনা, ০৮ জুন ২০২৩

প্রায়োরিটি

Image
সপ্তাহ দেড়েক আগে ক্লাসে যাব হলে তৈরি হচ্ছি এমন সময় কল এল। দেখি সুদীপ রিং করছে। ও আমার কলেজের বন্ধু। অনেক চেষ্টা করেছি ওকে দলে ভেড়াতে। পারিনি। তবে দুই ভিন্ন আদর্শের রাজনীতি করলেও এটা আমাদের সম্পর্কে ক্ষতি করেনি। এখনও দেশে গেলে দেখা করার চেষ্টা করি। সুদীপের মাধ্যমেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে রমজান আর আলীমের সাথে। যদিও রাশিয়ায় আসার পর আমার চলাফেরা মূলতঃ রুশ ফেরৎদের সাথে তবে ইদানিং কলেজের বন্ধুদের সাথেও নতুন করে যোগাযোগ হচ্ছে। স্কুলের বন্ধুদের সাথে দেশে গেলে দেখা করি। কিরে সুদীপ? কী খবর? ভালো। ঠান্ডু তোমার সাথে কথা বলতে চায়। আমাদের তুই সম্পর্ক ছিল। ওরা অনেকেই এখন আমাকে প্রমোশন দিয়ে তুমি বলে। যত্তসব। দে। রমজান মানে ঠাণ্ডুর সাথে কিছুক্ষণ কথা হল। ও নারায়ণগঞ্জে স্থিত হয়েছে। বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। সুদীপের সাথে কথা প্রসঙ্গে আমার কথা ওঠে। তাই কল করা। ওদের আস্তানা অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে। তবে ভাইদের মাধ্যমে আমরা একে অপরের খবর জানার চেষ্টা করি।  গতকাল হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। বাংলাদেশ থেকে। ধরার সাথে সাথে ওদিক থেকে শুনলাম বন্ধু, আমি ঠান্ডু।  সুদীপের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে ফোন করেছে। এবার বেশ খা

পরিবেশ

Image
আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে অনেকেই লিখছেন। প্লাস্টিকের বোতল থেকে অন্যান্য অনেক ইস্যু আসছে। আমার ব্যক্তিগত ধারণা যেসব ইস্যু সরাসরি প্রচুর মানুষের স্বার্থের সাথে জড়িত সেটা বাস্তবায়ন করা অনেক সহজ। আমাদের শহরগুলোর পরিবেশ দূষণের অনেক কারণের একটা গাড়ি। অথচ আমরা কখনোই গাড়ি কমিয়ে রিক্সা বাড়ানোর কথা বলি না। তাহলে একদিকে যেমন দূষণ কমত অন্যদিকে তেমনি প্রচুর লোকের উপার্জনের সুযোগ হত। আমরা নদী দূষণের কথা বলি। নদীতে পাল তোলা নৌকার পরিবর্তে ইঞ্জিনের নৌকা এতে বিশাল অবদান রাখছে। আমার মনে হয় উন্নয়নের পথে হাঁটতে গিয়ে আমরা অন্যদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভালোমন্দ সব অভিজ্ঞতাই অর্জন করতে চাইছি। অথচ চোখকান খোলা রেখে করলে অনেক খারাপ অভিজ্ঞতা এড়িয়ে যাওয়া যেত। দুবনার পথে, ০৫ জুন ২০২৩

গুরু

Image
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধর্মগুরু ইয়োগা ও অন্যান্য ভারতীয় রীতিনীতি দিয়ে পশ্চিমা বিশ্বকে মুগ্ধ করেছেন। লাখ লাখ শিষ্যের ভক্তিতে সিক্ত এসব গুরু শুধুমাত্র ভগবানের আসনই দখল করেননি, কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। পরে বিভিন্ন অনৈতিক ও অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে এদের অনেকেই কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছে। অনেকে এখনও শাস্তি ভোগ করছে। বর্তমানে বিশ্বের গণতন্ত্রের রথী মহারথীদের দেখলে আমার এই সব ধর্মগুরুর কথা মনে পড়ে। তাদের স্বৈরাচারিতা, তাদের ব্যভিচার, তাদের অমানুষিক কর্মকাণ্ডের হাজারো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কোটি কোটি মানুষ তাদের দেবতার মত মাথায় করে নাচে। শুধু মানুষ নয় কোন কোন দেশও এখন ঈশ্বরের ভূমিকায় অভিনয় করে। তবে এসব দেশের কর্মকাণ্ড সেই সব ধর্মগুরুর চেয়ে কোন ক্রমেই ভিন্ন নয়। মস্কো, ০৫ জুন ২০২৩

দানব

Image
বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন সময় বলেছেন তারা বহুদূর পর্যন্ত দেখেন কারণ তারা লম্বা লম্বা দৈত্যের কাঁধে বসে আছেন। এই দৈত্য শুধু বিজ্ঞানী নন, এমনকি যারা পদে পদে বিজ্ঞানের বিরোধিতা করে সেই ধর্মও। কারণ ধর্মের হাত ধরেই এক সময় বিভিন্ন রকম স্কুল, মানমন্দির ইত্যাদি গড়ে উঠেছিল। অন্যদিকে আজ আমরা যে প্রযুক্তির অগ্রগতি দেখছি সেটা এসেছে সামরিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য রাজনীতিবিদদের আকাঙ্ক্ষার হাত ধরে। বিষ যেমন মানুষ হত্যা করে সঠিক ব্যবহারে তেমনি প্রাণ বাঁচাতেও সাহায্য করে। পারফেক্ট মতবাদ বলে কিছু নেই। এমনকি প্রায় পারফেক্ট ও মানবিক মতবাদও প্রতিযোগিতার অভাবে দানবীয় রূপ ধারণ করতে পারে। এর অন্যতম প্রধান উদাহরণ সোভিয়েত উত্তর আমেরিকার গণতন্ত্র। নিজেদের স্বার্থেই ভিন্ন মতকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার। দুবনা, ০৪ জুন ২০২৩

ছোট্ট সমস্যা

Image
আমার সহকর্মী ভিক্তর আর মিশর থেকে দুই সপ্তাহের জন্য আসা ছাত্ররা কম্পিউটারকে বেশি বিশ্বাস করে। আমি নিজের কাগজ কলমকে। আমি ওদের যে সমীকরণ সমাধান করতে বলেছিলাম কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেই সমীকরণ ডিরাইভ করতে না পেরে সমীকরণের সঠিকতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। তবে আমি কাগজে কলমে এটা করে দেখালে ওরা মেনে নেয় আর বলে ওরা সময় নিয়ে একটা কোড লিখবে যাতে সহজেই সমীকরণ পাওয়া যায়। এক কথায় ওরা শিল্পীর তুলি ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে বদলাতে চায় যেহেতু আমি ইদানিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই তাই মাঝেমধ্যে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। সেই সূত্রে পাইফনের উপর একটা শর্ট কোর্স করছি। ক্লাসে উপস্থিত থাকি না। তবে সমস্যাগুলো সমাধান করে পাঠাই। একটা সমস্যা ছিল এরকম ভভা তিন অংকের একটা সংখ্যা লিখল যাকে ১৫ দিয়ে ভাগ করলে ১১ অবশিষ্ট থাকে আর ১১ দিয়ে ভাগ করলে ৯ অবশিষ্ট থাকে। অর্থাৎ যদি সেই পূর্ণ সংখ্যা ক হয়, তবে ক = ১৫খ + ১১ = ১১গ + ৯, যেখানে খ ও গ পূর্ণ সংখ্যা। মানে দুটো অজানার জন্য একটা সমীকরণ। এ তো অসম্ভব। অথচ এই শর্তগুলো কোডে লিখলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সমাধান আসছে। এটা ঠিক, কম্পিউটার একটার পর একটা সংখ্যা বাছাই করে এটা ক

অধ্যাবসায়

Image
আমার এক শুভাকাঙ্ক্ষী প্রায়ই বলে অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমি নাকি জীবনে কিছুই করতে পারলাম না। না বাড়ি গাড়ি, না ধনদৌলত। অর্থহীন পকেট আমার জীবনকেই নাকি অর্থহীন করে তুলেছে।‌ এমন জীবন নাকি ব্যর্থ জীবন। উত্তরে আমি ওকে শান্তনা দিয়ে বলি "জানিস তো ব্যর্থতা হল সাফল্যের পিলার। আমি এতদিন সাফল্যের রাজপ্রাসাদের ভিত তৈরি করছিলাম।" সেদিন ওর সাথে আবার দেখা। একটু ব্যঙ্গ করেই বলল "কিরে অনেক দিন দেখা নেই। রাজপ্রাসাদ থেকে বেরোস না মনে হয়?" না না, তেমন কিছু নয়। আসলে আমি এতদিন যে পিলারগুলো গেড়েছিলাম তা কেমনে কেমনে যেন দেয়াল হয়ে গেছে। এই দেয়াল ভেদ করে না ঢুকতে পারছে সাফল্য, না বেরুতে পারছি আমি। তবে ভয়ের কিছু নেই এই দেয়াল আমি ভাঙবোই, সাফল্যকে আনবোই।  দুবনা, ০২ জুন ২০২৩

ভোগবাদ

Image
কয়েকদিন আগে এক রাজনৈতিক ভাষ্যকার (খুব সম্ভব) দমিত্রি কুলিকভ এক টক শোতে বললেন,"যখন থেকে মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনকে পার্টি তার প্রধান লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে সেদিন থেকেই সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের শুরু। আর সেটা ঘটেছে গত শতাব্দীর ষাটের দশকে।" কথাটা কিছুটা অবান্তর মনে হলেও একেবারে মিথ্যা নয়। মানুষের লক্ষ্য যদি মহৎ কোন আদর্শ না হয়ে একান্তই নিজের ইন্দ্রিয় সুখ হয় সে তখন খুব বড় কিছু করতে পারে না। ডাক্তারি ডিগ্রি অর্জন আর সত্যিকার ডাক্তার হওয়া এক নয়। বিপ্লবের এবং যুদ্ধের পরে মানুষ সমাজের জন্য কাজ করত আর একারণেই তখন অনেক প্রতিকূলতার পরেও সব দিকে এগেইয়ে গেছে, জিতেছে বিশ্ব যুদ্ধে, জয় করেছে মহাকাশ। কিন্তু ষাটের দশক থেকে সে একান্তই নিজের জন্য বাস করতে শুরু করে। ফলে সামাজিক উন্নয়নের চেয়ে ব্যক্তিগত লাভ লোকসান বড় হয়। এর হাত ধরে ছড়িয়ে পড়ে দুর্নীতি, কালোবাজারী ইত্যাদি। বাংলাদেশের দিকে তাকালেও একই ঘটনা দেখতে পাই। যতদিন পর্যন্ত দেশ পরাধীন ছিল তখন স্বাধীনতা মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকত, সে ব্যক্তিগত লাভ লোকসানের হিসেব না করে দেশকে মুক্ত করতে নেমেছিল। কিন্তু যখনই ব্যক্তিগত ভালো থাকা সামনে