Posts

Showing posts from April, 2023

দেশ

Image
বাংলাদেশে নাম পরিবর্তনের হিড়িক পড়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক হিন্দু বাইরে ব্যবহারের জন্য মুসলিম নাম গ্রহণ করত ঠিক যেমন আত্মগোপনে থাকার সময় অনেক হিন্দু কমিউনিস্ট মুসলিম নাম ধারণ করত। এখন গ্রামগঞ্জের হিন্দু নাম পরিবর্তনের উৎসব দেখে মনে হচ্ছে আবার একাত্তরে ফিরে গেছি আমরা - উল্টো একাত্তরে।  নাম পরিবর্তনের তালিকা থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট - কৃষ্ণ হচ্ছে মোহাম্মদ, কালি হয় ইসলাম নয় খালি। এত ঝামেলা না করে সমস্ত রাস্তাঘাট, নদীনালা, গ্রামগঞ্জ, শহর বন্দরের নামের আগে একটা মোঃ লাগিয়ে দিলেই তো কিল্লা ফতে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নেই। নাম বিতর্ক নেই। আবার এটা যে মুসলমানের দেশ সেটাও আরেকবার সবাইকে মনে করিয়ে দেয়া হয়। সাপ আর লাঠি দুজনেই খুশি। দুবনা, ৩০ এপ্রিল ২০২৩

রিপন

Image
গতকাল দুপুরে অফিসে বসে একটা আর্টিকেল লিখছি হঠাৎ মেসেঞ্জারে কল এল। মঞ্জু ভাই কানাডা থেকে। ফিজিক্স আর কসমোলোজি নিয়ে কথা হল অনেকক্ষণ।  তুমি যে বছর দুই আগে কসমোলোজির উপর একটা প্রোগ্রাম করেছিলে সেই ভিডিওটা পাচ্ছি না। আছে কি তোমার কাছে? ইউটিউবে আছে। লিঙ্ক পাঠিয়ে দেব।  আরও বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে যখন লেখায় মন দিয়েছি স্ক্রিনে একটা মেসেজ ভেসে উঠে মিলিয়ে গেল। নবীনের লেখা। দুঃখিত আর রিপন এই দুটি শব্দ চোখে পড়ল। ভেসে উঠল অন্য এক রিপনের মুখ। আর মনে করার চেষ্টা করলাম যার মুখ মনে ভাসল সে আদৌ রিপন কি না। এরপর আবার কাজে ডুবে গেলাম। ওটা শেষ করে দেখলাম নবীনের লেখা। ভুল ভাঙল। এ আমাদের রিপন। মাত্র তিনদিন আগে ওকে নিয়ে কথা বলছিলাম মাসুদের সাথে। আমার যে দু' এক ইয়ারমেট এখনও মস্কো আছে তাদের মধ্য মাসুদের সাথে আমার নিয়মিত (মাসে - দুই মাসে একবার) যোগাযোগ আছে। মনে পড়ল রিপনের হাসি মুখ আর ডাগর আঁখি। আমরা একই বছরে সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা মস্কো আসি। ও মাদিতে ভাষা শিখে মেই থেকে মাস্টার্স করে। আমি প্যাট্রিসে। ও ছিল আমাদের শুভর বাল্য বন্ধু তাই মাঝে মাঝে প্যাট্রিসে আসত। আমি নবীন আর আরিফের ওখানে মেই গেলে ওর দেখা পেতা

নাম মাহাত্ম্য

Image
রাশিয়া খৃস্টান ধর্মে দীক্ষিত হয় ৯৮৮ সালে কিয়েভে। তখন এ দেশের মানুষ ছিল মূর্তি পূজারী। অনেক দিন চেষ্টা করেও মানুষকে পুরানো অভ্যেস ত্যাগ করাতে ব্যর্থ হয়ে এরা জনগণের অনেক উৎসব গ্রহণ করে নেয়। ইভানা কুপালা, মাসলেননিৎসা এর উদাহরণ।  ছোটবেলায় আমাদের গ্রামের কোন কোন মুসলিম পরিবারে লক্ষ্মীর ঘট দেখেছি। ইসলাম বা অন্য কোন ধর্ম গ্রহণ করে নাম বদলানো সহজ কিন্তু হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা খাদ্যাভাস থেকে শুরু করে অনেক অভ্যেস বদলানো কঠিন। সরকার, সরকারি দল বা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ চাইলেই যেকোন রাস্তা, গ্রাম, শহর, নদী এমনকি দেশের নাম পর্যন্ত বদলিয়ে ফেলতে পারে কিন্তু এর ফলে মানুষ, মানুষের অভ্যাস বদলাবে না, নদী জলে ভরে উঠবে না, দেশ থেকে ঘুষ, দুর্নীতি বিদায় নেবে না।  পাকিস্তানের নামকরণের পেছনে পাঞ্জাব, কাশ্মীর ইত্যাদি প্রদেশের গল্প বলা হলেও আসল কারণ ছিল পাক শব্দে যার অর্থ পবিত্র। ইতিহাস দেশের নামের সাথে তার শাসক ও জনগণের চরিত্রের মধ্যে হিমালয় সম ফারাকের সাক্ষ্য দেয়।  এধরনের সস্তা জনপ্রিয়তা লাভের প্রচেষ্টা আসলে ভেতরের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। দুবনা,২৯ এপ্রিল ২০২৩

আমরা কে?

Image
এক সময় বলা হত আমাকে বল তোমার বন্ধু কে, আমি বলব তুমি কে? এখন মনে হয় বলার সময় এসেছে  আমাকে বল তোমার তথ্যের উৎস কি মানে তুমি কোন সংবাদ মাধ্যম থেকে খবর সংগ্রহ কর, আমি বলব তুমি কে? আমার রুশ বন্ধুরা বলত তোমরা মাংসে এত রং বেরঙের মশলা দাও যে মাংসের স্বাদই টের পাওয়া যায় না। আজকাল সংবাদও তেমনি এত বিকৃত করে প্রচার করা হয় যে সেটা দেখে সংবাদের সত্যতা নির্নয় করা কষ্টকর। ফলে মিথ্যার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে জনমত।  বাংলাদেশে মৌলবাদীরা ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে, তাদের বিরুদ্ধে সমাজে উত্তেজনা ছড়ায়। এখন পশ্চিমা বিশ্বের মেইন স্ট্রীম মিডিয়া সেই কাজে ব্যস্ত। ফলে বিশ্ব জুড়ে বাস্তবতার যে অলীক চিত্র তৈরি করা হচ্ছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে হয়তো কয়েক জেনারেশন অপেক্ষা করতে হবে।  দুবনা, ২৮ এপ্রিল ২০২৩

ভুল দর্শন

Image
আজকাল অনেকেই এরকম স্ট্যাটাস দেয় "জীবনে ধর্মের কোন প্রয়োজন নেই। ধর্মের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ছাড়া পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।" কিন্তু ধর্ম বলতে আমরা কেন প্রথাগত ধর্ম বোঝাই সেটা আমার মাথায় ঢোকে না। কারণ বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে যে মারামারি হানাহানি সেটা কি নিজ নিজ ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে নাকি নিজেদের ক্ষমতার জোর দেখাতে? যারা নিজেদের ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে চায় তারা তো তলোয়ার নিয়ে আসে না, আসে শান্তির ও মুক্তির বাণী নিয়ে। তলোয়ার নিয়ে যারা আসে তারা দখল করে রাজ্য, ধনসম্পদ। তাই ধর্ম না থাকলেই যে শান্তি আসবে তার কোন বাস্তব কারণ নেই। কিন্তু যেটা অনেক বেশি বাস্তবসম্মত তা হল শোষণ না থাকলে শান্তি আসবে। ধর্মকে আসলে শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যেমন ব্যবহার করা হয় গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি। তাই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে ধর্মের বিরুদ্ধে নয় শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।  দুবনা, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

দ্বিচারিতা

Image
বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বাহান্ন বা একাত্তরের ইতিহাস ঠিকমত বলতে না পারলে অনেকেই গেল গেল বলে শোরগোল তোলে। এটা শুধু বাংলাদেশ নয় সব দেশের ক্ষেত্রেই সত্য। অথচ ইউরোপ আমেরিকার অনেকেই যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বলে অথবা এসব দেশে সরকারি ভাবে সেই ইতিহাস বিকৃত করে প্রচার করা হয় তখন এদের অনেকেই এসব মিথ্যা জেনেও লুফে নেয়। ইউরোপের কিছু কিছু দেশে, বিশেষ করে ইউক্রেনে ও বাল্টিকের দেশগুলোতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে ইতিহাস সরকারি ভাবে প্রচার করা হয় সেটার দেশীয় উপমা হবে এরকম ১৯৭১ সালে রাজাকার আলবদর বাহিনী এদেশে ইসলামের শাসন বজায় রাখতে ও দেশের মানুষকে ভারতীয় তথা হিন্দুদের প্রভাবমুক্ত করার জন্য বীরের মত লড়াই করে। কারণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এই বর্ননা আর হিটলারের সহযোগী বান্দেরা ও বাল্টিকের নাজীরা আসলে গণতন্ত্রের সৈনিক - দুটোই একই রকম মিথ্যা। তারপরেও দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সত্যিকারের বর্ননায় বিশ্বাসী যেসব মানুষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসের পশ্চিমা বর্ননায়, যেখানে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও হিটলারের জার্মানিকে একই পাল্লায় ফেলা হয়েছে, বিশ্বাসী - তারা আসলে স

ভয়

Image
আজকাল লোকেরা আত্মসমালোচনা করে না কেন? আত্মসমালোচনা করার জন্য তোমাকে নিজের হতে হবে। কিন্তু আজকাল মানুষ তো নিজের নয়, কোন না কোন কোম্পানির, দলের, দেশের কাছে সে দায়বদ্ধ। শয়তানের কাছে আত্মা বিক্রি করে তো আর আত্মসমালোচনা করা যায় না। তাকে তার বসদের সুনাম গাইতে হয়, তাদের হাজারটা খুন জায়েজ করাতে হয়। এটা আসলে সময়ের দোষ। তুমি যখন চারিদিক থেকে ওদের কাছে ধরা তখন মুখ খোলার উপায় কোথায়? আমাদের সব দেশে গুম করে, ক্রাস ফায়ারে মারে। উন্নত বিশ্বে আত্মহত্যা করায় বা কোন মহিলাকে দিয়ে তোমার বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ করায়। সেটা এত আগে ঘটেছিল যে তুমি তো তুমি, যে অভিযোগ করছে সেও ঠিকঠাক মনে করতে পারে না। কিন্তু এখন তো অপরাধ প্রমাণের বালাই নেই, শুধু মুখ খুলে অভিযোগ করলেই হল। তুমি শেষ। এই যে ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলা হচ্ছে চারিদিকে সেজন্য কেউ আর আত্মসমালোচনা করার সাহস পায় না। কারণ যে আত্মসমালোচনা করে সে সত্যকে ভয় পায় না। ওরা পায়। তাই তো মুখ বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন উপায়ে। দুবনা, ২৫ এপ্রিল ২০২৩

একজন পঙ্কজ দা

Image
পঙ্কজ দা মারা গেলেন, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য। সারাদিন ফেসবুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি আসছে। ক্লাসে ব্যস্ত থাকায় লেখা হয়নি কিছুই।  মস্কোয় পড়াশুনার সুযোগে আশির দশকে বাংলাদেশের বাম রাজনৈতিক দলের প্রথম সারির প্রায় সব নেতাকেই খুব কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। যদিও সে সময় মস্কোয় অধ্যয়নরত সিপিবি ও ন্যাপ ঘরানার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সদ্ভাব ছিল না এটা কখনোই দুই দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে বা তাদের কাছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সর্বশেষ খবর শুনতে বাধার সৃষ্টি করেনি। স্বাধীনতার আগে এমনকি স্বাধীনতার পরেও প্রায় দুই যুগ ধরে এরা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বীর দর্পে পদচারণা করে গেছেন। এটা সম্ভব হয়েছে সমস্ত বাধা বিপত্তির মধ্যেও দেশে রাজনীতি করার পরিবেশ ছিল বলে অথবা রাজনৈতিক দলগুলো এমনকি সামরিক শাসকদের সুস্থ রাজনীতি করার অধিকার দিতে বাধ্য করতে পেরেছিল বলে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর শুধু বাম রাজনীতিতেই নয় বিশ্বব্যাপী সমস্ত রাজনীতিতেই মৌলবাদীদের উত্থান ঘটে যেটা আমরা দেখতে পাই আমেরিকা ইউরোপ থেকে শুরু করে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে। অপরাজনীতির খপ্পরে পড়ে সত্যিকার রাজনীতি ও রাজনীতিবিদগন কোনঠাস

বৃথা তর্ক

Image
হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী লক্ষ্মী ও সরস্বতী দুই বোন। লক্ষ্মী ধনসম্পদের দেবী আর সরস্বতী জ্ঞান ও বিদ্যাবুদ্ধির দেবী। এ ছাড়াও সাধারণ বিশ্বাস অনুযায়ী এরা দু' জন এক সাথে থাকে না। তাই হয় মানুষ ধনী হয় নয়তো জ্ঞানী। ধনীরা মনে করে অর্থ উপার্জন করা অনেক কঠিন, জ্ঞানীরা ভাবে উল্টোটা। মনে হয় সবাই নিজেকে অন্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে চায় বলেই এই সিদ্ধান্তে আসে। জ্ঞানার্জন না ধনার্জন কোনটা কঠিন? আমার বিশ্বাস দুটোই কঠিন। আসলে সহজ কাজ বলে কিছু নেই। আসল কথা হল কে কোন কাজটা করে আনন্দ পায়। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ কাজের আনন্দে কাজ করে না, করে জীবিকার দায়ে। খুব কম লোকই কাজ করে শুধু আনন্দই পায় না, মজুরিও পায়। স্টিফেন হকিং এরকম তিনটি পেশার কথা বলেছেন। পদার্থবিদ, গণিতবিদ আর ... তৃতীয় পেশার কথা সময়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে পাবেন। তাই কে ঠিক আর কে ভুল এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে সময় নষ্ট না করে মনের আনন্দে জ্ঞান অর্জন করুন। মনে রাখবেন সব কিছুই আপেক্ষিক। কোন পরিস্থিতিতে ধনের তেমন বিকল্প নেই, অন্য পরিস্থিতিতে জ্ঞানের। তবে একবার জ্ঞান অর্জন করলে সেটা চিরতরে আপনার হয়ে যায়, জ্ঞান কমে না, এনট্রওপইর মত শুধুই ব

ভেতরে বাহিরে

Image
পশ্চিমা বিশ্ব প্রায়ই মানবাধিকারের কথা বলে আজ এই গ্রুপ, কাল ঐ গ্রুপকে প্রোমোট করে। নারী অধিকার, বিএলএম, এলজিবিটি কত গাল ভরা নাম। আবার এখন ট্র্যান্সসেক্সুয়াল কমিউনিটিকে সমর্থন দিতে গিয়ে নারীর অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।  তবে আমার প্রশ্ন একটু অন্য জায়গায়। কেন এভাবে বিভিন্ন গ্রুপকে বার বার সামনে আনা হচ্ছে? এটা কি আসলেই এদের প্রতি সহমর্মিতা থেকে নাকি নিজেদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি স্বার্থ উদ্ধারের জন্য? কেননা মানুষের অধিকারই যদি লক্ষ্য হয় তবে কেন সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় না? যদি কেউ সে কথা বলে তাকে কেন কমিউনিস্ট আখ্যা দিয়ে একঘরে করা হয়? একটা অতি সাধারণ সত্য হচ্ছে যখন কোন একটি দল বা গোষ্ঠীকে অতিরিক্ত সুযোগ দেয়া হয় তখনই অন্যদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। আর এ থেকেই উদ্ভব যত সমস্যার। তাই সত্যিকার অর্থে সবার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সাম্যের বিকল্প নেই। সমানাধিকার বা সাম্য শুধু কথা বলা বা দ্বিমত পোষণের অধিকারে নয়, নিজেদের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে সবার জন্য রাষ্ট্র প্রদত্ত সহায়তার সাংবিধানিক নিশ্চয়তা। সোভিয়েত ইউনিয়ন কিছুটা

লেনিন

Image
আজ ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের জন্মদিন। ১৮৭০ সালে ২২ এপ্রিল ভোলগা তীরে সিমবির্স্ক শহরে তাঁর জন্ম। সমাজতন্ত্রের তত্ত্ব বাস্তবায়নের অন্যতম স্থপতি হিসেবে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। সোভিয়েত আমলে প্রায় সর্বত্রই দেখা যেত একটা স্লোগান "লেনিন ছিলেন, লেনিন আছেন, লেনিন থাকবেন" আর সারা দেশ জুড়ে ছিল লেনিনের মূর্তি। সেটা আমাকে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজার হাজার শিব লিঙ্গের কথা মনে করিয়ে দিত। গৌতম বুদ্ধ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে একসময় নিজেই ঈশ্বর হয়ে গেছেন। ধর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে লেনিন নিজেই নতুন ধর্মের জন্ম দেন। আশির দশকে অনেককেই দেখেছি লেনিনকে ঈশ্বরের মত ভক্তি করতে। সোভিয়েত ইউনিয়নে তিনি ছিলেন সমালোচনার ঊর্ধ্বে। নব্বুইয়ের দশকে শুরু হয় লেনিনের ব্যক্তি জীবনের বিভিন্ন দিক বিশেষ করে খারাপ দিক উন্মোচনের পালা। এখন সেটা তেমন আর হয় না বললেই চলে। তবে আগে তাঁর যেসব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জিনিয়াস বলে মনে করা হত তার অনেক কিছুই আজ প্রশ্নের মুখোমুখি। অনেকের ধারণা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের বীজ জাতীয়তাবাদ ও আন্তর্জাতিকতা সম্পর্কিত তাঁর কিছু সিদ্ধান্তের

সুব্বোৎনিক

Image
আগামী শনিবার রাশিয়ায় সারা দেশব্যাপী সুব্বোৎনিক। প্রতি বছর এপ্রিলের এই সময়টায় এখানে সুব্বোৎনিক করে। মূলত এসময় বরফ প্রায় গলে যায়, গাছে গাছে বসন্তের আগমনী বার্তা। তাই পুরানো পাতা সরিয়ে নতুনকে বরণ করতেই এই ব্যবস্থা। সোভিয়েত ইউনিয়নে এই সুব্বোৎনিকের নাম ছিল লেনিন সুব্বোৎনিক। এখন আর সে নাম নেই। তবে কাকতালীয় ভাবে এবার সুব্বোৎনিক হবে ২২ এপ্রিল লেনিনের জন্মদিনে। রাশিয়ায় বর্তমানে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক কিছুই ধীরে ধীরে হলেও ফিরে আসছে। অনেক দিন বিস্মৃতির আড়ালে থাকার পর সেই সময় আবার একটু একটু করে ফিরে আসছে জীবনে। সে সময় ভালো অনেক কিছুই ছিল, তবে খারাপের পরিমাণও কম ছিল না। ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে শুধু ভালোটাই গ্রহণ করা যায় না। মন্দ অনেক কিছুও চলে আসে। আসল কথা ভালো আর মন্দের অনুপাত কত। দেখা যাক। ২০ এপ্রিল ২০২৩

গুন্ডার লজিক

Image
যেকোন সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা যখন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিশ্বাস করে যে তারা যাই করুক না কেন এজন্যে তাদের কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে না। এরা যে কোন ধরণের অন্যায় করা তাদের অধিকার মনে করে। প্রায় সব সমাজেই এটা কমবেশি দেখা যায়। তবে যখন কোন দেশ বা জোট এটা করে তখন সারা বিশ্বের নাভিশ্বাস উঠে। আমেরিকা কখনোই আন্তর্জাতিক আইন স্বীকার করে না। এ কারণে আমেরিকা বা তার সহযোগীরা মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে যেকোন দেশের উপর আক্রমণ চালায়। নিজেদের স্বার্থে যেকোন মানুষ বা দেশকে বলির পাঁঠা বানায়। আজকাল ইউরোপ আমেরিকার অনেকেই পুতিনকে হত্যা করার আহ্বান জানায়। তাদের ধারণা সমস্যা ন্যাটোর সম্প্রসারণে নয়, সমস্যা এক তরফা ভাবে নিজেদের মতাদর্শ অন্যান্য দেশের উপর চাপিয়ে দেয়ায় নয়, সমস্যা সেই সব নেতায় যারা এটা মানে না, এর প্রতিবাদ করে। যেন প্রতিবাদ না থাকলে কোন সমস্যা নেই। এই সূত্রে বিশ্বাস করলে দেখা যাবে পাকিস্তানের দুঃশাসন নয়, বঙ্গবন্ধুর কারণেই পাকিস্তান ভেঙেছে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হল পশ্চিমা বিশ্বের অনেক নেতা বিশ্বাস করে পুতিনকে হত্যা করা হলে সব সমস্যার সমাধান হবে, এখানে কেউ আর এর প্রতিবাদে তাদের উপর আঘা

সময়

Image
অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে সত্য হলেও পরনিন্দা, পরচর্চা, ঈর্ষাকাতর হবার প্রবণতা আমাদের সব দেশে অনেকটা মহামারীর মত। যারাই জন্মসূত্রে, বর্ণে বা সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে নিজেদের শ্রেষ্ঠ মনে করে তারা অন্যদের সামান্যতম সাফল্যও হজম করতে পারে না। শুরু হয় কুৎসা রটানো। নিজেরা ভালো হয়ে না যারা ভালো তাদের নিশ্চিহ্ন করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখাই এদের লক্ষ্য। এর ফলে অন্যদের ক্ষতি তো হয়ই, এ সমস্ত লোকেরা সমাজের যে অংশের প্রতিনিধিত্ব করে সেটাও পচে যায়।বিদ্যানন্দকে ঘিরে বর্তমান কার্যকলাপ সেটাই মনে করিয়ে দেয়। মস্কোর পথে, ১৬ এপ্রিল ২০২৩

একজন জাফরুল্লাহ চৌধুরী

Image
সমালোচনা মানে শুধু দোষ ধরা নয়, সমালচনা কোন সমস্যাকে নতুন ভাবে দেখতে শেখায়, অনেক ক্ষেত্রে নতুন পথ দেখায়, নতুন সমাধান দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সমালোচনা গ্রহণ করে না। এটাই রাজনীতির বড় দুর্ভাগ্য। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সেই রকম একজন মানুষ যিনি সমালোচনা করতে ভয় পেতেন না, আবার বিভিন্ন কাজে সরকারকে সহযোগিতা করতেও পিছপা হতেন না। তিনি যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে ভূমি লিজ নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়েছেন, তেমনি এরশাদের সময় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নে অগ্রনী ভূমিকা রেখেছেন। একাত্তরে তিনিই জন্মভুমির ডাকে ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। করোনা কালেও তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সরকার ও দেশের মানুষের প্রতি। অনেক সময় রাজনৈতিক ভাবে ভিন্ন মত পোষণ করলেও দেশ ও মানুষের কল্যাণ - এটাই মনে হয় ছিল তাঁর জীবনের লক্ষ্য। যেকোনো দেশপ্রেমিক ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের মত তিনিও দলের উপরে দেশকে স্থান দিয়েছেন বলেই মনে হয়। এমন মানুষের প্রস্থান যেকোনো দেশের জন্যই ক্ষতিকর। আমরা যত তাড়াতাড়ি জীবিত অবস্থায় এদের মূল্যায়ন করতে শিখব ততই মঙ্গল। জাফরুল্লাহ চৌধুরীরা মরেন না, তার

ছোট্ট একটা প্রশ্ন

Image
যমুনার তীরে শ্বেত পাথরে তৈরি বিশাল তাজমহল দেখে তাবৎ দুনিয়ার মানুষ অবাক হয়ে চেয়ে থাকে ভাবে শাহজাহান আর মমতাজের অমর প্রেমের কাহিনী কিন্তু প্রেম কি ছিল? নাকি নিজের নাম চিরস্মরণীয় করে রাখার অদম্য ইচ্ছা? অবশ্যই সম্রাট শাহজাহানের। আচ্ছা কেউ কি ভাবে সেই সব দুর্ভাগা শ্রমিকদের কথা যারা নিজেদের রক্ত, কান্না আর ঘাম দিয়ে  তিলে তিলে গড়ে তুলেছিল এই ইমারত? শুনেছি তাদের নাকি মেরে ফেলা হয়েছিল। এসব তো গেল অতীতের কথা। ফিরে আসি আজকের কথায়। চারিদিকে উন্নয়নের জয়জয়কার। উন্নয়নের রথ এগিয়ে চলছে আলোর গতিতে। আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে উন্নয়নের কলাকুশলীদের নাম। একদিন সব বিশেষণ শেষ হয়ে যাবে তবুও তাদের বীরত্ব গাঁথা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু যাদের শ্রমে, যাদের ঘামে ঘুরছে উন্নয়নের চাকা তারা কি আদৌ সুরঙ্গের ওপারে ধরতে পারবে আশার আলো? মধ্যপ্রাচ্যের গরমে ঘেমে, ইউরোপ আমেরিকার শীতে জমে যারা একটু একটু করে গড়ে তুলছে উন্নয়নের ভিত তারা কি স্বপ্ন দেখতে পারছে সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের? অথবা পোশাকের কারখানায় শ্রমজীবী নারী যারা সারা বিশ্বকে সাজাচ্ছে নিত্যনতুন সাজে অথচ নিজের সন্তানের মুখে দু' বেলা ভাত তুলে দ

অনুভূতি

Image
আমরা কথায় কথায় উন্নয়নের কথা বলি, মধ্য আয়ের দেশের কথা বলি। নিজেদের তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নের মডেল বলে দাবি করি। ভারত ও পাকিস্তানের সাথে তুলনা করি। গর্বিত বোধ করি। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে বাহান্ন, একাত্তরকে আমরা বুকে ধারণ করেছিলাম বলেই। আমরা বঙ্গবন্ধুকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বলতে গর্ব বোধ করি। কিন্তু বাঙালি তো এই ভূখণ্ডে বসবাস করা মানুষ শুধু নয়, বাঙালি এক বিশেষ ঐতিহ্য, ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি, জীবনধারার ধারক ও বাহক। এখানে ভাত আর মাছের মতই বাউলের গান, ভাটিয়ালি, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, পয়লা বৈশাখ, একুশ একাকার। এর কোন একটা ত্যাগ করা মানে নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন করা। আর বাঙালি যদি না থাকে শ্রেষ্ঠ বাঙালি কি থাকবে? যদি পয়লা বৈশাখের মঙ্গল যাত্রা কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে মঙ্গল যাত্রা বন্ধ করা কি বাঙালির অনুভূতিতে আঘাত করে না? সরকার যদি এখনই এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান না নেয় তবে এই উন্নয়ন, এই ডিজিটাল বাংলাদেশ সবই অর্থহীন হয়ে যাবে।  মস্কো, ০৯ এপ্রিল ২০২৩

জীবন

Image
যেকোন সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল কোন একটা বিশেষ ধারণাকে ভালো বা মন্দের মাপকাঠি বানানো। মানুষ বহুমুখী। ভালোমন্দের ধারনা তাই একেক জনের একেক রকম। মূল কথা সেটা যেন অসামাজিক বা অন্যদের জন্য ক্ষতিকর না হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নে পার্টি সদস্য মানেই ভালো এমন একটা অলিখিত ধারণা ছিল। এটা ছিল তাদের ভালোমন্দ বিচারের অন্যতম মাপকাঠি। আমেরিকা ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে রাশিয়াকে মাপকাঠি বানিয়েছিল। দেশে ভালোর সার্টিফিকেট দেয়া হয় একজন নামাজ পড়ে কিনা তার উপর ভিত্তি করে। মেয়েদের ক্ষেত্রে সেই ভূমিকা পালন করে হিজাব। হয়তোবা এতে কোন সমস্যা হত না যদি না সমাজের একটা বিরাট অংশের মানুষ মনে করত নামাজ পড়লে বা হিজাব পরলে সাত খুন মাফ হয়ে যায়। ফলে প্রচুর মানুষ ধর্ম বা পর্দা পালন করার পরিবর্তে সেটা ব্যবহার করে ঠিক যেমন প্রচুর মানুষ সরকারি দলে যোগ দেয় দলের হাত শক্ত করতে নয় নিজের আখের গোছাতে। জীবন বহুমাত্রিক। একে খুব বেশি সরল করলে সেটা আর জীবন থাকে না।  দুবনা, ০৯ এপ্রিল ২০২৩

বন জীবন

Image
আমি সাধারণত এপ্রিলের শুরুতেই বনে যাই প্রথম ফুলের খোঁজে। এ সময় কিছু কিছু জায়গায় বরফ গলে যায় আর সেখান থেকে উঁকি দেয় দুই একটা ফুল। পয়লা এপ্রিল ঠিক তেমনটাই ঘটেছিল। গতকাল মানে ০৮ এপ্রিল যখন বনে গেলাম কিছু কিছু জায়গা পরিস্কার তারা ভরা রাতের আকাশের মত ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। অনেক লোকের আগমনে বন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। অনেকেই বারবিকিউ করছে। বসন্ত এসে গেছে।  দুবনা, ০৯ এপ্রিল ২০২৩

আমরা ও তারা

Image
এক সময় আমি ছেলেমেয়েদের বলতাম যে পৃথিবীর ৮ বিলিয়ন মানুষের কয়েক বিলিয়ন যেমন আমাদের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ঠিক তেমনি কয়েক বিলিয়ন মানুষ আমাদের চেয়ে খারাপ আছে। তাই যারা ভালো আছে তাদের দিকে তাকিয়ে নিজের অবস্থানের জন্য মন খারাপ করার আগে বাকি অর্ধেকের কথা ভেবে দেখা দরকার।  সমাজ বা দেশের অনেক কিছুই আমার পছন্দ হয় না এটা যেমন ঠিক তেমনি প্রচুর লোকজন আমার চিন্তা ভাবনা, আমার জীবন দর্শন অপছন্দ করে সেটাও ঠিক। আমার অপছন্দের পেছনে যেমন নিজের যুক্তি আছে তেমনি তাদের অপছন্দের পেছনেও তাদের নিজস্ব যুক্তি আছে। তাই কারো মুখ বন্ধ করার দাবি তোলার আগে যেন ভুলে না যাই আমার মুখ বন্ধ করার দাবি তোলার মানুষের অভাব নেই। সুযোগ পেলে তারাও একদিন সেটা করবে। তাই নিজের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্যে, নিজের নিরাপত্তার জন্য দরকার অন্যের বাকস্বাধীনতা, অন্যের নিরাপত্তার কথা ভাবা।  এক পরিস্থিতিতে আজ যারা তারা, বৃহত্তর বিপদের মুখে সেই তারাই আমরা। সবাই মিলেই বৃহত্তর মানব সমাজ তার সমস্ত দোষ গুণ নিয়ে। এই সহজ সত্যটা বুঝলেই শুধু অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যত গড়া সম্ভব। দুবনা, ০৮ এপ্রিল ২০২৩

প্রবৃত্তি

Image
মানুষ সাধারণত চারিদিকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার দিকে তেমন একটা নজর দেয় না যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটা সরাসরি তার গায়ে লাগে। এটা মনে হয় প্রাকৃতিক কারণেই ঘটে। যতক্ষণ না দমকা হাওয়া আমাদের আঘাত করে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা যেমন বাতাসের অস্তিত্ব নিয়ে ভাবি না এটাও সেরকম। অথবা এই যে আমি লিখছি আর তাতে যে দুই চার মিনিট সময় লাগল এর মধ্যেই আমরা মহাকাশে শত শত কিলোমিটার পেরিয়ে এসেছি চেয়ারে বসে সেটা কি আমরা অনুভব করি? করি না। এটা যে ঘটছে সেটাই বা কয় জন জানে বা ভাবে? রাজনীতি বা অর্থনীতি বা ধর্মের ক্ষেত্রেও তাই। উটকো ঝামেলা এড়াতে বা বলা যায় মানুষ যাতে বাঁকা চোখে না তাকায় সেজন্য আমরা অনেকেই উপাসনালয়ে যাই, অর্থনীতি যদি ভাতে না মারে তাহলে আমরা সেটাও মেনে নেই আর রাজনীতি যদি অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ না হয় তার বিভিন্ন ভুল ত্রুটি আমরা নানা যুক্তি দিয়ে ন্যায্য বলে চালিয়ে দিই। এটাই মানুষের চরিত্র। কিন্তু এক সময় যখন একটু একটু করে অপছন্দের জিনিসগুলো আমাদের দমবন্ধ করে দিতে শুরু করে অবাক হয়ে ভাবি এমনটা কেমন করে হল, সমস্ত দোষ চাপাই শাসকদের কাঁধে যেন আমাদের নিষ্ক্রিয়তা কোন ভূমিকাই রাখেনি বর্তমান পরিস্থি

প্রশ্ন

Image
গতকাল একটা রিপোর্টে দেখালো আগাথা ক্রিস্টির একটা বিখ্যাত উপন্যাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ শব্দ পশ্চিমা বিশ্বের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে সৈনিক শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। একই কারণে জেমস বন্ডের উপর বিভিন্ন মুভিতে পরিবর্তন আসছে। যেহেতু এটা দেখাল রুশ টিভি তাই এটা সত্য নাকি প্রপাগান্ডা সে ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত নই। ঐদিককার বন্ধুরা ভালো বলতে পারবে। তবে ইতিমধ্যে একই কারণে সাহিত্য ও সিনেমা শিল্পে বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে। তাই ধরে নেয়া যায় ঘটনা মিথ্যে নয়।  পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় মহাশ্মশান শব্দ গোরস্থান দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। এ নিয়ে যারা বিভিন্ন সময় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল তাদের অনেকেই এখন নিশ্চুপ। মনে হয় তাদের কাছে যা পশ্চিমা বিশ্বের তাই ভালো।  আমাদের বর্তমান অতীতের প্রতিফলন। যদি একে একে অতীতের সবকিছু অস্বীকার করতে শুরু করি তাতে এক সময় বর্তমানটাই হারিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া কপিরাইট বলে একটা কথা আছে পুঁজিবাদী সমাজে। সেটার কি হবে?  এই যে পরিবর্তন চলছে সেটা কি সাহিত্য, সংস্কৃতি এসব বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ তাদ