প্রবৃত্তি

মানুষ সাধারণত চারিদিকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার দিকে তেমন একটা নজর দেয় না যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটা সরাসরি তার গায়ে লাগে। এটা মনে হয় প্রাকৃতিক কারণেই ঘটে। যতক্ষণ না দমকা হাওয়া আমাদের আঘাত করে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা যেমন বাতাসের অস্তিত্ব নিয়ে ভাবি না এটাও সেরকম। অথবা এই যে আমি লিখছি আর তাতে যে দুই চার মিনিট সময় লাগল এর মধ্যেই আমরা মহাকাশে শত শত কিলোমিটার পেরিয়ে এসেছি চেয়ারে বসে সেটা কি আমরা অনুভব করি? করি না। এটা যে ঘটছে সেটাই বা কয় জন জানে বা ভাবে? রাজনীতি বা অর্থনীতি বা ধর্মের ক্ষেত্রেও তাই। উটকো ঝামেলা এড়াতে বা বলা যায় মানুষ যাতে বাঁকা চোখে না তাকায় সেজন্য আমরা অনেকেই উপাসনালয়ে যাই, অর্থনীতি যদি ভাতে না মারে তাহলে আমরা সেটাও মেনে নেই আর রাজনীতি যদি অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ না হয় তার বিভিন্ন ভুল ত্রুটি আমরা নানা যুক্তি দিয়ে ন্যায্য বলে চালিয়ে দিই। এটাই মানুষের চরিত্র। কিন্তু এক সময় যখন একটু একটু করে অপছন্দের জিনিসগুলো আমাদের দমবন্ধ করে দিতে শুরু করে অবাক হয়ে ভাবি এমনটা কেমন করে হল, সমস্ত দোষ চাপাই শাসকদের কাঁধে যেন আমাদের নিষ্ক্রিয়তা কোন ভূমিকাই রাখেনি বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি করতে। শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অনায়াসে হাজার হাজার মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিই। যদি প্রকৃতির অন্যান্য সবাই "সারভাইব্যাল অফ দ্য ফিটেস্ট" নিয়ম মেনে চলে মানব সমাজে এই ফিটেস্ট লোকেরা হয় ধূর্ত, স্বার্থান্বেষী, অনেক ক্ষেত্রেই প্রচন্ড হিংস্র। এটাই সাধারণ মানুষের জীবনে ডেকে আনে বিপর্যয়। মারামারি, হানাহানি, যুদ্ধ বিগ্রহ এসব আমাদের অন্তর্নিহিত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বাহ্যিক প্রতিফলন মাত্র। 

দুবনা, ০৬ এপ্রিল ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা