Posts

Showing posts from November, 2018

কথা

Image
জনসভা। লোকে লোকারণ্য। অরণ্যই বটে। আসলে যখনই অনেক লোকের জমায়েত তখন অধিকাংশ মানুষই নিজের ব্যক্তিস্বত্তা হারিয়ে সমষ্টির একজন হয়ে যায়। ঠিক যেন অরণ্যে গাছ একেকটা। বাতাসে সবার সাথে তালে তাল মিলিয়ে একই ভাবে মাথা দোলায়। বক্তব্য রাখছেন স্বনামধন্য এক জননেতা। ভোটের প্রত্যাশায় নির্দ্বিধায় বিলিয়ে যাচ্ছেন ঝুড়ি ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি।   ভাইয়েরা আমার, আপনারা জানেন আমি সারা জীবন আপনাদের সেবা করে গেছি, বিপদে আপদে সব সময় আপনাদের পাশে ছিলাম। (সে আর বলতে – সভায় দাঁড়িয়ে মনে মনে ভাবছে একজন। আমাদের যত যত দুর্যোগ সে তো আপনার হাত ধরেই এসেছে।) ......। যারা আপনাদের আকাশের চাঁদ এনে দিতে চায় আমি সে দলের নই। আমি নির্বাচিত হলে আপনাদের একেকটা করে গ্যালাক্সি উপহার দেব। (শুনেছি মহাবিশ্বে গ্যালাক্সির সংখ্যা নাকি বিলিয়ন বিলিয়ন, একটা কেন দশটা করে দিলেও ফুরোবে না – ভাবলেন জননেতা) (যাক গে, অবশেষে স্মার্টফোনটা বদলানো যাবে -   হাতে ধরা পুরনো স্যামসাঙ গ্যালাক্সির দিকে তাকিয়ে ভাবে এক যুবক) জননেতা বলছেন তো বলছেনই । ঘফদসগঝহাগদবদ্মকদ্ভহগআসভদসদন্সা হফজক্সঝকচ     আর মানুষ শুনছে তো শুনছেই। কথা তো নয় যেন মধু। সবাই যে যার মত দেখছে স্বপ

প্রদর্শনী

Image
কিছুদিন পর আমাদের ফটোগ্রাফি ক্লাব ফোকাসের ছবি প্রদর্শনী।   বেশ কয়েক বছর বাদে এবার আবারো প্রদর্শনী করছি। ২০০৬ সালে আমরা যখন ক্লাব প্রতিষ্ঠা করি প্রতি বছরই প্রদর্শনী হত। এটা ছিল অনেকটা পরীক্ষার মত। সারা বছর যা তুললাম, যা শিখলাম তাকে বাস্তব করা। তাছাড়া ছবি তোলা আর সেই ছবিকে ঠিক ভাবে প্রিন্ট করে প্রদর্শনীর যোগ্য করে তোলা – দুটো পুরোপুরি ভিন্ন ব্যাপার।   তবে গত তিন বছর হল তাতে পড়েছে। মূলত তখন এসবে সাধারণ মানুষের যত আগ্রহ ছিল এখন ততটা নেই। সামাজিক মাধ্যমের বদৌলতে সবাই ছবি দেখে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, কন্টাক্ট এসব জায়গায়। এমন কি বিভিন্ন ফটোগ্রাফির সাইট আজকাল মানুষ টানতে পারে না। ফলে অনেক সময়, পরিশ্রম আর অর্থ ব্যয় করে ছবি প্রদর্শনী করলেও দেখা যায় দর্শক হাতে গণা কয়েকজন। তাছাড়া আজকাল যেমন সবাই নেতা, সবাই লেখক, সবাই ফটোগ্রাফার। অন্যের লেখা পড়ার, অন্যের ছবি দেখার সময় কোথায়? তাই গত কয়েক বছর হল প্রদর্শনী করব কি করব না তা নিয়ে দ্বিমত ছিল। অনেকটা আমার উতসাহেই এবার হচ্ছে। লিখেছি শেষ কাগুজে প্রদর্শনী। আমরা প্রতি বৃহস্পতিবার ক্লাবে মিলি, গল্প করি, ছবি দেখি আর সেখান থেকেই ছবি বাছাই করি ভবিষ্যৎ প্রদর্শ

বোকা হওয়া অপরাধ

Image
আপনি কি নিজেকে বোকা মনে করেন? মনে করার কি আছে? আমি সত্যি সত্যিই বোকা। হুম! আপনি নিজেকে অপরাধী মনে করেন? সে আর বলতে! আমি শুধু বোকাই নই, অপরাধীও। বেশ। তা একটু খুলে বলবেন আপনি নিজেকে এমনটা ভাবেন কেন? এই দেখুন, সামনে নির্বাচন। আমি জানি প্রতিটি প্রার্থী মিথ্যে আশ্বাস দিচ্ছে। তাদের কেউ কেউ হয়তো সত্যিই বিশ্বাস করে একদিন তারা সেটা করতে পারবে, তবে রাতারাতি যে কিছু করতে পারবে না সেটাও জানে। আবার একদল জানে এটা কথার কথা। এরা কথা দেয়ই শুধু, কথা রাখতে জানে না বা বলতে পারেন কথা দিয়ে কথা যে রাখতে হয় সেটা মনেই করে না। তাদের ভাবটা এই, যা দিলাম তা আবার রাখার কী আছে? আবার আরও একদল আছে যারা আমাদের স্বপ্ন দেখিয়ে সেই স্বপ্নকে কিভাবে দুঃস্বপ্নে পরিণত করা যায় সেই ধান্দায় থাকে। এরা আমাদের সোনার থালায় ভাত খাওয়াবে বলে মুখের ভাত পর্যন্ত কেড়ে নেয়।   তারপরেও আমি ভোট দিতে যাই। তার মানে আমি সব বুঝেও তাদের বিশ্বাস করি। যে সব জেনেও ঠকতে রাজি সে বোকা না তো কী? কিন্তু এতে অপরাধের কী আছে? বা রে! এই যে আমি ভোট দিয়ে একদল মানুষকে মিথ্যুক এমন কি কোন কোন ক্ষেত্রে অপরাধী হতে সাহায্য করছি এটা কী অপরাধ নয়? একটু খেয়াল কর

উপদেশ

Image
অতিকায় এক ভিআইপি এসেছেন ওজন কমানোর পরামর্শ নিতে। চারিদিকে শহরের গন্যমান্য বিশেষজ্ঞরা বসে আছেন। একে একে তাঁরা তাঁকে পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তারঃ আপনাকে এই এই জিনিসগুলো চেক আপ করাতে হবে। তবে আপাতত এই ওষুধগুলো খান। চেক আপের পর সব দেখে নতুন ওষুধ দেব। তবে আগেই বলছি এটা খুব লেন্দি প্রসেস। ফিটনেস কোচঃ আপনি রেগুলার আমাদের ফিটনেস সেন্টারে আসুন। আমি নিজে আপনাকে দেখিয়ে দেব কী কী এক্সারসাইজ করতে হবে। কয়েক মাসেই সব ঠিক হয়ে যাবে। ডায়েট স্পেশালিষ্টঃ আপনাকে আপাতত এই এই খাবারগুলো মেনু থেকে বাদ দিতে হবে আর এই এই খাবারগুলো খেতে হবে। এক মাস পরে যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে অন্য ডায়েট দেব। ভিআইপিঃ তা তো বুঝলাম। কিন্তু আমি এত সময় কোথায় পাব বলতে পারেন? শর্ট কাট কোন রাস্তা নেই? এই বিশেষজ্ঞদের সাথে ছিলেন এক পদার্থবিদ। উনি এসেছিলেন ডাক্তার বন্ধুর সাথে দেখা করতে। পদার্থবিদঃ এক্সকিউজ মি। আমি এসব তেমন একটা বুঝি না। তবে ওজন নিয়ে কথা, তাই বলছি। আপনি চাঁদে চলে যান। তাৎক্ষণিক ওজনও কমবে আর সেই সাথে হাতে প্রচুর সময়ও পেয়ে যাবেন। যাকে বলে এক ঢিলে দুই পাখি মার

নীরবতা

Image
সেদিন টিভিতে একটা কথা শুনলাম, একজন নামকরা অভিনেতা বলছিলেন এক ইন্টার্ভিউয়ের সময় । কিছু কথা, কিছু বাক্য মনে দাগ কেটে যায় । ছোটবেলা থেকেই আমি চুপচাপ থাকতে আর একা থাকতে ভালবাসি । বলতে পারেন আমি অনেকটা নিজের প্রেমে মসগুল, নিজের সংগ, নিজের সাথে কথা বলা – এ গুলো সবচেয়ে বেশি পছন্দ । এমন কী একা একা খেলতেও । সেই ছোটবেলাতেই রাতে বিছানায় বসে একা একা মার্বেল, লুডু কত কী ই না খেলতাম । তাছাড়া বাড়িতে সে সুবিধাও ছিল । কেউ কখনও অযথা কিছু বলত না । সবাই একটু সময় পেলেই বই বা   খবরের কাগজ নিয়ে বসত। কেউবা সেলাই বা  অন্য কোন কা জে । ছাত্র জীবনেও আড্ডায় বসে কখন যে নিজের অজান্তেই বইয়ের ভেতর ঢুকে পড়তাম!     আমার নিজের ছেলেমেয়েরা যখন ছোট ছিল ওদের সাথে কথা বলা মূলত ছিল ছোটদের বিভিন্ন বই পড়ে শোনানো । ওরা না হলে রাশিয়ান শিশু সাহিত্য যে এতো সমৃদ্ধ সেটা জানাই হত না, যদিও আমার নিজের শিশুকাল কেটেছে ঠাকুরমার ঝুলি, মায়ের মুখে রূপকথা , রামায়ন, মহাভারতের গল্প আর রুশ দেশের উপকথা থেকে শুরু করে বিভিন্ন গল্প পড়ে । এখনও বাড়িতে আমরা যে আমরা খুব বেশি কথা বলি তা নয় । ছেলেমেয়েরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা না বলে বস