প্রদর্শনী
আমরা প্রতি বৃহস্পতিবার ক্লাবে মিলি, গল্প করি, ছবি দেখি আর সেখান থেকেই ছবি বাছাই করি ভবিষ্যৎ প্রদর্শনীর প্রার্থী হিসেবে। এ ভাবে বছর শেষে প্রত্যেকের পোর্টফলিওতে বেশ ছবি জমে। প্রদর্শনীর আগে সেখান থেকে ১০ – ১৫ তা ছবি বেছে নিই প্রিন্ট করার জন্য। এখানেই শুরু হয় আসল সমস্যা। স্ক্রীনে যা ভালো লাগে প্রিন্টে সেটা নাও লাগতে পারে। তাছাড়া প্রিন্ট করতে গিয়ে নানা সমস্যা। স্ক্রীনে দেখছি এক, কাগজে অন্য রকম। ফলে কোন কোন ছবির অনেকগুলো প্রিন্ট নিতে হয়। আর সেটা সময় সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল।
এইতো সেদিন গেলাম ছবি প্রিন্ট করতে। প্রিন্ট দেখে মনে হল কন্ট্রাস্টটা একটু বাড়ানো দরকার। ছবি এডিট করে আবার গেলাম। এবার মনে হল, লাইনগুলো একটু শার্প হলে ভালো হয়। আসলে উন্নতির কোন শেষ নেই। আমার শিক্ষক বলতেন গবেষকদের কখনই আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নেই। সেটা হলে কাজের বারোটা বাজলো। কোন কিছুই পারফেক্ট নয়। সেটাকে আরও ভালো করার জায়গা থাকে। আর সেই জায়গা থেকেই নতুন সত্যের, নতুন সুন্দরের সন্ধান করতে হয়। গবেষণা, লেখা, ছবি – যেকোনো কাজই তাই। নেশার মত। আরও ভালো করার নেশাটা যতদিন থাকে ততদিনই ভালবাসাটাও থাকে, থাকে সামনে চলার হাতছানি। এটাই জীবন। তবে সব কিছুরই অনেক ধাপ আছে। ধাপগুলো পেরুতে হলে সাময়িক বিরতি দরকার, দরকার কোন এক পর্যায়ে প্রাপ্ত ফলাফলে সন্তুষ্ট হওয়া। তা না হলে সারাজীবন শুধু শিখেই যেতে হবে, শিক্ষাটাকে কাজে লাগানোর সময়, সুযোগ, সাহস – কিছুই হবে না। দরকার দুটোই। শিখতে শিখতে করা আর করতে করতে শেখা।
স্ফুলিঙ্গ – আপাতত তিনটে প্রিন্ট নিলাম। জানি আরও ভালো করা যায়। তবে এটাও ঠিক সমস্যাটা আমি সন্তুষ্ট কিনা তাতে নয়, আমি সন্তুষ্ট হতে চাই কিনা তাতে।
দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০১৮
Comments
Post a Comment