Posts

Showing posts from July, 2023

সিপাহী

Image
আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ, যারা বিভিন্ন দেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে, তারা দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে আসে, যা দেশের অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদের অসাধারণ লোকজন যারা পশ্চিমা বিশ্বে শিক্ষকতা, গবেষণা, চিকিৎসা ইত্যাদি সাদা জব করে তাদের খুব কম অংশই দেশের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বা কাঠামোগত উন্নয়নে বা পরিবর্তনে অংশগ্রহণ করে। খুব ছোট একটা অংশ, যারা দেশের জীবনে অংশগ্রহণ করতে চায়, তারা মূলত সেটা করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এবং রেমিট্যান্স বা এসবের পরিবর্তে তারা আনে আইডিয়া। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব আইডিয়া যতটা না দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার বাস্তব পদক্ষেপ তার চেয়েও বেশি তাদের নতুন দেশের, নতুন মালিকদের কাছে রাজনৈতিক ভাবে দেশকে পরাধীন করার রূপরেখা বাস্তবায়নের নীল নকশা। আর এটা অনেকটা শ দেড়েক বছর আগে ভারতীয় ব্রাহ্মণ সমাজে প্রাপ্ত বয়স্কা মেয়েদের বিয়ের মত। কুলীণ বংশের ব্রাহ্মণের সাথে বিয়ে দিয়ে সমাজ ভাবত মেয়েটার একটি গতি হল। বাস্তবে তাকে কিছু দিনের মধ্যে সহমরণে পাঠানো হত। গণতন্ত্র মানে ইউরোপ আমেরিকার সাথে গাঁটছড়া বেঁধে চলা আর বিনা বাক্যব্যয়ে তাদের সব খেয়াল খুশি

পোশাক

Image
বৃটিশ ভারতে ভাইসরয় বা বড়লাট শুধু বৃটিশ সরকারের প্রতিনিধিই ছিলেন না, তিনি কার্যত রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। উপনিবেশের রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক সহ সমস্ত কাজকর্ম তাঁর অনুমতিক্রমে ঘটতো। এর বাইরেও স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক সঠিক খাতে প্রবাহিত করার জন্য মাঝেমাঝে আসতেন তাদের বিশেষ দূত। ইংল্যান্ডের সেই বিশাল সাম্রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে তাদের গৃহত্যাগী সন্তান আমেরিকা। উত্তরাধিকার সূত্রে তাই তারা দেশে দেশে নিজেদের রাষ্ট্রদূতদের ভাইসরয় মনে করে আর বিভিন্ন দেশের সরকারকে নিজেদের অনুগত রাখতে মাঝেমধ্যে সেসব দেশে বিশেষ দূত পাঠায়। কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না। গণতন্ত্রের হিজাব বা নামাবলী দেখতে যত সুন্দরই হোক না কেন ঔপনিবেশিক মনোভাব, চালচলন তা দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। দুবনা, ৩০ জুলাই ২০২৩

স্বার্থ

Image
গতকাল একজন আফ্রিকায় রাশিয়া ও চীন কর্তৃক বড় অংকের ঋণ মওকুফ করার কথা জানিয়ে এক স্ট্যাটাস দিলে একজন কমেন্ট করল যে রাশিয়া ও চীন স্বার্থ ছাড়া কিছুই করে না। উত্তরে স্ট্যাটাস দানকারী লিখল পৃথিবীতে স্বার্থ ছাড়া কেউই কিছু করে না। সবাই নিজের নিজের মত সঠিক। তবে এসব পড়ে কিছু কথা মনে পড়ল। একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য করার পেছনে ভারতের ও রাশিয়ার স্বার্থ ছিল। ভারতের জন্য চিরশত্রু পাকিস্তানকে দুর্বল করা আর নিজের পূর্ব সীমান্ত অপেক্ষাকৃত নিরাপদ করা। সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য এটা ছিল আমেরিকার বলয় থেকে পাকিস্তানের একটা অংশকে বের করে আনা। কিন্তু এদের স্বার্থ যা ই থাকুক না কেন বাংলাদেশ আজ স্বাধীন, অনেক ব্যর্থতা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে যাওয়া একটি দেশ। আবার ইরাক, লিবিয়া ছিল একনায়কের দেশ। আমেরিকা এসব দেশের মানুষের মুক্তির জন্য সেখানে বোমা ফেলেছে, সাদ্দাম গাদ্দাফিকে হত্যা করেছে। কিন্তু এই মুক্তির বিনিময়ে এসব দেশের মানুষ হারিয়েছে শান্তি, স্বাধীনতা, দেশ। তাই কারো নিঃস্বার্থ সাহায্য সব সময়ই যে মঙ্গল বয়ে আনবে তার কোন কারণ নেই। কিছু কিছু মানুষ প্রতিবেশীর

বৃত্ত

Image
সোভিয়েত আমলে একটা চুটকি ছিল এরকম ট্র্যাফিক পুলিশ এক গাড়ি থামিয়ে রীতিমত স্যালুট দিয়ে ড্রাইভারের লাইসেন্স দেখতে চাইল। ড্রাইভার একটু বিরক্ত হয়েই জিজ্ঞেস করল যে সে এমন কি করেছে যে তার গাড়ি থামানো হল। আপনারা দুজন মিলে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এটা আইনত দন্ডনীয়। তাই বলে আপনারা আমার গাড়ি ঘিরে ধরবেন?  এটার মাধ্যমে বোঝানো হত কে কতটুকু মাতাল। আজকাল প্রায়ই দেখি অনেকেই লিখছেন দেশের মানুষকে দুই দলীয় বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য। দেশের মানুষ কি দুই দলের মোহে এতটাই মত্ত যে বেরুনোর রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না। নাকি যারা আবেদন জানাচ্ছেন তারা এই দুই দলকে পাশ কাটিয়ে জনগণের কাছে যেতে পারছেন না, জনগণকে কোন গ্রহণযোগ্য বিকল্প দেখাতে পারছেন না।  দুবনা, ২৮ জুলাই ২০২৩

নির্বাচন

Image
সরকার পতন, নিরপেক্ষ নির্বাচন - এসব শ্লোগানে ভরে যাচ্ছে ফেসবুক। ব্যাপারটা এমন যেন সরকার পতনেই সব সমস্যার সমাধান নিহিত। অথবা নিরপেক্ষ নির্বাচনে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস নিরপেক্ষ নির্বাচন যদি হয় তাতে বড় জোর সরকার বদলাবে কিন্তু কোন সমস্যার সমাধান হবে না। দু দিন পরে আবার এই ইস্যুতে মাঠে নামবে সবাই। পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের রেওয়াজ নেই। আমাদের দেশের কোন সরকারই কখনও নিরপেক্ষ নির্বাচন করে না, খুব কম দেশেই করে। তাহলে? বিরোধী দলগুলো সরকারকে সহযোগিতা করতে পারে নির্বাচন যাতে যতদূর সম্ভব নিরপেক্ষ হয় সেটা করতে। আগেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। সেখানে সমস্যা ছিল বলেই ওখান থেকে সরে আসা। তাই ও পথে না গিয়ে নতুন পথ খুঁজতে হবে। নির্বাচনে সবাই প্রার্থী, সরকারি বা বিরোধী দলের ব্যাপার নেই। সব দল যদি সচেষ্ট হয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা সম্ভব। না হলে যেখানে যে দল শক্তিশালী সেখানে সে দুর্নীতি করবে। তাই সরকার বদলানোর আগে সব দলকে নিজেদের বদলাতে হবে। সেটা না করে সরকার বদলালে অরাজকতা দেখা দেবার সম্ভাবনা আছে। বাইরে অনেকেই সেটা চায়। কমবেশি স্বাধীন বা পশ্চিমা বিশ্বের উ

বৃষ্টি

Image
বাসা থেকে বেরুনোর সময়ই বৃষ্টির আগমন ধ্বনি শোনা যাচ্ছিল। তবুও বেরুলাম। ইচ্ছে ছিল বৃষ্টিতে কোথাও আশ্রয় নেব। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি এলো ফেরার পথে। মাথায় পড়তেই মনে পড়ল ছোটবেলার কথা। বৃষ্টি এলেই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়তাম ভিজব বলে। তখন বিশ্বাস করতাম বৃষ্টির জলে ঘামাচি ধুয়ে যাবে। গাছে ঢাকা পথে আসতেই কানে এলো পরিচিত শব্দ। বাঁশঝাড়ে বৃষ্টির সময় ঠিক এমন শব্দ হয়। শুধু টিনের চালে ওর ঝমঝম শব্দ মিস করছিলাম। বাসায় পৌছতে পৌছতে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়ল। আমি কাক ভেজা হয়ে সোজা স্নানঘরে।  দুবনা, ২৩ জুলাই ২০২৩

ভ্রম

Image
গণিতে একটা পদ্ধতি আছে যাকে বলে বিপরীত থেকে প্রমাণ। যেটা সঠিক নয় তাকে ঠিক ধরে বিপরীত সিদ্ধান্তে আসা। জীবনেও এরকম পদ্ধতি গ্রহণ করা হয় তবে যতটা না সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য তারচেয়ে বেশি নিজেদের ভুল সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণের জন্য। দেশে অনেক লোককে জানি যারা অনেক ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি সমর্থন না করলেও পাছে বিএনপি জামাত ক্ষমতায় আসে এই যুক্তিতে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। একই বিষয় দেখি বিশ্ব রাজনীতিতে। পাছে চীন বিশ্ব রাজনীতিতে প্রধান ফ্যাক্টর হয় এই ভয়ে অনেকেই আমেরিকার শোষণ দমন নিমপাতার রসের মত চোখ বন্ধ করে গিলে ফেলে। একই ঘটনা দেখা যায় বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে। পাছে প্রতিপক্ষ দল জেতে সেই ভয়ে প্রতিপক্ষের যোগ্য, সৎ প্রার্থীকে উপেক্ষা করে আমরা পছন্দের দলের অযোগ্য, দুর্নীতিপরায়ণ প্রার্থী বেছে নেই নিজের দল থেকে যোগ্য প্রার্থী দাড় করানোর জন্য লড়াই না করে বা দলকে দুর্নীতি মুক্ত না করে। এটাকে আমরা নিজেদের দূরদর্শিতা বলে ভাবি। আসলে এভাবে আমরা আমাদের মানসিক যন্ত্রনাকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করি। এ থেকে বেরুনোর উপায়? তৃতীয় শক্তির অপেক্ষা না করে নিজেই তৃতীয় শক্তি হওয়া। দুবনা, ২২ জুলাই ২০২৩

উপলব্ধি

Image
সেদিন মিশার সাথে দেখা। আমাদের দেখা হয় সাধারণত সাউনায়, ৯০ থেকে ১১০ ডিগ্রি গরমে। বৃষ্টি ভেজা সেই দিন তাপমাত্রা ছিল বেশ কম। হ্যান্ডশেক করেই জিজ্ঞেস করল  তুই কি মর্গ থেকে এলি?  আমি ওখানেই থাকি।  আসলে আমার হাত পা সব সময়ই ঠাণ্ডা থাকে। শীতে সমস্যা হয় না, তবে গ্রীষ্মে হাত মিলিয়ে অনেকেই চমকে ওঠে।  আমাদের এখানে কয়েকজন লোক আছে যারা শীতকালে টি শার্ট পরে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু গ্রীষ্মে ওদের দেখা যায় না। পরে দেখলাম, ওরা এখানেই থাকে, তখন সবাই টি শার্ট পরে বলে ওদের আলাদা করা যায় না। আমারও মনে হয় তাই। শীতে ঠাণ্ডা হাত জনতার ভিড়ে হারিয়ে যায়, গ্রীষ্মে ঠিক বেড়িয়ে আসে। দুবনা, ১৯ জুলাই ২০২৩

সোভিয়েত ইউনিয়ন

Image
আজ অনেকের স্ট্যাটাসে দেখলাম সোভিয়েত ইউনিয়নে ফিরে যাবার আকুতি। সোভিয়েত ইউনিয়ন কোন ভৌগলিক সীমারেখা নয়, এটা একটা আইডিয়া। লেনিন যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন তখন সেটাকে একটা দেশ নয়, একটা সংঘের রূপ দেন যেখানে যে কেউ যোগ দিতে যেমন পারবে তেমনি সেখান থেকে বেরিয়ে যেতেও পারবে। পরবর্তীতে মানুষ এর ভৌগলিক অবস্থানের প্রতিই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। ১৯৯১ সালে ভৌগলিক সোভিয়েত ইউনিয়নের মৃত্যু ঘটেছে কিন্তু ধারণা অমর। কালজয়ী মানুষ যেমন মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকেন তাঁর কর্মে, সোভিয়েত ইউনিয়ন তেমনি টিকে আছে মানুষের চেতনায় তার অনেক ভালো কাজের মধ্য দিয়ে। সেটা আবার কোন দিন ভৌগলিক রূপ পাবে কিনা, পেলে কোথায় পাবে সেটা ভবিষ্যৎ বলতে পারবে। তবে আমরা নিশ্চয়ই তার আগমনকে ত্বরান্বিত করতে পারি নিজেদের কাজকর্মের মধ্য দিয়ে। দুবনা, ১৮ জুলাই ২০২৩

গণতন্ত্রের ভূত

Image
পশ্চিমা বিশ্বের এস্টাব্লিশমেন্ট তাদের পথকে মনে করে সার্বজনীন যার কোন বিকল্প নেই। তাদের মতে সেই পথ এক ও অদ্বিতীয়। ঐতিহাসিক, ভৌগলিক, সামাজিক ও ধর্মীয় বিবেচনায় বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রথা চালু আছে। তারা সেটাকে স্থানীয় প্রথা বলেই মনে করে, কারও উপর চাপিয়ে দেয় না। পশ্চিমা বিশ্ব যদি সেভাবে চলত তাহলে হয়তো এ ধরণের অনেক সমস্যাই এড়িয়ে যাওয়া যেত। আসলে পশ্চিমা বিশ্বের এস্টাব্লিশমেন্ট তাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে আজ ইসলামী উগ্রবাদীদের মত সবার উপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে বলেই এত সমস্যা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে সম্মিলিত পশ্চিমা বিশ্ব তালেবান, আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেট থেকে শতগুন শক্তিশালী - তাই এর হাতে থেকে মুক্তি পাওয়া আরও কঠিন। নিজের বিশ্বাস অন্যের উপর জোর করে চাপিয়ে দেবার এই অদম্য ইচ্ছা পশ্চিমা বিশ্বের গণতন্ত্রকে আজ অসুস্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ও করছে। দুবনা, ১৩ জুলাই ২০২৩

উন্নয়ন

Image
গতকাল দ্মিত্রি সাইমস গ্রেট গেইম অনুষ্ঠানে বললেন ১৯৯৪ সালের রিচার্ড নিক্সন যখন রাশিয়া ভ্রমণ করেন তিনি তাঁর সফর সঙ্গী ছিলেন। রাশিয়ার উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, বাজার অর্থনীতির যেসব বিষয় কোন মতেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয় সেগুলো রেখে রাশিয়ার উচিৎ হবে নিজের দেশের ইতিহাস, ভৌগলিক অবস্থান, সামাজিক সম্পর্ক, ধর্মীয় ঐতিহ্য সেসবের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। অন্ধভাবে পশ্চিমা মডেল অনুকরণ করলে সেটা কোন ভালো ফল বয়ে আনবে না। রাশিয়ার এলিট শ্রেণি নিক্সনের উপদেশ গ্রহণ করেনি। আসলে আমরা অধিকাংশ মানুষই অন্ধ ভাবে কোন সফল ব্যক্তি বা দেশের অনুকরণ করে নিজেরা সফল হতে চাই। কিন্তু সাফল্য সব সময় নিজের চেষ্টা দ্বারাই অর্জন করতে হয়, অন্যের দেখানো পথে হলেও নিজের মত করেই সেই পথে চলতে হয়। সাফল্যের কোন শর্ট কাট রাস্তা নেই। তাই যেকোনো মানুষ বা দেশকে নিজের পারিপার্শ্বিকতার সাথে খাপ খাইয়েই উন্নয়নের পথ দেখতে হবে। তা না হলে উন্নয়ন হয়তো হবে, তবে সেটা কতটুকু দেশের সাধারণ মানুষের জন্য আর কতটুকু কিছু লোকের জন্য - সে প্রশ্ন থেকেই যাবে। দুবনা, ১১ জুলাই ২০২৩

বাঁধন

Image
আমাদের ধারণা দাস প্রথা অনেক আগেই বিলোপ হয়েছে। আসলে দাস প্রথা এখনও শেষ হয়নি। শুধু ধরণ বদলে গেছে। আগে দাসদের ধরে নিজেদের খরচে আনত পশ্চিমা বিশ্ব, এখন আমরা দেশের জনগণের টাকায় শিক্ষা লাভ করে নিজেদের টাকায় এসব দেশে আসি বেশি দামে নিজেদের বিক্রি করার জন্য। এসব আমরা করি স্বেচ্ছায়, নিজের, বিশেষ করে সন্তানদের কথা ভেবে। কিন্তু একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখব এটাও আমরা করি ওদের রাজনীতির কারণে। উপনিবেশ ছাড়ার সময় ওরা এমন সব ব্যবস্থা করে গেছে যে মানুষ ইচ্ছে করেই দেশত্যাগ করে ওদের দেশে আসে ওদের অর্থনীতি সচল রাখার জন্য। আগে উপনিবেশের রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করতে, আজ এসব দেশের অনেক রাজনৈতিক দল অতীতের প্রভুদের কাছে ধর্ণা দেয় ক্ষমতার জন্য। এখন শুধু ওরা আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি এসব নিয়ন্ত্রণই করে না, ইচ্ছেমত নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। আগে বাঁধন চোখে পড়তো এখন সেটা চোখে দেখা না গেলেও আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন। আর এর কারণ আমরা নিজেরাই নিজেদের বেঁধে রাখি বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন অজুহাতে। দুবনা, ১০ জুলাই ২০২৩

সংজ্ঞা

Image
এটা রাগ নাকি অভিমান? নাকি রাগের অপক্ক প্রহসন? নাকি আমরা রাগ করতেও ভুলে গেছি? একটা অপরিণত সিদ্ধান্ত ও তার অপমৃত্যু। কিছু কিছু খুশির খবরে খুশি হতেও দ্বিধান্বিত হতে হয়। বলা তো যায় না খুশির আমেজ শেষ হতে না হতেই  ছেলেমি রোগে শয্যাশায়ী মানুষ আবার ইউ-টার্ণ করে? সব মিলিয়ে নির্বাচনের পালে একটু উতল হাওয়া। জীবনটাই একটা খেলা। দুবনার পথে, ০৭ জুলাই ২০২৩

ভাষা

Image
গত সোমবার গ্র্যাভিটির উপরে একটা ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে অংশ নিচ্ছি মস্কোর বাউমান ইউনিভার্সিটিতে। সব মিলিয়ে ১৫০+ পার্টিসিপ্যান্ট - বেশির ভাগ অনলাইনে। ভাষা রুশ ও ইংলিশ ইনস্ট্যান্ট ট্র্যানস্লেশন সহ। অধিকাংশই ইংরেজিতে বলছে তবে কেউ কেউ বিশেষ করে বয়স্ক রুশ বা সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা রুশে। আমাদের সব দেশে উচ্চ শিক্ষা ইংরেজিতে হয় বলে লোকজন ইংরেজিতে বলে। এখানে সব ধরণের শিক্ষা মাতৃভাষায় হয় বলে অনেকেই রুশে বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য এটা ভালো না মন্দ সেটা বলতে পারব না। তবে বিভিন্ন দেশের কিছু কিছু লোক যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয় তাদের কথা বুঝতে কষ্ট হচ্ছিল। তবে এটাও ঠিক তারা নিজেদের ভাষায় বললে কিছুই বুঝতে পারতাম না মস্কো, ০৭ জুলাই ২০২৩

আমেরিকা

Image
গতকাল বিগ গেইম নামে অনুষ্ঠানে দ্মিত্রি সাইমস আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বেশ কিছু কথা বললেন। সোভিয়েত ইউনিয়নে জন্মগ্রহণকারী এই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ সত্তরের দশকে আমেরিকা চলে যান। আগে মূলতঃ এক্সপার্ট হিসেবে রাশিয়ার টিভিতে বিভিন্ন টক শোতে অংশগ্রহণ করলেও ইদানিং নিজেই একটা টক শোর হোস্ট। আমেরিকার স্বাধীনতার সনদ পড়ে শুনিয়ে তিনি বললেন সেখানে গণতন্ত্রের কোন কথা নেই। আছে বিদেশী শক্তির হাত থেকে স্বাধীন হবার কথা। কিন্তু আজ আমেরিকা নয় রাশিয়া, চীন, ভারত - এরা বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধে বলছে আর আমেরিকা সব দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে যেটা এই সনদের পরিপন্থী। আমেরিকা ইউক্রেনকে আজ এন্টি রাশিয়ায় পরিনত করেছে। কিন্তু নিজের অগোচরে আমেরিকার নিজের এলিট শ্রেণি বা শাসকেরা এন্টি আমেরিকায় পরিনত হয়েছে। এই সনদে ঘোষিত লক্ষ্য ও ফাউন্ডিং ফাদারদের উইল ও দল নির্বিশেষে বর্তমান আমেরিকার শাসকগোষ্ঠীর চিন্তাভাবনা আজ পরস্পরের বিপরীতে মেরুতে অবস্থান করছে। সব কিছু শুধুই স্লোগানে পরিণত হচ্ছে।  সত্য মিথ্যা বলতে পারবে যারা সেখানে থাকে তারা। তবে বিশ্বের প্রায় সব দেশই তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষিত লক্ষ্য থেকে

ঘাস

Image
গতকাল ভোলগার তীর ধরে হাঁটতে হাঁটতে বাসায় ফিরছি, একজন প্রশ্ন করলেন  কিসের ছবি তুলছ?  তাঁর বুকে ঝুলছে ক্যানন ক্যামেরা। বয়স্ক। সত্তর মত হবে।  ঘাসের?  ও! আমি ভাবলাম ওখানে কাঠবিড়ালি বসে আছে কিনা?  না না।  বলে আমি তাঁকে সেই ঘাস দুটো দেখালাম।  তুমি কি ইন্ডিয়া থেকে?  না। বাংলাদেশ।  একই কথা। আগে এক দেশ ছিল।  হ্যাঁ।  তোমাদের ওখানে এ ধরণের ঘাস হয় না?  হয় নিশ্চয়ই।  তাহলে? এতে ইন্টারেস্টিং কি আছে? আসলে প্রকৃতিতে সব কিছুই ইন্টারেস্টিং। আমরা নিজেরাও তো প্রকৃতির অংশ।  তুমি কি ইনস্টিটিউটে কাজ কর?  হ্যাঁ।  কোথায়?  ইনফরমেশন টেকনোলজি ল্যাবে।  আমি ভাবলাম থিওরিতে।  আমি থিওরি নিয়েই কাজ করি, কসমোলজির উপর।  কি নাম তোমার?  বিজন। বিজন সাহা।  আচ্ছা। তোমার প্রদর্শনীতে আমি গেছিলাম।   হ্যাঁ, অনেক আগের কথা।  আমার নাম ভ্লাদিমির, ভালদিয়া। মালিউক।  নাম শুনেছি।  আমি হাই এনার্জিতে কাজ করতাম। এখন পেনশনে।  আচ্ছা।  তুমি জান সাহা নামে আমাদের এক রিপাবলিক আছে?  জানি। আর বিজন নামে একাধিক নদী আছে।  কি ক্যামেরা তোমার?  ক্যানন আরপি।  আমার ক্যামেরাটা নষ্ট হয়ে গেছে, এখন এটা নিয়ে ঘুরছি। জানি না কোথায় মেরামত করা যায়।  আপনি বৃহস্পতিবার