স্বার্থ

গতকাল একজন আফ্রিকায় রাশিয়া ও চীন কর্তৃক বড় অংকের ঋণ মওকুফ করার কথা জানিয়ে এক স্ট্যাটাস দিলে একজন কমেন্ট করল যে রাশিয়া ও চীন স্বার্থ ছাড়া কিছুই করে না। উত্তরে স্ট্যাটাস দানকারী লিখল পৃথিবীতে স্বার্থ ছাড়া কেউই কিছু করে না। সবাই নিজের নিজের মত সঠিক। তবে এসব পড়ে কিছু কথা মনে পড়ল। একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য করার পেছনে ভারতের ও রাশিয়ার স্বার্থ ছিল। ভারতের জন্য চিরশত্রু পাকিস্তানকে দুর্বল করা আর নিজের পূর্ব সীমান্ত অপেক্ষাকৃত নিরাপদ করা। সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য এটা ছিল আমেরিকার বলয় থেকে পাকিস্তানের একটা অংশকে বের করে আনা। কিন্তু এদের স্বার্থ যা ই থাকুক না কেন বাংলাদেশ আজ স্বাধীন, অনেক ব্যর্থতা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে যাওয়া একটি দেশ। আবার ইরাক, লিবিয়া ছিল একনায়কের দেশ। আমেরিকা এসব দেশের মানুষের মুক্তির জন্য সেখানে বোমা ফেলেছে, সাদ্দাম গাদ্দাফিকে হত্যা করেছে। কিন্তু এই মুক্তির বিনিময়ে এসব দেশের মানুষ হারিয়েছে শান্তি, স্বাধীনতা, দেশ। তাই কারো নিঃস্বার্থ সাহায্য সব সময়ই যে মঙ্গল বয়ে আনবে তার কোন কারণ নেই। কিছু কিছু মানুষ প্রতিবেশীর শান্তিতে নিজের স্বার্থ দেখে। তাতে সে আরামে ঘুমাতে পারে। আবার কিছু লোকের এতে ঘুম কামাই হয়। সে ঈর্ষায় ঘুমুতে পারে না। তার দরকার প্রতিবেশীর বাড়িতে অশান্তি। এটা তাকে নিজের অবস্থানের সাফল্য সম্পর্কে কনফিডেন্ট করে। দিনের শেষে সবই দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। কারও জন্য লাভ অন্যের লোকসানের সাথে, জয় অন্যের পরাজয়ের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কেউ কেউ লাভ বা জয় দেখে একান্তই নিজের অবস্থানের পরিবর্তনের মধ্যে। 

দুবনা, ২৯ জুলাই ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা