Posts

Showing posts from October, 2019

দীপাবলি থেকে দেওয়ালী

Image
ছোটবেলায় যখন দীপাবলি আসত কয়েকদিন আগে থেকেই সাজ সাজ রব পড়ে যেত বাড়িতে, বিশেষ করে ছোটদের। আগে থেকেই বিভিন্ন রকম মোমবাতির জন্য বায়না, এরপর আবার পেঁপের ডগা রেডি করা যাতে পুড়ে শেষ হয়ে যাওয়া মোম থেকে নতুন, বড় মোমবাতি তৈরি করা যায়। আমাদের ঘর, জ্যাঠামশাই এর ঘর, গুদাম ঘর, কাছারি ঘর - এসবের মেঝে ছিল সিমেন্টের, তাই সেসব ঘরের চতুর্দিকে মোমবাতি জ্বালানর হিড়িক পড়ে যেত। আমরা ভাইবোন ছিলাম অনেকগুলো তাই আগে থেকে বলে রাখতে হত কে কোথায় মোমবাতি জ্বালাবে। রাতের আঁধারে মোমের আলোয় ঝলমল করে উঠত বাড়ি। বাড়িতে কালী পূজা হত না, তাই আলোর উৎসবই ছিল প্রধান আকর্ষণ। একবার মনে হয় কালী পূজা হয়েছিল আর এই উপলক্ষ্যে দাদাদের বন্ধুবান্ধবেরা একটা পাঁঠা বলি দিয়েছিল উমেশ কাকার তত্ত্বাবধানে (যদিও ঠিক মনে নেই সেটা কালী পূজাকে ঘিরেই হয়েছিল কিনা)। মাস খানেক আগে পাঁঠা কেনা হয়েছিল। আমাদের ছোটদের সেই পাঁঠাকে ঘিরে সে কি উতসাহ! আমরা আদর করে ওকে খাওয়াতাম। এক মাসেই খুব আপন হয়ে গিয়েছিল সে পাঁঠাটা। এখন অবশ্য এসবই শুধু স্মৃতি। ফেসবুক মনে করিয়ে দেয়। বন্ধুদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাই। তবে এখন কেউ খুব একটা দীপাবলি বলে না, বল

এক সকালের জীবন বৃত্তান্ত

Image
ভোরের ট্রেনটা অনেকটা অ্যালার্মের কাজ করে। প্রতিদিন কাকা ডাকা ভোরে ট্রেনটা যখন প্রচণ্ড অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাতাসের বুক ভেদ করে একটু একটু করে এগিয়ে যায়, সারা শহরটা যেন হঠাৎই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। জাহাজ চলে গেলে নদীর ঢেউ যেমন কূলে এসে আছড়ে পড়ে, কুকুরের ডাক, পাখিদের কোলাহল বা গাড়ির শব্দও ঠিক তেমনি ভাবে একের পর এক আছড়ে পড়ে ঘুম জড়ানো কানে। বিছানার অর্ধেকটা জুড়ে ঘুমুচ্ছে বইয়েরা। ওদের কেউ কেউ চোখ খুলেই ঘুমিয়ে আছে। অদ্ভুত সব কারবার। -        আচ্ছা, তুমি এই বইখাতা, কলম পেন্সিল, ক্যামেরা, কম্পিউটার এসব পাশে নিয়ে ঘুমোও, অসুবিধা হয় না। -        না, অসুবিধার কি আছে। এটা আমার জন্মগত অভ্যেস। বালিশের নীচে বইখাতা, কলম পেন্সিল সব সময়ই থাকতো। ক্যামেরা, কম্পিউটার এসব অবশ্য নতুন আমদানী, ছোটবেলায় আমার ঘুমের সাথী ছিল মার্বেল, লাটিম আরও কত কিছু। আসলে বুঝলে, আমি যখন অন্য কোথাও যাই, যেখানে সব কিছু ছিমছাম – আমি কী যেন একটা মিস করি। আজ হঠাৎ বুঝলাম এই বিশৃঙ্খলা আমি মিস করি। “আমি বিশৃঙ্খলার শৃঙ্খলে শৃঙ্খলিত।“ এর মধ্যে অন্য একধরণের মজা আছে। এটাকে ঠিক বলে বোঝানো যায় না, এটা অনুভব করতে হয়। রোদের আলো জানালায় টোকা দেয়।

ওয়েলকাম টু মাই ওয়ার্ল্ড

Image
১৯৯৭ সাল। ইন্ডিয়া যাচ্ছি পুনায় একটা কনফারেন্সে যোগ দিতে। বাংলাদেশ থেকেই যাচ্ছিলাম। ফ্লাইট ছিল রাত ৮ টার দিকে। এয়ারপোর্টে এসে দেখি আগের প্লেনটা ছাড়বে। বাংলাদেশ বিমানের লোকজন ডেকে বলল, "সীট আছে, চলে যান।" আমিও উঠে বসলাম। মনে হল যেন মিনিবাসে মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা যাচ্ছি। যাই হোক, কিছুক্ষন পরে (সত্যি বলতে মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা আসতে যত সময় লাগে তারও কম সময়ে) কলকাতার দমদম এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলাম। তারপরেই শুরু হল দম আটকানো কাহিনী। যেহেতু আমি দেশে ছিলাম মাত্র কয়েক দিন তাই ভিসার জন্য নিজে যাইনি, বন্ধু রকিব দালাল দিয়ে করিয়ে দিয়েছে। সেকালে দালালরাই ভিসা করত, এটাই ছিল অঘোষিত নিয়ম। এয়ারপোর্টে নেমে ফর্ম ফিল আপ করলাম। যেহেতু পুনা যাচ্ছি সেটাই লিখলাম। ঝামেলা হল ইমগ্রেশন পার হতে গিয়ে। সবাই বেরিয়ে গেছে, আমি দাঁড়িয়ে আছি তো আছিই। আমার অবশ্য তাড়া ছিল না। আমার দাদা জানে আমি পরের ফ্লাইটে আসব, তাই সেভাবেই এয়ারপোর্টে আসবে। আগে বেরুলেই কী, আর পরে বেরুলেই কী? এক সময় ইমিগ্রেশন অফিসারকে পাসপোর্ট দিলাম। উনি দেখে বললেন ভিসা নকল। - মানে? পাশের কাউন্টারে এক ছেলে দাঁড়িয়ে ছিল। ওকে দেখিয়ে বললেন

জ্ঞানের আঁধারে

Image
কিরে দোস্ত, কেমন আছিস? আমার কাজই ভালো থাকা। তুই কেমন আছিস? আমি মাঝে মধ্যেই দেশ বিদেশের বন্ধুদের কাছ থেকে এমন কল পাই। নিজে থেকে খুব একটা কল করা হয়না কাউকে। আসলে   ফোন করার অভ্যেস আমার কখনোই তেমন ছিল না। ছাত্রজীবনে অনেক চিঠি লিখতাম, লিখতাম চিরকুট। এখন সেটাও তেমন হয়না। ফেসবুকে বন্ধুদের পোস্টে লাইক দিয়ে জানিয়ে দেই বিগ ব্রাদার না হলেও আমি তাদের দেখছি, খোঁজ রাখছি। তবে বন্ধুদের কেউ কল করলে ভালো লাগে। কিছুক্ষণ মন খুলে কথা বলা যায়। কথা হয় অনেক বিষয়ে। নিজেদের নিয়ে , ছেলেমেয়েদের নিয়ে , পুরনো বন্ধু বান্ধব দের নিয়ে কথা হয়। কথার কি শেষ আছে ! কখনও কখনও কারও কারও খবরাদি পাওয়া যায় যাদের কথা বিগত প্রায় দু তিন দশক একবারও মনে আসেনি।   তাছাড়া বর্তমানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা তো আছেই। ফেসবুকে তোর লেখাগুলো পড়ি। কী হবে এসব লিখে?   জানি না। আসলে আমরা দেশ ছাড়লেও দেশ আমাদের ছাড়েনি। মনে পড়ে, বেশ কয়েকবার কোলকাতায় কোথাও দাঁড়িয়ে কথা বলছি, পাশে থেকে কেউ বলে উঠেছে « আপনি বাংলাদেশের? ওখানে আমার বাপদাদার বাড়ি ছিল » । আমাদের অবস্থাও তাই। এটা ভালো বা মন্দ নয়, এটাই জীবন। অনেক সময় বাড়িতে ফোন করলে জানায় পাড়া বা গ