দীপাবলি থেকে দেওয়ালী


ছোটবেলায় যখন দীপাবলি আসত কয়েকদিন আগে থেকেই সাজ সাজ রব পড়ে যেত বাড়িতে, বিশেষ করে ছোটদের। আগে থেকেই বিভিন্ন রকম মোমবাতির জন্য বায়না, এরপর আবার পেঁপের ডগা রেডি করা যাতে পুড়ে শেষ হয়ে যাওয়া মোম থেকে নতুন, বড় মোমবাতি তৈরি করা যায়। আমাদের ঘর, জ্যাঠামশাই এর ঘর, গুদাম ঘর, কাছারি ঘর - এসবের মেঝে ছিল সিমেন্টের, তাই সেসব ঘরের চতুর্দিকে মোমবাতি জ্বালানর হিড়িক পড়ে যেত। আমরা ভাইবোন ছিলাম অনেকগুলো তাই আগে থেকে বলে রাখতে হত কে কোথায় মোমবাতি জ্বালাবে। রাতের আঁধারে মোমের আলোয় ঝলমল করে উঠত বাড়ি। বাড়িতে কালী পূজা হত না, তাই আলোর উৎসবই ছিল প্রধান আকর্ষণ। একবার মনে হয় কালী পূজা হয়েছিল আর এই উপলক্ষ্যে দাদাদের বন্ধুবান্ধবেরা একটা পাঁঠা বলি দিয়েছিল উমেশ কাকার তত্ত্বাবধানে (যদিও ঠিক মনে নেই সেটা কালী পূজাকে ঘিরেই হয়েছিল কিনা)। মাস খানেক আগে পাঁঠা কেনা হয়েছিল। আমাদের ছোটদের সেই পাঁঠাকে ঘিরে সে কি উতসাহ! আমরা আদর করে ওকে খাওয়াতাম। এক মাসেই খুব আপন হয়ে গিয়েছিল সে পাঁঠাটা। এখন অবশ্য এসবই শুধু স্মৃতি। ফেসবুক মনে করিয়ে দেয়। বন্ধুদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাই। তবে এখন কেউ খুব একটা দীপাবলি বলে না, বলে দেওয়ালী বা দিউয়ালী। অনুষ্ঠানের সাজগোজ এখন অনেক বাড়লেও একে কেমন যেন দেউলিয়া দেউলিয়া মনে হয়। কে জানে, নামের কারণে নাকি ছোটবেলার মত সেই কল্পনা শক্তি আর নেই বলে।
দুবনা, ২৭ অক্টোবর ২০১৯

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি