Posts

Showing posts from 2023

শত্রু

Image
যাক, শেষ পর্যন্ত শত্রু চিহ্নিত করা গেল। নিজেকে অবাক করে আজ সকালে ফ্রাই প্যান পুড়লাম। খাবারদাবার প্রতিদিন পুড়ে সেটা না হয় মেনে নেয়া যায়, তাই বলে ফ্রাই প্যান? শত্রু কে? পড়া। আমি কোন কিছু পড়তে শুরু করলেই আশেপাশে সব ভুলে যাই। ভাগ্যিস নাক পড়তে পারে না। না হলে অনাহারে দিন কাটাতে হত। আজ অবশ্য পড়ার সাথে একজন মূর্তিমান মানুষ জড়িত ছিলেন। কবি আলোময় বিশ্বাস। বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবার ফলাফল - ফ্রাই প্যানের অকাল মৃত্যু। তবে কবিতাটি খাসা ছিল।  দুবনা, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

মালিক

Image
ডীপ স্টেট বলে সত্যিই কিছু আছে কিনা জানিনা না, তবে ডার্ক এনার্জি বা ডার্ক ম্যাটার তেমন মহাবিশ্বের বিবর্তনে প্রভাব ফেলে বিশ্ব রাজনীতিকে তেমনি প্রভাবিত করে এই তথাকথিত ডীপ স্টেট। অন্ততঃ আমেরিকার বিগত তিনটি প্রশাসনের কর্মকাণ্ড প্রশাসনের উপর বাইরের ব্যাপক প্রভাবের উপস্থিতি প্রমাণ করে। সেক্ষেত্রে আমেরিকা মূলতঃ ডীপ স্টেটের পুলিশ বাহিনী আর ক্ষেত্র বিশেষে এমনকি গুণ্ডা বাহিনীর ভূমিকা পালন করে। এই ডীপ স্টেটের নাটের গুরুরা নিজেদের শুধু পৃথিবীর অধিশ্বরই নয়, ঈশ্বর বলে মনে করে। আর তাই ইউক্রেন সহ ইউরোপ ও আমেরিকার অন্যান্য স্পুটনিক দেশগুলো গলা ছেড়ে গায় মালিক আমার ইচ্ছা বলে কিছু নাই তুমি যেমনি চালাও তেমনি চলি যেমনি বলাও বলি তাই তবে ঈশ্বরের সাথে ডীপ স্টেট তথা আমেরিকার পার্থক্য হল ঈশ্বর সর্প হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ঝাড়ে অন্য দিকে এরা ওঝার বেশে এসে সর্প হয়ে দংশন করে। দুবনা, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩

বাছাই

Image
এখন হয় কিনা জানিনা, তবে অনেক আগে ভারতীয় ক্রিকেট দল নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সব খেলোয়াড়দের দুই বা তিন দলে ভাগ করে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হত আর সেই টুর্ণামেন্টে পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে জাতীয় দল নির্বাচন করা হত। এবার বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সহি আওয়ামী প্রার্থী, ডামি আওয়ামী প্রার্থী, বিদ্রোহী আওয়ামী প্রার্থী ইত্যাদি দলে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনী টুর্ণামেন্টে অংশগ্রহণ করছে। আশা করা যাচ্ছে নির্বাচনে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে সত্বরই দেশে নতুন আওয়ামী পার্লামেন্ট ঘোষণা করা হবে। মস্কো, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ছবি মনিকা

পেট্রল পাম্প

Image
প্রথমে বারাক ওবামা ও পরে জন ম্যাককেইন রাশিয়াকে পেট্রল পাম্প বলে আখ্যায়িত করেন তেল ও গ্যাসের রপ্তানির উপর এদের অর্থনীতির খুব বেশি নির্ভরশীলতার কারণে। তবে সেই ওবামার রাজত্ব কালেই আমেরিকার তেল গ্যাস রপ্তানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। বর্তমানে ইউরোপ থেকে রাশিয়াকে সরিয়ে আমেরিকা পৃথিবীর বৃহত্তম তেল গ্যাস রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি। গত বছর তার রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২১.৬% যা সৌদি আরবের ১৮% ও রাশিয়ার ৬% বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে। এখন আমেরিকার সোনালী আঁশ তেল। শেষ পর্যন্ত নিজেই পেট্রল পাম্পে পরিণত না হয়। কারণ তেলের আয়ে মাথায় ও শরীরে তেল মাখানোর প্রলোভন খুবই মারাত্মক। দুবনা, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

সংগ্রাম

Image
আমরা ইউক্রেনকে যে সাহায্য দেই তার শতকরা নব্বই ভাগ আমাদের মিলিটারি কমপ্লেক্স পায়।‌ এটা আমেরিকায় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করে। আমাদের অর্থনীতি চাঙ্গা করে। ব্লিনকিন আমরা এখন অর্থ দিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্য করে রাশিয়াকে দুর্বল করছি। এটা আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের সেনাদের প্রাণ রক্ষা করছে। না হলে আমেরিকান ও বৃটিশ সেনাদের প্রাণ হারাতে হবে। ক্যামেরুন এর অর্থ ইউক্রেনের মানুষ মরুক, কষ্ট ভোগ করুক এ নিয়ে তাদের কিছু এসে যায় না। এর অর্থ ইউক্রেন যুদ্ধ না করলে পশ্চিমা বিশ্বেরই এই যুদ্ধ করতে হবে। এটাই মানবতা। এটাই গণতন্ত্র। তারা বলে তারা আসলে আন্তর্জাতিক আইন শৃঙ্খলা টিকিয়ে রাখার জন্য ইউক্রেনকে সাহায্য করছে। গণতন্ত্র রক্ষায় এই যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। কথাটা সত্য। তাদের কাছে আন্তর্জাতিক আইন শৃঙ্খলা মানে বিশ্ব রাজনীতিতে তাদের প্রাধান্য বজায় রাখা, গণতন্ত্র মানে দেশে দেশে নিজেদের নব্য উপনিবেশবাদ টিকিয়ে রাখা। বিশ্ব এখন শোষক ও শোষিত দুই ধরণের দেশে বিভক্ত। যতদিন না শোষিত দেশগুলো এক হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে ততদিন এটা চলতেই থাকবে। এই লড়াই কঠিন কারণ অধিকাংশ দেশের ধনিক শ্রেণী ও এলিটদের এক বড় অংশ এক্ষেত্র

বোকা

Image
কিছু কিছু বোকামি অনেক দিন ভোলা যায় না। কাজান গেলে আমি চেষ্টা করি ঘোড়ার মাংস খেতে। কোন কোন জায়গায় সেটাকে ঘোড়ার মাংস না বলে ঘোড়ার ডিম বলাই যুক্তি সংগত। যাহোক গতকাল শেষ লান্চটা করলাম ঘোড়ার মাংস দিয়ে। রুটির ভেতরে শসা, টমেটো আর নরম ঘোড়ার মাংস - বেশ মজার খাবার। দামও সহনশীল। ৩০০ রুবল। সাথে সাধারণত চা নিই, ৩৫ রুবল দিয়ে। গতকাল কি ভেবে কাপুচিনো চাইলাম যদিও গত কয়েকদিন ধরে প্রেসারের দৌড়ঝাঁপে সেটা না করলেই ভালো হত।‌ ছোট্ট এক কাপ কাপুচিনো দিয়ে যখন ১৭০ রুবল নিল তখন নিজেকে ভীষণ বোকা মনে হল আর ঘোড়াটাকেও খুব সস্তা মনে হল। কুড়ি ঘন্টা কেটে গেছে কিন্তু বোকা বোকা স্বাদটা এখনও মুখে আটকে আছে। মস্কো, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩

উত্তরাধিকার

Image
মারা গেলেন হেনরি কিসিঞ্জার। অবশ্য এরা মরে কোথাও যায় না, গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে যুগ যুগ ধরে জ্বালিয়ে যায়। জ্বালায় সারা বিশ্বের মানুষদের। আজকে বিশ্বের যে বেহাল তার পেছনে ভদ্রলোকের অবদান মোটেই কম নয়। এমনকি নিজ দেশেও যে অরাজকতা তার দায়িত্ব তিনি এড়াতে পারবেন না। এটা ঠিক যে তার কুটনৈতিক তৎপরতা শেষ পর্যন্ত আমেরিকাকে স্নায়ু যুদ্ধে বিজয়ী করেছে। কিন্তু জয়ী হওয়া আর বিজয়মাল্য বরণ করা এক নয়। ডাকাতও লড়াইএ জেতে কিন্তু বিজয়ী হয় না। আজ আমেরিকার কুটনৈতিক দেউলিয়াপনা কিসিঞ্জারের লিগ্যাসি। ব্লিনকেন, হাস বা অন্যান্য মার্কিন কূটনীতিকদের দেখে মনে হয় দলীয় কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। স্বর্গে ওনার ঠাই হবে না, আশা করি নরকও তার দ্বার খুলবে না। সাটল ডিপ্লোম্যাসি করেই না হয় কাটিয়ে দিক আমরণ। কাজান, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

বন্ধু

Image
কনফারেন্স মানে শুধু বিজ্ঞান চর্চা নয়, অনেকের সাথে পরিচয়। বিশেষ করে রাতে কয়েকজন মিলে রেস্টুরেন্টে যাওয়া, জীবনের গল্প করা। গল্পে গল্পে দেখা যায় নিজেদের অনেক কমন পরিচিত বন্ধু। আজ এমন একজনের সাথেই প্রথম আলাপ। রাতে কোথায় খাব ভাবছি। ও বলল বিয়ার ছাড়া ওর চলবে না। শেষ পর্যন্ত ছয় জন মিলে সেখানে গেলাম। গল্পে গল্পে জানলাম দুবনার আমার পরিচিত অনেকেই ওর ক্লাসমেট। এর মধ্যে একজন যে আমার পাশের রুমে বসত ১৯৯৬ থেকে ২০০২ পর্যন্ত, মারা গেছে। কার সাথে কিভাবে কখন যে পরিচয় হয়! ও নিজে একজন নামকরা বিজ্ঞানীর ছেলে, নিজেও ভালো কাজ করছে। যাদের কথা বললাম, মানে ওর বন্ধুদের বাবারাও নামকরা বিজ্ঞানী। আমার প্রায় সমবয়সী। এটাই বলে সোভিয়েত ইউনিয়নেও এভাবেই শ্রেণী তৈরি হয়েছিল। কারণ মানুষ সাধারণত নিজের পেশার লোকজনের সাথেই মিশত, বন্ধুত্ব হত তাদের সন্তানদের। তাই শ্রেণী সংগ্রাম করলেও দিনের শেষে অটোম্যাটিক্যালি শ্রেণী তৈরি হয়ে যায়। কাজান, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

শব্দ

Image
কাজানের ট্রেনে হঠাৎ করেই দু'জন প্রিয় মানুষের সাথে দেখা হয়ে গেল। কত কথা, কত গল্প। জীবনের সব গল্প যেন আজই শেষ করতে হবে। কথা বলতে বলতে একসময় গলা দিয়ে কি এক অদ্ভুত আওয়াজ বের হতে শুরু করল। কিছুতেই থামাতে পারছি না। ভয়েই ঘুম ভেঙে উঠে বসার অবস্থা। বেশ কিছুক্ষণ ধরে পরীক্ষা করে দেখলাম ঐ শব্দটা স্বপ্ন ছিল, নাকি সত্যি। একসময় আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। বন্ধুরা আর এলো না। সাড়ে সাতটার দিকে সহযাত্রীদের একজন আরেকজনকে বলল ইয়ং ম্যানের নাক ডাকার শব্দে রাতে তার ঘুম হয়নি। আমি অবশ্য গলা দিয়ে বেরুনো সেই শব্দের রহস্য উদ্ধার করতে পেরে খুশিই হয়েছি। গুলিয়া এ রকম অবস্থায় আমাকে ডেকে তোলে। আজ পাশে ও ছিল না। কাজান, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

বাড়ি নেই

Image
কথা হচ্ছিল কয়েকজন বন্ধুর সাথে। একজনকে প্রশ্ন করা হল আপনার বাড়ি কোথায়? আমার বাড়ি নেই। মানে? জন্ম বাংলাদেশে। তবে সেখানে আমাকে বলে হিন্দু। ভারতে গেলে বলে বাঙাল। তিরিশ বছর উত্তর আমেরিকায় আছি। ওরা বলে অভিবাসী। আরেক বন্ধু বলল তাকেও এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তখন নিজেকে সত্যি হিন্দু মনে হয়। তাহলে কি আমি সাম্প্রদায়িক? সম্যস্যাটা সারা বিশ্বের সংখ্যালঘুদের। আরেকজন বলল।  আমি আমার কোম্পানিতে একমাত্র বিদেশি। আমি কেন এই পদে সেটা অনেকেরই পছন্দ হয় না। এসব শুনে আমার মনে হল সমস্যা আবার সেই শাসক (শোষক) আর শোষিতের। যারা ক্ষমতায় আছে তারা সবসময়ই নিজেদের শ্রেষ্ঠ মনে করে। বৃটিশরা ভারতে সংখ্যায় কম ছিল তাই বলে তো নিজেদের হীন মনে করত না। যতদিন কেউ শাসকদের কথায় সায় দেয়, নিজেদের শোষণ করার অধিকার দেয় ততদিন সে অসাম্প্রদায়িক, সমাজে সমাদৃত। কিন্তু যখনই সে নিজের হিস্যা বুঝে পেতে চায়, সে সাম্প্রদায়িক, সমাজের জন্য ক্ষতিকর কেউ। আমাদের সবাই ছোটখাটো একেক জন একনায়ক। যতক্ষণ পর্যন্ত এটা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারব ততক্ষণ পর্যন্ত এসব চলতেই থাকবে, মানুষ একে অন্যের দ্বারা শোষিত হতেই থাকবে। অনেকেরই বাড়ি থা

যুদ্ধ ব্যবসায়ী

Image
জেলেনস্কির রাজনৈতিক দলের নেতা সংবাদ মাধ্যমকে জানাল যে গত বছর ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের এক সমঝোতায় আসে যার মূল কথা ছিল ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগ না দেয়া ও ফিনল্যান্ডের মত নিরপেক্ষ দেশ হওয়া। সে সময় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কিয়েভে এসে এই চুক্তি সাক্ষর না করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনের নেতৃত্বকে অনুপ্রাণিত করে। ফলাফল - পাঁচ লাখের মত ইউক্রেন সৈন্য নিহত, অনেক বেশি ভূমি হাতছাড়া, দেশের অর্থনীতি বিধ্বস্ত, দেশ ঋণে জর্জরিত, ইউরোপের অর্থনৈতিক মন্দা আর সারা বিশ্বের মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। এর জন্য কি বরিস জনসন নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হবে নাকি তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে? আমরা প্রায়ই অন্যএর বলে বলীয়ান হয়ে প্রতিবেশি, এমনকি নিজের ভাইবোনদের সাথে বিবাদে লিপ্ত হই, ভুলে যাই যে এসব তথাকথিত হিতাকাঙ্খীরা আসলে আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে নিজেরাই খেতে চায়, রেখে যায় ধ্বংস, মৃত্যু আর সীমাহীন কষ্ট। মস্কোর পথে, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

শ্রমিকরাজ

Image
বিভিন্ন দেশে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হলে আমেরিকা নাকি নাকি সেসব দেশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যাক, শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের এক যোগ্য উত্তরসূরি পাওয়া গেল। অনেক দিন থেকেই আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের সবচেয়ে খারাপ দিকগুলোর চর্চা করে আসছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নে যেমন পশ্চিমা মাধ্যমের গলা টিপে ধরা হত তেমনি এখন ওরা দ্বিগুণ উদ্যমে আরটি সহ বিভিন্ন রুশ মাধ্যম, এদের সাহিত্য, সংস্কৃতি এসব নিষিদ্ধ করছে। এখন তো ফিনল্যান্ড বর্ডার পর্যন্ত সীল করে দিতে চাইছে। সেই সময়ে শ্রমিকদের স্বার্থে কথা বলা - এ যে ভূতের মুখে রাম নাম। এখন শুধু বাকী বিভিন্ন দেশের কমিউনিস্ট ও সোস্যালিস্ট পার্টির নাম বদলিয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি রাখা আর মাঝে মধে বাইডেন, ব্লিনকিনের অতিথি হয়ে ওয়াশিংটন বেরিয়ে আসা। ওনারা যখন বলেছেন - মেহনতি মানুষের ভাগ্যে শিকে না ছিঁড়ে আর যাবে কোথায়? এরকম প্যাট্রন থাকতে শ্রমিকরাজ প্রতিষ্ঠা মনে হয় এখন সময়ের ব্যাপার। দুবনা, ২১ নভেম্বর ২০২১

সুর অসুর

Image
এ আর রহমান বিখ্যাত নজরুল গীতি কারার ঐ লৌহ কপাট গানে নতুন সুর আরোপ করেছেন। এই নিয়ে ফেসবুক তোলপাড়। একারণেই ইউটিউবে গানটি খুঁজে শুনলাম। মানুষ নতুন যে কোন জিনিস গ্রহণ করে তার অভিজ্ঞতার আলোকে। তাই চাই বা না চাই এ গানের মূল সুরের সাথে একটা তুলনা এমনিতেই চলে আসছিল। এই আপেক্ষিক মহাবিশ্বে আমরা তুলনা না করে কোন কিছু নিতে পারি না। এমনকি একই গান একাধিক শিল্পী গাইলে আমরা তাদের মধ্যেও তুলনা করি। এখানে তো একেবারেই ভিন্ন প্রেক্ষিত। নিজেকে প্রশ্ন করলাম যদি মূল সুরে গানটি শোনা না থাকত তাহলে এই সুর কেমন লাগত? যদি ভাষা না জানতাম হয়তো খারাপ লাগত না। কারণ গান শুধু সুর নয়, কথাও। সেই কথাগুলো কিভাবে বলছি তার উপর নির্ভর করে অর্থ। সুরের কারণে কিছু কিছু শব্দ একাধিক বার উচ্চারণ করায় আর ইনটোনেশন বা স্বর পরিবর্তন করায় বাক্যগুলো অর্থ হারিয়েছে বলে মনে হয়েছে। বাঙালি হিসেবে যে বিষয়গুলো আমার কাছে সামনে চলে এসেছে ভিনদেশীদের কাছে সেটা নাও হতে পারে। এ আর রহমানের অধিকার ছিল কি না এই গানে নতুন সুর আরোপ করার। আইনগত বাধা না থাকলে তিনি সেটা করতেই পারেন। দর্শক বা শ্রোতা গ্রহণ করবে কি না সেটা ভবিষ্যত বলতে পারবে। দিনের শেষ

ভয়

Image
ধর্ম ব্যবসায়ীরা যতটা না যুক্তি আর ভালোবাসা দিয়ে তারচেয়েও বেশি ভয় দেখিয়ে মানুষকে ধর্মের পথে আনতে চায়। আজকাল তথাকথিত গণতান্ত্রিক বিশ্ব চীন-রাশিয়ার জুজুর ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন দেশের মানুষদের পশ্চিমা গণতন্ত্রে দীক্ষিত করে। ঈশ্বর সর্বশক্তিমান। আমেরিকা, ইউরোপ সর্বশক্তিমান না হলেও পেশীর জোর একেবারে কম নয়। আমাদের দেশ দুর্বল। আরও দুর্বল দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। তবে তারাও ভয় দেখিয়েই জনগণের ভালোবাসা অর্জন করতে চায়। আর এফেক্ট যাতে তাৎক্ষণিক হয় তাই পোড়ে গাড়ি, পোড়ে মানুষের কপাল। তবে তারা ভালোভাবেই জানে যে ভয়ই মানুষের ভক্তি আর ভোট লাভের অন্যতম প্রধান অস্ত্র। দুবনা, ০৪ নভেম্বর ২০২৩

নভেম্বর ০৩

Image
বাংলাদেশ আজ জেল হত্যা দিবস পালন করছে। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই চার নেতার হত্যাকাণ্ড জাতিকে বিহ্বল করে তোলে। এরপর থেকে পদ্মায় অনেক জল গড়িয়েছে। দীর্ঘ সময় নিজেদের হাতে স্বাধীন করা দেশে অবহেলিত ও অনুচ্চারিত থাকার পর তাঁরা আবার মঞ্চে ফিরে এসেছেন স্বমহিমায়। এসব দিবস আমরা স্মরণ করি বা পালন করি শুধু তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্যই নয়, যাতে আর কখনও এ ধরণের ঘটনা না ঘটে সেই অঙ্গীকার নিয়ে। একটা জাতির জীবনে নেতাদের ভূমিকা অপরিসীম। যখন আমরা চার নেতার কথা স্মরণ করি তখন আমরা যেকোনো ধরণের রাজনৈতিক হত্যা তো বটেই, এমনকি যেকোনো ধরণের বিচার বহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধেই মত প্রকাশ করি। তবে জাতি শুধু নেতাদের দিয়ে গঠিত হয় না, জাতির প্রধান উপাদান তার জনগণ। তাই জাতীয় নেতাদের আমরা তখনই সম্মান দিতে পারব যখন সাধারণ মানুষের জন্য সুবিচার ও সুন্দর জীবন নিশ্চিত করতে পারব। ধর্ম, বর্ণ, ভিন্নমতের কারণে বর্তমানে দেশে বিভিন্ন স্তরের মানুষের উপর যেসব অত্যাচার, অনাচার বিভিন্ন মহল থেকে ঘটান হচ্ছে সেসবের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারব। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার স্মৃতি সাধারণ মা

ওজন

Image
আমি সোমবার সকালে ক্লাসে যাবার আগে স্নান করার সময় ওজনটা দেখি। না অন্য কারণ নেই, ওখানে সেভার ওয়েট মেশিন আর নিজের শরীরে পোশাকের বালাই নেই, তাই ওজন নেয়া। তাছাড়া ওজন নিলে শরীরে আর কতগুলো নতুন অসুখ বাসা বাধাল তার একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় আর সেভাবে ওদের খাবারের বন্দোবস্ত করা যায়। গতকালও তাই করলাম। অবাক হয়ে দেখলাম ৬২.৫ থেকে কমে ওজন হয়েছে ৪৯। একটুখানি ভড়কে গেলাম। এক সপ্তাহে এতটা ওজন নাই হয়ে গেল? টের পেলাম না। এতগুলো ব্যাক্টেরিয়া বিদায় না নিয়েই আমার দেহত্যাগ করল! মনে পড়ল ডাক্তার আমাকে এক বিশেষ মোজা পরতে বলেছেন। ভাবলাম কোন ওষুধের দোকান থেকে কিনে নেব। কিনতে গিয়ে মহা ঝামেলা। গোড়ালির একটু উপরে, হাঁটুর নীচে আর এর দুইয়ের মধ্যবর্তী স্থান যা সবচেয়ে মোটা তার মাপ নিতে হবে। তাও সকালে ঘুম থেকে উঠে। পরের সকালে সেটা করে আবার গেলাম। সেদিন অন্য মহিলা ছিলেন। মাপ বললাম ১৯.৫, ৩৩.৫ আর ৩১ সেন্টিমিটার। ও, আপনি বাচ্চার জন্য নিচ্ছেন। না, নিজের জন্য। কিন্তু এত ছোট মাপের জিনিস তো আমাদের নেই। তাছাড়া আপনাকে জানতে হবে কি জন্যে এটা নিচ্ছেন। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। আমার ধারণা ছিল আর কিছু হোক না হো

আনন্দ

Image
গতকাল সকাল সকাল অফিসে যাবার তাড়া ছিল, তাই ব্রেকফাস্ট করতে করতেই ভাত আর মাংস বসিয়ে দিলাম। ব্রেকফাস্টের পরে স্নান করতে যাওয়ার সময় গুলিয়াকে বললাম ওগুলোর দিকে একটু খেয়াল রাখতে। স্নানের শেষ পর্যায়ে পোড়া গন্ধ নক না করেই বাথরুমে ঢুকে পড়ল। গরুটা মাঠে মারা গেল মনে করে মনটা একটু খারাপ হতে শুরু করল। তবে কিছুক্ষণ পরেই বুঝলাম আসলে ভাতের কপাল পুড়েছে। বাথরুম থেকে বেরুতেই গুলিয়া বলল কুকুরদের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় চুল্লীর কথা ভুলে গেছিল। আমার কিন্তু ভালই লাগলো। ভাত মাংস শুধু আমারই অবাধ্য নয়, আমার বউকেও এক হাত নিতে ভুলে না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল আমার কিছু পুড়লে নির্দ্বিধায় বলি যে আমি ইচ্ছে করেই এই স্পেশাল রেসিপিটা ইউজ করেছি। বেচেরা গুলিয়া এখনও অজুহাত খোঁজে। ভাত মাংসই জীবনের শেষ কথা নয়। দুবনা, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

প্রতীক

Image
আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতীকের ছড়াছড়ি। সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকেই মানুষ প্রতীক ব্যবহার করে আসছে তার জানা আর অজানা দু'টোকেই প্রকাশ করার জন্য। এই যে আমি লিখছি সেটাও সেই প্রতীক ব্যবহার করেই। প্রতিটি অক্ষর যা একেকটি প্রতীক তা আমাকে সাহায্য করেছে আমার ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে। এই ভাবনা বা কল্পনা যখন আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটায় সেটা হয় জীবনের গল্প। অপুর সংসার লেখকের কল্পনাপ্রসূত হলেও তাতে পাঠক নিজের পরিচিত বাস্তবতাই দেখতে পায়। তাই এখানে কল্পনা আর বাস্তব একাকার হয়ে যায়। অন্যদিকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে মানুষ তার কল্পনার ডানায় ভর করে ভবিষ্যতে পাড়ি জমায় যার অনেক কিছুই একদিন বাস্তবায়িত হবে বলে সে বিশ্বাস করে। আরও কিছু কল্পনা সে বিশ্বাস করে তার ধরা ছোঁয়ার বাইরে তবে সেই কল্পনার কুশীলবরা তার ভাগ্যই শুধু বদলাতে পারে না, তার পরলৌকিক ভালোমন্দ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এই ঈশ্বর ও দেবতাদের ঘিরে তৈরি হয় ধর্ম যা তার কল্পনাকে অন্ধবিশ্বাসে পরিণত করে। তবে সব কিছুর মূলে রয়েছে প্রতীক। আর প্রতীককে বোঝার ও গ্রহণ করার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে কেউ হয় ভক্তিবাদী আর কেউ যুক্তিবাদী। মহিষাসুরের বি

সময়

Image
সকাল থেকেই ফেসবুক ছেয়ে গেছে বিজয়ার শুভেচ্ছায়। বার্তা আসছে ইনবক্সে। শুভেচ্ছা, শুভকামনার জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে ফেসবুক সাগর। সাধ্যমত লাইক বা উত্তর দিচ্ছি। কিন্তু একটা বিষয় আমাকে একটু দ্বিধায় ফেলছে। সময়ের হিসেবে সবচেয়ে দূরে হচ্ছে মানুষের ছোটবেলা। এই ষাট ছুঁই ছুঁই বয়সে সময়টা একেবারেই কম নয়। কিন্তু ছোটবেলার ঘটনাগুলোই আমার সবচেয়ে স্পষ্ট মনে আছে। কেন? মনে হয় তখন ঘটনা কম ঘটে, ঘটে স্লো মোশনে। তাছাড়া তখন মন অনেকটা সাদা কাগজের মত। সামান্য আঁচড়ও দাগ কেটে যায়। একটু বড় হলে ঘটনার ভিড়ে অনেক কিছুই হারিয়ে যায় বা গুলিয়ে যায়। সেই সময় আমাদের বাড়িতেও দুর্গা পূজা হত। সেসবের বিস্তারিত বিবরণ বিভিন্ন সময়ে দিয়েছি। আজ অন্য কথা। সেই সময় নদী ছিল জলবতী, এমনকি আমাদের বড় খালে ভরা বর্ষা। রামার ভিটা থেকে প্রতিমা নৌকায় তুলে নদীতে যেতাম বিসর্জন দিতে। আমাদের বাড়িতে বিসর্জনের জন্য একটা বড় নৌকা পর্যন্ত ছিল। মাইকে বাজত ঝিম না না ঝিম নানা ঝিম নানা ঝিম নানারে গাঙ্গে ঢেউ খেলে যায় কন্যা মাছ ধরিতে আয় জাল ফেলিতে যাইয়া কন্যা ডুবিস না বিসর্জনের পরে গোমড়া মুখে সবার বাড়ি ফেরা, যেন পরম আত্নীয় কাউকে বাসে তুলে বিদায় দিয়ে এলাম। জান

কথা ও সুর

Image
আজ ভার্সিটি থেকে বাসায় ফেরার সময় লুঝনিকি স্টেশনের (স্পোর্তিভনায়ার সাথে) বাইরে খোলের আওয়াজ পেয়ে একটু অবাক হলাম। সামনে গিয়ে দেখি কৃষ্ণ ভক্তরা নেচে নেচে গান গাইছে। তবে লোকজন তেমন উৎসাহ দেখাচ্ছে না। কি মনে করে দাঁড়িয়ে ছোট্ট ভিডিও করলাম।‌ আমার কৃষ্ণ কান্তি দেখেই মনে হয় রাধার মত একজন এগিয়ে এল বই হাতে। আমি বাসার দিকে হাঁটতে হাঁটতে ভাবলাম কেন ঐ সুর আমাকে আকর্ষণ করল না? মনে পড়ল দেশের কথা। সেখানে হরে কৃষ্ণ গানটি বিভিন্ন সুরে গাওয়া হয়। একদিন মানিকগঞ্জের লক্ষ্মী মন্ডপের ওখানে হঠাৎ "এক সাগর রক্তের বিনিময়ে" শুনে থমকে দাঁড়ালাম। ওরা ঐ সুরে হরে কৃষ্ণ গাইছিল। আসলে পরিচিত গানের কথার আগে সুর আমাদের কানে ঢোকে। মনে হল এরা যদি জনপ্রিয় রুশ গানের সুরে কথাগুলো বসাতো তাতে হয়তোবা অনেকেই দু মিনিটের জন্য হলেও দাঁড়িয়ে শুনত কথাগুলো। দুবনার পথে, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

গণতন্ত্র

Image
অনেক পুরানো এক গল্প মনে পড়ল। এক অবস্থাপন্ন গৃহস্থের বাড়িতে অনেকেই কামলা। ঐ কামলাদের মধ্যে একজন ছিল কানা। একদিন গৃহস্থ মাঠে গেল কামলারা কেমন কাজ করছে সেটা দেখতে।  মইটা এ ভাবে কে রাখল?  কানা।  এখানে আগাছা কাটেনি কে?  কানা।  গৃহস্থ যেখানেই ভুল ধরে সবাই বলে এটা কানার কাজ।  শোন সব ভুল যদি কানাই করে তার মানে তো সে একাই কাজ করছে। তোমাদের বেতন দিয়ে রাখব কোন দুঃখে?  সামন্ততান্ত্রিক বিশ্বে জমির মালিক চাইলেই এদের ছাঁটাই করতে পারে। গণতান্ত্রিক বিশ্বে সংখ্যার জোরে মালিককেও দরোজা দেখানোর সুযোগ থাকে। পশ্চিমা নেতাদের কোন কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলে পুতিনের দোষ। তাহলে তাদের বেতন দিয়ে পুষে কার কী লাভ? তাছাড়া তারা যেভাবে পুতিনকে সরানোর জন্য আদা জল খেয়ে লেগেছে, তারা কি কখনও ভেবে দেখেছে পুতিন না থাকলে তারা দোষ দেবে কাকে? একেই বলে যে গাছে বসে আছ সেই গাছেরই গোঁড়া কাটা।  সমস্যা হল এখানে ওরা ফাঁকিবাজ কর্মী আর পুতিন কানার ভূমিকায়। মালিক নেই। তাহলে? এখানে যদি কোন ভাবে ঈশ্বরকে সেট করা যায় তাহলে খেলা জমে। ফাঁকিবাজ বিধায় তিনি পশ্চিমা নেতাদের চাকরিচ্যুত করতে পারেন অথবা ওরা সংখ্যার জোরে ঈশ্বরকে গদিচ্যুত করতে পারে। কানা

পূজা

Image
ঠাকুর দেবতার প্রতি যতই ঔদাসীন্য থাকুক না কেন এদের কারণেই বছরে একবার হলেও বন্ধুদের দর্শন দেয়া হয়, যদিও বিনা দর্শনীতে। ওদের দেখাও অবশ্য পাই। এই তো আজ গেছিলাম ইস্কন মন্দিরে, এবারই প্রথম। অনেক পরিচিত মুখের সাথে দেখা হল, কথা হল। ভালোই কাটল সন্ধ্যাটা। আরো এক বছর জন্য বাঙালিত্বের নবায়ণ হল। এই সুযোগটা করে দেবার জন্য অসুরকে ধন্যবাদ। ভুল শোনেন নি, অসুরটা বাঁদরামি না করলে এই যুদ্ধও হত না, বিজয়ও আসত না আর মানুষও বন্ধুদের সাথে দেখা করতে আসত না দূরদূরান্ত থেকে। মস্কো, ২২ অক্টোবর ২০২৩

প্রতিবেশী

Image
পৃথিবীতে সবচাইতে কঠিন মনে হয় সহজ কাজ করা।‌আর এই সহজ কাজ করার আমাদের অপারগতা থেকেই জন্ম নেয় যুদ্ধ বিগ্রহ। সবচেয়ে সহজ প্রতিবেশীকে ভালোবাসা, বিপদে আপদে তার পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু আমরা কয় জন সেটা করি বা পারি? উল্টো কিভাবে তাকে ঠকানো যায়, তার জমিটা বা বাড়িটা দখল করা যায় সেই চিন্তায় মগ্ন থাকি। আমাদের ইর্ষা, আমাদের লোভ এসব কাজে আমাদের উৎসাহিত করে। এভাবেই মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে, দেশে দেশে লাগে যুদ্ধ। কিছু মানুষের লোভের বলি হয় অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ। যতক্ষণ না আমরা ইসরাইল বা প্যালেস্টাইনের শিশুর পাশাপাশি জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল পাশের বাড়ির শিশুকে ভালোবাসতে শিখব, তাদের আনন্দে উল্লসিত, দুঃখে ব্যথিত হতে শিখব, হাজারো মিটিং মিছিল, হাজারো জ্বালাময়ী বক্তৃতা - এ সবই হবে নিতান্তই আত্মতুষ্টি, সমস্যার সমাধান হবে না। মস্কোর পথে, ২২ অক্টোবর ২০২৩

চরিত্র

Image
এমনকি ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের আগে থেকেই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়াত, তবে বর্তমানে দুর্গা পূজা এলে নিরাকার সাম্প্রদায়িকতা সাকার হয়। আমার বিশ্বাস এই সমস্যা বাংলাদেশে যতটা না সাম্প্রদায়িক তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক। বাংলাদেশের কোন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ই দেশ, জাতি বা সমাজের জন্য হুমকি নয়। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে যেকোন মুহূর্তে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। তারপরেও সেটা করে না একান্তই রাজনৈতিক বিবেচনায়। রাজনৈতিক দল বা এলিট শ্রেণী কিছু কিছু সমস্যা জিইয়ে রাখে প্রয়োজনে তুরুপের তাসের মত সেটা ব্যবহার করার জন্য, দরকষাকষি করার জন্য। এই যে চার দিনের পূজায় মাত্র একদিন ছুটি, তাও আবার দশমীর দিনে, সেটাও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে। ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের প্রতি চরম ক্ষমাশীল আমাদের সরকারগুলোকে বিভিন্ন ধরণের সংখ্যালঘুদের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়ে নিজেদের "শক্তের ভক্ত নরমের যম" উপাধির সার্থকতা প্রমাণ করতে হয়। সেটা হয়তো ভোটের বাক্সে দুটো ভোট বেশি এনে দেয় কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সততা নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগও করে দেয়। রোস্তভ ভেলিকির পথে, ২১ অক্টোবর ২০২৩

নকলে ফেল

Image
জীবনে কখনও নকল করিনি। আসলে ছাত্রও জীবনে নকল করাকে অনেকটা পাপ বলেই মনে করতাম। এই নকল না করা নিয়ে অবশ্য কখনও কোন আক্ষেপও ছিল না। তবে আজ মনে হল নকল করতে শেখাটাও জীবনে গুরুত্বপূর্ণ, সেদিক থেকে আমি অজ্ঞই রয়ে গেছি। প্রীতম যেদিন দেশ থেকে দুবনা আসে, ওর ওখানে গেছিলাম দেখা করতে। ও বলল স্যার, একটু খিচুড়ি বসাই, একসাথে খাই। আমি যে আত্মসমালোচনা করতে খুব একটা পছন্দ করি তা নয় তবে একটা বিষয়ে নিশ্চিত - পৃথিবীর যে কেউই আমার চেয়ে ভালো রান্না করে। তাই লোভ সামলাতে পারলাম না। তাছাড়া খিচুড়ি নিজেও করতে পারি না। আমার অনেক দোষের একটা - অমনোযোগিতা, মানে যেকোনো কিছু করতে গিয়ে, যেকোনো আড্ডায় বসে নিজের চিন্তায় ডুবে যেতে পারি আবার কোন জিনিস মনোযোগ দিয়ে দেখতে পারি। তাই আমি বেশ গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য করলাম খিচুড়ি রান্নার পদ্ধতি। যেহেতু খাবারটা ভালো লেগেছিল তাই তখনই ঠিক করলাম এটা বাসায় করব। আজ সেটাই করলাম। তবে রেজাল্ট দেখে মনে হল আমি নকল করাটাও ঠিক মত শিখতে পারিনি, নকল পরীক্ষায় ফেল করেছি। তবে এতে করে আমার আরেকটা থিওরি প্রমাণিত হল - যে কেউই আমার চেয়ে ভালো রান্না করে। দুবনা, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

আশা

Image
একসময় বিভিন্ন অনলাইন আড্ডা হত। আজকাল সেসব প্রায় প্রাগৈতিহাসিক। একসময় বিভিন্ন মাধ্যমে অনেকের সাথে যোগাযোগ হত। এখন সেটাও প্রায় শূন্যের কোঠায়। এতে অবশ্য ভালোই হয়েছে। একাকীত্বের ঘনত্ব ও গভীরতা দুটোই বাড়ছে।‌ সেদিন দেশ থেকে এক বন্ধু অনুযোগ করল আজকাল তুমি কী সব লেখ তাতে সবাই বিভ্রান্ত। তুমি বাম না ডান, ধার্মিক না নাস্তিক কেউ কিছু বুঝতে পারে না। অনেকেই তাই গালিগালাজ করে।  তাই? করে তো বললাম।  তার মানে ওরা আমার লেখা পড়ে। সেটা কিন্তু ভালো খবর। কিন্তু গালি দেয় যে।  দেখ আমি কিছু না বলার চেয়ে গালি দেয়া ভাল কারণ একমাত্র মৃতদের সম্পর্কে নাকি খারাপ বলতে নেই। আমি যে বেঁচে আছি এই গালি তো তার জ্বলন্ত প্রমাণ। তারমানে এসব নিয়ে তোমার মাথাব্যথা নেই, বন্ধুদের মতামতের কোন মূল্য নেই? যাই বল, দু'টো ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। কোন ব্যাপারে? এই হাড্ডির ব্যামো, চুলের ব্যথা, পাইকারি খুচরা হাজারটা অসুখ সমাধি এ সব এক পলকে সারিয়ে দেবে এ ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নেই। আর? এখন যারা সমালোচনা করে, গালি দেয় মরার পরে অনেক ভালো ভালো কথা বলবে। জান তো সব ভালো যার শেষ ভালো। তাই নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন উদ্বেগ নেই। মস্কো

পাল্লা

Image
ফেসবুকে এরকম একটা পোস্ট দেখেছিলাম - যে সবার আগে কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের খবর অন্যদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে সে বোনাস হিসেবে অনেক পুণ্য অর্জন করবে। পুণ্যের জন্য কিনা জানি না, তবে অনেকেই অনেক সময় অনেক খবর এখানে প্রকাশ করেন যা পরবর্তীতে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল অনেক সময় অনেকে অনেকের মৃত্যুর খবরও আগাম প্রকাশ করে। ফলে শুধু তাদের পরিবার পরিজন নয়, অনেক শুভানুধ্যায়ীরাও অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে। আজ এরকম এক খবর বেরিয়েছিল প্রফেসর অমর্ত্য সেনকে নিয়ে। পড়ে ওনার কন্যা সেটাকে খণ্ডিত করে ফেসবুকে লেখেন। আসলে এসব খবর শুধুমাত্র অতি আপন জন বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন সংগঠনের কাছ থেকে আসাই শ্রেয়। আমরা যারা শুভানুধ্যায়ী তারা সব সময়ই সে জন্য শোক প্রকাশের সুযোগ পাব। দুবনা, ১০ অক্টোবর ২০২৩

বিশ্বাস

Image
অনেককেই মাঝেমধ্যে এমনটা বলতে শুনি - আমি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি। - আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। - আমি ভগবানে বিশ্বাস করি না। আমার মনে তখন প্রশ্ন জাগে গণতন্ত্রে, সমাজতন্ত্রে বা ভগবানে বিশ্বাস করা বা না করার মধ্যে আদৌ কি কোন পার্থক্য আছে? এসবই তো শুধু কোন কিছুতে বিশ্বাস, যার আকার নেই বা যার আকার প্রত্যেকের নিজের নিজের মত করে গড়া। যেমন তেত্রিশ কোটি দেবদেবী! দুবনা, ১০ অক্টোবর ২০২৩

কথোপকথন

Image
সিমিওন আর আমি সেই সকালে থেকে হাঁটছি। ছবি তুলছি। কখনো রাস্তায় তবে বেশির ভাগ বনে জঙ্গলে। বিজন, তোমার সমস্যা হচ্ছে না তো? পায়ের ব্যথা বলেছিলে। এখন কী অবস্থা? সমাধিই একমাত্র ভরসা। - আমি হেসে উত্তর দিলাম। একসময় চলে এলাম একটা মনাস্তিরের কাছে। তবে পেছন দিক থেকে। দেয়ালের গায়ে একটা ভাঙা জায়গা পেয়ে ঢুকে পড়লাম। দেখি সমাধিক্ষেত্র। মরার জন্য ভালো জায়গা। কষ্ট করে দূরে যেতে হবে না।  এজন্যই তো তোমাকে এখানে নিয়ে এলাম। - এবার হেসে উত্তর দিল সিমিওন। মস্কোর পথে, ০৮ অক্টোবর ২০২৩

ভোগ রোগ

Image
আজকাল প্রায়ই শোনা যায় আওয়ামী লীগ ভরে গেছে লীগারে যারা মুজিব কোটের বুক পকেটে গুঁজে রাখে অদৃশ্য ধানের শীষ। কথাটা কমবেশি সব দলের জন্যই সত্য। দলের আদর্শ ধারণ করার চেয়ে নিজস্ব রাজনৈতিক অভিলাষ পূর্ণ করার তাগিদ থেকেই যখন বিভিন্ন দলে ভিড় করে, দল ভারি করে। এটাও মনে হয় ভোগবাদের বাই প্রোডাক্ট, ক্রেডিটে হলেও নিজের মনোবাসনা পূর্ণ করার সংস্কৃতি। সাধারণত মানুষ ব্যাংকের থেকে লোন নিয়ে সাধ্যের অতীত জিনিস কেনে, এক্ষেত্রে আদর্শ লোন করে রাজনীতি করে আর প্রথম সুযোগেই নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে হাত-পা ধুয়ে নতুন আডভাঞ্চারে নামে। ব্যাংক যেমন ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও দুই হাতে ঋণ বিলিয়ে যায়, রাজনৈতিক দলগুলোও ক্ষমতার লোভের বশবর্তী হয়ে সবাইকে নিজেদের দলে টেনে নেয়, যা যেকোন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ভরা গাঙে দলের নৌকাডুবির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুজদাল, ০৫ অক্টোবর ২০২৩

মূর্তি

Image
বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের ফেস্টিভ্যাল হয়, যেমন অটাম ফেস্ট, রক ফেস্ট ইত্যাদি। দেশে হয় মূর্তি ভাঙ্গন ফেস্ট।  ছোটবেলায় ঠাকুর দেবতার গল্প শুনে বড় হয়েছি। ওদের আর যাই হোক ভয়ঙ্কর কিছু মনে হয়নি। সেই রোলের জন্য অসুর আর রাক্ষসরা ছিল। পরে ওল্ড টেস্টামেন্ট পড়ে দেখলাম ঈশ্বরের রাগি রূপ যাকে ভয় করতে হয়।  দেশে যারা পূজা করে তারা মূলতঃ ঈশ্বরকে ভালোবেসে সেটা করে। যারা ভাঙে তারা ভয় থেকে ভাঙে। এই যে ভয়, এটাও কি এক ধরণের উপাসনা? ডিপ্লোম্যাসিতে সফ্ট ফোর্স রলে একটা কথা আছে। মূর্তি ভাঙ্গা মনে হয় সেই সফ্ট ফোর্স যা দিয়ে প্রাণে না মেরে ভয় দেখিয়ে দেশকে হিন্দু শূন্য করা যায়। মস্কো, ০২ অক্টোবর ২০২৩

গাছ কাটা

Image
১৯৮৬ সালের গ্রীষ্মে সাইবেরিয়া যাই ছাত্র নির্মাণ দলে। ছিলাম বনের ভেতর এক ক্যাম্পে। আসলে এটা ছিল গুলাগ। মানে এক সময় সেখানে ভিন্ন মতাবলম্বীদের রাখা হত। প্রথম দিনই আমাদের টয়লেটে, বাথরুম এসব তৈরি করতে গাছ কাটতে হল। এখনও মনে পড়ে করাত দিয়ে গাছ কাটার সময় দড়ি দিয়ে টানছিলাম যাতে গাছটা খুশি মত না পরে যায়। দলের প্রধান বলেছিল গাছ শুধু কাটলেই হবে না, সেটা পরার সময় যাতে ক্ষতি না করে আর আমাদের কাজে আসে সেটাও দেখতে হবে। এখন দেশে সরকার ফেলানোর তোড়জোড় দেখে আমার সেই গাছ কাটার কথা মনে পড়ে গেল। বিরোধী দল সরকার ফেলতে চাইবে এটা স্বাভাবিক। তবে তার আগে ভাবতে হবে এই পরিবর্তন নির্দিষ্ট দলের জন্য কতটুকু সুফল বয়ে আনবে আর তাদের সাহায্যে সরকার ফেলে আরও বেশি প্রতিক্রিয়াশীল কেউ ক্ষমতায় আসবে না তো? অন্যের ঘরে ফসল তোলা কি আমাদের জন্য এতটাই জরুরি? দুবনা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

গল্প

Image
সামাজিক মাধ্যমের যুগে, যখন খুব সহজেই নিজেকে অন্যদের সামনে তুলে ধরা যায়, অধিকাংশ মানুষ চায় অপেক্ষাকৃত পরিচিত মানুষের সাথে ছবি তুলে সেসব পোস্ট করে সেই লোকের পরিচয়ে নিজেও একটু পরিচিত হতে। এরা প্রায়ই বোঝে না যে, নিজে পরিচিত হতে গিয়ে তারা আসলে সেই লোকটার পরিচিতি বা জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ এসব ছবিতে শুধু সেলিব্রিটির দিকেই তাকায়, তার আশেপাশের চ্যালা চামুন্ডার দিকে ভ্রূক্ষেপ পর্যন্ত করে না। ফলে এসব করে তেল মাথায় আরও তেল মাখা হয়, নিজের মাথায় ছিটেফোঁটাও পরে না। ছোটবেলায় ছেলেমেয়েরা বৃদ্ধদের মুখে বিভিন্ন গল্প শুনতে ভালবাসে। সবাই তাঁকে ঘিরে বসে থাকে, হা করে গল্প শুনে। শুধু কিছু কিছু দুষ্ট ছেলেমেয়ে, যারা সেই গল্পের মাঝে হইচই করতে পারে, তারা কিছুটা হলেও ফ্লোর পায়, বাকীরা সবার অগোচরেই থেকে যায়। পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা যখন এরকম আড্ডায় বসেন আর বাইডেন দাদু যখন তাদের পুতিন অসুরের গল্প শোনান, তখন তারাও মন্ত্রমুগ্ধের মত সেসব গল্প শোনে আর মাঝে মধে দুষ্ট ছেলে জেলেনস্কি অভিনয় গুণে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। তবে এখনও পর্যন্ত জেলেনস্কিকে ভিক্ষুর ভূমিকায় অভিনয় করতেই দেখা যায়, নায়ক নয়।

ভাবনা

Image
শুনেছি, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের কেউ কেউ ক্যানাডায় বাস করে। এখন আসুন এরকম একটি দৃশ্য কল্পনা করি যা মোটেই অসম্ভব নয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেগম জিয়া গেছেন ক্যানাডায় রাষ্ট্রীয় সফরে। মিঃ ট্রুডো ক্যানাডার পার্লামেন্টে তাঁর সম্মানে বিশেষ আয়োজন করেছেন এবং কোন কারণ বশতঃ বর্তমানে ক্যানাডার সম্মানিত নাগরিক বঙ্গবন্ধুর সেই খুনীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সেই লোক এক দলীয় শাসন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে ইত্যাদি বলে তার প্রতি সম্মান জানিয়েছে। পরে স্থানীয় বাংলাদেশী অভিবাসীরা এর প্রতিবাদ করলে মিঃ ট্রুডো তাদের অজ্ঞতার কারণে এরকম এক অস্বস্তিকর পরিবেশে ফেলার জন্য বেগম জিয়ার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অভিবাসী বাংলাদেশীরা এ নিয়ে রাজনীতি করছে বলেও এক হাত নিয়েছেন। ক্যানাডার পার্লামেন্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির আগমন উপলক্ষ্যে ঠিক এমনটাই ঘটেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হিটলার, মুসোলিনির অনুরাগী আর সেই সূত্র ধরেই যুদ্ধ শেষ অনেক নাৎসি, বিশেষ করে ইউক্রেনের বান্দেরাপন্থীরা সেদেশে আশ্রয় প

আত্মত্যাগ

Image
আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এই দিনে নর্থ স্ট্রীম ধ্বংস করা হয়েছিল। প্রথমে সমস্ত কমন সেন্সের বিরুদ্ধে গিয়ে আমেরিকা সহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার উপর এর দায় চাপায়। পরবর্তীতে পুলিৎসার পুরস্কার প্রাপ্ত আমেরিকান সাংবাদিক সেইমুর হের্শ প্রমাণ করেন যে এর পেছনে আমেরিকার হাত আছে। তবে আমেরিকা তার প্রথম ভার্সন থেকে সরে এসে এই ঘটনার পেছনে ইউক্রেন দায়ী বলে প্রচার চালায়। এরপরেও যে দেশ এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সেই জার্মানিও আমেরিকান ভার্সনে বিশ্বাস করে বা করতে বাধ্য হয়। বার বার আহ্বান করা সত্ত্বেও তারা রাশিয়ার সাথে যৌথ ভাবে তদন্ত চালাতে রাজী হয়নি। ফেসবুকে এরকম একটা পোস্ট প্রায়ই চোখে পড়ে “আগে মানুষ মিথ্যা বলতে ভয় পেত পাপ হবে বলে, এখন সত্য বলতে ভয় পায় বিপদে পড়বে বলে।” জার্মানি মনে হয় সেই বিপদে পড়ার আশঙ্কায় সত্য বলছে না যদিও তার শিল্পের ও অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে আর কত বিপদ হতে পারে সেটা ভাবনার বিষয়। এই বিস্ফোরণের ফলে শুধু রাশিয়া ও জার্মানির অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়নি, পরিবেশও প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে পরিবেশবাদীদের উচ্চবাচ্য নেই। কারণ কথায় আছে “যে পয়সা দেয় সেই নাচায়।” এরকম এক

ভিসা

Image
আমেরিকা ভিসা দেবে না বলে চারিদিকে কান্নার রোল। আমাদের জীবনে মার্কিন ভিসা কি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ? আমার তো মনে হয় বরং আমরা নিজেরাই আমেরিকার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সস্তা শ্রমিক, বিনে খরচে বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী হাজার হাজার বিশেষজ্ঞ। যদি আমেরিকায় অভিবাসী তৃতীয় বিশ্বের লোকজন কয়েক দিনের জন্য ধর্মঘটে যায় কল্পনা করতে পারেন দেশটার কি হাল হবে? কান্নাকাটি বাদ দিয়ে বয়কটের হুমকি দিন দেখবেন ওরা নিজেরাই ডেকে নেবে। নিজের দেশকে নিয়ে গর্ব করতে শিখুন। মেরুদণ্ড খুঁজে বের করার এই তো সময়। দুবনার পথে, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নাক

Image
অনেকেই এরকম অভিযোগ করে যে কাছের মানুষই সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয়। আসলে কাছের মানুষ কষ্ট দিলে ব্যথাটা আমাদের বেশি লাগে। তাই দেয় না পাই এ বিষয়ে ঐক্যমতে না এলে এই সমস্যা অমীমাংসিত থেকে যাবে। তাছাড়া অপরিচিত কেউ যদি গুন্ডা পান্ডা বা পাগল বা অভদ্র না হয় তাহলে পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া লাগাবেই বা কেন? কাছের মানুষের সাথে ইচ্ছা অনিচ্ছায় ওঠা বসা করতে হয়, অনেক কিছুই ভাগাভাগি করে নিতে হয় বিধায় মনোমালিন্য তথা মনোকষ্ট পাবার সম্ভাবনা থেকেই যায়। একই কথা প্রতিবেশী দেশের ক্ষেত্রে। এখানে ও ঐ একই রসায়ন কাজ করে। আমেরিকার কথা ভিন্ন। ও গুন্ডাদের মত সবার ব্যাপারেই নাক গলায়। মস্কোর পথে, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উন্নয়ন

Image
ছাত্রজীবনে যেসব বন্ধু আমেরিকায় বেড়াতে গেছে বা যাদের আত্মীয় স্বজন সেদেশে থাকত, ওদের মুখে শুনেছি সেখানে ক্রেডিট কার্ডের স্বাস্থ্য দিয়ে বিবেচনা করা হয় কে সফল আর কে ব্যর্থ এই জীবনে। এখন সেখানে কীভবে সাফল্য আর ব্যর্থতা মাপা হয় সেটা জানি না। তবে দেশে এখন যে অর্থই একমাত্র অর্থময় সেটা বুঝতে পারি। উন্নয়নের মূল কথাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। কারা সেই রিজার্ভকে খাইয়ে পরিয়ে মোটা তাজা করে? অল্প শিক্ষিত বা লেখাপড়া না জানা সেই সব মানুষ যারা আরব দেশগুলোতে কাজ করে আর একই ধরণের নারীরা যারা গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করে। অর্থাৎ দেশে যে উন্নয়নের মহোৎসব চলছে তার জ্বালানি থেকে শুরু করে চাল ডাল সব কিছু যোগান দিচ্ছে এই অল্প শিক্ষিত মানুষেরা। পক্ষান্তরে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করা মেধাবী তরুণ তরুণীরা হয় বিদেশে গিয়ে ক্যারিয়ার গড়ছে নয়তো দেশে চাকরি করে টাকা পয়সা, ছেলেমেয়ে সব বিদেশে পাচার করছে। এটা বাংলাদেশের ওভার অল চিত্র। তাই ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষায়তন না করে টাঁকশাল করতে চাইবেন তাতে অবাক হবার কী আছে? দল মত নির্বিশেষে আজ দেশের রাজনীতির ভেক্টরের দিক পুরোটাই অর্থ দিয়ে নির্ধারিত। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা রাজনৈতিক ভাবে এ

প্রশ্নোত্তর

Image
গত ১৬ সেপ্টেম্বর একটা এক্সকারশনে গিয়েছিলাম রোমানভ-বারিসোগ্লেবস্ক বা তুতায়েভ নামে ভোলগা তীরের এক ছোট্ট শহরে। বিভিন্ন গির্জা ঘুরিয়ে গাইড বললেন গির্জার দেয়ালগুলো প্রায় দেড় মিটার পুরু। কে বলতে পারবে কেন? যাতে ঈশ্বর পালিয়ে যেতে না পারে। - উত্তর দিলাম। না। যাতে শয়তান বা অপবিত্র শক্তি ঢুকতে না পারে। তাহলে তো শয়তানকে চার দেয়ালের মধ্যে আটকে রাখাই যৌক্তিক ছিল। শয়তানের হাত থেকে ঈশ্বরকে বাঁচাতে তাঁকেই বন্দী করলেন?  যদি বিজ্ঞানীর কাছে ঈশ্বরের পালিয়ে যাওয়া আর শয়তানের ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি হয়, ধার্মিক ঈশ্বরের পালিয়ে যাবার সম্ভাবনা ধর্তব্যের মধ্যেই নেয় না। তাছাড়া সাধারণ ভাবে সবাই নিজেকে চার দেয়ালের মধ্যে আটকে রাখার চেয়ে মুক্ত বাতাসে ঘোরাফেরা করাই বেশি পছন্দ করে যদি না সে নেট এডিক্টেড হয়। পরে বাসে বসে মনে হল এ জন্যেই হয়তো ভালো ও মুক্তচিন্তার মানুষদের জেলে ঢুকিয়ে খারাপদের হাত থেকে রক্ষা করতে চায় বিভিন্ন দেশের সরকার। ভালো মানুষ যদি অবাধ্য মানুষদের বুঝিয়ে পথে আনার চেষ্টা না করে সে ভালো থাকে কি করে? ঈশ্বর যদি শয়তানকে বুঝিয়ে তার দেবত্ব রক্ষা করার চেষ্টা না করেন তাহলে তিন

এশিয়া কাপ

Image
ভারতে ক্রিকেটারদের দেবতার আসনে বসানো হয়। কে শিবের ভক্ত আর কে বিষ্ণুর এই নিয়ে ভক্তদের মধ্যে রেষারেষি থাকলেও শিব, বিষ্ণু বা অন্যান্য দেবতারা মনে হয় একে অপরের বন্ধুই। একই ব্যাপার দেখি ক্রিকেটেও। ফ্যানরা কোহলি বড় না রোহিত বড় এসব নিয়ে বিতর্ক করলেও দলের মধ্যে পরিবেশ মনে হয় বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। রোহিত চাইলে আজ ওপেন করতে পারত, জয়ের রান তুলতে পারত, নিজের দশ হাজার রানের সাথে আরও কিছু রান যোগ করতেই পারত। কিন্তু সে দুই তরুণের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিল। ভারতের জয়ের পাশাপাশি এদের যে আত্মবিশ্বাস এর মধ্যে গড়ে উঠল সেটা সুদূরপ্রসারী। বাংলাদেশ দল এসব বিষয় থেকে শিক্ষা নিতে পারে। বিশেষ করে দলের ভেতরে দল না পাকানোর শিক্ষা। অশ্বিনের মত বোলার যখন দলে স্থান না পেয়েও সতীর্থ খেলোয়াড়দের বিজয় কামনা করে আমাদের অনেকেই কিন্তু সেটা পারেনি।  মস্কোর পথে, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রতিনিধি

Image
খেলোয়াড় হোক, কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, অভিনেতা, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ বা আমলা যেই হোক - কেউ যখন দেশের প্রতিনিধিত্ব করে তখন তাকে শুধু নিজের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হলেই হয় না সবদিক থেকেই ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হয়। ভালো খেলে একটা খেলায় জিতিয়ে দিলেও নারীবিদ্বেষী কথাবার্তা বলে দীর্ঘদিনের জন্য পুরো দলকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপাঙ্ক্তেয় করে তোলা যায়। এখনই সময় কঠোর ব্যবস্থা নেবার। তাতে দল ও খেলোয়াড় সবাই উপকৃত হবে। দুবনা, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভাবনা

Image
কোরবানির জন্য প্রস্তুত নাদুসনুদুস গরুটির চোখে অশ্রু দেখে ওকে শান্তনা দিয়ে একজন বলল, আনন্দ কর। দেখিস না কত লোক অধীর অপেক্ষা করছে তোর জন্যে? ক জন নিজের মরণে এত এত মানুষকে এত আনন্দ দিতে পারে? ওটা ওর আনন্দাশ্রু। - পাশ থেকে বলল আরেক জন প্রথম জনকে শান্তনা দিয়ে।  তোমরা চাইলেই নিজেদের পুরুষ বা মহিলা বা যেকোন লিঙ্গের ভাবতে পার। আর আমাদের বলছ মরণ যন্ত্রনা আনন্দ হিসেবে নিতে। চালাকি? মনে মনে ভাববে গরুটি। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওর সহযাত্রী গরুটি বলবে - এত ভাবিস না তো। পৃথিবীটাই এখন এরকম। তুই কি আর কি ভাবিস তাতে কি? তোকে কী ভাবতে বলা হচ্ছে সেটাই সুখের চাবিকাঠি। নিজেকে সংখ্যালঘু ভাববি না, শোষিত ভাববি না, উপরয়ালা আর উপরয়ালাদের কৃপা ধন্য ভাববি তাহলেই দেখবি জীবনটা আনন্দময় হয়ে যাবে, সুখের হয়ে যাবে। বাস্তবতা নয়, ভাবনাই আসল, স্বপ্নটাই আসল। দুবনা, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ছবি

বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন রকম শখ বা হবি থাকে। কারও কারও থাকে একাধিক শখ। পদার্থবিদ্যা আমার পেশা হলেও সেটাও সেই শখের মত। কেননা সেটা করে আনন্দ পাই আর বোনাস হিসেবে পাই বেতন। এর বাইরে আরও কয়েকটি শখের একটি হল ছবি তোলা। ছবি তোলার আনন্দে ছবি তুলি। বোনাস - অনেক বন্ধু আর অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী যাদের আমার ছবি ভালো লাগে। ভালভাষা পত্রিকার সম্পাদক শ্যামলেষ ঘোষ শ্যামল শুধু আমার লেখাতেই নয়, অন্য লেখাতেও আমার ছবি ব্যবহার করেন, সেটাও একটা বিশেষ পাওয়া। গতকাল তিনি একটি ভিডিও পাঠালেন সতীদাহ নিয়ে। ওটা দেখতে গিয়ে নিজের কয়েকটা ছবি আবিষ্কার করে খুব ভালো লাগল। বেশ তথ্যবহুল একটা ভিডিও। আপনারাও দেখতে পারেন। https://youtu.be/AuUPCedc0do?si=1spvAI44dXel-6NT

রূপ

Image
ছোটবেলায় কোথায় যেন পড়েছিলাম ঈশ্বরের আকার নেই বলে তিনি নিরাকার নন, তিনি ভক্তের সামনে যেকোন আকার ধারণ করতে পারেন বলে নিরাকার। এই একই কথা যে কোন আদর্শের ক্ষেত্রেও সত্য। একই জল যেমন পুকুরে, নদীতে বা সাগরে ভিন্ন রূপে ভিন্ন নামে প্রকাশ পায়, আদর্শ তেমনি উপস্থাপকের কারণে ভিন্ন ভাবে আসে মানুষের কাছে। ধর্ম হোক আর অন্য কোন আদর্শ হোক তার প্রকাশ মানুষ বা মানুষের তৈরি সংগঠনের মাধ্যমে। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র বা ধর্মের কথা বলে যেমন লিংকন, লেনিন বা যীশু আসে, তেমনি আসে জিয়া, পলপট বা মোল্লা ওমর। এসব উপস্থাপকই নির্ধারণ করে ধর্ম বা তন্ত্রের রূপ। সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা সমাজতন্ত্রকে ঠেকাতে গিয়ে পশ্চিমা পুঁজিবাদী ব্যবস্থা যে মানবিক রূপ নেয় সোভিয়েতের পতনের সাথে সাথে তাদের কাছে সেটার প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যায়। আজ বিশ্ব জুড়ে যে অরাজকতা, অস্থিরতা সেটা পুঁজিবাদের সেই আসল রূপে ফিরে যাবার কারণেই। এজন্যেই মনে হয় বিকল্প পথের কথা ভাবতে হবে যার ভিত্তি হতে পারে সোভিয়েত ব্যবস্থা মাইনাস তার আমলাতন্ত্র।  দুবনা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মানুষ

Image
বক রূপী ধর্মের "সবচেয়ে আশ্চর্যের কী?" এই প্রশ্নের উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেছিলেন "প্রতিদিন চারিদিকে এত লোককে মরতে দেখেও মানুষ নিজেকে অমর ভাবে এটাই সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের কথা।" ঠিক একই ভাবে অনেকেই প্রায় অন্ধের মত বিশ্বাস করে শুধু সোভিয়েত ইউনিয়নে আর এখন রাশিয়ায় প্রোপাগান্ডা আছে, পশ্চিমা বিশ্ব তথা আমেরিকায় কোন প্রপাগান্ডা নেই, সেখানে শুধুই সত্যের ছড়াছড়ি। তবে মালয়েশিয়ার বিমান, বুচা, ২০১৪ থেকে পশ্চিমা বিশ্বের ইউক্রেনকে অস্ত্র সজ্জিত করা রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য, নর্ড স্ট্রীম বিস্ফোরণ - এসব বার বার প্রমাণ করে কোনটা প্রপাগান্ডা আর কোনটা নয়, কাদের মগজ মিথ্যা তথ্যে ধোলাই করা হচ্ছে আর কারা কিছুটা হলেও মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারছে। রাশিয়ায় বসে এখনও ইউরোপ আমেরিকার খবর দেখা যায়, ওসব দেশে যতদূর জানি রুশ মিডিয়া নিষিদ্ধ। তবে যারা আমাদের রাশিয়ার মিথ্যাচারে হাবুডুবু খাওয়া মানুষ মনে করে তারা কবে যে নিজেরাই পশ্চিমা মিথ্যাচারে তলিয়ে গেছে সেটা বুঝতেই পারে না। এমনকি তাদের প্রিয় ও অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় নেতা কাম গুরুদের আলমারি থেকে একটার পর একটা কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ার পর

সতর্কতা

Image
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর এবার বাংলাদেশে আসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। মাঝে নয়া দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বাইডেনের সেলফি ও সুনাকের কথোপকথন। এসবের একটাই অর্থ - বিভিন্ন প্রশ্নে অপেক্ষাকৃত স্বাধীন মত ও পথ গ্রহণ ও প্রকাশকারী বাংলাদেশকে পশ্চিমা বিশ্বের নিজ বলয়ে নিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টা। তারা এখন সর্বশক্তি দিয়ে সেটা করার চেষ্টা করবে। চেষ্টা করবে দেশের অভ্যন্তরে অরাজকতা সৃষ্টি করতে যা তাদের সাহায্য করবে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার। তাই বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারে এমন কর্মসূচি কোন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের পক্ষে কতটুকু সঠিক সেটা ভাবা দরকার। কিছু কিছু প্রশ্নে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শক্তির অনমনীয় মনোভাব এই সাম্রাজ্যবাদের প্রবেশের পথ খুলে দিতে পারে। ছোট যুদ্ধে জিততে গিয়ে বড় যুদ্ধের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। মস্কো, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দায়

Image
সোভিয়েত ইউনিয়নে ভূমি ছিল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম আইন করা হয়। সেসব আইনে বিদেশিদের কাছে ভূমি বিক্রির ব্যাপারে বাধানিষেধ ছিল। ইউক্রেনও ব্যতিক্রম নয়। তবে জেলেনস্কির শাসনামলে তাড়াহুড়ো করে সেই আইন পরিবর্তন করা হয়। আর এই আইনের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ইউক্রেনের জমি কিনতে শুরু করে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে ইউক্রেনের মাটি, বিশেষ করে তার উর্বর ভূমির বেশিরভাগ পশ্চিমা কোম্পানিগুলো কিনে নিয়েছে। তাই ইউক্রেনের মানুষ তাদের দরকার নেই, দরকার জমির, মানে নিজেদের সম্পত্তির উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এর অর্থ ইউক্রেনের মানুষ প্রাণ দিচ্ছে নিজেদের জন্যে নয়, বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ভূমি উদ্ধার করার জন্য। তাই ইউক্রেনে যে শত শত বিলিয়ন ডলার খরচ করে পশ্চিমা বিশ্ব যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সেটা না ইউক্রেনের, না পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ মানুষের স্বার্থে - সারা বিশ্বের মানুষ এই যুদ্ধের ব্যয় বহন করছে টাকার পাহাড়ে বসে থাকা অল্প কিছু মানুষের সম্পদ রক্ষা ও বাড়ানোর জন্যে। তাই মানবাধিকার, গণতন্ত্র এসব মিষ্টি বুলিতে ভুলে পশ্চিমা সম্প

কেন

Image
ঘুম থেকে উঠেই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই লাভরভের  বাংলাদেশ সফরের খবর দেখলাম। রাশিয়ার বিভিন্ন চ্যানেলে লাভরভের শেখা হাসিনার সাথে সাক্ষাতের খবর, ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্প অর্পণ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাংদাবিক সম্মেলনের খবরও উঠে এল। যদি ভুল না করি সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ার এত উঁচু পর্যায়ের কোন কর্মকর্তার এটাই প্রথম বাংলাদেশ ভ্রমণ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তী উন্নয়নে এমনকি এখনও পর্যন্ত রাশিয়া যেভাবে আমাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় সেই বিবেচনায় এই সফর নিঃসন্দেহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।   এই খবর যখন দেখছিলাম তখন আমার মনে পড়েছিল মহাভারতের কথা। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ঠিক আগের মুহূর্তে কৌরব আর পাণ্ডব পক্ষ থেকে একের পর এক দূত যাচ্ছিল ভারতের বিভিন্ন রাজন্যবর্গের কাছে আসন্ন যুদ্ধে সমর্থন লাভের জন্য। তবে তখন অধিকাংশ রাজ্যই স্বাধীন ছিল এবং তারা নিজের খুশি মত পক্ষ বা বিপক্ষে যোগ দিতে পারত।  বর্তমানে অধিকাংশ দেশেরই সেই স্বাধীনতা নেই ফলে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় অনেককেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। তাহলে এই যে এত গণতন্ত্র, এত স্বাধীনতার কথা আমরা ব

বিচক্ষণতা

Image
আমরা এক্সিবিশনের জন্য প্রায় সারা বছর জুড়েই ছবি বাছাই করি। যখন কেউ তার সাম্প্রতিক কালের কাজগুলো দেখায় তখন পছন্দের ছবিগুলো একটা ফোল্ডারে রাখি। এরপর যখন এক্সিবিশনের ছবি বাছাইয়ের সময় আসে সেই ফোল্ডার থেকে বেস্ট অব দ্য বেস্ট বেছে নেই। এটাই যেকোন ক্ষেত্রে বাছাইয়ের স্বাভাবিক নিয়ম। তবে বর্তমানে রাজনীতিতে বাছতে হয় বেটার অব দ্য ওরস্ট বা মন্দের ভালো। আর এটাই যে কোন রাজনীতি সচেতন ও বিবেকবান মানুষের জন্য বড় সমস্যা। কারণ এখানে শুধু ব্যক্তি মানুষের নয়, দলের চরিত্রও মাথায় রাখতে হয়। আর বাছাই করতে হয় দুর্নীতি (সেটা কমবেশি প্রায় সবাই), স্বৈরাচার, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, স্বাধীনতা বিরোধিতা বা এসবের বিভিন্ন কম্বিনেশন ইত্যাদির মধ্য থেকে একটা। যদিও এদের কোনটাই গ্রহণযোগ্য নয় তবুও একটা বেছে না নিলে এদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ কম্বিনেশনের পাল্লায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এক মন্দকে না বলে এর চেয়ে বড় মন্দের খপ্পরে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, দুষ্ট গরুকে তাড়াতে গিয়ে মানুষখেকো বাঘকে আমন্ত্রণ জানানোর সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ নিজেদের ক্ষমতা বা সমর্থন নেই ক্ষমতা দখলের, অন্যদিকে ক্ষমতার নিজেরও ক্ষমতা নেই স্বাধীনভাবে

বুদ্ধি

Image
১৯৯৪ সালের ১৮ মে আমি যখন দুবনায় কাজে জয়েন করি তখন এখনকার মত ঘরে ঘরে কম্পিউটার, সেলফোন বা স্মার্টফোন ছিল না। মস্কোয় বউ, বাচ্চাদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল টেলিফোন। তবে সেটা ছিল ব্যয় সাপেক্ষ।‌ আমাদের ইনস্টিটিউটে তখন কিছু কিছু টেলিফোন ছিল যেখান থেকে বিনে পয়সায় মস্কো ফোন করা যেত, তবে সেটা ছিল খুব কম অফিসেই। আমি তখন যে অফিসে বসতাম তার উল্টো দিকে ছিল প্রফেসর বিলায়েভের অফিস। ওনার ওখানে এরকম একটা টেলিফোন ছিল। কখনো কখনো আমি ওখান থেকে মস্কো বাসায় ফোন করতাম।  সে বছর সামারে পের্ম থেকে কিছু কলিগ এল। আমরা বেশ রাতে ফিরতাম। একদিন দেখি ওরা বিলায়েভের অফিস থেকে ফোন করছে। তোমরা এখানে ঢুকলে কি করে?  ঐ রুমে তালা ছিল না, ছিল কোড। দীর্ঘ ব্যবহারে তিনটে নম্বর ঝকঝক করছে। বলল দেখ, এখানে মাত্র ছয়টি কম্বিনেশন। তাই তালা খোলা মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যাপার। দুবনায় কখনো তেমন গরম পড়ে না। বছরে সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন তাপমাত্রা ২৫ ছাড়িয়ে যায়। এসব দিনে ইচ্ছে করে এসি চালাতে। কিন্তু কুকুরদের সর্দি লাগবে বলে গুলিয়া সেটা চালাতে দেয় না। কয়েক দিন আগে গুলিয়া নীচে বাগানে কাজ করতে গেলে আমি দিব্যি সেটা চালিয়ে দ

রাজনীতি

Image
চন্দ্রায়ণ -৩ এর চাঁদে সফল অবতরণের পর সারা বিশ্ব যখন প্রশংসা মুখর তখন ভারতেরই কোন কোন রাজনৈতিক নেতা এই সাফল্যকে অবমূল্যায়ন করতে তৎপর। কেউ কেউ বলছেন এটা শিক্ষার অভাব। প্রশ্নটা শিক্ষার নয়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির। এখন কোথাও আর কেউ প্রতিপক্ষকে সামান্যতম স্পেস দিতে চায় না। তাই অন্যদের সাফল্য যেভাবেই হোক ছোট করে। শত্রুর অবমূল্যায়ন নিজের হেরে যাবার প্রধান শর্তগুলোর একটি। আরও একটা কথা। এ রকম মেগা প্রজেক্ট কারও একক কৃতিত্ব নয়, এর সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষ, সত্যিকার অর্থেই উঁচু মানের বিশেষজ্ঞ। তাই নিজের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে খোঁচা দিতে গিয়ে হাজার হাজার সফল মানুষের ইগো ও সম্মানে আঘাত করা রাজনৈতিক ভাবে অপরিণামদর্শী। তাছাড়া দেশের এ ধরণের সাফল্যে আন্তরিকভাবে খুশি হতে না পারলে এসব নেতাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে এটাই বর্তমান রাজনীতি - নাথিং পার্সোনাল, ওনলি বিজনেস। দুবনা, ২৪ আগস্ট ২০২৩