আত্মত্যাগ

আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এই দিনে নর্থ স্ট্রীম ধ্বংস করা হয়েছিল। প্রথমে সমস্ত কমন সেন্সের বিরুদ্ধে গিয়ে আমেরিকা সহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার উপর এর দায় চাপায়। পরবর্তীতে পুলিৎসার পুরস্কার প্রাপ্ত আমেরিকান সাংবাদিক সেইমুর হের্শ প্রমাণ করেন যে এর পেছনে আমেরিকার হাত আছে। তবে আমেরিকা তার প্রথম ভার্সন থেকে সরে এসে এই ঘটনার পেছনে ইউক্রেন দায়ী বলে প্রচার চালায়। এরপরেও যে দেশ এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সেই জার্মানিও আমেরিকান ভার্সনে বিশ্বাস করে বা করতে বাধ্য হয়। বার বার আহ্বান করা সত্ত্বেও তারা রাশিয়ার সাথে যৌথ ভাবে তদন্ত চালাতে রাজী হয়নি। ফেসবুকে এরকম একটা পোস্ট প্রায়ই চোখে পড়ে “আগে মানুষ মিথ্যা বলতে ভয় পেত পাপ হবে বলে, এখন সত্য বলতে ভয় পায় বিপদে পড়বে বলে।” জার্মানি মনে হয় সেই বিপদে পড়ার আশঙ্কায় সত্য বলছে না যদিও তার শিল্পের ও অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে আর কত বিপদ হতে পারে সেটা ভাবনার বিষয়। এই বিস্ফোরণের ফলে শুধু রাশিয়া ও জার্মানির অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়নি, পরিবেশও প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে পরিবেশবাদীদের উচ্চবাচ্য নেই। কারণ কথায় আছে “যে পয়সা দেয় সেই নাচায়।” এরকম এক্সট্রিম পরিস্থিতিতেই সবার মুখোশ খুলে যায় - কে নিজের স্বার্থের জন্য মানবতার কথা বলে আর কারা সত্যি সত্যি মানবতার জন্য, মানুষের জন্য মানবতার কথা বলে – সেটা বোঝা যায়। এটাকে অন্য ভাবে বলা যায়, “তোমার মৃত্যু যদি আমাদের (পশ্চিমা বিশ্বের) স্বার্থ উদ্ধার করে তাহলে তোমার জীবন ধন্য, তুমি সত্যের পক্ষে, তুমি গণতন্ত্রের জন্য আত্মত্যাগকারী শহীদ। কিন্তু তোমার মৃত্যু যদি আমাদের স্বার্থ উদ্ধারের পথে বাঁধা হয়, তবে তুমি গণতন্ত্রের শত্রু, স্বৈরাচারের আজ্ঞাবাহী।”

দুবনা, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা