বিচক্ষণতা

আমরা এক্সিবিশনের জন্য প্রায় সারা বছর জুড়েই ছবি বাছাই করি। যখন কেউ তার সাম্প্রতিক কালের কাজগুলো দেখায় তখন পছন্দের ছবিগুলো একটা ফোল্ডারে রাখি। এরপর যখন এক্সিবিশনের ছবি বাছাইয়ের সময় আসে সেই ফোল্ডার থেকে বেস্ট অব দ্য বেস্ট বেছে নেই। এটাই যেকোন ক্ষেত্রে বাছাইয়ের স্বাভাবিক নিয়ম। তবে বর্তমানে রাজনীতিতে বাছতে হয় বেটার অব দ্য ওরস্ট বা মন্দের ভালো। আর এটাই যে কোন রাজনীতি সচেতন ও বিবেকবান মানুষের জন্য বড় সমস্যা। কারণ এখানে শুধু ব্যক্তি মানুষের নয়, দলের চরিত্রও মাথায় রাখতে হয়। আর বাছাই করতে হয় দুর্নীতি (সেটা কমবেশি প্রায় সবাই), স্বৈরাচার, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, স্বাধীনতা বিরোধিতা বা এসবের বিভিন্ন কম্বিনেশন ইত্যাদির মধ্য থেকে একটা। যদিও এদের কোনটাই গ্রহণযোগ্য নয় তবুও একটা বেছে না নিলে এদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ কম্বিনেশনের পাল্লায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এক মন্দকে না বলে এর চেয়ে বড় মন্দের খপ্পরে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, দুষ্ট গরুকে তাড়াতে গিয়ে মানুষখেকো বাঘকে আমন্ত্রণ জানানোর সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ নিজেদের ক্ষমতা বা সমর্থন নেই ক্ষমতা দখলের, অন্যদিকে ক্ষমতার নিজেরও ক্ষমতা নেই স্বাধীনভাবে চলার। ক্ষমতাকে সবসময়ই কারও না কারও কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হয় পরে তাকে দিয়ে নিজের সমস্ত অপকর্ম করিয়ে নেবার জন্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ সমস্ত সম্ভাবনাকে মাথায় রেখেই সাথী বেছে নিতে হবে যে কখনোই বন্ধু হবে না তবে পেইনলেস মানে ব্যথাহীন কিন্তু অপেক্ষাকৃত সল্পায়ু জীবনের পরিবর্তে দীর্ঘ কিন্তু বেদনাময় জীবন যাপনের সুযোগ দেবে। দুটোর কোনটাই সুখের নয়, তবে বেঁচে থাকলে অবস্থা পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা অন্তত করা যায়। রাজনীতি সচেতন মানুষ বা দল কোনটা বেছে নেবে সেটাই প্রমাণ করবে তাদের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা।

দুবনা, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা