Posts

Showing posts from May, 2021

ফোনালাপ

Image
হ্যালো! কাকু? ---- জানেনই তো আমার খারাপ থাকবার সময়, সুযোগ, সামর্থ্য - এসব কখনই ছিল না। বলতে পারেন আমার অবস্থা সোভিয়েত ইউনিয়নের মাংসের দোকানের মত। কোন অপশন নেই। তাই ভালই থাকি। ভাল থাকতে হয়। জানেন আজকাল রুশরা কি বলে? "বেঁচে থাকা ভাল, তবে ভালভাবে বেঁচে থাকা আরও ভাল" এটাকে নতুন আঙ্গিকে বলে "বেঁচে থাকা ভাল, তবে ভালভাবে বেঁচে থাকা খুব কঠিন।" তাই বলতে পারেন আমরা কঠিন রকমের ভাল আছি। ---- কি বললেন? আপনাকে আমি শুনতে পারছি না। লাইনে মনে হয় ডিস্টার্ব। যাহোক, আমি তো জানি আপনি কী জানতে চান, বলে যাচ্ছি। রেকর্ড করছি। যদি সব শুনতে না পারেন, জানাবেন, পরে ই-মেইল করে পাঠিয়ে দেব।  ---- ও, সেই লেখাটা? একাত্তরের উপরে? আপনি যেটা বই করতে বলেছিলেন? হ্যাঁ, লেখা শেষ করেছি তাও কয়েক বছর। না, প্রকাশ করা হয়নি। কেউ প্রকাশ করতে চায় না। পাণ্ডুলিপি দেখে পরে কিছু বলে না। না না, আমি কিন্তু বই প্রকাশ করব বলে আপনাকে কথা দিইনি, লিখব বলেছিলাম। লিখেছি। সুতরাং আমার সোবেস্ত চিস্তা, মানে বিবেকের কাছে আমি শীতের তুষারের মতই পরিষ্কার। আপনাকে বলা হয়নি, আমি করোনায় ভুগে হাসপাতালে ছিলাম, সে এক লাইফ টাইম অভিজ্ঞতা। এখনও

বেলারুশ বিমান কাণ্ড

Image
গত কয়েকদিন হল বিভিন্ন মাধ্যমে বেলারুশ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এ নিয়ে লেখার তেমন ইচ্ছে ছিল না, কারণ কেউই মনে হয় ঠিক কী ঘটেছে সেটা না খুঁজে নিজ নিজ স্বার্থ খুঁজছে। অনেক দিন হল পশ্চিমা  সমাজ আর সংবাদ মাধ্যম বিচারের ধার ধারে না, নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ী কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে দুনিয়া ব্যাপী সেটা প্রচার করে। এ যেন অনেকটা গ্রামের ঝগড়ার মত - যার গলায় যত জোর সেই তত বেশি সঠিক। তবে এ নিয়ে যেহেতু আমার পরিচিত কিছু মানুষ স্ট্যাটাস দিয়েছেন আর তারপরে এ ব্যাপারে কিছু কথা বলেছেন, তাই লেখাটা সঙ্গত মনে করছি।  ঘটনার পরদিন কিছু পরিচিত মানুষ এর নিন্দা করে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। জানাতেই পারে। এরা সবাই সামাজিক মাধ্যমে সোচ্চার। সুযোগ পেলেই নিজেদের রাজনৈতিক ও মানবিক অবস্থানের জানান দেন। তারা বিভিন্ন পেশার লোক। হতে পারে ওয়েল ইনফরমড। অন্তত এক পক্ষ থেকে। দোষ এদের নয়। আজকাল এমনটাই ঘটছে। সমাজবিজ্ঞানে আইনস্টাইন নেই, তাই বিভিন্ন অবস্থান থেকে দৃষ্ট ঘটনাকে আপেক্ষিক তত্ত্বের মাধ্যামে এক সূত্রে গাঁথার বালাই নেই। দুজন দু' দিকে দাঁড়িয়ে - একজন ছয় (6) দেখলে অন্যজন দেখে নয় (9)। আগে আন্তর্জাতিক আইন বলে একটা কথা ছিল যেখান থেকে দে

ভালবাসা

Image
শৃঙ্খলা আমার কাছে শৃঙ্খলের মত মনে হয়, তাই সারা জীবন ওটাকে এড়িয়ে চলতে চাই। স্কুলে প্রায়ই দেরি করে যেতাম, কলেজেও তাই। ভার্সিটিতে কত ক্লাস যে ফাঁকি দিয়েছি তার হিসেব কে রাখে। মনে আছে, একবার রুশ ভাষার ক্লাস শেষ হবার মিনিট দশেক আগে ক্লাসে ঢুকলে ম্যাডাম বললেন "না এলেই তো হত"। আমি বললাম, "হত, তবে পরের ক্লাসটা যাতে মিস না করি তাই এলাম।" উনি খুব মাইন্ড করেছিলেন। ভাগ্যিস পড়েছিলাম তত্ত্বীয় পদার্থবিদ্যায় আর কাজ পেয়েছিলাম রিসার্চ ইনস্টিটিউটে যেখানে কিছুই রুটিন মেনে করতে হয়না। এক্ষেত্রে আমার অবশ্য বেশ কিছু সাথী আছে। সেটা হল রুশ দেশের ঋতু। বিশেষ করে বসন্ত। সরকারি ভাবে মার্চের ১ তারিখে কাজে জয়েন করার কথা থাকলেও ও শুরু করে মে মাসে। তবে মের বসন্ত আমাকে দেশের মার্চের কথা মনে করিয়ে দেয়। যখন সবে পাতা গজানো গাছের উপর বসন্ত বাতাস হুমড়ি খেয়ে পড়ে আমার কানে ভেসে আসে চৈত্রের দুপুরে বাঁশ ঝাড়ের শব্দ। শন শন শন শন - শো শো শো শো। আমি কান পেতে রই। মনে হয় আমি যেন বাড়ির বারান্দায় বসে আছি আর চৈত্রের বাতাস কালবোশেখির রিহার্সাল দিচ্ছে। আবার যখন ঝুপ ঝুপ করে বৃষ্টি নামে আমি চলে যাই

ডিলেমা

Image
প্রথমে কে বলেছিল মনে নেই, তবে নাইন ইলেভেনের পরে জর্জ বুশ বলেছিলেন "তুমি হয় আমাদের সাথে, না হয় আমাদের বিপক্ষে।" মানে মাঝামাঝি কোন পথ নেই। পৃথিবীকে সাদাকালো দু রঙে দেখা এদিন থেকে শুরু হয়নি ঠিকই, তবে এর পর থেকে সেই দেখা আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এটাই দেশে দেশে বাড়িয়েছে পরমতের প্রতি অসহিষ্ণুতার মাত্রা। কয়েকদিন আগে আমার এক বন্ধু একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করেছিল। সেখানে অন্য এক বন্ধু প্রশ্ন করেছে "মুসলিম বিরোধের অপর নাম কি ধর্মনিরপেক্ষতা?" যদিও সেই লেখাটা ছিল একটা ঘটনার নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ। তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে এখন আর নিরপেক্ষ থাকা সম্ভব নয়, নিরপেক্ষ মানেই আপনি আমার বিরুদ্ধে।  একটা সময় ছিল যখন দ্বিধাহীন চিত্তে প্যালেস্টাইনের মানুষের মুক্তির দাবিতে মিটিং মিছিল করেছি, লিখেছি। এখন দিকে দিকে রাজনৈতিক দল আর পুঁজিপতিদের দ্বারা জনগণের স্বাধীনতা চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনা দেখে এসব আর নির্দ্বিধায় করতে পারিনা। বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব যখন হঠকারী হয় তখন ভয় হয় আমাদের সমর্থন জনগণের উপর আরও বিপদ ডেকে আনবে না তো। আমার প্রায়ই মনে পড়ে নব্বইয়ের দশকে চেচনিয়ার যুদ্ধের কথা। অনেকের ধারণা বরিস

বিজয়

Image
বিপদের মুখে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয় আর বিপদ কেটে গেলে যে যার সে তার। আর এই ঐক্য যদি বিজয় আনে, বিজয়ের ট্রফি নিয়ে শুধু হয় নিজেদের মধ্যে মারামারি, হানাহানি। ১৯৪৫ সালে মিত্রশক্তির কাছে ফ্যাসিবাদের পরাজয়ের পরে অনেকেই ভেবেছিল যুদ্ধ এবার চিরবিদায় নিল। কিন্তু অচিরেই শুরু হল নতুন যুদ্ধ। এক সময়ের সহযোদ্ধা হল চরম শত্রু। মাছের ভাগের মত শুরু হল পৃথিবীর ভাগাভাগি। ঠাণ্ডা যুদ্ধ ছোট গল্পের মত শেষ হয়েও শেষ হল না। পরস্পরের মোকাবিলায় তৈরি হল তালেবান, আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেট - এসব জঙ্গি সংগঠন। দেশ আর সিস্টেমের পরিবর্তে যুদ্ধ শুরু হল মানবতার বিরুদ্ধে। দেশে দেশে লাখ লাখ সাধারণ মানুষ হল রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের বলি। আজও পৃথিবীকে পদানত করতে চলছে বিভিন্ন ধরণের রাজনৈতিক খেলা। যারাই মাথা তুলে দাঁড়াতে চাইছে তাদের উপর নেমে আসছে বিভিন্ন ধরণের বানিজ্যিক বাধানিষেধ। পৃথিবী আবার ধাবিত হচ্ছে নতুন যুদ্ধের দিকে। আজ ৯ মে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয়ের দিনে নতুন করে দেখার সময় এসেছে যুদ্ধের ভয়াবহতা। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর এ পৃথিবীতে বিভিন্ন মত থাকবে সেটাই স্বাভাবিক, সে সত্যকেই আমাদের মনে রাখতে হবে আর সেটা মনে রেখেই গড়তে হবে নতুন পৃ

রাজনীতির আজকাল

Image
  কয়েক দিন আগে পশ্চিম বঙ্গে নির্বাচন শেষ হল। এবার যেভাবে নাটক জমেছিল, সেটা আর কখনও হয়েছে বলে জানা নেই। ব্যক্তিগত ভাবে কখনই এসব নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ ছিল না। ১৯৬৯ আর ১৯৭২ সালে যখন কোলকাতা যাই, ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। খুব সম্ভব সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরে গেছি ১৯৮০, ১৯৮৯ আর ১৯৯৭ সালে - জ্যোতি বসুর রাজত্বকালে। সিপিএম দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিল, তাই তৃণমূলের কাছে এর পরাজয় ছিল অপ্রত্যাশিত। ২০১৪ সালে চলছে মমতার যুগ। তখন কোলকাতা একেবারে অন্যরকম। এর আগে অনেক সময় রাস্তায় দেখেছি গাদাগাদি করে মানুষ ঘুমুতে। রাতের ফুটপাত ছিল চলাচলের অযোগ্য। মমতা রাজে সেটা অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। দিকে দিকে ফ্লাই ওভার তৈরির হিড়িক। তবে সব আমলেই ছিল ক্ষমতাসীন দলের পাণ্ডাদের দৌরাত্ম্য। এটা মনে হয় সব দেশের না হলেও আমাদের সব দেশের বৈশিষ্ট্য। এবার অবশ্য পশ্চিম বঙ্গের  নির্বাচনের দিকে নজর দেওয়ার মূল কারণ ছিল এ রাজ্যে বিজেপির উত্থান। যেকোনো সাম্প্রদায়িক শক্তি, তা সে যত মহান উদ্দেশ্য নিয়েই আসুক না কেন পরিণামে কোন বহুজাতিক ও বহু ধর্মীয় সমাজের জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। পৃথিবীর দেশে দেশে সেটা বার বার

ভ্যাক্সিন

Image
  সোভিয়েত আমলে ভিন্ন মতের কদর ছিল না, তাই পছন্দ না হলেও সরকার বা পার্টির বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলত না। তবে নতুন রাশিয়ায় সে সমস্যা নেই। ফলে সরকারের সমালোচনা হরহামেশাই হয়। বিশেষ করে সৃজনশীল মানুষদের আড্ডায়, কেননা তারা সব সময়ই অতৃপ্ত। আমার মেলামেশা যেহেতু মূলত বিজ্ঞানীদের আর ফটোগ্রাফারদের সাথে তাই সেটা বেশ টের পাই। আমার ভূমিকা এসব আলোচনায় অনেকটা প্যাসিভ, কারণ এরা কেউ হয় অতি ভক্ত অথবা অতি শত্রু। আর আমি চেষ্টা করি ব্যক্তিগত ভালোলাগা মন্দলাগায় না গিয়ে কোন ইস্যু ভিত্তিতে সরকারের সাফল্য বা ব্যর্থতা বিচার করতে। গত বৃহস্পতিবার বরাবরের মত ফটো ক্লাবে ঢুকলাম। - প্রিভিয়েত বিজন! - প্রিভিয়েত! - কী খবর? - চলছে। - ভ্যাকসিন নিয়েছিস? - আমি তো অসুস্থ ছিলাম। আরও কিছুদিন পরে অ্যান্টিবডি টেস্ট করাব। তারপর যদি ডাক্তার বলে ভ্যাকসিন নেব। - ভয় পাস না? - দেখ, আমি তো মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়েই জন্মেছি। সেটা জেনেও তো জীবন উপভোগ করছি। তাহলে? - না, মানে ভ্যাক্সিনে এত বেশি রাজনীতি! - সেটা ঠিক। এখানে রাজনীতি, অর্থনীতি সব একাকার। তবে আমি তো এ দেশেরই বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানী সমাজটা ভেতর থেকে জানি। তাই ভয় পাই না। - ঠিক বুঝলাম ন