Posts

Showing posts from January, 2017

গোলক ধাঁধাঁ

Image
আট বছর আগে এই ফেসবুকের পাতা ভরে গিয়েছিল ওবামামানিয়ায়, আজ সেই জায়গা নিয়েছে ট্রাম্পফবিয়া। ব্যাক্তিগতভাবে এতে আমার যে ঠাণ্ডা বা গরম লাগে, তা নয়, তবে যেহেতু লেখে বন্ধুরা, তাই এটা আমার মনে এক ধরনের কৌতুহলের উদ্রেক করে। তাই এই লেখা। যদিও আমি জানি, এতে আমার বন্ধুদের, ট্রাম্পের বা তার সমর্থকদের  অথবা ওবামা বা হিলারী বা তাদের সমর্থকদের কারোরই কিছু আসবে যাবে না। তবে যেহেতু ঘটনা ঘটে আর তার ফলে মনে প্রশ্নের উদ্রেক হয় – তাই এই প্যাচাল পাড়া। বয়েস বাড়ছে।     ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় অভিযোগ মেয়েদের। হ্যা, তার খোলামেলা কথাবার্তা, যেটা ফলাও করে প্রচার করেছে সংবাদ মাধ্যম, সেটা হয়াই স্বাভাবিক। তবে একই সময় যখন দেখি সেই লোকই বছরের পর বছর বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে, তখন ভেবে পাই না, কিভাবে একজন মানুষ যে নারীদের সৌন্দর্যের পুজারী, যে সেই সৌন্দর্যকে চার দেয়ালের ভেতর থেকে মুক্ত বিশ্বে নিয়ে আসে, সে কিভাবে নারী বিদ্বেষী হয়? আজ এমনকি রক্ষনশীল মুসলিম দেশগুলোতেও তাদের মত করে এই প্রতিযোগিতা হয়। তাই ট্রাম্পকে নারীমুক্তির এক দুত না বলে নারী বিদ্বেষী পুরুষ বলা – এর পেছনে নিশ্চয়ই অনেক বেশি যুক্তি আছে

ভালোবাসার পথের ধারে

Image
পড়ন্ত বিকেল। বনের ঐ বার্চগুলোর মাথায় খেলছে রোদ। রাস্তার দুইধারে সাদাকালো বার্চগুলো দেখে মনে হয় যেন সারি ধরে দাড়িয়ে আছে হলুদবরন কন্যা। বনের ভেতরে পড়ে থাকা আকাবাঁকা পথে এই হলুদবরন কন্যারা বিছিয়ে দিয়েছে ঝরা পাতার নরম কার্পেট। আর ঐ পথ ধরে ধীর পদক্ষেপে হাঁটছে শরত। সে যাচ্ছে শীত কুমারীকে বরন করতে। তাই এত হাসির মাঝেও তার চোখের কোনে লেগে আছে এক চিলতে বেদনার চিহ্ন। আমি যাচ্ছি শরতের পিছু পিছু শরতের পথ ধরে। আনমনে। “কি দোস্ত, মন খারাপ হয়ে গেলো?”            “নারে, মন খারাপ হবে কেন?” “না, এমনি এমনি। সেই ১৯৮৩ সালে আমরা যখন এখানে হাঁটতাম আর দেশের গল্প করতাম, আমার ঝাঁকড়া চুল ছিল সবার ঈর্ষার বিষয়। তোর অবশ্য চুল পড়ে নি, তবে পেকে গেছে।“ “নারে, পাকে নি। রঙ করেছি। দেখনা, এখন বার্চগুলোর সাথে আমার কত মিল। আমিও ওদের মতই কাচাপাকা বাবু।“ “তা যা বলেছিস।“ “আচ্ছা, ইভান কেমন আছে রে? ঐ দিনগুলোতে তুই প্রায়ই ইভানের কথা বলতি।“ হ্যা, মিকলুখো মাকলায়ার হোস্টেলের পেছনে দাড়িয়ে আমি কথা বলছিলাম আহসানের সাথে। আমরা দুজনেই আসি ১৯৮৩ সালে। আমি ৬ সেপ্টেম্বর, ও আমার এক সপ্তাহ আগে। দেশে আমার আলাপ ছিল না ওর সাথে। আমি

Price for Novel Prize

Image
সেভা বসে হ্যারি পটার গেম খেলছিল, আমি পাশে বসে দেখছিলাম। -    পাপ, নোবেল প্রাইজ কি জন্যে দেয়? -    বিজ্ঞানের কোন শাখায়, সাহিত্যে, অর্থনীতিতে খুব ভালো কাজের জন্য। -    ওবামাকে নোবেল প্রাইজ কি জন্যও দিল? -    ওটা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ছিল। অনেকটা অগ্রিম।    -    কিন্তু কি করল ওবামা এই পুরস্কার পেয়ে, মানে এই পুরস্কারকে জাস্তিফাই করতে? -    কঠিন প্রশ্ন। এক কথায় এই পুরস্কারের প্রতিদান হিসেবে ওবামা ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়ায় কয়েক লাখ নিরীহ মানুষকে শান্তিতে চিরনিদ্রায় শুয়ে থাকার ব্যাবস্থা করেছে। Seva was playing Harry Potter. I was sitting beside him. Suddenly he asked     -    Pap, why someone is awarded the Nobel Prize? -    For remarkable works in different branches of science, literature, economics. -    But why Obama was awarded the Nobel Prize? -    It was the Nobel Prize for peace. It was awarded in advance. -    But what did he do to justify that trust? -    Very difficult question. But in short he made a few hundred thousand common people lie in

ভাষা

Image
সকালে বসে চা খাচ্ছি গুলিয়া, সেভা আর আমি। হঠাৎ বেডরুমে শুরু হোল কথোপকথন -    ঘেউ -    ঘেউ -    ঘেউ ঘেউ -    ঘেউহবচদস্নচশদ।মস্কঞ্চ দচ”ডশ্চকচদচ রবিবার। প্রতিবেশীরা অনেকেই ঘুমে। -    তুমি বলতে পার ওদের একটু চুপ করতে? – গুলিয়া আমাকে জিজ্ঞেস করল। -    মহা ঝামেলা। কুকুরগুলো তোমাদের, আর ওদের ধমক দিতে হবে আমাকে।   কি আর করা, বেডরুমে গিয়ে দেখি তুলকালাম কাণ্ড। কটিয়া (বিড়ালের নাম) বসে আছে জানালায়। আর টোটি, টেরি, ভারদিক, ইওলা, মিকি, লরি সবাই মিলে ওকে লেকচার দিচ্ছে। এমন কি আরেক বিড়াল রিসও কুকুরদের দলে যোগ দিয়েছে। সে এক ভয়াবহ দৃশ্য।এতগুলো মাষ্টারের পাল্লায় পড়ে কটিয়া ভয়েই অস্থির। -    মদশক্লদস্নচদস্কচদকঞ্চ কদঞ্চমচ মচলস্কদলচদকজলচ। - গম্ভীর স্বরে বললাম আমি। চারিদিক নিস্তব্ধ। পিন ড্রপ সাইলেঞ্চ যাকে বলে। ফিরে এলাম কিচেনে চা খেতে। -    কি বললে তুমি ওদের? কোন ভাষায়? – বউ আমাকে একটু অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করল। দেশে গিয়ে আমি যখন কুকুর বিড়ালদের সাথে এভাবে কথা বলতাম, প্রথম প্রথম সবাই ভাবত আমি ওদের সাথে রাশিয়ান ভাষায় কথা বলছি। তা আমি বলি,       -    বাড়ির বিড়াল কুকুর কি রাশিয়ান ভাষা জানে

বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক или как বামেরা налево ходят

Image
সকালে ফেসবুক খুলে দেখি ঝড় উঠেছে, আলোচনা- সমালোচনার ঝড়। যেহেতু আমার টাইম লাইনে হাতে গোনা কিছু মানুষের লেখা আসে, তাই ঠিক কি যে ঘটেছে, তা বোঝার উপায় ছিল না। লিপির স্ট্যাটাসে দেখলাম “ ... সারাজীবন বিত্ত-বৈভবের মধ্যে বড় হয়ে , ক্ষুধা কী জিনিস , দারিদ্র্য কী জিনিস , তা না বুঝেই প্রলেতারিয়েতের আন্দোলন (সাম্যবাদের) করেছেন... যদিও জানি না , সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি তার কতোটুকু জায়গা ছেড়ে দিতেন....যাই হোক , এখন শেষ বয়সে মনে হয়েছে জীবনটা বৃথাই গেল , যে কয়টা দিন আছে একটু আল্লাহকে ডাকবেন। এতে দোষের কী আছে ? ভাইলোগ , আপনারা কেন যে এতো কথা বলেন! “ বুঝলাম বাম আকাশে কালো মেঘ জমেছে, হয়তো-বা টর্নেডোর তাণ্ডবও ঘটে গেছে। এখন সেই মস্কোও নেই, সেই কমরেডরাও নেই। তাই খবরের অপেক্ষায় বসে থাকা ছাড়া উপায় নাই। কিন্তু মনতো রোবট নয়, বসে থাকতে পারে না। তাই নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করতে হয় দুঃসংবাদ গেলার জন্য। তাই আবার মনে মনে সেই দাঁড়ি-গোঁফওয়ালা চুটকিটা বলি নিজেকে। এক শ্বেতাঙ্গ মহিলার বন্ধুত্ব কৃষ্ণাঙ্গ এক ছেলের সাথে। যখন বিয়ের কথা ভাবছে, তখনই মনমালিন্য, বিচ্ছেদ আর ওই ছেলের চলে যাওয়া। কয়েকদিন মন খারাপ করার প

মশা

Image
আমার ছোট বেলায় মশারা ছিল বসন্তের কোকিলের মত, আসতো বছরের নির্দিষ্ট এক সময়ে। বর্ষার পর, যখন পথ হারিয়ে কিছু জল নদীর ঠিকানা না পেয়ে ডোবায় আটকে যেতো, আর গ্রামের কৃষকরা পাট পচাত ঐ ডোবায় পাটখড়ি  থেকে পাট আলাদা করার জন্য, ওখানে জন্ম নিত মশারা ফাও হিসেবে, আর মালিক শ্রেনীর পক্ষ নিয়ে শুষত মানুষের রক্ত। অবশ্য মশারা ছিল সাম্যবাদী, তাই মালিক-শ্রমিক সাবার রক্তই খেত নির্বিবাদে। আর যখন শীত আসতো তার কুয়াশার চাঁদর গায়ে দিয়ে, সাইবেরিয়ার পাখিরা যেমন বাংলাদেশে পালায়, মশারাও তেমনি পালিয়ে যেতো গ্রাম থেকে। ভুমিহীন কৃষকদের মত, যারা রুটি রুজির সন্ধানে শহরে চলে যায়, মশারাও চলে যেতো শহরে নর্দমার খোঁজে। তবে ইরিগেশনের সাথে সাথে  গ্রামাঞ্চলে বেড়েছে ডোবা-নালা আর মশাদের হয়েছে পোয়াবারো। জল এখন সারা বছর থাকে বিধায় মশারা এখন গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। তাই ইদানিং দেশে গেলে মশাদের সাথে অলিখিত চুক্তি করে যাই। বলি, “দেখ, আমার হাড্ডি কামড়িয়ে তদের দাঁত ভাঙ্গার দরকার নেই, বরং আশেপাশে যারা থাকবে, তাদেরই কামড়াস। আমি ওদের বলে দেব যে তোরা আমার মশা, তোদের যেন না মারে।“ এইতো কদিন আগে দেশ থেকে ঘুরে এলাম। বাড়িতে যত্ন করে মশারী টানি

রাজকাহিনী

Image
আজকাল সিনেমা তেমন একটা দেখা হয় না। সময় করে উঠতে পারি না। তারপরেও গতকাল অনেক রাত জেগে রাজকাহিনী দেখলাম। অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল, শেষ পর্যন্ত দেখা হল। তবে ট্রেইলার দেখে আশাটা ছিল অনেক বেশি। ভেবেছিলাম এটা হবে পার্টিশনের উপরে একটা ঐতিহাসিক বই, তবে এখানে ওরা বলেছে সাধারন মানুষের ইতিহাস, তাদের জীবনের গল্প, দুই বন্ধুর গল্প যাদের বন্ধুত্ব খুব গভীর হলেও শত্রু শত্রু খেলতে হচ্ছে। আর কিছু লোকের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের বলী হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ – তখন হয়েছে, এখনও হচ্ছে। না, আমি বর্তমানে আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলতে চাইনা। জিন্নাহ ভেবেছিল ভারত ভাঙ্গার মানে পার্টিশনের মধ্যে দিয়ে হিন্দু-মুসলমান বিরোধীতার শেষ হবে, বাস্তবে পার্টিশনের মধ্য দিয়ে ঐ বিরোধীতা শুরু হয়েছে নতুন মাত্রায় – দুই সম্প্রদায়ের ঝগড়া পরিনত হয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রের পারস্পারিক যুদ্ধে। তবে গতরাতে ছবিটা দেখে আমি অন্য একটা কথা ভাবলাম, জানিনা এটা কতটুকু যৌক্তিক, তবুও লেখার খাতিরে লিখছি। জানি, যদি না ভারত ভাগ হত, আজ বাংলাদেশ হতো না। আজ বাংলা ভাষা বিশ্বের দরবারে যে আসনে বসেছে, সেটা হয়ত হতো না। হ্যা, স্বাধীন দেশের অনেক সুযোগ সুবিধা

পথভোলা পথিক

Image
পাঠ্য পুস্তকে বানান ভুল , সেখান থেকে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকদের লেখা বাদ দেয়া নিয়ে দেশে না হলেও ফেইসবুকে এক বিশাল আন্দোলন শুরু হয়েছে। সেটা যতটা না মৌলবাদ বিরোধী, তার চেয়ে বেশী হাসিনা আর নাহিদ বিরোধী। আর এটাই শঙ্কার বিষয়।    "কালের কণ্ঠে" দেখলাম হিন্দু ও নাস্তিক লেখকদের লেখা বাদ ও বিএনপি-জামাত আমলের পাঠ্যসূচী ফিরিয়ে আনার জন্য তারা নাকি বিভিন্ন সময় আন্দোলন পর্যন্ত করেছে। এমন কি গত বছরের ৮ই এপ্রিল হেফাজত ইসলাম নাকি একটি বিবৃতি পাঠিয়ে পাঠ্য পুস্তক থেকে ১২ টি রচনা বাদ দেবার দাবী জানায়। বর্তমান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সরকার নাকি নিজেদের ২০১০ এর পাঠ্যসূচী ত্যাগ করে বিএনপি-জামাতের পাঠ্যসূচী গ্রহন করেছে।   এ প্রসঙ্গে তরুন চক্রবর্তী লিখেছে “মানুষের misconception দূর হওয়া দরকার। হেফাজতের বা ওলামা লীগের দাবীর কারণে বর্তমান আওয়ামী সরকার বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ইসলামীকৃত করেছে- এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। সত্য হল , বাংলাদেশকে ধীরে ধীরে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রয়াস শেখ হাসিনার নিজেরই ইচ্ছার প্রতিফলন। সত্য হল , শেখ হাসিনা নিজেই একজন কট্টর ইসলামিস্ট , মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক মানুষ। ত