Posts

Showing posts from March, 2021

আশা নিরাশা

Image
  আমরা যারা সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশুনা করতাম তাদের একটা বিরাট অংশ সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করত, সেদেশের নিয়ম কানুন মেনে চলত। কথাটা এ জন্যেই বলছি যে যে কাজগুলো আমাদের দেশে অপরাধ বলে গণ্য হয়না, যেমন বেচাকেনা, তেমন অনেক কিছুই সোভিয়েত ইউনিয়নে অপরাধের পর্যায়ে পড়ত। সোভিয়েত ইউনিয়নে শৌখিন জিনিসের অভাবের সুযোগ নিয়ে তখন অনেকেই এক্সট্রা ইনকাম করলেও আমাদের অনেকেই সে পথে পা বাড়াত না। আমাদের অনেকেই ভাবত দেশে গিয়ে সরাসরি রাজনীতি না করলেও বিভিন্ন গণ সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে ভূমিকা রাখবে, সোভিয়েত ইউনিয়নে পাওয়া শিক্ষা বিভিন্ন ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে। উল্লেখ করা যেতে পারে দেশে ফিরে যাওয়া অনেকেই, বিশেষ করে ডাক্তাররা সাফল্যের সাথে তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করে চলছেন। যারা সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গার আগে পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন তাদের অনেকেই বিভিন্ন ভাবে বাম ঘরানার রাজনৈতিক স্রোতের সাথে নিজেদের জড়িত করেছিলেন। সমস্যা ঘটে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর। সে সময় পার্টিও দ্বিধাবিভক্ত হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নে যারা পড়াশুনা করেছে তারা শুধু বই পড়েই বা পার্টি নেতা বা কর্মীদের মত সংক্ষিপ্ত সফরে এসে এ দেশের

স্বাধীনতার ৫০ বছর

Image
আজ ২৬ মার্চ ২০২১। বাংলাদেশ পালন করছে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উৎসব। এখনই সময় ফিরে তাকানোর, সাফল্য ব্যর্থতার জমা খরচ মেলানোর। একজন ব্যক্তির জীবনে যেমন সাফল্য ব্যর্থতা আসে, তেমনি সাফল্য ব্যর্থতা আসে জাতির জীবনে, দেশের জীবনে। তবে সাফল্য যত বড়ই হোক, ব্যর্থতা যদি একটা সীমার নীচে নেমে যায় সাফল্য উবে যায় কর্পূরের মত। ধরুন একজন লোকের টাকা পয়সা, শিক্ষা দীক্ষা এসবের কোন অভাব নেই, কিন্তু তার স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে এত টাকা পয়সা, শিক্ষা দীক্ষা তাকে সুখী করতে পারবে না। এ রকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই। এ প্রসঙ্গে আমার মনে পড়ে এক প্রতিবেশীর কথা। ও আমার এক বছরের সিনিয়র। একবার এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে আমার সাথে পরীক্ষায় বসে। আমরা একই বাসায় লজিং থাকতাম পরীক্ষার সময়ে। ও সব পড়াশুনা বাদ দিয়ে সারাদিন শুধু বুক কিপিং পড়ত। কী ব্যাপার, তুমি সারা দিন বুক কিপিং পড়, তা অন্য পরীক্ষা নাই?   আছে, তবে এ বিষয়ে লেটার পেতে হবে। দেখ, বুক কিপিংয়ে লেটার পেলেও কোন সাব্জেক্টে যদি ফেল কর এই লেটার কোন কাজে লাগবে না। ও এ বিষয়ে লেটার পেল বটে, কিন্তু ইংরেজিতে ফেল করল। ও আর কখনও পরীক্ষায় বসেনি।  আমাদের দেশ বিভিন্ন সেক্টরে অস্বাভাবি

নস্টালজিয়া

Image
সেদিন এক লোকের সাথে আলাপ হল। আমাদের পরিচয় স্মিতার মাধ্যমে। স্মিতা পশ্চিম বঙ্গ থেকে। সে কারণেই কিনা বা আমার নামের কারণেই কিনা, উনি জিজ্ঞেস করলেন আমি ইন্ডিয়া থেকে কিনা। - না, আমি বাংলাদেশ থেকে।  - বাংলাদেশের কোন জেলায়? - মানিকগঞ্জ। - আমার জন্ম ঢাকায়। তবে আমাদের পূর্বপুরুষেরা বশিরহাট আর বারাসাত থেকে। যদিও জন্ম বাংলাদেশে, আমি নিজেকে ভারতীয় বলেই মনে করি। দুটো জায়গাই আমার চেনা। বশিরহাট থেকে আমাদের পার্থ ভাদুরী। সে কারণেই ওদিকটায় গেছিলাম। আর বারাসাত তো মসি বা দিদিদের ওখানে যেতে হলে রাস্তায় পড়ত। পশ্চিম বঙ্গে বেড়াতে গেলে যখন শোনে আমি বাংলাদেশ থেকে, অনেক অপরিচিত মানুষ এসেও দেশের কথা জিজ্ঞেস করে। ওদের পূর্বপুরুষেরা বাড়িঘর ছেড়ে ওদিকটায় চলে গেছে। আমার বন্ধুদের অনেকের বাবা মা বা তাদের পূর্বপুরুষেরা পূর্ব বঙ্গের মানুষ। ওরাও বড় হয়েছে তাঁদের মুখে বাংলার মাঠ ঘাট নদী নালার গল্প শুনে। এটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানা। তাছাড়া অনেক বইপত্রেও পূর্ব বাংলা থেকে চলে যাওয়া মানুষের কান্নার শব্দ আমরা পাই। মাত্র ক দিন আগেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের "অর্ধেক জীবন"এ পড়লাম তাঁর বাবার গ্রামে ফেরার জন্য সে কী আকুতি!

করা না করা

Image
বেশ কয়েকদিন থেকেই একটা জিনিস নিয়ে ভাবছিলাম। সেটা সংগঠন করা। আমাদের দেশের অনেকেই কী করেন জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেয় "আওয়ামী লীগ করি।" "বিএনপি করি।" "সিপিবি করি।" "জামাত করি।" "হেফাজত করি।" "নারী নির্যাতন করি।" (এটা আসলে নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন করি) ইত্যাদি। ভাবখানা এই, তাদের জীবনের এসেন্স বিভিন্ন সংগঠন। অথচ এদের অনেকেই লেখক, কবি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি। অন্য দেশের কথা জানি না, তবে না সোভিয়েত ইউনিয়ন, না রাশিয়া - এখানে কাউকে বলতে শুনিনি, আমি সিপিএসইউ করি বা অন্য কোন দল করি। তারা তাদের প্রফেশন কী সেটাই উত্তরে বলেন। তাহলে কী আমাদের দেশে এত মানুষ নিজেদের বিভিন্ন সংগঠনের হোল টাইমার মনে করে নাকি কোন দলের সংশ্লিষ্টতা তাদের পেশাকেও ছাড়িয়ে যায়? গতকাল এক বন্ধু জিজ্ঞেস করলেন "এই যে "করে ", এর কোন প্রতিশব্দ নাই?" আমি তো অবাক। কেননা আমার যে পোস্টের নীচে তিনি এটা লিখেছেন সেখানে করার মত কিছু ছিল না। জিজ্ঞেস করলে লিখলেন "আমার এক পরিচিত কে জিজ্ঞেস করলাম -ভাই তুমি কি কর এখন? উত্তর : আমি এখন আওয়ামী লীগ করি। এই যে &

মোদীর মদে মত্ত রাজনীতি

Image
কয়েকদিন আগে দেখলাম মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে সিপিবি কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। যেকোনো দল যেকোনো দেশের নেতাদের আগমনের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল করতেই পারে। সেটা স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনের বিরুদ্ধে সিপিবির কর্মসূচী রাজনৈতিক ভাবে সুবুদ্ধির পরিচয় নয় বলেই আমার মনে হয়। ব্যক্তি মোদীর প্রতি আমাদের অনেক অভিযোগ, সেটা শুধু সিপিবি নয়, অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী বিশ্বের যেকোনো মানুষেরই নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই তিনি বাংলাদেশ সফরে এলে দেশের প্রগতিশীল মহল এর বিরোধিতা করবে সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তিনি আসছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে, আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, সেই ভারতের যাদের ঐকান্তিক সহযোগিতায় আমরা স্বাধীন হয়েছি। সেটা বঙ্গবন্ধু, মনি সিংসহ সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন। আজ মোদীর পরিবর্তে অন্য কেউ এলে কি আমরা তাঁর বিরোধিতা করতাম? আমার মনে হয় রাজনীতি করতে গেলে সব কিছুকে এক দৃষ্টিতে দেখলে চলে না, সময় ও পরিস্থিতি ভেদে একই ব্যক্তি কখনও বন্ধু, কখনও শত্র