Posts

Showing posts from March, 2024

প্রতিক্রিয়া

Image
অনেক দিন পরে মস্কোয় বেশ কিছু বাংলাদেশী বন্ধুদের সাথে দেখা হল। বিভিন্ন বিষয়ে কথা বার্তা। একজন জিজ্ঞেস করল দাদা সলিমুল্লা খান রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে কি বলেছে শুনেছেন? তার কথা শুনতে হবে, তাকে এত গুরুত্ব দিতে হবে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু তিনি তো একজন উঁচু মানের গবেষক। অনেক পড়াশুনা করেন। কথায় কথায় বিভিন্ন নামকরা লেখকদের রেফারেন্স দেন।  আমি ২০১১ সালে প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলামের সেমিনারে কসমোলজির উপর প্রবন্ধ পাঠ করেছিলাম। পরে স্থানীয় এক ছাত্রী বলেছিল আমি যা বললাম সব কোরআনে লেখা আছে। সলিমুল্লা খান যদি ভালো গবেষক হতেন তাহলে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে সব মন্তব্যের রেফারেন্স কোরআনেই খুঁজে বের করতেন। যতদিন না পারে ততদিন ওকে গুরুত্ব দেবার কিছু দেখি না। এ আবার কেমন কথা? দেখ, এরা খুবই ধূর্ত। ইনিয়ে বিনিয়ে নিজ ধর্মের মাহাত্ম্য প্রচার করে। কিন্তু সব সময় ব্যবহার করে ভিনধর্মী মানুষের কথা যুক্তি হিসেবে। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মত। তাই এদের যত এড়িয়ে চলবে তত ভালো। আমাদের প্রতিক্রিয়াই তাদের জনপ্রিয়তার ভিত্তি। এড়িয়ে যাও, দেখবে এদের পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে গেছে। মস্কো, ০১ এপ্রিল ২০২৪

একটি পর্যবেক্ষণ

Image
ক্রকুসে সন্ত্রাসী হামলার উপর বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করছে। পশ্চিমা বিশ্ব কাছা দিয়ে নেমেছে এই ঘটনায় ইউক্রেন জড়িত নেই সেটা প্রচার ও প্রমাণ করতে। কারণ সবাই মিলে বার বার একই মিথ্যা বললে সেটা সত্য বলে বিশ্বাস করানো যায়। তবে আইএস সম্পর্কিত তাদের প্রচার এমনকি পশ্চিমা বিশ্বের অনেক পর্যবেক্ষক গ্রহণযোগ্য মনে করছে না। বিশেষ করে কয়েক মাস আগে জেনারেল মিলির সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে রুশদের জীবন নরকে পরিণত করার আহ্বানে আর নুল্যান্ডে পদত্যাগের আগে পুতিনের জন্য সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে এ কথা বলায়। এরা এখনও কোন সিদ্ধান্তে উপনীত না হলেও ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আঙ্গুল দেখাচ্ছে। আপাতত সেসব লিংকের উপর ভিত্তি করে। তবে এর পেছনে যে তথ্য আছে সেটা বোঝা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে এরা কতদূর পর্যন্ত যাবে? কারণ এতে যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কিছু কিছু মানুষ যারা এক সময় মস্কোয় বৃষ্টি হলে ঢাকায় ছাতা ধরতেন পশ্চিমা ভার্সনকে বাইবেলের বাণী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে এক সময় যারা সোভিয়েত ইউনিয়নের গুন গান করে আর পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে মুখে ফ

পোশাক

Image
গুলিয়ার পছন্দ সোভিয়েত আমলের বিভিন্ন টি-সেট। আমারও পছন্দ, তবে ছবি তোলার জন্য। ফলে ওদের মৃত্যু ঘটে আমার হাতেই। ও আবার নেটে সার্চ দিয়ে বের করে কেউ বিক্রি করছে কিনা। আজ যাচ্ছি কমলা রঙের দুটি টিপট কিনতে।  আমি মেট্রোয়। আধা ঘন্টা পরে পৌঁছে যাব।  আপনি প্রথম ওয়াগন থেকে বেরুলেই হবে। আমি অপেক্ষা করব। ওকে। চলে আসছি। আমার গায়ে হলুদ জ্যাকেট। আপনার? বাদামি চামড়া। মানে? আমি উপমহাদেশ থেকে। পরনে বসন্তের হালকা ওভারকোট। সাদা রঙের।  লোকজন মানুষের চেয়ে পোশাকের বেশি দাম দেয়। চামড়ায় নয়, পোশাকে চেনে। মুস্কিল। মস্কো, ২৫ মার্চ ২০২৪

ওজন

Image
আমি প্রায় সব সময়ই কিছু না কিছু নিয়ে ভাবি বা বলা চলে উড়ে বেড়াই। এটা যতটা না একাগ্রতা তারচেয়ে বেশি অন্যমনস্কতা। ভোলগায় বা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে কাটতে কয়েক দেখা গেল গ্রামে স্কুলের বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে এলাম বা কোন একটা অংকের সমস্যা নিয়ে কারো সাথে কথা বললাম। মিনিটের মধ্যে মনে মনে সারা পৃথিবী ঘুরে আসি। কত লোকের সাথে যে কথা বলি। সেটা প্রায় সব জায়গায়। সেদিন এ রকম ভাবতে ভাবতে হাঁটছি। সামনে বরফ গলা জল জমে আছে। আমি দেখলাম, কিন্তু কে জানে কেন, মনে হল আমি জলের উপর দিয়ে ঠিক হেঁটে যেতে পারব। গেলাম বটে। তবে প্রায় শূন্য ডিগ্রী তাপমাত্রার জল পায়ে বেশ জোরেশোরেই কামড় দিল। হয়তো ভেবেছিলাম যীশুর সাথে একই দিন যখন জন্ম আমিও তাঁর মত জলের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে পারব। সে গুড়ে বালি। অবশ্য পা ভেজায় অসুস্থ হবার আশঙ্কা থাকলেও ভালোই লেগেছে। বন্ধুরা আমাকে ওয়েটলেস বলেই জানে। পা ভিজিয়ে প্রমাণ পেলাম এই বাজারে আমারও কিছু ওজন আছে। দুবনা, ২৪ মার্চ ২০২৪

ক্রকুস

Image
এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে প্রথমে আমেরিকার পত্র পত্রিকা ক্রকুসের ঘটনায় চুপ করে থাকলেও এক সময় আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এক যোগে আইএস কে দায়ী করা হয় ওরা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়েছে সেই বরাত দিয়ে। তবে যে আইএসের প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে সেটা ওরা অনেক দিন থেকেই ব্যবহার করে না। তাই এটা আইএস করেছে নাকি ইউক্রেনকে আড়াল করার জন্য পশ্চিমা বিশ্বের প্রচেষ্টা সেটা ভাবার বিষয়। এছাড়া ৪ জন সন্ত্রাসী ও তাদের আরও ৭ জন সহযোগী ধরা পড়েছে ব্র্যানস্কে ইউক্রেনে পালানোর পথে। মধ্য এশিয়ার ওরা স্বীকার করেছে যে প্রত্যেকে ৫ লাখ রুবলের বিনিময়ে ওরা এতায় রাজী হয়েছে। অর্ধেক টাকা ওদের কার্ডে জমা হয়েছে। বাকিটা এরমধ্যে দেবার কথা ছিল। তবে ওদের যোগাযোগ হয়েছে টেলিগ্রাম কানালে। এছাড়া মনে রাখতে হবে যে ইউক্রেনে এখন সিআইএ ও মি৬ এর সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছুই হয় না। বুচা সহ অনেক ঘটনায় যে মি৬ জড়িত ছিল এটা এখন জলের মত পরিষ্কার। এছাড়া অনেক আমেরিকান পর্যবেক্ষক এর পেছনে সিআইএ ও মি৬ এর হাত দেখছে। আসলে এখন পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে আমেরিকা ও ব্রিটেন চায় না যুদ্ধ বন্ধ হোক, তারা বার বার শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা ভন্ডুল করে দিচ্ছে। তবে

জ্ঞান

Image
বিজ্ঞান মানেই জিজ্ঞাসা, বিজ্ঞান মানেই পুরাতনকে অস্বীকার করা নয়, পুরাতনের উপর দাঁড়িয়ে নতুন সত্যের সন্ধান করা। তাই তো নিউটন বলে তিনি অনেক দূর পর্যন্ত দেখেন, কারণ তিনি দৈত্যদের কাঁধের উপর দাঁড়িয়ে আছেন। একজন বিজ্ঞানী যখন নতুন কিছু সন্ধান করেন, তিনি তাঁর আগে কোন বিজ্ঞানীর কাজের উপর ভিত্তি করেই এসব করেন, অনেক সময় সেটাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে, অনেক সময় আগের ফলাফলের উৎকর্ষতা সাধনের মধ্য দিয়ে। সত্যিকারের বিজ্ঞানী তাই আগের কাজের সমালোচনা করলেও সেই বিজ্ঞানীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেন না। তবে সব গবেষক যে বিজ্ঞানী তা কিন্তু নয়। অনেকেই অনেক সফল মানুষকে হেয় করাটাই গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নেন। আর "আমি আইনস্টাইনকে সমালোচনা করলাম, রবীন্দ্রনাথকে নীচে নামালাম" ইত্যাদি বলে গর্ব বোধ করেন। এসব বলে হয়তো জনতার ভিড়ে বাহবা পাওয়া যায় কিন্তু জ্ঞানী হওয়া যায় না। আইনস্টাইন, রবীন্দ্রনাথ, শেক্সপিয়ার, পিকাসো এদের কাজের সমালোচনা করে থিসিস লেখা যায়, কিন্তু এদের নিয়ে সস্তা সমালোচনা করে যারা সাধারণ মানুষের হাততালি পেতে চায় তারা আসলে নিজেদের মূর্খতাই প্রকাশ করে। হাজারটা বই পড়লে বা কথায় কথায় কোন বই রেফার করলে

শান্তি

Image
রাত প্রায় নয়টা। কিছুক্ষণ আগে ভোলগার তীর থেকে ছবি তুলে ঘরে ফিরেছি। খবরে ক্রকুস হলে সন্ত্রাসী আক্রমণের খবর দিচ্ছে। শুনছি আর ছবি এডিট করছি। এমন সময় মনিকার ফোন এলো। ওর সাথে অবশ্য আজ দিনের বেলায়ও কথা হয়েছে। পাপ, আমরা সবাই ভালো। ক্রিস্টিনাও বাসায় ফিরছে। একটু অবাক হলাম। তাই জিজ্ঞেস করলাম হঠাৎ এই খবর? না, মানে ক্রকুস হলে আক্রমণ হয়েছে। অনেকেই ফোন করছে। জানতে চাইছে কেমন আছি। মনে হল মনিকা একটু লজ্জিত হয়েই বলল। আমিও ওদের ফোন না করায় একটু লজ্জিত হলাম। আসলে আমার সব সময় মনে হয় কোন বিপদে পড়লে ঠিক ফোন করবে। তুই বাসায়? না। মস্কো সিটিতে। একটা ফটো সেশন ছিল। এখন ফিরছি। ক্রিস্টিনা? ও ভোকাল থেকে ফিরছে। আচ্ছা। তোমাদের সব ঠিক তো? হ্যাঁ। আন্তন বাইরে গেল। আমরা বাসায়। সেভা বাসায়ই থাকে। তাই ওর কথা আর জিজ্ঞেস করলাম না। ইতিমধ্যে আহসান ফোন করল। ভজন জানতে চাইল আমাদের অবস্থা। অপটিমিস্ট হবার এই এক যন্ত্রণা। কখনই বিপদ দেখতে পাই না। এটা হয়তো ঘুমের সমস্যার কারণে। লোকে বলে মরার পরে নাকি শান্তিতে ঘুমানো যায়। হয়তো এ কারণেই মৃত্যুকে আর তত ভয় পাই না। বিপ্লবের পরিবেশ সম্পর্কে লেনিন বলেছিলেন ধনীরা পারে

স্বপ্ন

Image
মাঝে মধ্যে বেশ অবাক করা কিছু কাণ্ড ঘটে। এক সময় আমাদের ডিপার্টমেন্টে নিয়মিত সেমিনার হত সোমবার ও শুক্রবার। পরে সেটা বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মাস হল সেটা আবার চালু হয়েছে। আমি সোমবার করে ক্লাস নিতে মস্কো যাই, গত সেপ্টেম্বর থেকে সেদিন অন্য কোন শিক্ষকের ক্লাস থাকে না, তাই দেখা হয় না। অথচ আমার পড়াতে যাবার অনেক কারণের একটা নিজের শিক্ষকদের সাথে দেখা করা, বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করা। তাই এক সময় প্রস্তাব দিই সেমিনারের আয়োজন করার। আমার শিক্ষকদের সবার বয়স ৮৫ বছরের আশেপাশে, আবার অন্য দিন আমার পক্ষে দুবনা থেকে আসা সম্ভব নয়। তাই একটু ইতস্তত বোধ করছিলাম। তবে সবাই সানন্দে রাজী হয়ে গেলেন। আসলে মনে হয় সবাই এ ধরণের মত বিনিময়ের সুযোগ খুঁজছিলেন। আমাদের ডিপার্টমেন্টের বরাবরই সুনাম ছিল লিবারেল বলে, যেখানে নির্দ্বিধায় নিজের কাজের উপর বলা যায়। ভুল হলে সেটা যুক্তি দিয়ে খন্ডন করা হয়। আমিই মূলত বিভিন্ন লোকদের ডাকি সেখানে প্রবন্ধ পড়ার জন্য। আগামী সোমবার প্রবন্ধ পড়বেন দুবনার আমার এক কলিগ। গতকাল যখন সাঁতার কেটে ক্লাবে গেছি সেমিনারের প্রচারের দায়িত্বে থাকা মাক্সিমের ফোন পেস্তভের সেমিনার অনলাইনে না অফলাইনে হবে? যতদূর জানি অফ

পোশাক

Image
কয়েক দিন আগে এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল। ও দেশে ওর শিক্ষকতার বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা বলল। জানাল কী কী ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় শিক্ষকদের। জিজ্ঞেস করল ইদানিং হিজাব নিয়ে না ঘটছে সেটা জানি কিনা। বললাম, আমার টাইম লাইনে খুব কম মানুষের প্রবেশাধিকার আছে। তাই খুব কম খবরই পাই। ওর মুখেই শুনলাম ইন্টার্ভিউ বোর্ডে হিজাব খুলে নিজেকে শনাক্ত করতে বলায় এক শিক্ষক নাকি চাকুরীচ্যুত হয়েছে। এটা অবশ্যই ভাবনার বিষয়। কারণ ইন্টার্ভিউ হল মুখামুখি প্রশ্নোত্তর। তাই কে প্রশ্ন করছে, কাকে করছে সেটা জানা জরুরি। এভাবে কি ব্যাংক লোন দেবে? অথবা বিদেশে যেতে হলে এভাবে কি ইমিগ্রেশন পার হওয়া যাবে? ধর্মীয় কারণে কেউ হিজাব পরতেই পারে। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে ব্যক্তিকে আইডেন্টিফাই করা আইনের আওতায় পড়ে সেক্ষেত্রে? আসলে ধর্মের সাথে সামাজিক ও পেনাল কোডের অনেক ক্ষেত্রেই অসাঞ্জস্য দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঘটনায় কোন আইন প্রাধান্য পাবে সেটা সরকারকেই ঠিক করতে হবে। রুশরা বলে অন্যের মন্দিরে নিজের রীতিনীতি নিয়ে যেতে নেই। তাই ধর্মের ব্যাপারে যেমন ধর্মীয় আইন সবার ঊর্ধ্বে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে সামাজিক বা রাষ্ট্রের আইন প্রাধান্য পা

কল্পনা

Image
রুশ ভাষাকে বলা হয় সমৃদ্ধ ভাষা। এর অন্যতম প্রধান কারণ একই বাক্য বা শব্দ একাধিক অর্থে ব্যবহার করা যায়।  সেদিন অফিস থেকে বেরিয়ে সুইমিং পুলের দিকে যাওয়ার সময় হঠাৎ একটা গানের কলি মনের বীনায় বেজে উঠল। হেসে খেলে জীবনটা যদি চলে যায়। গানটি আনন্দের, চিন্তা মুক্ত জীবনের। তখনই মাথায় এল জীবন চলে যাওয়া তো মরে যাওয়াও। বেশ তো। হাসতে হাসতে মরাও তো বেশ উপভোগ্য। আজ একজনের লেখায় একটি শব্দ চোখে পড়ল। শকুনতলা। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী অপূর্ব সুন্দরী এই নারী রাজা দুষ্মন্তের স্ত্রী। তার নাম শকুনতলা নয়, শকুন্তলা। আমাদের বাড়িতে বিশাল এক শিমুল গাছ ছিল আর সেখানে ছিল শকুনদের চৌকি যেখানে বসে ওরা এলাকার গরুর মৃত্যুর জন্য ধ্যান করত। শকুনতলা শব্দ পড়ে আমার সেই শিমুল গাছের কথা মনে পড়ে গেল।  কল্পনা, সবই কল্পনা।  দুবনা, ০৯ মার্চ ২০২৪

স্বার্থ

Image
একুশের বইমেলা কেমন হওয়া উচিৎ বা উচিৎ নয় এ নিয়ে ফেসবুকে অনেকেই লিখেছেন। অনেকেই বাংলাদেশের লেখকদের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ বলছেন ভালো লেখকদের সাথে প্রতিযোগিতা নেই বলে লেখার মান উন্নত হচ্ছে না। অন্যদিকে কেউ বলছেন একুশের বইমেলা সবার জন্য, বিশেষ করে কোলকাতার (পড়ুন পশ্চিম বঙ্গের) লেখকদের জন্য খুলে দিলে দেশের প্রকাশনা শিল্প আর্থিক সমস্যায় পড়বে। অর্থাৎ আপনি যদি সাহিত্যের মাধ্যমে ভাষার মান উন্নত করতে চান তাহলে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হতে চাইলে লেখকের মান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  একুশের বইমেলায় কোলকাতার বই নেই বলে একজন প্রশ্ন করেছেন "বাংলাদেশের বাঙালি কি পাহাড়ীদের মত সংরক্ষিত জাতি?" এর উত্তর খুঁজতে হবে ভারত বিভাগে। মুসলমানদের আলাদা বাসভূমি হিসেবে পাকিস্তানের সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে সংরক্ষিত জাতির মানসিকতা তৈরি করা হয়েছিল। সে সময় রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ পূর্ণ করার জন্য এই স্লোগান সামনে আনা হলেও পরবর্তীতে নতুন রাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বেশিরভাগ সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। ফলে একাত্তরের পরে এমনকি বাহাত্তরের সংবিধান সাম

লেখা

Image
সেদিন এক বন্ধু ফোন করে অনুযোগ করল। তোর লেখায় দুই চারটা লাইক পড়ে, কোন কোন লেখায় একটাও পড়ে না। কেউ যদি না ই পড়ে, না লাইক দেয় তাহলে লিখিস কেন? বুঝলি, ছোটবেলায় আমাদের গ্রামে কয়েকজন পাগল ছিল। সব পাগলই সারাদিন নিজে নিজেই কথা বলত। কেউ শুনল কি শুনল না এ নিয়ে ওদের মাথা ব্যথা ছিল না। অবশ্য যদি ওদের মাথা বলে কোন কিছু একটা আছে এটা মেনে নিত অন্যেরা। ওরা নিজেদের কথা বলার তাগিদ থেকেই কথা বলত।  তার মানে কি তুই পাগল? সেটা অন্যেরা বলতে পারবে। আমি লিখি লেখার তাগিদ থেকে। তাছাড়া লেখায় আমার হাত আছে মানে ইচ্ছে হল লিখলাম, হল না লিখলাম না। কিন্তু অন্যের পড়ায় তো আমার হাত নেই। তবে লিখতে লিখতে যদি একদিন লেখাগুলো অন্যদের পড়ার উপযোগী করে তুলতে পারি সেদিন নিশ্চয়ই পড়বে।  দুবনার পথে, ০৪ মার্চ ২০২৪

প্রায়োরিটি

Image
মানুষ খেতে পারছে, একজনও না খেয়ে মরেনি। ঠিকই তো। লঞ্চ ডুবে মারা যাক, আগুনে পুড়ে মারা যাক, দুর্ঘটনায় মারা যাক - সেটা কোন ফ্যাক্টর নয়। আসল কথা মরার আগে সে পেট ভরে খেয়ে মরেছে।  পুরানো এক চুটকি মনে পড়ল। রুগী মরে যাবার পর ডাক্তার এলেন। এসেই রুগীর আত্মীয়াকে প্রশ্ন করলেন যে ওষুধগুলো দিয়েছিলাম রুগীকে খাইয়েছিলেন? হ্যাঁ ডাক্তার সাহেব। ঠিক যেভাবে বলেছেন সেভাবেই খাইয়েছি। ওষুধ খেয়ে রুগী ঢেকুড় তুলেছিল? তুলেছিল ডাক্তার সাহেব। খুব ভালো। খুব ভালো। ঠিক আছে আজ উঠি তাহলে।  কিন্তু রুগী যে মারা গেল? হ্যাঁ, কিন্তু মৃত্যুটা ততটা পীড়াদায়ক হয়নি যতটা হত ওষুধ না খেলে। সুস্থ ভাবে, শান্তিতে মরাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলি! মস্কোর পথে, ০৩ মার্চ ২০২৪

অন্ধবিশ্বাস

Image
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট আমেরিকা যখন হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা ফেলে সেটা না ছিল জাপানকে যুদ্ধে হারানোর একমাত্র উপায়, না ছিল আমেরিকার নিরাপত্তার প্রশ্ন। সেটা ছিল অন্যদের, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি সতর্ক বার্তা। এখন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কথা বলছেন, আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেছেন রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর যুদ্ধের কথা। এর প্রেক্ষিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন তাদের শক্তি ও সামর্থ্য আছে এসব দেশে এমন আঘাত হানার যার ফলাফল কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। এই নিয়ে পশ্চিমারা গোস্বা করেছে যে পুতিন পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় দেখাচ্ছেন। পশ্চিমা বিশ্বের সমস্যা হল তারা নিজেদের মত ও পথকে এতটাই অন্ধভাবে বিশ্বাস করে, নিজেদের কাজের ন্যায্যতার ব্যাপারে এতটাই আস্থাশীল যে এর বিরুদ্ধে যেকোন প্রতিবাদ, তাদের মত ও পথকে গ্রহণ না করার যেকোন প্রচেষ্টা তারা অগণতান্ত্রিক, আধুনিকতার বিরোধী, অমানবিক বলে মনে করে। আধুনিকতা ও মানবতার হোলসেল লাইসেন্সধারী এসব নেতারা শুধু এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো নয়, পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ মানুষের জন্য বিপদজনক। কি বলা যায় এসব নেতা ও তাদের অনুসারীদের? একট

নৈকট্য

Image
ছোটবেলায় দুটি জমির সীমানা নির্ধারণকারী আল ছিল কিছুটা চওড়া। তার উপর দিয়ে দিব্যি হেঁটে যাওয়া যেত। সে সময় পা ছোট ছিল বলেই নয়, আসলে মানুষ তখন অন্যের প্রাইভেট স্পেসকে শ্রদ্ধা করত। পরে সেই আলগুলো সরু হতে হতে একেবারে মিশে যাবার অবস্থা। পাশাপাশি দুই জমির নৈকট্য বাড়ার সমান অনুপাতে বাড়ত জমির মালিকদের দূরত্ব। একই ঘটনা ঘটে শহরেও। দুই বাড়ির মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ দূরত্ব কমতে কমতে পরিণত হয় অস্বস্তিকর নৈকট্যে। আর এর ফল প্রকাশ পায় অগ্নিকাণ্ড সহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায়। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে প্রচুর মানুষ মারা গেছে। এ নিয়ে কথা হবে। সাধারণ মানুষ, সরকার সবাই দুঃখ প্রকাশ করবে। কিন্তু মনে হয় না সরকার আইন করে অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবেলায় দুই বাড়ির মধ্যে কতটুকু দূরত্ব থাকা উচিত সেটা ঠিক করবে অথবা বাড়ির মালিকেরা যারা এসব বাড়িতে থাকবে তারা নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নিজেরাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। মানুষ সব ভুলে আগের মতই দিন কাটাবে পরবর্তী অগ্নিকাণ্ডে নতুন করে ক্ষোভ প্রকাশের জন্য। শুধুমাত্র নিজের সুবিধা অসুবিধার কথা ভেবে মানুষ ভুলে যায় সে অনেকের একজনই, সমাজের একটা ইট মাত্র। সমা