Posts

Showing posts from June, 2017

ই আর ঈ এর গল্প

Image
বছর ঘুরে আবার ঈদ এলো ইদ-এর ছদ্মবেশে । ছদ্মবেশে এ কারণেই যে বাঁকা চাঁদের সাথে মনের কোণে গেঁথে যাওয়া ঈদ শব্দটা তো আর বাংলা একাডেমীর এক নোটিশেই মুছে যায় না! এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকে অনেক কথা লিখেছে, লিখছে, আরও লিখবে । হয়তো দেশের পত্রপত্রিকায়ও এ নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে । অনেকেই বলছেন ঈদ হোক আর ইদ হোক, তাতে তো আনন্দের আর ঘাটতি পড়ছে না, তাহলে এত কথা কেন? কেউ বলছে আমাদের দুটো ণ, ন, তিনটে স, শ, ষ, তিনটে র, ড়, ঢ় । জানি এগুলো লেখা হছে অনেকটা মস্করা করে । তবে একদিন যদি বাংলা একাডেমী এখানেও হাত দেয় অবাক হবার কিছুই থাকবে না । কিন্তু ভাষা তো শুধু ভাব প্রকাশের মাধ্যমই নয়, এটা একটা ঐতিহ্যও বটে । শুনেছি আরবী ভাষায় প নেই বলে পাকিস্তানে এখন অনেকেই প বর্জন করেছে ব এর সমর্থনে, ফলে পাকিস্তান হয়েছে বাকিস্তান । আমাদের দেশেও জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেভাবে আরবী ভাষা আর সংস্কৃতি প্রবেশ করছে, তাতে এই বাংলা একাডেমীই যদি ভাষা সংস্কারের নামে  আরবী হরফে বাংলা লেখা শুরু করতে ফতোয়া দেয়, তাতে কি অবাক হবার কিছু থাকবে? জীবনের পরিবর্তে জিবন লিখলেই মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি বা অবনতি ঘটবে না, তাই এ ধরনের পরিবর্তন

বাবা

Image
ঘুম ভেঙ্গে দেখি ফেসবুক মেতে উঠেছে বাবা দিবসের উৎসবে। হঠাৎ করেই আমি চলে গেলাম ছোটবেলার সেই দিনগুলোয় যখন বাবা ছিলেন, কিন্তু বাবা দিবস ছিল না, অথবা বেতার তরঙ্গে ভাসতে ভাসতে সেটা তখনও কালীগঙ্গার তীরে এসে পৌঁছেনি। মনে পড়লো সেই সন্ধ্যাগুলোর কথা, যখন দিনের শেষে বাবা আমাকে কোলে নিয়ে রংখোলা যেতেন হাঁটতে হাঁটতে। আমি বাবার কাঁধে মাথা রেখে কখনোবা ঘুমের ভান করতাম, আবার কখনো রাস্তার পাশের কদম, গাব, জাম্বুরা, বিলেতি গাব, কতবেল আর আমগাছের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। কখনও সময় কাটতো চুপ করে, কখনও বাবাকে জিজ্ঞেস করতাম এ কথা সে কথা।   এরপর আমি দেশ ছেড়ে রাশিয়া চলে আসি। ১৯৮৯ সালে মাস্টার্স শেষ করে যখন দেশে যাই – দু’জনে গেলাম কোলকাতা বেড়াতে। এ অনেকটা অন্ধ আর খোঁড়ার মত। বাবার ছাত্রজীবন কোলকাতায় কেটেছে, তাই তিনি ও শহর চিনতেন হাতের পাঁচ আঙ্গুলের মত, তবে আশি পার করে একা চলার শক্তি তেমন ছিল না। আর আমি কলকাতার পথঘাট চিনি না, তবে পঁচিশ   বছরের যৌবনে আমার মধ্যে শক্তি তখন অফুরান। এরপরে ১৯৯১ সালে যখন দেশে গেলাম, বাবা তার তিন সপ্তাহ আগেই চলে গেছেন তারার দেশে। এরপর থেকে আর বাবার সাথে আমার ছাড়াছাড়ি হয়নি। যখন কাজে যাই দু’ধার

থেমিসের মৃত্যু

Image
ঝড় আর ঝড়, আজ চারিদিকে শুধুই ঝড়ের আনাগোনা। উপকূলে ঝড়, রাজনৈতিক মঞ্চে ঝড়, আর সেই সাথে মুষল্ধারে বৃষ্টি যা বন্যা হয়ে একদিন সব ভাসিয়ে নিয়ে যাবে – এই দেশকে, দেশের রাজনীতিকে – সব সব। আমি কখনই দেশের টকশো দেখি না। তবে সুলতানা কামালকে নিয়ে এতো ঘটনার পর ফেসবুকের লিঙ্ক ধরে দেখলাম ঐ টকশো। আর ভাবলাম বানের জলে ভাসতে ভাসতে কত দুরেই না চলে গেছি আমরা। মনে পড়লো স্কুল জীবনের কথা। আমাদের ইংরেজী পড়াতেন আতাব আলী স্যার। তিনি তবলিগ করতেন। এখনো করেন। আমার সাথে প্রায়ই ক্লাসে কথা হতো – উনি বলতেন সৃষ্টিকর্তার কথা, আমি প্রকৃতির। কত ধরনের কথাই না হতো, কত ধরনের বিতর্ক। এখন মনে হয় – ডিজিটাল বাংলাদেশে এসব আর করা যায় না। হঠাৎই মনে পড়ে গেল মহাভারতের গল্প, যুধিষ্ঠিরের স্বর্গারোহণ। তিনি একাই গেছিলেন। তার ভাইয়েরাও তার সাথে যেতে পারে নি। হ্যা, হিন্দু ধর্মে আছে আমাদের কাঁধে বসে থাকে যমরাজের দুই দুত – চিত্রগুপ্ত না কি যেন নাম। ওরা সারাক্ষন লিখে যায় আমাদের ভালমন্দের উপাখ্যান। অবশ্য সেটা হতো অনেক আগে। আজকের ডিজিটাল যুগে ওরা নিশ্চয়ই ওয়েবক্যাম লাগিয়ে দেয় সদ্যোজাত শিশুর শরীরের কোথাও আর স্বর্গে বসেই কোন বড় মনিটরে দেখে কে কী কর