Posts

Showing posts from February, 2024

সার্বক্ষণিক

Image
যখন দেশে ছিলাম তখন অনেককেই দেখতাম সার্বক্ষণিক রাজনীতি করতে। এদের বেশিরভাগই বামপন্থী। অনেকেই আশু বিপ্লবের স্বপ্নে বিভোর হয়ে বাড়িঘর, পরিবার পরিজন, স্ত্রী সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা বেমালুম ভুলে যেতেন। এ নিয়ে এসব সংসারে অশান্তি কম ছিল না। তবে সবার শান্তির জন্য অনেকেই ব্যক্তিজীবনে এই অশান্তিটুকু মেনে নিতেন। এখন একই ভাবে পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা নিজ নিজ দেশের কৃষক, শ্রমিক, সাধারণ মানুষের সুখ শান্তির কথা ভুলে ইউক্রেনে গণতন্ত্র রক্ষায় ব্যস্ত যদিও বর্তমান ইউক্রেনের গণতন্ত্র আইয়ুব খানের গণতন্ত্রের চেয়ে কোন মতেই সরস নয়। বরং এই গণতন্ত্র ফ্যাসিবাদী অলঙ্কারে সজ্জিত। এই দু ধরণের লোকদের মধ্যে মিলটা এখানে যে তারা কেউই তারা কেউই বর্তমান পরিস্থিত মেনে নিতে পারছে না। দেশের সার্বক্ষণিক কর্মীরা সেটা বদলাতে চাইত, পশ্চিমা নেতারা সেটা প্রাণপণে ধরে রাখতে চায় নিজেদের শাসন ও শোষণের ভিতটা আরও বেশিদিন টিকিয়ে রাখার জন্য। দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মিথ্যাচার

Image
দেশের কোন কোন দার্শনিকের মতে মাদ্রাসার শিক্ষকদের মান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপকদের থেকে অনেক ভালো। কোন সিদ্ধান্ত দেবার আগে সমস্যার সঠিক উপস্থাপন প্রয়োজন। সএজন্য এখানে কতগুলো বিষয় উল্লেখ করা দরকার  ১) বিষয়টা কি - ধর্ম না ইংরেজি?  ২) মাদ্রাসার শিক্ষকরা যত স্বাধীন ভাবে ধর্মের বয়ান আর ভিন্ন মতাবলম্বীদের মুনণ্ডুপাত করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কি তেমনি নিঃশঙ্ক চিত্তে বিজ্ঞান বা আধুনিক সাহিত্য নিয়ে কথা বলতে পারে? ৩) এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই মাদ্রাসা পাশ করে আসে। এরপর তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক প্রাক্তন মাদ্রাসা ছাত্র কিনা? এসব ব্যাপারে কোন টু শব্দ না করে এধরণের সিদ্ধান্ত আসলে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মিথ্যাচার। দুবনা, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

যোগ্যতা

Image
পিছিয়ে পড়া বা জোর করে এতদিন পেছনে ফেলে রাখা জাতি বা গোষ্ঠীকে অবশ্যই উঠে আসার সুযোগ দিতে হবে কিন্তু একই সাথে যোগ্যতার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। কারণ তা না হলে একদিকে যেমন কোয়ালিটিকে কম্প্রোমাইজ করা হয় একই ভাবে অনেক যোগ্য প্রার্থীর প্রতি অবিচার করে তাদের কর্মবিমুখ করা হয়। এর উদাহরণ বিশ্বের দেশে দেশে ভুঁড়ি ভুঁড়ি। শুনলাম আমেরিকায় এখন নিকি, কমলা আর মিশেলকে নিয়ে ভাবা হচ্ছে। আর এই ভাবনার পেছনে বড় কারণ তারা নারী। নারী বলে যেমন কাউকে অবহেলা করা উচিৎ নয়, তেমনি উচিৎ নয় নারী বলে কাউকে কনশেসন দেয়া বিশেষ করে আমেরিকার মত দেশের প্রেসিডেন্ট পদে। কারণ এটা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ যার প্রেসিডেন্টের হাতে মানব সভ্যতার অস্তিত্ব অনেকটাই নির্ভর করে। আজ যদি নারী বলে কাউকে সামনে আনা হয় কাল বিএলএম, এলজিবিটি এসব ক্রাইটেরিয়া সামনে চলে আসতে পারে। যেকোন পদের জন্য প্রথম ও একমাত্র ক্রাইটেরিয়া হওয়া উচিৎ সেই দায়িত্ব পালনে তার পেশাগত যোগ্যতা। অন্যান্য বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, তবে সেগুলো যেন মূল না হয়। বলতে পারেন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের ব্যাপারে আমার এত মাথা ব্যাথা কেন? হত না যদি না তার হাতে পার

উত্তর

Image
ভজন সরকারের পাঠানো উত্তরের-দেশে বইটি পড়লাম। অনেক দিন পরে এত দ্রুত (এক সপ্তাহ) কোন বই পড়লাম। আমি গল্পের বই পড়ি সাধারণত শোবার আগে। তবে ইদানিং নিজের পড়ার বই (গণিত ও পদার্থবিদ্যা, আর একটু লেখালেখি করি বলে ইতিহাস) এত সময় নেয় যে এর বাইরে তেমন একটা পড়া হয় না, পড়লেও একেকটা বই পড়তে মাস কাবার। যেহেতু ভজন ক্যানাডা থাকে আর সেটা উত্তর গোলার্ধে তাই প্রথমে মনে হয়েছিল এটা ওর সেই জীবন নিয়ে লেখা। কিন্তু অনেকগুলো গল্পের সম্ভার এই বইয়ে বিভিন্ন এলাকাই স্থান করে নিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এসেছে ভারত ভাগের কথা ও দেশ থেকে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভারত যাবার গল্প। উল্টোটা যে হয়নি তা নয়, তবে সেই সময়ের বেশির ভাগ বই হিন্দু লেখকদের লেখা তাদের দেশত্যাগের দুঃখের কথা জানিয়ে। হাসান আজিজুল হকের আগুন পাখি সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম, যদিও আমার বিশ্বাস ওপার বাংলা থকে চলে আসা লোক বাংলাদেশে খুব কম নয়। রেডিয়েশন দুই ধরণের - স্বতঃস্ফূর্ত, যা কিনা স্বেচ্ছায় ঘটে ও জোরপূর্বক, যা ঘটে বাহ্যিক বল প্রয়োগের ফলে। ইমিগ্রেশনও তাই। দেশ ভাগের সময় পূর্ববাংলা থেকে হিন্দুদের চলে যাওয়া ছিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জোরপূর্বক, বাধ্য হয়ে। উল্টো দিকের দেশত্যাগ বেশির

দর্শন

Image
একসময় বিশ্বের সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, টোল অর্থাৎ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চার্চ, বৌদ্ধ বিহার বা অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিল। এটাকে পুঁজি করে কেউ কেউ বলতে চান যে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ এসব একদিন মাদ্রাসা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ইউনিভার্সিটির বাংলা, মাদ্রাসা তেমনি বিদ্যালয়ের আরবি শব্দ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাদ্রাসা শব্দ ব্যবহার তাই দোষের নয়। দোষের হচ্ছে বর্তমানে আমাদের দেশে মাদ্রাসা শব্দটি যে এক বিশেষ অর্থ বহন করে সেটা আমলে না নেয়া আর এভাবে আপাত সত্যের আড়ালে মিথ্যা প্রচার করা। যদি অক্সফোর্ড কেমব্রিজ এসব বিশ্ববিদ্যালয় "এদের ভাষায় মাদ্রাসা" থেকে শুরু করে সত্যিকারের জ্ঞানার্জনের পথে চলছে আমাদের মাদ্রাসাগুলো জ্ঞানের আলো যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য নিজেদের চারিদিক থেকে বন্ধ করে রেখেছে। শুধু তাই নয় এই সব দার্শনিকদের হাত ধরে প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মাদ্রাসায় পরিণত হবার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দুবনা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

স্বাধীনতা

Image
গুগল বা এই জাতীয় ট্র্যান্সন্যাশনাল কোম্পানির টপ ম্যানেজারের সাথে গ্রামের ছোট্ট মুদি দোকানের মালিকের তুলনা করা অবান্তর। টপ ম্যানেজার কী অর্থে বিত্তে, কী নামে যশে, কী সামাজিক মর্যাদায় মুদি দোকানের মালিকের চেয়ে হাজার যোজন এগিয়ে। তবে এত কিছুর পরেও টপ ম্যানেজার একজন কর্মচারী যার ভাগ্যের সুতা কোম্পানির মালিকের হাতে। সেক্ষেত্রে দোকানের মালিক স্বাধীন যদিও সেই স্বাধীনতা নির্ভর করে ক্রেতা আর বিশেষ করে স্থানীয় গুন্ডাদের উপর। আমেরিকার নেপথ্য রাজা উজিররা চায় বিশ্বের দেশে দেশে নিজেদের টপ ম্যানেজারদের প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্বে দেখতে। নাম, যশ, সভ্য বিশ্বের নেতাদের সান্নিধ্য পাবার লোভে অনেকেই সে পথে পা বাড়ায়। তবে যারাই মুদি দোকানের মালিকের মত একটু হলেও স্বাধীনতা উপভোগ করতে চায় সাথে সাথে পাড়ার গুন্ডাদের মত পশ্চিমা বিশ্ব গণতন্ত্র গেল গণতন্ত্র গেল বলে ধেয়ে আসে। মস্কোর পথে, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

খেলা খেলা সারা বেলা

Image
যুদ্ধ তো নয় যেন কাজিনো বা পাশা খেলা চলছে। যুধিষ্ঠির যেমন দুর্যোধনের কাছে রাজ্য থেকে শুরু করে একে একে ভাইদের, এমনকি স্ত্রী দ্রৌপদীকে পর্যন্ত হারিয়েছিলেন ইউক্রেন সহ ইউরোপের অবস্থাও তাই। ন্যাটোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের মিটিংএ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যেমন করেই হোক রাশিয়ার বিজয় রোধ করতে হবে। মূল যুক্তি - মরবে ইউক্রেনের মানুষ, ইউরোপ বা আমেরিকার নয়। এর চেয়ে আর কত স্পষ্ট করে বলতে হবে যে ওদের কাছে ইউক্রেনের মানুষ ইউরোপিয়ান নয়। ধীরে ধীরে ইউরোপ আমেরিকার সরকার হারাচ্ছে জন সমর্থন। আচ্ছা যে যুদ্ধের পেছনে জনগণের সমর্থন নেই, যে যুদ্ধের ফলে সেসব দেশে জনজীবন অতিষ্ঠ, তারপরেও এরা কীভাবে গনতাত্রিক, জন দরদী সরকার হয় আর জনগণের সমর্থন যাদের পেছনে আছে সেই সব সরকার হয় কর্তৃত্ববাদী, একনায়ক - তা সে পুতিন হোক, সি হোক, মোদী হোক আর হাসিনা হোক। আজ যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য ইউরোপের আর আমেরিকার জনগণকে জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে। ফিনল্যান্ড সহ অনেক দেশে বাঙ্কার তৈরির হিজিগ পড়ে গেছে শুনলাম। জনগণকে ভয়ের মধ্যে রেখে, ভয় দেখিয়ে কীভাবে গণতান্ত্রিক সরকার হওয়া যায় সেটাই আমার মাথায় ঢুকে না। নাকি বিশ্বের দেশে দেশে নতুন করে পাঠ্য পুস্তক লেখ

কলাগাছ

Image
আমাদের ছাত্র জীবনে একটা কথা প্রচলিত ছিল। যদি কলা গাছকেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট করা হয় তাহলেও সে দেশ ঠিকঠাক চলবে। আসলে সোভিয়েত আমলের শেষে আর ইয়েলৎসিনের আমলে রাশিয়ার প্রশাসন এতটাই দুর্বল ছিল যে বাইরে থেকে আমেরিকা মনে হত সুইস ঘড়ির মত। আর এই বিশ্বাস থেকেই অনেকে বলত আমেরিকার শাসন ব্যবস্থা এতটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ যে কে প্রেসিডেন্ট সেটা কোন ফ্যাক্টর নয়। তবে দুই দশক পরে আমেরিকা আর সেই আমেরিকা নেই। তাছাড়া ইন্টারনেটের কারণে বাইরে থেকেও তার আসল চেহারা অনেক স্পষ্ট হয়েছে। ফলে বাইরের মানুষ খুব ভালো ভাবেই অনুভব করে যে এখন আর কলাগাছের যুগ নেই। তবে জলে থেকে মাছ যেমন জলের উপস্থিতি টের পায় না, আমেরিকার এস্টাব্লিশমেন্ট একই ভাবে নিজেদের দুর্বলতা টের পায় না। তাই বাইডেনের মত অভিজ্ঞ কিন্তু প্রায় অথর্ব একজনকে আবারো প্রেসিডেন্ট করতে উঠেপড়ে লাগে। এর কারণ একটাই। পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়ছে তারা আরও খারাপ কিছু করতে চায় কিন্তু দায়িত্ব নিতে চায় না। গণতন্ত্রের খেলা খেলে দেশবাসীর কাঁধে ভূত চাপিয়ে দিতে চায়। এটাই আধুনিক বাজার গণতন্ত্র। দুবনা, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

চৌবাচ্চা

Image
এক বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে বই লিখি না কেন তার যুক্তি দেখিয়ে গতকাল এক স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম লেখক শিরোনামে। এটা ছিল নেহায়েত চুটকি। তবে রুশরা বলে সব চুটকির ভেতরেই কিছুটা চুটকি থাকে, বাকিটা সত্য। সোভিয়েত আমলে এভাবেই মানুষ প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করত।  গতকালের স্ট্যাটাসে বিভিন্ন ধরণের প্রতিক্রিয়া আমাকে ভাবতে বাধ্য করল। মনে পড়ল এক যুগ আগের কথা। ২০১০ সালে আমরা মস্কোয় বাংলাদেশ প্রবাসী পরিষদ রাশিয়া নামে এক সংগঠন গড়ি। উদ্দেশ্য ছিল এখানে বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা করা আর সম্ভব মত দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করা। পরে এক পর্যায়ে বুঝলাম এখানে অনেকেই তারচেয়ে বেশি আগ্রহী বিভিন্ন পদে। তারাপদ রায় মনে হয় বলেছিলেন ও খুব গরীব, ওর টাকা ছাড়া আর কিছু নেই। সেই অভাব পূরণের জন্য অনেকেই এসব সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ইত্যাদি হতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। যদিও আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল সেই সমস্যার সমাধান করার তবে অভিজ্ঞতা হয়েছিল প্রচুর। এখন, বিশেষ করে একুশের বইমেলা উপলক্ষ্যে আমাদের মধ্যে লেখক হবার যে ইঁদুর দৌড় শুরু হয় তা দেখে আমার মাঝে মাঝে মনে হয় এটাও কি আমাদের আইডেন্টিটি ক্রাইস

লেখক

Image
এক বন্ধুর সাথে দেখা অনেক দিন পরে। গল্প গুজব, পরিচিত অপরিচিতদের হাড্ডি কচলানো (এটা না করলে নিজেদের মনে হয় বাঙালি মনে হয় না)। শেষে কথা উঠল ফেসবুকে আমার লেখালেখি নিয়ে। তুমি ফেসবুকে এত লেখালেখি করে তা একটা বই লেখ না কেন? তুমি উসপেনস্কির আঙ্কেল ফিওদর, কুকুর ও বিড়াল গল্পটি পড়েছ? না। কি আছে সেখানে? বাচ্চাদের বই। স্কুল পড়ুয়া ফিওদর, কুকুর শারিক আর বিড়াল মাত্রোসকিনের কাহিনী। একদিন কুকুরের খুব ইচ্ছে হল ক্যামেরা কেনার। ক্যামেরা কিনে খরগোশের ছবি তুলতে গিয়ে ওর পেছনে ঘন্টা দুয়েক দৌড়ে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে এলো সে। আসলে খরগোশ বুঝতেই পারেনি যে কুকুর তাকে ধরতে আসেনি, ছবি তুলতে এসেছে। ওকে মন খারাপ করতে দেখে বিড়াল বলে ভাগ্যিস খরগোশের ছবি তুলিসনি। নাহলে ছবি দেবার জন্য আরও কয়েক ঘণ্টা ওর পেছনে দৌড়াতে হতো।  কিন্তু বইয়ের সাথে এর সম্পর্ক কি? বই প্রকাশ করলে পাঠকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হত বই বিক্রি করার জন্য। এত সময় পাঠকদের পেছনে ঘুরে কাটালে লিখব কখন? মস্কো, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সুখ

Image
আপেক্ষিক এই পৃথিবীতে সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ণয় করা হয় তুলনা করে। মানুষ নিজের সাফল্য নির্ণয় করে অন্যদের সাথে তুলনা করে। এটা করতে গিয়ে অনেকেই নিজে কি করল সেটা বিচার না করে অন্যরা কতটুকু ব্যর্থ হল সেটা আমলে নেয়। এরা স্বাভাবিক ভাবেই ঈর্ষাপরায়ণ। ফলে তাদের সব সময় নির্ভর করতে হয় অন্যের দয়ার উপর। এটা অনেকটা খেলার মত। নিজের খেলা উন্নত না করে প্রতিপক্ষের ভুলের উপর ভরসা করে বসে থাকা। যারা নিজের কাজ ভালবাসে তারা অন্যের উপর নির্ভর করে না, অন্যের ব্যর্থতার জন্য বসে থাকে না, এমনকি অন্যদের সাথে নিজেকে তুলনাও করে না। তারা গতকালের আমির সাথে আজকের আমিকে তুলনা করে, দেখে আজকে সে নতুন কি জানল। তার প্রতিযোগিতা একান্তই নিজের সাথে, নিজের জানার পরিধি কিছুটা হলেও আরেকটু বাড়ানোই তার সাফল্য বা ব্যর্থতার মাপকাঠি। তবে তারা সাফল্যে বা ব্যর্থতা নিয়ে ভাবে না, ভাবে সে তার লক্ষ্যে পৌছতে নিজের জানার ভান্ডার কতটুকু সমৃদ্ধ করতে পারল।  মস্কোর পথে, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

বর্তমান

Image
আমরা প্রায়ই অতীত নিয়ে গর্ব করি আর ভবিষ্যতে বিভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনা করি। আচ্ছা এটাই কি মানুষের সাথে জীব জন্তুর পার্থক্য? এটাকি ভাষার কারণে? কারণ বুদ্ধি সবার আছে কিন্তু ভাষা, অন্তত মানুষের মত ভাষা সবার নেই। আর এই ভাষার কারণে আমরা অতীত নিয়ে কথা বলি, ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করি কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে বর্তমান নিয়ে তেমন ভাবি না। আর যদি ভাবি সেটাও অতীতের সাথে তুলনা করে বা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। পক্ষান্তরে জীব জন্তু শুধু তাদের বর্তমান নিয়েই ব্যস্ত ঠিক যেমন সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। অবশ্য হতদরিদ্র মানুষ তো সমাজের হর্তাকর্তাদের চোখে মানুষ নয়। আমরা সবাই মিলে সুলতান, মুঘল, ইংরেজ, জমিদারদের শোষণের কথা বলে ক্রোধ প্রকাশ করি বা সেই সময়ের সুশাসনের কথা বলে আপ্লুত হই, স্বর্গে রাজভোগ খেতে খেতে অপ্সরাদের নাচ দেখা বা বেহেশতে ৭২ জন অনিন্দ্য সুন্দরী হুর বেষ্টিত হয়ে নিরলস জীবন (নাকি মরণ!) কাটানোর পরিকল্পনা করি, কিন্তু এই মুহূর্তে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সামাজিক অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলি না। নেশা করলে মানুষ ঠিক নেশার সময়টাই মাতাল থাকে সব দুঃখ ভুলে যায়। এতে সে না ভোলে অতীত না গড়তে পারে ভবিষ্যৎ। ধর্ম

বাছাই

Image
আমাদের এখন ছবি প্রদর্শনীর প্রস্তুতি চলছে। গতকাল সিমিওন দুটো পুরানো ছবি এনেছিল। প্রিন্ট করা। আমরা সাধারণত প্রথমে সফট কপি থেকে বাছাই করি, বাছাই সম্পন্ন হলে বলি সেগুলো প্রিন্ট করত যাতে অকারণে পয়সা খরচ করতে না হয়। ওর দুটো ছবি আগে থেকে প্রিন্ট করা ছিল অন্য এক প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে যা কোন কারণে প্রদর্শিত হয়নি (আমরা শুধু সেসব ছবিই প্রদর্শন করি যার প্রিন্ট ভার্সন আগে কোথাও প্রদর্শিত হয়নি)। ও এসে ঠাট্টা করেই বলল আজ তোমাদের বেশ কঠিন কাজ করতে হবে। কি? দু'টো ছবি থেকে দু'টো বেছে নিতে হবে। সবাই হেসে উঠলো। তখন ইউরি গরবাচেভকে নিয়ে একটি চুটকি বলল Мужик сидит с одным арбузом. Продает. Мимо идет товарищ Горачев. Продаете? Да. Я возьму. Выбирайте. Как? У вас арбуз всего один. Как выбирать-то? Мы тоже вас из одного выбирали. বাংলা তর্জমায় এটা এরকম এক লোক একটি তরমুজ নিয়ে বসে আছে বিক্রি করবে বলে। পাশ দিয়ে যাচ্ছেন কমরেড গরবাচভ। বিক্রি করছেন? হ্যাঁ। আমি কিনব। কোনটা নেবেন বেছে নিন। কীভাবে? আপনার তো মাত্র একটা তরমুজ। কেমনে বেছে নেব? আমরা কিন্তু আপনাকেও একজনের মধ্য থেকেই বেছে নিয়েছি

সংখ্যা

Image
অনেক দিন পরে কলেজের এক সহপাঠীর সাথে কথা হল। স্বাভাবিক ভাবে যেটা হয়, এসব আলাপে সমসাময়িক রাজনীতি, সামাজিক পরিস্থিতি এসব উঠে আসে। এবারও ব্যতিক্রম ছিল না। অনেক কথার পর ও একটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল। ভাবলাম সেটাই শেয়ার করি দেশে এখন পূর্ণ উদ্যমে বইমেলা চলছে। সব ফেব্রুয়ারিতেই অবশ্য সেটা হয়। অধিকাংশ মানুষ বইমেলা উপলক্ষ্যে তো বটেই এমনিতেও বই প্রকাশ করে না। আমিও করি না। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মত আমারও নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মত আমিও সব সময়ই সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মত আমিও হাজারটা রোগে ভুগি। অধিকাংশ মানুষের মত আমিও চাই একটু ভালো থাকতে, একটু নিরাপদে থাকতে। জীবনের প্রায় সব কিছুতেই আমি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করি। তারপরেও আমি নাকি সংখ্যালঘু। তুমি তো বাইরে থাক। অনেক কিছু দেখেছ। কেন এমন হয় বলতো? আমার কাছে কোন উত্তর ছিল না। উত্তর খুঁজতে খুঁজতে মনে পড়ে গেল এক আফ্রিকান বন্ধুর কথা। রাশিয়া পড়াশুনা করেছে। এখন পশ্চিমা বিশ্বে আছে। একদিন ও দুঃখ করে বলেছিল ইউরোপের আদিবাসীরা জন্ম থেকে সাদা। ওরা রাগলে লাল হয়, শীতে হয় নীল, জ্বর এল