Posts

Showing posts from 2024

ঝগড়ার জয় হোক

Image
আমাকে বন্ধুবান্ধবরা মাঝেমধ্যে ছেলেমেয়েদের কথা জিজ্ঞেস করে। উত্তরে বলি ফোন যেহেতু করেনি নিশ্চয়ই ভালো আছে। সমস্যা হলে ঠিকই ফোন করত। তারমানে এই নয় যে আমি ওদের নিয়ে ভাবি না, খুব ভাবি, শুধু অযথা ফোন করে বিরক্ত করতে চাই না। আমি আসলে কাজ না থাকলে কাউকে ফোন করি না। আগে দরজায় চিরকুট রাখতাম এখন ফেসবুকে চিরকুট রাখি, যেমন এটা। শুধু জানাতে যে এখনও সবাইকে জ্বালাব, এত সহজে বন্ধুরা আমার হাত থেকে রক্ষা পাবে না। একটা জিনিস খেয়াল করেছি যখন কোথাও সমস্যা হয় ও লোকজন কারো সম্পর্কে দুর্নাম করতে চায়, অভিযোগ করতে চায় তখন ফোন করে। সবাই শুরু করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। নিজেকে শান্তির দূত, সঠিক সমাধান দেবার হোলসেল লাইসেন্সধারী হিসেবে জনগণের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে। কিন্তু সব সমাধান যে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য নয়, মাছের জন্য ডাঙ্গা মোটেই নিরাপদ আশ্রয় নয় সেটা বেমালুম ভুলে গিয়ে। এটা ছেলেমেয়েদের মধ্যে খুব দেখেছি ওদের ছোটবেলায়। আজকাল তাই বলি নিজেদের সমস্যা নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিতে, কারণ ওরা সবাই আমার সমান প্রিয়, আর সবার প্রতি সমান ভালোবাসা দেখিয়ে সবাইকে খুশি করা যায় না। যাহোক ইদানিং বিশ্বের বিভিন্ন প্

ভিন্ন মত

Image
কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুযায়ী এক বিন্দু থেকে আরেক বিন্দুতে যাবার অসংখ্য পথ আছে আর কোন কণার এসব পথের যেকোন একটা দিয়ে যাবার ননট্রিভিয়াল বা অতুচ্ছ সম্ভাবনা আছে। একই ভাবে প্রতিটি মানুষের, প্রতিটি প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার সম্ভাব্য পথ অসংখ্য ও প্রতিটি পথ অনন্য। সব পথ সবার জন্য সমান কার্যকরী নয়, তবে পরিস্থিতির বিচারে প্রতিটি পথ অপটিমাল। অন্তত সেই পথ তাকে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে পারে বলেই সে মনে করে এমনকি সারা বিশ্ব তার সাথে দ্বিমত পোষণ করলেও। যারা মূল স্রোতে হেঁটে অভ্যস্ত তারা অন্য পথের গুরুত্ব ও সৌন্দর্য বুঝতে বা মানতে চায় না কারণ তাদের সব কিছু বিচারের মাপকাঠি নিজেদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা। অন্য ভাবেও যে সফল হওয়া যায়, ভালো থাকা যায় এটা তাদের ধারণার বাইরে। মানুষের সমাজবদ্ধ জীব হওয়ার এই এক যন্ত্রনা। সে যতটা না নিজের তারচেয়ে বেশি সমাজের। তবে তাঁরা নিজের মত করে নিজের পথে চলতে চায় তাদের জন্য রবি বাবুর ডাক তো মিথ্যে নয় যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে  পথচলা আনন্দের হোক। দুবনা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

আলপনা ও ইলিশের গল্প

Image
নববর্ষের আলপনার ক্ষতিকর দিক নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে। নববর্ষের খাবারের পোস্ট দেখে প্যালেস্টাইনের অভুক্ত শিশুদের মুখ ভেসে উঠছে কারো কারো চোখে। অথচ গত একমাস ধরে ছিল ইফতারের খাবারের প্রাচুর্য। কেন আমরা দুদিনের ব্যবধানে অনুষ্ঠিত এক উৎসবের প্রতি প্রচন্ড সহনশীল অথচ অন্যটার প্রতি কটাক্ষ করি? কেন বাংলাদেশে বাঙালির একান্ত উৎসব নববর্ষ আজও সত্যিকার অর্থে সার্বজনীন হতে পারছে না? কারণ এখানে প্রশ্ন করার সুযোগ আছে, এই সংস্কৃতি প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়।  ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর দাঁড়িয়ে মুসলিম জাতি সত্তা বাঙালি জাতীয়তাবাদ তথা বাঙালি সত্তাকে পরাজিত করে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। একাত্তরে বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ধর্মীয় পরিচয়কে পেছনে ফেলে সামনে চলে আসে। আমরা বাঙালি - এটাই হয় আমাদের প্রথম পরিচয়। পঁচাত্তর পরবর্তী শাসকদের ইতিহাসের মোড় ঘোরানো ও বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর আপোষের নীতি ধর্মীয় পরিচয়কে আবার সামনে আসতে সাহায্য করে। মুরগি না ডিমের মত এখানেও আমরা আগে মুসলমান না আগে বাঙালি এই বিতর্ক অসমাপ্ত থেকে যায় যদিও যেকোন চিন্তাশীল মানুষের জন্য এটা বিতর্কের কোন বিষয় নয়।

শুভ নববর্ষ ১৪৩১

Image
না মহাবিশ্ব, না প্রকৃতি - এদের কারো কোন বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ নেই, নেই জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি বা অন্য কোন মাস বা পঞ্জিকা। টিকে থাকার জন্যই সবাইকে গতিশীল থাকতে হয়, ঘুরতে হয় নিজের অক্ষকে কেন্দ্র করে, বড় পরিবারের কেন্দ্রের চারিদিকে। সৌর পরিবারের সদস্যরা সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে, আবার সৌর জগৎ ঘুরে মিল্কি ওয়ের কেন্দ্রের চারিদিকে। এক কথায় এই গতিই জীবন। আর ঘুর্ণনের কারণেই প্রকৃতিতে ঘটনাবলীর পুনরাবৃত্তি। এ থেকেই জন্ম বিভিন্ন পঞ্জিকার। সেটা ধর্ম নির্ভর নয়, ভূগোল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ধর্মের নিয়মে চলে না, বরং এদের চলাচল ধর্মের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্ধারণ করে। তাই পয়লা বৈশাখ বা বাংলা পঞ্জিকাকে ধর্মের সাথে জড়ানোর চেষ্টা আসলে এক ধরনের অজ্ঞতা বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ঠিক যেমনটা অন্য যেকোনো পঞ্জিকা কোন ধর্মের সাথে গুলিয়ে ফেলা। চন্দ্র ও সূর্য পৃথিবীর আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল আলোক বর্তিকা হবার কারণে বহু আগে, এমনকি ধর্মের উৎপত্তি হবার আগেই সৌর ও চান্দ্র দু ধরনের পঞ্জিকার জন্ম। বিভিন্ন সময়ে মূলত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক, কখনো ধর্মীয় কারণে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় পঞ্জিকার গুরুত্ব কমে

নির্বাচন

Image
নির্বাচন নিয়ে জটিলতা মনে হয় বাংলাদেশের ক্রনিক্যাল অসুখে পরিণত হয়েছে। তা সে সংসদ নির্বাচন হোক আর অন্য কোন সংগঠনের কমিটির নির্বাচন হোক। কথায় বলে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। ঢেঁকির কথা জানি না, তবে বাঙালি নির্বাচনে নামলেই জটলা পাকায় এটা মনে হয় পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্রে পরিণত হতে চলছে। তবে এর একটা ভালো দিক হল এটাকে কেন্দ্র করে অনেক হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা ভেসে উঠছে, অনেকের সাথে নতুন করে যোগাযোগ হচ্ছে। সেদিন এক বন্ধু ফোন করল কিরে, কী মনে হচ্ছে? কী আর মনে হবে। ক্ষমতা চুম্বকের মত। বিপরীত মেরুর মানে ক্ষমতার মোহের বিরুদ্ধে যাদের প্রতিষেধক নেই তাদের আকর্ষণ করে। তাই। এক কাজ কর, দেশে চলে আয়। কেন? তোকে আমাদের সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বানিয়ে দিই। এত ছোট পোস্টে তো আমার পোষাবে নারে। কী পোস্ট চাস তুই? অপেক্ষায় আছি কবে ভগবানের পোস্টটা খালি হবে। তুই আর মানুষ হলি নারে। তোদের দেখে মানুষ হবার ইচ্ছেটা অনেক আগেই উবে গেছে। দুবনা, ১০ এপ্রিল ২০২৪

উপলব্ধি

Image
ধারণা করা হয় যে খৃষ্টপূর্ব কয়েক শ' বছর আগে রামায়ণ ও মহাভারত রচিত হয়েছিল। এই দুই মহাকাব্যের কলাকুশলীরা ঐতিহাসিক চরিত্র ছিলেন কিনা এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এদের রচয়িতাদের নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। এটাও সত্য যে ঐতিহাসিক হোক আর কাল্পনিক হোক এসব কাব্যের মহারথীরা রচয়িতাদের কাঁধে ভর করেই আমাদের কাছে এসেছেন। একদিন আমরা থাকব না কিন্তু বাল্মিকী বা ব্যাসদেব ঠিকই থাকবেন আরও হাজার হাজার বছর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্ম নেন ১৮৬১ সালে। ৮০ বছরের দীর্ঘ জীবনে তিনি দেশ বিদেশের মানুষের মনোজগতে সাহিত্য ও সংস্কৃতির যে সৌধ নির্মাণ করেছেন সেটাই তাঁকে অমর করে রাখবে অনন্ত কাল। আজ তাঁর বিরুদ্ধে কিছু মানুষের যে বিষোদগার সেটা রবীন্দ্রনাথকে যতটা না ছোট করার লক্ষ্যে তারচেয়ে বেশি তাঁকে খরকূটার মত ব্যবহার করে নিজেদের ভেসে থাকার চেষ্টা। এটা সবলের বীরগাথা নয়, দুর্বলের বেঁচে থাকার একান্ত আকুতি। রবি ঠাকুর মহান। তাই এত কিছুর পরেও এদের ক্ষমা করে টেনে তুলবেন। শুধু এসব মূর্খরা সেটা কোনদিন বুঝবে না, বুঝলেও স্বীকার করবে না। কারণ দুর্বলরা কখনো সত্যকে স্বীকার করে না। দুবনা, ০৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিক্রিয়া

Image
অনেক দিন পরে মস্কোয় বেশ কিছু বাংলাদেশী বন্ধুদের সাথে দেখা হল। বিভিন্ন বিষয়ে কথা বার্তা। একজন জিজ্ঞেস করল দাদা সলিমুল্লা খান রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে কি বলেছে শুনেছেন? তার কথা শুনতে হবে, তাকে এত গুরুত্ব দিতে হবে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু তিনি তো একজন উঁচু মানের গবেষক। অনেক পড়াশুনা করেন। কথায় কথায় বিভিন্ন নামকরা লেখকদের রেফারেন্স দেন।  আমি ২০১১ সালে প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলামের সেমিনারে কসমোলজির উপর প্রবন্ধ পাঠ করেছিলাম। পরে স্থানীয় এক ছাত্রী বলেছিল আমি যা বললাম সব কোরআনে লেখা আছে। সলিমুল্লা খান যদি ভালো গবেষক হতেন তাহলে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে সব মন্তব্যের রেফারেন্স কোরআনেই খুঁজে বের করতেন। যতদিন না পারে ততদিন ওকে গুরুত্ব দেবার কিছু দেখি না। এ আবার কেমন কথা? দেখ, এরা খুবই ধূর্ত। ইনিয়ে বিনিয়ে নিজ ধর্মের মাহাত্ম্য প্রচার করে। কিন্তু সব সময় ব্যবহার করে ভিনধর্মী মানুষের কথা যুক্তি হিসেবে। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মত। তাই এদের যত এড়িয়ে চলবে তত ভালো। আমাদের প্রতিক্রিয়াই তাদের জনপ্রিয়তার ভিত্তি। এড়িয়ে যাও, দেখবে এদের পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে গেছে। মস্কো, ০১ এপ্রিল ২০২৪

একটি পর্যবেক্ষণ

Image
ক্রকুসে সন্ত্রাসী হামলার উপর বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করছে। পশ্চিমা বিশ্ব কাছা দিয়ে নেমেছে এই ঘটনায় ইউক্রেন জড়িত নেই সেটা প্রচার ও প্রমাণ করতে। কারণ সবাই মিলে বার বার একই মিথ্যা বললে সেটা সত্য বলে বিশ্বাস করানো যায়। তবে আইএস সম্পর্কিত তাদের প্রচার এমনকি পশ্চিমা বিশ্বের অনেক পর্যবেক্ষক গ্রহণযোগ্য মনে করছে না। বিশেষ করে কয়েক মাস আগে জেনারেল মিলির সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে রুশদের জীবন নরকে পরিণত করার আহ্বানে আর নুল্যান্ডে পদত্যাগের আগে পুতিনের জন্য সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে এ কথা বলায়। এরা এখনও কোন সিদ্ধান্তে উপনীত না হলেও ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আঙ্গুল দেখাচ্ছে। আপাতত সেসব লিংকের উপর ভিত্তি করে। তবে এর পেছনে যে তথ্য আছে সেটা বোঝা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে এরা কতদূর পর্যন্ত যাবে? কারণ এতে যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কিছু কিছু মানুষ যারা এক সময় মস্কোয় বৃষ্টি হলে ঢাকায় ছাতা ধরতেন পশ্চিমা ভার্সনকে বাইবেলের বাণী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে এক সময় যারা সোভিয়েত ইউনিয়নের গুন গান করে আর পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে মুখে ফ

পোশাক

Image
গুলিয়ার পছন্দ সোভিয়েত আমলের বিভিন্ন টি-সেট। আমারও পছন্দ, তবে ছবি তোলার জন্য। ফলে ওদের মৃত্যু ঘটে আমার হাতেই। ও আবার নেটে সার্চ দিয়ে বের করে কেউ বিক্রি করছে কিনা। আজ যাচ্ছি কমলা রঙের দুটি টিপট কিনতে।  আমি মেট্রোয়। আধা ঘন্টা পরে পৌঁছে যাব।  আপনি প্রথম ওয়াগন থেকে বেরুলেই হবে। আমি অপেক্ষা করব। ওকে। চলে আসছি। আমার গায়ে হলুদ জ্যাকেট। আপনার? বাদামি চামড়া। মানে? আমি উপমহাদেশ থেকে। পরনে বসন্তের হালকা ওভারকোট। সাদা রঙের।  লোকজন মানুষের চেয়ে পোশাকের বেশি দাম দেয়। চামড়ায় নয়, পোশাকে চেনে। মুস্কিল। মস্কো, ২৫ মার্চ ২০২৪

ওজন

Image
আমি প্রায় সব সময়ই কিছু না কিছু নিয়ে ভাবি বা বলা চলে উড়ে বেড়াই। এটা যতটা না একাগ্রতা তারচেয়ে বেশি অন্যমনস্কতা। ভোলগায় বা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে কাটতে কয়েক দেখা গেল গ্রামে স্কুলের বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে এলাম বা কোন একটা অংকের সমস্যা নিয়ে কারো সাথে কথা বললাম। মিনিটের মধ্যে মনে মনে সারা পৃথিবী ঘুরে আসি। কত লোকের সাথে যে কথা বলি। সেটা প্রায় সব জায়গায়। সেদিন এ রকম ভাবতে ভাবতে হাঁটছি। সামনে বরফ গলা জল জমে আছে। আমি দেখলাম, কিন্তু কে জানে কেন, মনে হল আমি জলের উপর দিয়ে ঠিক হেঁটে যেতে পারব। গেলাম বটে। তবে প্রায় শূন্য ডিগ্রী তাপমাত্রার জল পায়ে বেশ জোরেশোরেই কামড় দিল। হয়তো ভেবেছিলাম যীশুর সাথে একই দিন যখন জন্ম আমিও তাঁর মত জলের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে পারব। সে গুড়ে বালি। অবশ্য পা ভেজায় অসুস্থ হবার আশঙ্কা থাকলেও ভালোই লেগেছে। বন্ধুরা আমাকে ওয়েটলেস বলেই জানে। পা ভিজিয়ে প্রমাণ পেলাম এই বাজারে আমারও কিছু ওজন আছে। দুবনা, ২৪ মার্চ ২০২৪

ক্রকুস

Image
এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে প্রথমে আমেরিকার পত্র পত্রিকা ক্রকুসের ঘটনায় চুপ করে থাকলেও এক সময় আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এক যোগে আইএস কে দায়ী করা হয় ওরা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়েছে সেই বরাত দিয়ে। তবে যে আইএসের প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে সেটা ওরা অনেক দিন থেকেই ব্যবহার করে না। তাই এটা আইএস করেছে নাকি ইউক্রেনকে আড়াল করার জন্য পশ্চিমা বিশ্বের প্রচেষ্টা সেটা ভাবার বিষয়। এছাড়া ৪ জন সন্ত্রাসী ও তাদের আরও ৭ জন সহযোগী ধরা পড়েছে ব্র্যানস্কে ইউক্রেনে পালানোর পথে। মধ্য এশিয়ার ওরা স্বীকার করেছে যে প্রত্যেকে ৫ লাখ রুবলের বিনিময়ে ওরা এতায় রাজী হয়েছে। অর্ধেক টাকা ওদের কার্ডে জমা হয়েছে। বাকিটা এরমধ্যে দেবার কথা ছিল। তবে ওদের যোগাযোগ হয়েছে টেলিগ্রাম কানালে। এছাড়া মনে রাখতে হবে যে ইউক্রেনে এখন সিআইএ ও মি৬ এর সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছুই হয় না। বুচা সহ অনেক ঘটনায় যে মি৬ জড়িত ছিল এটা এখন জলের মত পরিষ্কার। এছাড়া অনেক আমেরিকান পর্যবেক্ষক এর পেছনে সিআইএ ও মি৬ এর হাত দেখছে। আসলে এখন পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে আমেরিকা ও ব্রিটেন চায় না যুদ্ধ বন্ধ হোক, তারা বার বার শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা ভন্ডুল করে দিচ্ছে। তবে

জ্ঞান

Image
বিজ্ঞান মানেই জিজ্ঞাসা, বিজ্ঞান মানেই পুরাতনকে অস্বীকার করা নয়, পুরাতনের উপর দাঁড়িয়ে নতুন সত্যের সন্ধান করা। তাই তো নিউটন বলে তিনি অনেক দূর পর্যন্ত দেখেন, কারণ তিনি দৈত্যদের কাঁধের উপর দাঁড়িয়ে আছেন। একজন বিজ্ঞানী যখন নতুন কিছু সন্ধান করেন, তিনি তাঁর আগে কোন বিজ্ঞানীর কাজের উপর ভিত্তি করেই এসব করেন, অনেক সময় সেটাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে, অনেক সময় আগের ফলাফলের উৎকর্ষতা সাধনের মধ্য দিয়ে। সত্যিকারের বিজ্ঞানী তাই আগের কাজের সমালোচনা করলেও সেই বিজ্ঞানীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেন না। তবে সব গবেষক যে বিজ্ঞানী তা কিন্তু নয়। অনেকেই অনেক সফল মানুষকে হেয় করাটাই গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নেন। আর "আমি আইনস্টাইনকে সমালোচনা করলাম, রবীন্দ্রনাথকে নীচে নামালাম" ইত্যাদি বলে গর্ব বোধ করেন। এসব বলে হয়তো জনতার ভিড়ে বাহবা পাওয়া যায় কিন্তু জ্ঞানী হওয়া যায় না। আইনস্টাইন, রবীন্দ্রনাথ, শেক্সপিয়ার, পিকাসো এদের কাজের সমালোচনা করে থিসিস লেখা যায়, কিন্তু এদের নিয়ে সস্তা সমালোচনা করে যারা সাধারণ মানুষের হাততালি পেতে চায় তারা আসলে নিজেদের মূর্খতাই প্রকাশ করে। হাজারটা বই পড়লে বা কথায় কথায় কোন বই রেফার করলে

শান্তি

Image
রাত প্রায় নয়টা। কিছুক্ষণ আগে ভোলগার তীর থেকে ছবি তুলে ঘরে ফিরেছি। খবরে ক্রকুস হলে সন্ত্রাসী আক্রমণের খবর দিচ্ছে। শুনছি আর ছবি এডিট করছি। এমন সময় মনিকার ফোন এলো। ওর সাথে অবশ্য আজ দিনের বেলায়ও কথা হয়েছে। পাপ, আমরা সবাই ভালো। ক্রিস্টিনাও বাসায় ফিরছে। একটু অবাক হলাম। তাই জিজ্ঞেস করলাম হঠাৎ এই খবর? না, মানে ক্রকুস হলে আক্রমণ হয়েছে। অনেকেই ফোন করছে। জানতে চাইছে কেমন আছি। মনে হল মনিকা একটু লজ্জিত হয়েই বলল। আমিও ওদের ফোন না করায় একটু লজ্জিত হলাম। আসলে আমার সব সময় মনে হয় কোন বিপদে পড়লে ঠিক ফোন করবে। তুই বাসায়? না। মস্কো সিটিতে। একটা ফটো সেশন ছিল। এখন ফিরছি। ক্রিস্টিনা? ও ভোকাল থেকে ফিরছে। আচ্ছা। তোমাদের সব ঠিক তো? হ্যাঁ। আন্তন বাইরে গেল। আমরা বাসায়। সেভা বাসায়ই থাকে। তাই ওর কথা আর জিজ্ঞেস করলাম না। ইতিমধ্যে আহসান ফোন করল। ভজন জানতে চাইল আমাদের অবস্থা। অপটিমিস্ট হবার এই এক যন্ত্রণা। কখনই বিপদ দেখতে পাই না। এটা হয়তো ঘুমের সমস্যার কারণে। লোকে বলে মরার পরে নাকি শান্তিতে ঘুমানো যায়। হয়তো এ কারণেই মৃত্যুকে আর তত ভয় পাই না। বিপ্লবের পরিবেশ সম্পর্কে লেনিন বলেছিলেন ধনীরা পারে

স্বপ্ন

Image
মাঝে মধ্যে বেশ অবাক করা কিছু কাণ্ড ঘটে। এক সময় আমাদের ডিপার্টমেন্টে নিয়মিত সেমিনার হত সোমবার ও শুক্রবার। পরে সেটা বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মাস হল সেটা আবার চালু হয়েছে। আমি সোমবার করে ক্লাস নিতে মস্কো যাই, গত সেপ্টেম্বর থেকে সেদিন অন্য কোন শিক্ষকের ক্লাস থাকে না, তাই দেখা হয় না। অথচ আমার পড়াতে যাবার অনেক কারণের একটা নিজের শিক্ষকদের সাথে দেখা করা, বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করা। তাই এক সময় প্রস্তাব দিই সেমিনারের আয়োজন করার। আমার শিক্ষকদের সবার বয়স ৮৫ বছরের আশেপাশে, আবার অন্য দিন আমার পক্ষে দুবনা থেকে আসা সম্ভব নয়। তাই একটু ইতস্তত বোধ করছিলাম। তবে সবাই সানন্দে রাজী হয়ে গেলেন। আসলে মনে হয় সবাই এ ধরণের মত বিনিময়ের সুযোগ খুঁজছিলেন। আমাদের ডিপার্টমেন্টের বরাবরই সুনাম ছিল লিবারেল বলে, যেখানে নির্দ্বিধায় নিজের কাজের উপর বলা যায়। ভুল হলে সেটা যুক্তি দিয়ে খন্ডন করা হয়। আমিই মূলত বিভিন্ন লোকদের ডাকি সেখানে প্রবন্ধ পড়ার জন্য। আগামী সোমবার প্রবন্ধ পড়বেন দুবনার আমার এক কলিগ। গতকাল যখন সাঁতার কেটে ক্লাবে গেছি সেমিনারের প্রচারের দায়িত্বে থাকা মাক্সিমের ফোন পেস্তভের সেমিনার অনলাইনে না অফলাইনে হবে? যতদূর জানি অফ

পোশাক

Image
কয়েক দিন আগে এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল। ও দেশে ওর শিক্ষকতার বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা বলল। জানাল কী কী ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় শিক্ষকদের। জিজ্ঞেস করল ইদানিং হিজাব নিয়ে না ঘটছে সেটা জানি কিনা। বললাম, আমার টাইম লাইনে খুব কম মানুষের প্রবেশাধিকার আছে। তাই খুব কম খবরই পাই। ওর মুখেই শুনলাম ইন্টার্ভিউ বোর্ডে হিজাব খুলে নিজেকে শনাক্ত করতে বলায় এক শিক্ষক নাকি চাকুরীচ্যুত হয়েছে। এটা অবশ্যই ভাবনার বিষয়। কারণ ইন্টার্ভিউ হল মুখামুখি প্রশ্নোত্তর। তাই কে প্রশ্ন করছে, কাকে করছে সেটা জানা জরুরি। এভাবে কি ব্যাংক লোন দেবে? অথবা বিদেশে যেতে হলে এভাবে কি ইমিগ্রেশন পার হওয়া যাবে? ধর্মীয় কারণে কেউ হিজাব পরতেই পারে। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে ব্যক্তিকে আইডেন্টিফাই করা আইনের আওতায় পড়ে সেক্ষেত্রে? আসলে ধর্মের সাথে সামাজিক ও পেনাল কোডের অনেক ক্ষেত্রেই অসাঞ্জস্য দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঘটনায় কোন আইন প্রাধান্য পাবে সেটা সরকারকেই ঠিক করতে হবে। রুশরা বলে অন্যের মন্দিরে নিজের রীতিনীতি নিয়ে যেতে নেই। তাই ধর্মের ব্যাপারে যেমন ধর্মীয় আইন সবার ঊর্ধ্বে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে সামাজিক বা রাষ্ট্রের আইন প্রাধান্য পা

কল্পনা

Image
রুশ ভাষাকে বলা হয় সমৃদ্ধ ভাষা। এর অন্যতম প্রধান কারণ একই বাক্য বা শব্দ একাধিক অর্থে ব্যবহার করা যায়।  সেদিন অফিস থেকে বেরিয়ে সুইমিং পুলের দিকে যাওয়ার সময় হঠাৎ একটা গানের কলি মনের বীনায় বেজে উঠল। হেসে খেলে জীবনটা যদি চলে যায়। গানটি আনন্দের, চিন্তা মুক্ত জীবনের। তখনই মাথায় এল জীবন চলে যাওয়া তো মরে যাওয়াও। বেশ তো। হাসতে হাসতে মরাও তো বেশ উপভোগ্য। আজ একজনের লেখায় একটি শব্দ চোখে পড়ল। শকুনতলা। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী অপূর্ব সুন্দরী এই নারী রাজা দুষ্মন্তের স্ত্রী। তার নাম শকুনতলা নয়, শকুন্তলা। আমাদের বাড়িতে বিশাল এক শিমুল গাছ ছিল আর সেখানে ছিল শকুনদের চৌকি যেখানে বসে ওরা এলাকার গরুর মৃত্যুর জন্য ধ্যান করত। শকুনতলা শব্দ পড়ে আমার সেই শিমুল গাছের কথা মনে পড়ে গেল।  কল্পনা, সবই কল্পনা।  দুবনা, ০৯ মার্চ ২০২৪

স্বার্থ

Image
একুশের বইমেলা কেমন হওয়া উচিৎ বা উচিৎ নয় এ নিয়ে ফেসবুকে অনেকেই লিখেছেন। অনেকেই বাংলাদেশের লেখকদের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ বলছেন ভালো লেখকদের সাথে প্রতিযোগিতা নেই বলে লেখার মান উন্নত হচ্ছে না। অন্যদিকে কেউ বলছেন একুশের বইমেলা সবার জন্য, বিশেষ করে কোলকাতার (পড়ুন পশ্চিম বঙ্গের) লেখকদের জন্য খুলে দিলে দেশের প্রকাশনা শিল্প আর্থিক সমস্যায় পড়বে। অর্থাৎ আপনি যদি সাহিত্যের মাধ্যমে ভাষার মান উন্নত করতে চান তাহলে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হতে চাইলে লেখকের মান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  একুশের বইমেলায় কোলকাতার বই নেই বলে একজন প্রশ্ন করেছেন "বাংলাদেশের বাঙালি কি পাহাড়ীদের মত সংরক্ষিত জাতি?" এর উত্তর খুঁজতে হবে ভারত বিভাগে। মুসলমানদের আলাদা বাসভূমি হিসেবে পাকিস্তানের সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে সংরক্ষিত জাতির মানসিকতা তৈরি করা হয়েছিল। সে সময় রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ পূর্ণ করার জন্য এই স্লোগান সামনে আনা হলেও পরবর্তীতে নতুন রাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বেশিরভাগ সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। ফলে একাত্তরের পরে এমনকি বাহাত্তরের সংবিধান সাম

লেখা

Image
সেদিন এক বন্ধু ফোন করে অনুযোগ করল। তোর লেখায় দুই চারটা লাইক পড়ে, কোন কোন লেখায় একটাও পড়ে না। কেউ যদি না ই পড়ে, না লাইক দেয় তাহলে লিখিস কেন? বুঝলি, ছোটবেলায় আমাদের গ্রামে কয়েকজন পাগল ছিল। সব পাগলই সারাদিন নিজে নিজেই কথা বলত। কেউ শুনল কি শুনল না এ নিয়ে ওদের মাথা ব্যথা ছিল না। অবশ্য যদি ওদের মাথা বলে কোন কিছু একটা আছে এটা মেনে নিত অন্যেরা। ওরা নিজেদের কথা বলার তাগিদ থেকেই কথা বলত।  তার মানে কি তুই পাগল? সেটা অন্যেরা বলতে পারবে। আমি লিখি লেখার তাগিদ থেকে। তাছাড়া লেখায় আমার হাত আছে মানে ইচ্ছে হল লিখলাম, হল না লিখলাম না। কিন্তু অন্যের পড়ায় তো আমার হাত নেই। তবে লিখতে লিখতে যদি একদিন লেখাগুলো অন্যদের পড়ার উপযোগী করে তুলতে পারি সেদিন নিশ্চয়ই পড়বে।  দুবনার পথে, ০৪ মার্চ ২০২৪

প্রায়োরিটি

Image
মানুষ খেতে পারছে, একজনও না খেয়ে মরেনি। ঠিকই তো। লঞ্চ ডুবে মারা যাক, আগুনে পুড়ে মারা যাক, দুর্ঘটনায় মারা যাক - সেটা কোন ফ্যাক্টর নয়। আসল কথা মরার আগে সে পেট ভরে খেয়ে মরেছে।  পুরানো এক চুটকি মনে পড়ল। রুগী মরে যাবার পর ডাক্তার এলেন। এসেই রুগীর আত্মীয়াকে প্রশ্ন করলেন যে ওষুধগুলো দিয়েছিলাম রুগীকে খাইয়েছিলেন? হ্যাঁ ডাক্তার সাহেব। ঠিক যেভাবে বলেছেন সেভাবেই খাইয়েছি। ওষুধ খেয়ে রুগী ঢেকুড় তুলেছিল? তুলেছিল ডাক্তার সাহেব। খুব ভালো। খুব ভালো। ঠিক আছে আজ উঠি তাহলে।  কিন্তু রুগী যে মারা গেল? হ্যাঁ, কিন্তু মৃত্যুটা ততটা পীড়াদায়ক হয়নি যতটা হত ওষুধ না খেলে। সুস্থ ভাবে, শান্তিতে মরাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলি! মস্কোর পথে, ০৩ মার্চ ২০২৪

অন্ধবিশ্বাস

Image
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট আমেরিকা যখন হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা ফেলে সেটা না ছিল জাপানকে যুদ্ধে হারানোর একমাত্র উপায়, না ছিল আমেরিকার নিরাপত্তার প্রশ্ন। সেটা ছিল অন্যদের, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি সতর্ক বার্তা। এখন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কথা বলছেন, আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেছেন রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর যুদ্ধের কথা। এর প্রেক্ষিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন তাদের শক্তি ও সামর্থ্য আছে এসব দেশে এমন আঘাত হানার যার ফলাফল কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। এই নিয়ে পশ্চিমারা গোস্বা করেছে যে পুতিন পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় দেখাচ্ছেন। পশ্চিমা বিশ্বের সমস্যা হল তারা নিজেদের মত ও পথকে এতটাই অন্ধভাবে বিশ্বাস করে, নিজেদের কাজের ন্যায্যতার ব্যাপারে এতটাই আস্থাশীল যে এর বিরুদ্ধে যেকোন প্রতিবাদ, তাদের মত ও পথকে গ্রহণ না করার যেকোন প্রচেষ্টা তারা অগণতান্ত্রিক, আধুনিকতার বিরোধী, অমানবিক বলে মনে করে। আধুনিকতা ও মানবতার হোলসেল লাইসেন্সধারী এসব নেতারা শুধু এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো নয়, পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ মানুষের জন্য বিপদজনক। কি বলা যায় এসব নেতা ও তাদের অনুসারীদের? একট

নৈকট্য

Image
ছোটবেলায় দুটি জমির সীমানা নির্ধারণকারী আল ছিল কিছুটা চওড়া। তার উপর দিয়ে দিব্যি হেঁটে যাওয়া যেত। সে সময় পা ছোট ছিল বলেই নয়, আসলে মানুষ তখন অন্যের প্রাইভেট স্পেসকে শ্রদ্ধা করত। পরে সেই আলগুলো সরু হতে হতে একেবারে মিশে যাবার অবস্থা। পাশাপাশি দুই জমির নৈকট্য বাড়ার সমান অনুপাতে বাড়ত জমির মালিকদের দূরত্ব। একই ঘটনা ঘটে শহরেও। দুই বাড়ির মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ দূরত্ব কমতে কমতে পরিণত হয় অস্বস্তিকর নৈকট্যে। আর এর ফল প্রকাশ পায় অগ্নিকাণ্ড সহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায়। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে প্রচুর মানুষ মারা গেছে। এ নিয়ে কথা হবে। সাধারণ মানুষ, সরকার সবাই দুঃখ প্রকাশ করবে। কিন্তু মনে হয় না সরকার আইন করে অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবেলায় দুই বাড়ির মধ্যে কতটুকু দূরত্ব থাকা উচিত সেটা ঠিক করবে অথবা বাড়ির মালিকেরা যারা এসব বাড়িতে থাকবে তারা নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নিজেরাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। মানুষ সব ভুলে আগের মতই দিন কাটাবে পরবর্তী অগ্নিকাণ্ডে নতুন করে ক্ষোভ প্রকাশের জন্য। শুধুমাত্র নিজের সুবিধা অসুবিধার কথা ভেবে মানুষ ভুলে যায় সে অনেকের একজনই, সমাজের একটা ইট মাত্র। সমা

সার্বক্ষণিক

Image
যখন দেশে ছিলাম তখন অনেককেই দেখতাম সার্বক্ষণিক রাজনীতি করতে। এদের বেশিরভাগই বামপন্থী। অনেকেই আশু বিপ্লবের স্বপ্নে বিভোর হয়ে বাড়িঘর, পরিবার পরিজন, স্ত্রী সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা বেমালুম ভুলে যেতেন। এ নিয়ে এসব সংসারে অশান্তি কম ছিল না। তবে সবার শান্তির জন্য অনেকেই ব্যক্তিজীবনে এই অশান্তিটুকু মেনে নিতেন। এখন একই ভাবে পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা নিজ নিজ দেশের কৃষক, শ্রমিক, সাধারণ মানুষের সুখ শান্তির কথা ভুলে ইউক্রেনে গণতন্ত্র রক্ষায় ব্যস্ত যদিও বর্তমান ইউক্রেনের গণতন্ত্র আইয়ুব খানের গণতন্ত্রের চেয়ে কোন মতেই সরস নয়। বরং এই গণতন্ত্র ফ্যাসিবাদী অলঙ্কারে সজ্জিত। এই দু ধরণের লোকদের মধ্যে মিলটা এখানে যে তারা কেউই তারা কেউই বর্তমান পরিস্থিত মেনে নিতে পারছে না। দেশের সার্বক্ষণিক কর্মীরা সেটা বদলাতে চাইত, পশ্চিমা নেতারা সেটা প্রাণপণে ধরে রাখতে চায় নিজেদের শাসন ও শোষণের ভিতটা আরও বেশিদিন টিকিয়ে রাখার জন্য। দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মিথ্যাচার

Image
দেশের কোন কোন দার্শনিকের মতে মাদ্রাসার শিক্ষকদের মান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপকদের থেকে অনেক ভালো। কোন সিদ্ধান্ত দেবার আগে সমস্যার সঠিক উপস্থাপন প্রয়োজন। সএজন্য এখানে কতগুলো বিষয় উল্লেখ করা দরকার  ১) বিষয়টা কি - ধর্ম না ইংরেজি?  ২) মাদ্রাসার শিক্ষকরা যত স্বাধীন ভাবে ধর্মের বয়ান আর ভিন্ন মতাবলম্বীদের মুনণ্ডুপাত করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কি তেমনি নিঃশঙ্ক চিত্তে বিজ্ঞান বা আধুনিক সাহিত্য নিয়ে কথা বলতে পারে? ৩) এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই মাদ্রাসা পাশ করে আসে। এরপর তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক প্রাক্তন মাদ্রাসা ছাত্র কিনা? এসব ব্যাপারে কোন টু শব্দ না করে এধরণের সিদ্ধান্ত আসলে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মিথ্যাচার। দুবনা, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

যোগ্যতা

Image
পিছিয়ে পড়া বা জোর করে এতদিন পেছনে ফেলে রাখা জাতি বা গোষ্ঠীকে অবশ্যই উঠে আসার সুযোগ দিতে হবে কিন্তু একই সাথে যোগ্যতার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। কারণ তা না হলে একদিকে যেমন কোয়ালিটিকে কম্প্রোমাইজ করা হয় একই ভাবে অনেক যোগ্য প্রার্থীর প্রতি অবিচার করে তাদের কর্মবিমুখ করা হয়। এর উদাহরণ বিশ্বের দেশে দেশে ভুঁড়ি ভুঁড়ি। শুনলাম আমেরিকায় এখন নিকি, কমলা আর মিশেলকে নিয়ে ভাবা হচ্ছে। আর এই ভাবনার পেছনে বড় কারণ তারা নারী। নারী বলে যেমন কাউকে অবহেলা করা উচিৎ নয়, তেমনি উচিৎ নয় নারী বলে কাউকে কনশেসন দেয়া বিশেষ করে আমেরিকার মত দেশের প্রেসিডেন্ট পদে। কারণ এটা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ যার প্রেসিডেন্টের হাতে মানব সভ্যতার অস্তিত্ব অনেকটাই নির্ভর করে। আজ যদি নারী বলে কাউকে সামনে আনা হয় কাল বিএলএম, এলজিবিটি এসব ক্রাইটেরিয়া সামনে চলে আসতে পারে। যেকোন পদের জন্য প্রথম ও একমাত্র ক্রাইটেরিয়া হওয়া উচিৎ সেই দায়িত্ব পালনে তার পেশাগত যোগ্যতা। অন্যান্য বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, তবে সেগুলো যেন মূল না হয়। বলতে পারেন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের ব্যাপারে আমার এত মাথা ব্যাথা কেন? হত না যদি না তার হাতে পার

উত্তর

Image
ভজন সরকারের পাঠানো উত্তরের-দেশে বইটি পড়লাম। অনেক দিন পরে এত দ্রুত (এক সপ্তাহ) কোন বই পড়লাম। আমি গল্পের বই পড়ি সাধারণত শোবার আগে। তবে ইদানিং নিজের পড়ার বই (গণিত ও পদার্থবিদ্যা, আর একটু লেখালেখি করি বলে ইতিহাস) এত সময় নেয় যে এর বাইরে তেমন একটা পড়া হয় না, পড়লেও একেকটা বই পড়তে মাস কাবার। যেহেতু ভজন ক্যানাডা থাকে আর সেটা উত্তর গোলার্ধে তাই প্রথমে মনে হয়েছিল এটা ওর সেই জীবন নিয়ে লেখা। কিন্তু অনেকগুলো গল্পের সম্ভার এই বইয়ে বিভিন্ন এলাকাই স্থান করে নিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এসেছে ভারত ভাগের কথা ও দেশ থেকে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভারত যাবার গল্প। উল্টোটা যে হয়নি তা নয়, তবে সেই সময়ের বেশির ভাগ বই হিন্দু লেখকদের লেখা তাদের দেশত্যাগের দুঃখের কথা জানিয়ে। হাসান আজিজুল হকের আগুন পাখি সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম, যদিও আমার বিশ্বাস ওপার বাংলা থকে চলে আসা লোক বাংলাদেশে খুব কম নয়। রেডিয়েশন দুই ধরণের - স্বতঃস্ফূর্ত, যা কিনা স্বেচ্ছায় ঘটে ও জোরপূর্বক, যা ঘটে বাহ্যিক বল প্রয়োগের ফলে। ইমিগ্রেশনও তাই। দেশ ভাগের সময় পূর্ববাংলা থেকে হিন্দুদের চলে যাওয়া ছিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জোরপূর্বক, বাধ্য হয়ে। উল্টো দিকের দেশত্যাগ বেশির

দর্শন

Image
একসময় বিশ্বের সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, টোল অর্থাৎ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চার্চ, বৌদ্ধ বিহার বা অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিল। এটাকে পুঁজি করে কেউ কেউ বলতে চান যে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ এসব একদিন মাদ্রাসা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ইউনিভার্সিটির বাংলা, মাদ্রাসা তেমনি বিদ্যালয়ের আরবি শব্দ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাদ্রাসা শব্দ ব্যবহার তাই দোষের নয়। দোষের হচ্ছে বর্তমানে আমাদের দেশে মাদ্রাসা শব্দটি যে এক বিশেষ অর্থ বহন করে সেটা আমলে না নেয়া আর এভাবে আপাত সত্যের আড়ালে মিথ্যা প্রচার করা। যদি অক্সফোর্ড কেমব্রিজ এসব বিশ্ববিদ্যালয় "এদের ভাষায় মাদ্রাসা" থেকে শুরু করে সত্যিকারের জ্ঞানার্জনের পথে চলছে আমাদের মাদ্রাসাগুলো জ্ঞানের আলো যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য নিজেদের চারিদিক থেকে বন্ধ করে রেখেছে। শুধু তাই নয় এই সব দার্শনিকদের হাত ধরে প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মাদ্রাসায় পরিণত হবার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দুবনা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

স্বাধীনতা

Image
গুগল বা এই জাতীয় ট্র্যান্সন্যাশনাল কোম্পানির টপ ম্যানেজারের সাথে গ্রামের ছোট্ট মুদি দোকানের মালিকের তুলনা করা অবান্তর। টপ ম্যানেজার কী অর্থে বিত্তে, কী নামে যশে, কী সামাজিক মর্যাদায় মুদি দোকানের মালিকের চেয়ে হাজার যোজন এগিয়ে। তবে এত কিছুর পরেও টপ ম্যানেজার একজন কর্মচারী যার ভাগ্যের সুতা কোম্পানির মালিকের হাতে। সেক্ষেত্রে দোকানের মালিক স্বাধীন যদিও সেই স্বাধীনতা নির্ভর করে ক্রেতা আর বিশেষ করে স্থানীয় গুন্ডাদের উপর। আমেরিকার নেপথ্য রাজা উজিররা চায় বিশ্বের দেশে দেশে নিজেদের টপ ম্যানেজারদের প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্বে দেখতে। নাম, যশ, সভ্য বিশ্বের নেতাদের সান্নিধ্য পাবার লোভে অনেকেই সে পথে পা বাড়ায়। তবে যারাই মুদি দোকানের মালিকের মত একটু হলেও স্বাধীনতা উপভোগ করতে চায় সাথে সাথে পাড়ার গুন্ডাদের মত পশ্চিমা বিশ্ব গণতন্ত্র গেল গণতন্ত্র গেল বলে ধেয়ে আসে। মস্কোর পথে, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

খেলা খেলা সারা বেলা

Image
যুদ্ধ তো নয় যেন কাজিনো বা পাশা খেলা চলছে। যুধিষ্ঠির যেমন দুর্যোধনের কাছে রাজ্য থেকে শুরু করে একে একে ভাইদের, এমনকি স্ত্রী দ্রৌপদীকে পর্যন্ত হারিয়েছিলেন ইউক্রেন সহ ইউরোপের অবস্থাও তাই। ন্যাটোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের মিটিংএ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যেমন করেই হোক রাশিয়ার বিজয় রোধ করতে হবে। মূল যুক্তি - মরবে ইউক্রেনের মানুষ, ইউরোপ বা আমেরিকার নয়। এর চেয়ে আর কত স্পষ্ট করে বলতে হবে যে ওদের কাছে ইউক্রেনের মানুষ ইউরোপিয়ান নয়। ধীরে ধীরে ইউরোপ আমেরিকার সরকার হারাচ্ছে জন সমর্থন। আচ্ছা যে যুদ্ধের পেছনে জনগণের সমর্থন নেই, যে যুদ্ধের ফলে সেসব দেশে জনজীবন অতিষ্ঠ, তারপরেও এরা কীভাবে গনতাত্রিক, জন দরদী সরকার হয় আর জনগণের সমর্থন যাদের পেছনে আছে সেই সব সরকার হয় কর্তৃত্ববাদী, একনায়ক - তা সে পুতিন হোক, সি হোক, মোদী হোক আর হাসিনা হোক। আজ যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য ইউরোপের আর আমেরিকার জনগণকে জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে। ফিনল্যান্ড সহ অনেক দেশে বাঙ্কার তৈরির হিজিগ পড়ে গেছে শুনলাম। জনগণকে ভয়ের মধ্যে রেখে, ভয় দেখিয়ে কীভাবে গণতান্ত্রিক সরকার হওয়া যায় সেটাই আমার মাথায় ঢুকে না। নাকি বিশ্বের দেশে দেশে নতুন করে পাঠ্য পুস্তক লেখ

কলাগাছ

Image
আমাদের ছাত্র জীবনে একটা কথা প্রচলিত ছিল। যদি কলা গাছকেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট করা হয় তাহলেও সে দেশ ঠিকঠাক চলবে। আসলে সোভিয়েত আমলের শেষে আর ইয়েলৎসিনের আমলে রাশিয়ার প্রশাসন এতটাই দুর্বল ছিল যে বাইরে থেকে আমেরিকা মনে হত সুইস ঘড়ির মত। আর এই বিশ্বাস থেকেই অনেকে বলত আমেরিকার শাসন ব্যবস্থা এতটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ যে কে প্রেসিডেন্ট সেটা কোন ফ্যাক্টর নয়। তবে দুই দশক পরে আমেরিকা আর সেই আমেরিকা নেই। তাছাড়া ইন্টারনেটের কারণে বাইরে থেকেও তার আসল চেহারা অনেক স্পষ্ট হয়েছে। ফলে বাইরের মানুষ খুব ভালো ভাবেই অনুভব করে যে এখন আর কলাগাছের যুগ নেই। তবে জলে থেকে মাছ যেমন জলের উপস্থিতি টের পায় না, আমেরিকার এস্টাব্লিশমেন্ট একই ভাবে নিজেদের দুর্বলতা টের পায় না। তাই বাইডেনের মত অভিজ্ঞ কিন্তু প্রায় অথর্ব একজনকে আবারো প্রেসিডেন্ট করতে উঠেপড়ে লাগে। এর কারণ একটাই। পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়ছে তারা আরও খারাপ কিছু করতে চায় কিন্তু দায়িত্ব নিতে চায় না। গণতন্ত্রের খেলা খেলে দেশবাসীর কাঁধে ভূত চাপিয়ে দিতে চায়। এটাই আধুনিক বাজার গণতন্ত্র। দুবনা, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

চৌবাচ্চা

Image
এক বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে বই লিখি না কেন তার যুক্তি দেখিয়ে গতকাল এক স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম লেখক শিরোনামে। এটা ছিল নেহায়েত চুটকি। তবে রুশরা বলে সব চুটকির ভেতরেই কিছুটা চুটকি থাকে, বাকিটা সত্য। সোভিয়েত আমলে এভাবেই মানুষ প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করত।  গতকালের স্ট্যাটাসে বিভিন্ন ধরণের প্রতিক্রিয়া আমাকে ভাবতে বাধ্য করল। মনে পড়ল এক যুগ আগের কথা। ২০১০ সালে আমরা মস্কোয় বাংলাদেশ প্রবাসী পরিষদ রাশিয়া নামে এক সংগঠন গড়ি। উদ্দেশ্য ছিল এখানে বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা করা আর সম্ভব মত দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করা। পরে এক পর্যায়ে বুঝলাম এখানে অনেকেই তারচেয়ে বেশি আগ্রহী বিভিন্ন পদে। তারাপদ রায় মনে হয় বলেছিলেন ও খুব গরীব, ওর টাকা ছাড়া আর কিছু নেই। সেই অভাব পূরণের জন্য অনেকেই এসব সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ইত্যাদি হতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। যদিও আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল সেই সমস্যার সমাধান করার তবে অভিজ্ঞতা হয়েছিল প্রচুর। এখন, বিশেষ করে একুশের বইমেলা উপলক্ষ্যে আমাদের মধ্যে লেখক হবার যে ইঁদুর দৌড় শুরু হয় তা দেখে আমার মাঝে মাঝে মনে হয় এটাও কি আমাদের আইডেন্টিটি ক্রাইস

লেখক

Image
এক বন্ধুর সাথে দেখা অনেক দিন পরে। গল্প গুজব, পরিচিত অপরিচিতদের হাড্ডি কচলানো (এটা না করলে নিজেদের মনে হয় বাঙালি মনে হয় না)। শেষে কথা উঠল ফেসবুকে আমার লেখালেখি নিয়ে। তুমি ফেসবুকে এত লেখালেখি করে তা একটা বই লেখ না কেন? তুমি উসপেনস্কির আঙ্কেল ফিওদর, কুকুর ও বিড়াল গল্পটি পড়েছ? না। কি আছে সেখানে? বাচ্চাদের বই। স্কুল পড়ুয়া ফিওদর, কুকুর শারিক আর বিড়াল মাত্রোসকিনের কাহিনী। একদিন কুকুরের খুব ইচ্ছে হল ক্যামেরা কেনার। ক্যামেরা কিনে খরগোশের ছবি তুলতে গিয়ে ওর পেছনে ঘন্টা দুয়েক দৌড়ে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে এলো সে। আসলে খরগোশ বুঝতেই পারেনি যে কুকুর তাকে ধরতে আসেনি, ছবি তুলতে এসেছে। ওকে মন খারাপ করতে দেখে বিড়াল বলে ভাগ্যিস খরগোশের ছবি তুলিসনি। নাহলে ছবি দেবার জন্য আরও কয়েক ঘণ্টা ওর পেছনে দৌড়াতে হতো।  কিন্তু বইয়ের সাথে এর সম্পর্ক কি? বই প্রকাশ করলে পাঠকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হত বই বিক্রি করার জন্য। এত সময় পাঠকদের পেছনে ঘুরে কাটালে লিখব কখন? মস্কো, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সুখ

Image
আপেক্ষিক এই পৃথিবীতে সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ণয় করা হয় তুলনা করে। মানুষ নিজের সাফল্য নির্ণয় করে অন্যদের সাথে তুলনা করে। এটা করতে গিয়ে অনেকেই নিজে কি করল সেটা বিচার না করে অন্যরা কতটুকু ব্যর্থ হল সেটা আমলে নেয়। এরা স্বাভাবিক ভাবেই ঈর্ষাপরায়ণ। ফলে তাদের সব সময় নির্ভর করতে হয় অন্যের দয়ার উপর। এটা অনেকটা খেলার মত। নিজের খেলা উন্নত না করে প্রতিপক্ষের ভুলের উপর ভরসা করে বসে থাকা। যারা নিজের কাজ ভালবাসে তারা অন্যের উপর নির্ভর করে না, অন্যের ব্যর্থতার জন্য বসে থাকে না, এমনকি অন্যদের সাথে নিজেকে তুলনাও করে না। তারা গতকালের আমির সাথে আজকের আমিকে তুলনা করে, দেখে আজকে সে নতুন কি জানল। তার প্রতিযোগিতা একান্তই নিজের সাথে, নিজের জানার পরিধি কিছুটা হলেও আরেকটু বাড়ানোই তার সাফল্য বা ব্যর্থতার মাপকাঠি। তবে তারা সাফল্যে বা ব্যর্থতা নিয়ে ভাবে না, ভাবে সে তার লক্ষ্যে পৌছতে নিজের জানার ভান্ডার কতটুকু সমৃদ্ধ করতে পারল।  মস্কোর পথে, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

বর্তমান

Image
আমরা প্রায়ই অতীত নিয়ে গর্ব করি আর ভবিষ্যতে বিভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনা করি। আচ্ছা এটাই কি মানুষের সাথে জীব জন্তুর পার্থক্য? এটাকি ভাষার কারণে? কারণ বুদ্ধি সবার আছে কিন্তু ভাষা, অন্তত মানুষের মত ভাষা সবার নেই। আর এই ভাষার কারণে আমরা অতীত নিয়ে কথা বলি, ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করি কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে বর্তমান নিয়ে তেমন ভাবি না। আর যদি ভাবি সেটাও অতীতের সাথে তুলনা করে বা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। পক্ষান্তরে জীব জন্তু শুধু তাদের বর্তমান নিয়েই ব্যস্ত ঠিক যেমন সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। অবশ্য হতদরিদ্র মানুষ তো সমাজের হর্তাকর্তাদের চোখে মানুষ নয়। আমরা সবাই মিলে সুলতান, মুঘল, ইংরেজ, জমিদারদের শোষণের কথা বলে ক্রোধ প্রকাশ করি বা সেই সময়ের সুশাসনের কথা বলে আপ্লুত হই, স্বর্গে রাজভোগ খেতে খেতে অপ্সরাদের নাচ দেখা বা বেহেশতে ৭২ জন অনিন্দ্য সুন্দরী হুর বেষ্টিত হয়ে নিরলস জীবন (নাকি মরণ!) কাটানোর পরিকল্পনা করি, কিন্তু এই মুহূর্তে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সামাজিক অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলি না। নেশা করলে মানুষ ঠিক নেশার সময়টাই মাতাল থাকে সব দুঃখ ভুলে যায়। এতে সে না ভোলে অতীত না গড়তে পারে ভবিষ্যৎ। ধর্ম

বাছাই

Image
আমাদের এখন ছবি প্রদর্শনীর প্রস্তুতি চলছে। গতকাল সিমিওন দুটো পুরানো ছবি এনেছিল। প্রিন্ট করা। আমরা সাধারণত প্রথমে সফট কপি থেকে বাছাই করি, বাছাই সম্পন্ন হলে বলি সেগুলো প্রিন্ট করত যাতে অকারণে পয়সা খরচ করতে না হয়। ওর দুটো ছবি আগে থেকে প্রিন্ট করা ছিল অন্য এক প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে যা কোন কারণে প্রদর্শিত হয়নি (আমরা শুধু সেসব ছবিই প্রদর্শন করি যার প্রিন্ট ভার্সন আগে কোথাও প্রদর্শিত হয়নি)। ও এসে ঠাট্টা করেই বলল আজ তোমাদের বেশ কঠিন কাজ করতে হবে। কি? দু'টো ছবি থেকে দু'টো বেছে নিতে হবে। সবাই হেসে উঠলো। তখন ইউরি গরবাচেভকে নিয়ে একটি চুটকি বলল Мужик сидит с одным арбузом. Продает. Мимо идет товарищ Горачев. Продаете? Да. Я возьму. Выбирайте. Как? У вас арбуз всего один. Как выбирать-то? Мы тоже вас из одного выбирали. বাংলা তর্জমায় এটা এরকম এক লোক একটি তরমুজ নিয়ে বসে আছে বিক্রি করবে বলে। পাশ দিয়ে যাচ্ছেন কমরেড গরবাচভ। বিক্রি করছেন? হ্যাঁ। আমি কিনব। কোনটা নেবেন বেছে নিন। কীভাবে? আপনার তো মাত্র একটা তরমুজ। কেমনে বেছে নেব? আমরা কিন্তু আপনাকেও একজনের মধ্য থেকেই বেছে নিয়েছি

সংখ্যা

Image
অনেক দিন পরে কলেজের এক সহপাঠীর সাথে কথা হল। স্বাভাবিক ভাবে যেটা হয়, এসব আলাপে সমসাময়িক রাজনীতি, সামাজিক পরিস্থিতি এসব উঠে আসে। এবারও ব্যতিক্রম ছিল না। অনেক কথার পর ও একটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল। ভাবলাম সেটাই শেয়ার করি দেশে এখন পূর্ণ উদ্যমে বইমেলা চলছে। সব ফেব্রুয়ারিতেই অবশ্য সেটা হয়। অধিকাংশ মানুষ বইমেলা উপলক্ষ্যে তো বটেই এমনিতেও বই প্রকাশ করে না। আমিও করি না। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মত আমারও নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মত আমিও সব সময়ই সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মত আমিও হাজারটা রোগে ভুগি। অধিকাংশ মানুষের মত আমিও চাই একটু ভালো থাকতে, একটু নিরাপদে থাকতে। জীবনের প্রায় সব কিছুতেই আমি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করি। তারপরেও আমি নাকি সংখ্যালঘু। তুমি তো বাইরে থাক। অনেক কিছু দেখেছ। কেন এমন হয় বলতো? আমার কাছে কোন উত্তর ছিল না। উত্তর খুঁজতে খুঁজতে মনে পড়ে গেল এক আফ্রিকান বন্ধুর কথা। রাশিয়া পড়াশুনা করেছে। এখন পশ্চিমা বিশ্বে আছে। একদিন ও দুঃখ করে বলেছিল ইউরোপের আদিবাসীরা জন্ম থেকে সাদা। ওরা রাগলে লাল হয়, শীতে হয় নীল, জ্বর এল

সংসারে স্বাধীনতা

Image
গতকাল আমার এক বন্ধু "সংসারে স্বাধীনতা" নিয়ে একটি পুরানো লেখা নতুন করে পোস্ট করেছে। সেটা পড়ে কতগুলো ভাবনা আমার মাথায় এলো। দেশে নির্বাচন শেষ। শেষের বিভিন্ন অর্থ আছে। এই শেষ বিভিন্ন অর্থ বহন করে। আবার এই অর্থের একটি অর্থ মামুলি টাকা, বাকিগুলো অর্থহীন। তবে শেষ শুধু এবারের নির্বাচন শেষ নয়, ব্যাপক অর্থে নির্বাচনী ব্যবস্থার মৃত্যু। এবং শুধু আমাদের দেশেই নয়। ভেবেছিলাম নির্বিরোধ নির্বাচন হবে নিরামিষ। দেখলাম আমিষ ছাড়া আমাদের কিছুতেই চলে না। তাই বিভিন্ন প্রতীকধারী আওয়ামী লীগের কর্মীদের ভ্রাতৃঘাতী লড়াইয়ে অনেক সাধারণ মানুষ অসাধারণ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে। অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়। আমাদের পরিবারগুলোই তো একেকটা যুদ্ধক্ষেত্র। পরিবার হল রাষ্ট্রের পারমাণবিক রূপ আর সেই রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখলের জন্য স্বামী, স্ত্রী, সন্তান সবাই অসম কিন্তু অবিরাম যুদ্ধে রত। বিশেষ করে তার অর্থমন্ত্রীর পদ পাওয়ার জন্য। মৌলানা আজাদ ইন্ডিয়া উইন্স ফ্রিডম-এ লিখেছেন সর্দার প্যাটেল অনেক দর কষাকষি করে কংগ্রেসের জন্য অবিভক্ত ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ নেয়। কিন্তু পরে দেখা গেল অর্থমন্ত্রী লিয়াকত আলি খ

অধিকার

Image
দেশে এখন তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে বিতর্ক চলছে। সংবিধান জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, পেশা, শিক্ষা নির্বিশেষে সব নাগরিককে সমান অধিকার দেয়। তাহলে নতুন করে অধিকারের প্রশ্ন আসে কেন? আসে, কারণ রাষ্ট্র সব সময়ই ব্যর্থ হয়েছে সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের সংখ্যালঘু বিভিন্ন রকমের হয়রানির শিকার হয়েছে। ভোটের হিসেব নিকেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সব সময়ই রিসিভিং এন্ডে ছিল। রামু, প্রতি বছর দূর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনা সামাজিক ভাবে ততটা ধিকৃত হয়নি। সেদিক থেকে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার প্রশ্নে অনেক বেশি মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। কারণটা যদি সত্যিকার অর্থে মানবিক কারণে হয় সেটা প্রশংসাযোগ্য কিন্তু যদি সেটা হয় বর্তমান পশ্চিমা ট্রেন্ডের স্রোতে থাকার জন্য তাহলে আর যাই হোক সমস্যার সমাধান হবে না। এর মধ্যে শুনলাম সরকার এক কমিশন গঠন করেছে। সীতার ভূমিকায় অভিনয় করছে শরীফা। সরকার রামের ভূমিকায়। কথিত আছে রাম কোন এক মাতালের অভিযোগে সীতাকে অগ্নি পরীক্ষা দিতে বলেন। এখন মাতালের ভূমিকায় ধর্মীয় মাতালরা। যতদূর জানি শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের পরে,

আনফ্রেন্ড

Image
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সামাজিক বা জাতীয় ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফেসবুক বিতর্কের পর অনেকেই ঘোষণা দিয়ে কিছু লোককে আনফ্রেন্ড করে। আমি ফেসবুকের বন্ধুদের সাধারণত আনফ্রেন্ড করি না। একবার এক জনকে করেছিলাম অযথা বার বার যাকে বলে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার জন্য। আমি বিদেশে বসে কেন দেশ নিয়ে লিখি সেটাই ছিল তার সমস্যা। আরেকজনকে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে আমার স্ট্যাটাসের প্রশংসা করার জন্য। এরা দু'জনেই ব্যক্তিগত ভাবে আমার পরিচিত। অনেক বন্ধুর মৃত্যুর পরও আনফ্রেন্ড করিনি কারণ তাদের জন্মদিনে নরকে (আমার ধারণা শুধুমাত্র আমার সাথে বন্ধুত্বের কারণেই তাদের স্বর্গের দ্বার বন্ধ হয়ে গেছে) শুভেচ্ছা বিনিময়ের এটাই একমাত্র পথ। তবে ইদানিং কালে কিছু কিছু ডেড সোলকে আনফ্রেন্ড করছি জীবিতদের স্থান সংকুলানের জন্য।  প্রায়ই দেখি লোকজন বিভিন্ন কারণে অনেককে আনফ্রেন্ড করে ফেসবুকে ঘোষণা দেয়। বিশেষ করে বলে মূর্খ লোকদের আনফ্রেন্ড করার কথা। আমি একটু অবাক হই।  বহুল আলোচিত একটা কথা আছে -"বল তোমার বন্ধু কে, আমি বলব তুমি কে?" এই যে একদল মানুষ আমার ফ্রেন্ড লিস্টে ছিল, তারা তো আমার অনুমোদনক্রমেই ছিল। তাহলে? তাদের মূর্খ ব

ইতিহাস

Image
ছোটবেলায় পড়েছি "অনেক দিন আগের কথা। তখন আরবের লোকেরা বর্বর ছিল।" এভাবেই ইসলামের ইতিহাসে প্রাক- ইসলামী আরবের উত্তরাধিকার অস্বীকার করে যদিও আল্লাহ প্রাক-ইসলামী যুগের অন্যতম প্রধান দেবতা। এছাড়া সে সময় আরব সাহিত্য সংস্কৃতি বেশ উন্নত ছিল বলেও অনেকে দাবি করেন। আমেরিকার ইতিহাসে ফাউন্ডিং ফাদারদের আগের যুগ নিয়ে তেমন কিছু বলা হয় না। সেখানকার ইন্ডিয়ানদের ইতিহাস এড়িয়ে যাওয়া হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাসে দেখি অত্যাচারী জারের গল্প যা থেকে মুক্তির উপায় সোভিয়েত ব্যবস্থা। তবে শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, শিল্পের ভিত্তি সেই জারের আমলেই গড়া।  এক্ষেত্রে রাম সেনারা অতীতকে নয় ইতিহাসের মাঝের কিছু চ্যাপ্টার মুছে ফেলতে চায়, বিশেষ করে সুলতানি ও মুঘল আমল।  নতুন রাশিয়ায় প্রথম দিকে এ ধরণের চেষ্টা হয়েছে সোভিয়েত আমলকে অস্বীকার করে। এখন বুঝছে ইতিহাস পাথরে খোদাই করা, এটা পেন্সিলে লেখা নয় যে চাইলের রাবার দিয়ে মুছে ফেলা যাবে। তাই সোভিয়েত আমলের অনেক কিছুই নতুন করে ফিরে আসছে। আসলে সবাই শুধু সেটুকু রাখতে চায় যা বর্তমান রাজনৈতিক মতাদর্শকে শক্ত ভিত্তি দেয়। তবে একটা সময় সবাই বুঝতে পারে সমাজ,

জন্মদিনের প্রশ্ন

Image
আজ নেতাজী সুভাষ বোসের জন্মদিন। আমার অন্যতম প্রিয় নেতাদের একজন। ছোটবেলা থেকে মায়ের কাছে গল্প শুনে শুনে কখন যে সেই স্থান দখল করেছেন সেটা টেরই পাইনি। আজ হঠাৎ করেই একটি প্রশ্ন মাথায় এল। তাঁর লেখায়, কাজে, বক্তৃতায় তিনি যে ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখতেন, যে ভারতবর্ষের কথা বলতেন নেতাজীর সেই ভারতবর্ষ মোদির ভারতের চেয়ে নেহেরুর ভারতের অনেক কাছে। অথচ নেহেরুর ভারতে তিনি ততটা স্বীকৃতি পাননি যতটা পেয়েছেন মোদির ভারতে। তবে এটা বিজেপির রাজনৈতিক কৌশল বই কিছু নয়। কিন্তু যে প্রশ্নটা মাথায় এলো সেটা হল "কী হত যদি নেতাজী গান্ধীর উপর অভিমান না করে কংগ্রেসে থেকে যেতেন, নিজের মত প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করতেন?" হ্যাঁ, তিনি লড়াই করেছেন আজাদ হিন্দ ফৌজের মাধ্যমে। কিন্তু কথা হচ্ছে এই লড়াইটা যদি তিনি ভেতর থেকে করতেন। একই কথা বলা যায় বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম নক্ষত্র তাজউদ্দীন আহমদের ক্ষেত্রে। কারণ কোন কাজই একবার শুরু করলে উদ্যোক্তাদের সরে যাওয়ার সাথে সাথে সেটা শেষ হয়ে যায় না। তার রেশ থাকে। তাই শুরু করা কাজের ভালোমন্দের দায় তাঁদেরও। বর্তমানে ভারতে বা বাংলাদেশে যা ঘটছে নেতাজী সুভাষ বা তাজউদ্দীন আহমদ

অন্ধত্ব

Image
গতকাল দানিয়েৎস্কের বাজারে ইউক্রেনের হামলায় ২৮ জন বেসামরিক লোক নিহত। আহত ২৫। জেনেনস্কি স্বাভাবিক ভাবেই বলেছে এটা রুশরা নিজেদের উপর নিজেরাই আক্রমণ করেছে। এর আগে পশ্চিমা বিশ্বও এসব আক্রমণকে নিজেদের উপর রুশ আক্রমণ বলে চালানোর চেষ্টা করত। এবার সমালোচনা না করলেও আক্রমণ যে ইউক্রেনের সেটা স্বীকার করেছে। বেসামরিক স্থাপনায় আক্রমণ যুদ্ধাপরাধ। কিন্তু যারা নিজেদের বিচারকের আসনে বসায়, যারা একসময় এসব আইন তৈরি করেছে তারা নিশ্চুপ। বরং কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছে যে ইউক্রেন সেনারা রুশদের সাথে সরাসরি যুদ্ধে পেরে না উঠে বাধ্য হয়ে বেসামরিক লোকদের উপর আক্রমণ করছে। হামাসের আক্রমণের সমালোচনা করলেও এখন পশ্চিমা বিশ্ব বরং কিয়েভের পক্ষে যুক্তি খোঁজার চেষ্টায় ব্যস্ত। যতদিন পর্যন্ত ন্যায় অন্যায় নির্ধারণ করা হবে কে করল তার পরিচয় দেখে ততদিন পর্যন্ত এসব চলতেই থাকবে। থেমিসের চোখ বাঁধা হয়েছিল নিরপেক্ষতার জন্য কিন্তু কালের আবর্তনে তিনি অন্ধ হয়ে গেছেন। মস্কোর পথে, ২২ জানুয়ারি ২০২৪

লেনিন

Image
আজ লেনিনের মৃত্যু শত বার্ষিকী। ২১ জানুয়ারি ১৯২৪ সালে তাঁর মৃত্যু সংবাদ সোভিয়েত জনগণকে জানানো হয়েছিল। ৩০ আগস্ট ১৯১৮ ফান্নি কাপলানের হাতে গুলিবিদ্ধ হবার পর থেকেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর শেষ জীবন কাটে মস্কোর অদূরে গোর্কি লেনিনস্কি নামে এক গ্রামে। লেনিন নিঃসন্দেহে শুধু বিংশ শতকের নয় মানব ইতিহাসের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যিনি বলতে গেলে স্বল্প সংখ্যক অনুসারী নিয়ে ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক দেশ। তাঁর রাজনৈতিক ভাবনায় একদিকে ছিল সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসা, অন্যদিকে শাসক শ্রেণীর প্রতি প্রচন্ড ঘৃণা। ফলে এক দলের কাছে তিনি হিরো, অন্যদের কাছে ঘৃণার পাত্র। তবে যেটা দেখা যায় এই ভক্তি ও ঘৃণা প্রায়ই অন্ধ। অথচ লেনিন আর দশ জনের মতই রক্ত মাংসের মানুষ যার যেমন সাফল্য আছে তেমনি আছে ব্যর্থতা, আছে গুণ, আছে দোষ। আজ সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই কিন্তু তার লিগেসি এখনও ঠিকই রয়ে গেছে। আজ সাবেক সোভিয়েত ভূমিতে বিশেষ করে ইউক্রেনে যে যুদ্ধ চলছ সেটাও লেনিনের রাজনীতির ফসল। তাই বিশেষ করে যারা বামপন্থায় বিশ্বাসী, যারা শোষণ মুক্ত সমাজ গড়ার সৈনিক

ধর্ম অধর্ম

Image
গতকাল মানে ১৯ জানুয়ারি ছিল অর্থডক্স খৃষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব। এই দিন জর্ডান নদীতে যীশুকে খৃষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করা হয়। সেটাকে স্মরণ করে রাশিয়ার খৃষ্টানরা এই শীতের মধ্যেও নদীতে ডুব দিয়ে স্নান করে।  স্কুলে পড়ার সময় মনিকা স্নান করত। মাইনাস ১৫ বা ২০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় এটা সহজ নয়। তখন অবশ্য আমার কখনই মনে হয়নি ওর সাথে গিয়ে ডুব দিতে। এটা যতটা না ভয় তারচেয়ে বেশি ধর্মীয় উৎসব বলে। ২০২১ সালে করোনার পরে আমি অনেক কাজ করি যা আগে করতে সাহসে কুলাতো না। তাই কখনো কখনো ইচ্ছে হয় এরকম ঠান্ডায় ডুব দিতে। অন্য সময়ও সেটা করা যায়। তবে উৎসবে করলে রিস্ক কম। প্রচুর লোক সেটা করে। পাশেই জামাকাপড় বদলানো, চা এসব থাকে আর থাকে ডাক্তার, যদি কারো সমস্যা হয়। অনেকটা আমি ঘুষ খাই না, তবে কেউ ঘুষের টাকায় খেতে ডাকলে আপত্তি করি না।  গতকাল ক্লাবে কথাটা বলতেই সবাই রা রা করে উঠলো। ভাসিলি বলল জলের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রী। তুই বরং গ্রীষ্মে ককেসাস গিয়ে পাহাড়ি ঝর্নায় স্নান করিস। এসব ধর্মীয় জায়গা থেকে যত দূরে থাকিস তত ভালো। তুই যে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে গির্জার ছবি তুলিস সেটাও সন্দেহজনক। আমি ওসব জায়গা

প্রশ্ন

Image
সঠিক বলতে পারব না, তবে অনেকের কাছে গল্প শুনে, বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে আমেরিকার অধিকাংশ মানুষের অন্য দেশ সম্পর্কে জ্ঞান খুবই কম অথবা বলা যায় অন্য দেশ সম্পর্কে তাদের আগ্রহ কম। তাই হঠাৎ করেই মনে প্রশ্ন জাগল এটা কি মানুষের সহজাত অনীহা নাকি সরকারের রাজনৈতিক কৌশল? কারণ যখন মানুষ বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে জানে, সেসব দেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত হয় তখন তাদের মধ্যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা জাগতে পারে। ধর্ম কিন্তু এভাবেই কাজ করে। কোন একটা গ্রন্থে বিশ্বাস, অন্য গ্রন্থ অগ্রাহ্য করা - এটা এক ধরণের বর্ম। কারণ মানুষ যত জানে তত প্রশ্ন করে, তত পরিবর্তন চায়। আমেরিকার নিজেদের এক্সক্লুসিভ ঘোষণা করার পেছনে হয়তো সেই সিস্টেমের বিভিন্ন দুর্বলতা থেকে রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে। তাদের আগ্রাসী মনোভাবের পেছনেও আছে এই এক্সক্লুসিভনেস। ধর্মে তার উদাহরণ আমরা প্রায়ই দেখি। কারও শ্রেষ্ঠত্ব যখন শক্তি নির্ভর হয় তখন তা অন্যদের জন্য হুমকি স্বরূপ। আর নিজে শ্রেষ্ঠ বিধায় সে নিজের অন্যায় কার্যকলাপ ন্যায় বলে চালিয়ে দিতে পারে, দেয়। এটাও হয়তো ধর্মকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহারের আরও

সমস্যা

Image
হান্টার বাইডেনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যো বাইডেনের শক্তিতে তার অগাধ বিশ্বাস। তার বিশ্বাস, সে যাই করুক না কেন পিতার প্রতি তার আনুগত্য, তার বিশ্বাস সব বিপদ থেকে তাকে ঠিকই রক্ষা করবে। এটা অনেকটা ধর্মান্ধদের মত যারা ভাবে ঈশ্বরের প্রতি শর্তহীন বিশ্বাস তাদের সাত খুন মাফ করে দেবে, তাদের স্বর্গবাসী করবে (অবশ্য ঈশ্বর যদি সত্যি থেকে থাকেন আর এদের দ্রুত স্বর্গে নিয়ে যান তাতে সবাই বরং খুশি হবে, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বাঁচবে)। সাধারণ মানুষের সমস্যা হল যে সে নিজেকে সৃষ্টির সেরা জীব বলে মনে করে। কঠিন পরিশ্রম ও সাধনা নয় জন্ম সূত্রে অর্জিত এই শ্রেষ্ঠত্ব তার সত্যিকারের মানুষ হবার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। দুবনা, ১৬ জানুয়ারি ২০২৪

তৃপ্তি

Image
মস্কোয় আমার এক বন্ধু চোখে চশমা পরত। একটু কালো শেড থাকায় ওর চোখ বাইরে থেকে দেখা যেত না। এটা ছিল ছাত্র জীবন, ভরা যৌবন। প্রায়ই একসাথে ঘুরতে যেতাম। একদিন বাসায় ফেরার পথে বলল আজ অনেক মেয়েকে চোখ মেরে দিলাম। তা তোর চোখই তো দেখা যায় না। কেউ তো টেরই পায়নি। কী হল চোখ মেরে?  দেখুক আর নাই দেখুক, আমি তো তৃপ্তি পেয়েছি।  অনেক দিন পরে এ কথা মনে পড়ে গেল। এবার বাংলাদেশে কিছু কিছু দল ভোট বয়কট করল। আমার ধারণা এটা কেউই টের পায়নি। তবে এরা তৃপ্ত কিনা সেটা জানা হয়নি। দুবনা, ১৫ জানুয়ারি ২০২৪

সামান্য ঘটনা

Image
বড় ঘটনায় নয়, ছোট ছোট ঘটনায় জানা যায় কোন ব্যক্তি, সমাজ বা দেশের চরিত্র। বড় কিছু কেউ করে সচেতন ভাবে, ছোট ছোট কাজ অবচেতন মনে, অনেকটা অভ্যাস বশত। তাই কোন সামান্য কাজ অনেকের অগোচরে থেকে গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ বহন করে।  অনেক দিন বন্দী অবস্থায় থাকার পর সেদিন আমেরিকান সাংবাদিক গনসালো লিরা মারা গেলেন ইউক্রেনের জেলে। তাঁর অপরাধ ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের অফিসিয়াল ভার্সনের সাথে যায় না এমন খবর প্রকাশ করা ইউক্রেনের যুদ্ধ সম্পর্কে।  আমেরিকা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে তার নাগরিকদের রক্ষায় বদ্ধপরিকর - এত দিন পর্যন্ত এই বিশ্বাস ছিল অটল। ইলন মাস্ক, টাকের কার্লসন সহ অনেকের আবেদন সত্ত্বেও মার্কিন প্রশাসন লিরাকে মুক্ত করার জন্য ন্যুনতম চেষ্টা পর্যন্ত করেনি। ইউক্রেনের জেলে নিজ দেশের নাগরিকের মৃত্যুর পরও শুধুমাত্র মাত্র লিরার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব সেরেছে। মেইন স্ট্রীম মিডিয়াও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। এ ঘটনা আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক বিশাল পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এখন আর আমেরিকান নাগরিক বলে কেউ নেই, আছে এলিট শ্রেণীর স্বার্থ। তবে পশ্চিমা বিশ্বের প্রা

সরকার

Image
বর্তমান বিশ্বের দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে সর্বত্র সরকারি দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, কারচুপি ইত্যাদির অভিযোগ। আর উন্নয়নশীল দেশের মন্ত্রীদের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের কেচ্ছা কাহিনী। ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে ক্ষমতাসীন ও দুর্নীতিপরায়ণ প্রায় সমার্থক হয়ে গেছে। এর থেকে মুক্তির উপায় কি? সরকারি দল বাতিল করা। কিন্তু সরকার থাকলে সরকারি দল এমনিতেই গজাবে। তাহলে? তাহলে আর কি? সরকার বাতিল করতে হবে। দেশ চলবে কেমনে? দেশ কবে কোথায় সরকারের দেখানো পথে চলেছে? উল্টো সব সরকারই জনগণের কাঁধে চেপে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছে। তাই বলে সরকার ছাড়া দেশ চলবে? বিদেশের সরকারের সাথে আলোচনায় বসবে কে? আরে সরকার কি এক দেশে বাতিল হবে? সব দেশ থেকেই সরকারি ব্যবস্থা উঠিয়ে দিতে হবে। সরকারি মাল না থাকলে দরিয়ায় সেটা ঢালার প্রশ্ন আসবে না। অন্তত চেষ্টা করে দেখতে সমস্যা কোথায়? দুবনা, ১০ জানুয়ারি ২০২৪

অসুস্থ গণতন্ত্র

Image
রাশিয়ার কোন অঞ্চলে পশুদের মধ্যে সংক্রামক রোগ দেখা দিলে জন স্বাস্থ্য ও পশুদের সুস্থ ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেই এলাকার সব পশুদের হত্যা করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এতে সরকার ও ফার্মের মালিকরা সমান ভাবে অংশগ্রহণ করে। সরকার অবশ্য কৃষকদের ক্ষতি পূরণ দেয়।  বাংলাদেশে সরকারি দল, বিরোধী দল, জনগণ সবাই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে। এবং অন্তত সরকারি ও বিরোধী দলগুলো সমান উদ্দীপনায় অসুস্থ গণতন্ত্রকে হত্যা করে।  দেশের গণতন্ত্র মনে হয় রাশিয়ার পশুদের চেয়েও অধম। তাই এখানে স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন ও সুস্থ পশুতে খামার ভরে গেলেও দেশে গণতন্ত্র প্রাণ ফিরে পায় না। দুবনা, ০৮ জানুয়ারি ২০২৪

স্বাধীনতা

Image
কথিত আছে যে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর একবার এক ইংরেজের কাছে কোন এক কাজে গেলে তিনি টেবিলের উপর পা তুলে বিদ্যাসাগরকে সম্বর্ধনা জানান। পরবর্তীতে সেই সাহেব বিদ্যাসাগরের কাছে এলে তিনিও একই ভাবে সাহেবকে সম্বর্ধনা জানান। এটা সাহেবের পছন্দ হয়নি। ওরা চায় না ওরা যা করে আমরা তাই করি কারণ এটা করতে পারে স্বাধীন মানুষ। ওরা চায় ওরা যা বলে আমরা তাই করি, ওদের অধীনস্থ থাকি।  আমেরিকা এখনও ২০২১ সালের জানুয়ারির ঘটনার জন্য অনেককে গ্রেফতার করছে যদিও সেই ঘটনার অনেক কিছুই এখনও অস্পষ্ট। অন্যদিকে আমাদের দেশে যখন এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গাড়ি পোড়ানো হয়, ট্রেনে আগুন দেয়া হয়, নির্বাচনের আগে ও পরে মানুষ হত্যা করা হয় তখন এই আমেরিকাই এটাকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বলে শোরগোল তোলে, ভয় দেখায়। আর প্রচুর ডিগ্রিধারী লোক এসব অসামাজিক কার্যকলাপ বিভিন্ন অজুহাতে সমর্থন করে মার্কিন স্বর্গে নিজেদের সীট কনফার্ম করে। স্বাধীনতা - অন্যের দয়া নয়, নিজেদের মত করে চলার অধিকার - নিজের ও জাতি ধর্ম বর্ণ ও রাজনৈতিক আদর্শ নির্বিশেষে দেশের সব মানুষের। দুবনা, ০৭ জানুয়ারি ২০২৪