আনফ্রেন্ড

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সামাজিক বা জাতীয় ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফেসবুক বিতর্কের পর অনেকেই ঘোষণা দিয়ে কিছু লোককে আনফ্রেন্ড করে।

আমি ফেসবুকের বন্ধুদের সাধারণত আনফ্রেন্ড করি না। একবার এক জনকে করেছিলাম অযথা বার বার যাকে বলে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার জন্য। আমি বিদেশে বসে কেন দেশ নিয়ে লিখি সেটাই ছিল তার সমস্যা। আরেকজনকে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে আমার স্ট্যাটাসের প্রশংসা করার জন্য। এরা দু'জনেই ব্যক্তিগত ভাবে আমার পরিচিত। অনেক বন্ধুর মৃত্যুর পরও আনফ্রেন্ড করিনি কারণ তাদের জন্মদিনে নরকে (আমার ধারণা শুধুমাত্র আমার সাথে বন্ধুত্বের কারণেই তাদের স্বর্গের দ্বার বন্ধ হয়ে গেছে) শুভেচ্ছা বিনিময়ের এটাই একমাত্র পথ। তবে ইদানিং কালে কিছু কিছু ডেড সোলকে আনফ্রেন্ড করছি জীবিতদের স্থান সংকুলানের জন্য। 

প্রায়ই দেখি লোকজন বিভিন্ন কারণে অনেককে আনফ্রেন্ড করে ফেসবুকে ঘোষণা দেয়। বিশেষ করে বলে মূর্খ লোকদের আনফ্রেন্ড করার কথা। আমি একটু অবাক হই। 

বহুল আলোচিত একটা কথা আছে -"বল তোমার বন্ধু কে, আমি বলব তুমি কে?" এই যে একদল মানুষ আমার ফ্রেন্ড লিস্টে ছিল, তারা তো আমার অনুমোদনক্রমেই ছিল। তাহলে? তাদের মূর্খ বলে আমি নিজেকেই কি সেই দলেই ফেলছি না? অনেক আগে আমার এক সিনিয়র বন্ধু একটা ব্যাপারে বলেছিলেন, এই কাজটি করা ভুল হয়েছে, কিন্তু সেটাকে সংশোধন করতে গিয়ে কোন রেডিক্যাল পদক্ষেপ হবে আরও বড় ভুল। না, আমি অপছন্দের বা যাদের সাথে ঠিক চলা যাচ্ছে না তাদের বন্ধু তালিকায় রাখতে বলছি না, তবে এটা নীরবে করাই ভালো। কারণ যাদের আনফ্রেন্ড করে গালিগালাজ করলেন তাদের কেউ জানলো না কিন্তু আপনার মানসিক ভারসাম্যহীনতার কথা অন্যেরা জেনে গেল। কেন মানসিক ভারসাম্যহীনতা? কারণ আপনি নিজের মতামত ব্যক্ত করতে চান, কিন্তু কেউ নিজের জায়গা থেকে সেটার বিরোধিতা করলে বা ভিন্ন মত পোষণ করলে তার সেই স্বাধীনতা আপনি মেনে নিতে পারেন না।

দুবনা, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা