অধিকার

দেশে এখন তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে বিতর্ক চলছে। সংবিধান জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, পেশা, শিক্ষা নির্বিশেষে সব নাগরিককে সমান অধিকার দেয়। তাহলে নতুন করে অধিকারের প্রশ্ন আসে কেন? আসে, কারণ রাষ্ট্র সব সময়ই ব্যর্থ হয়েছে সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের সংখ্যালঘু বিভিন্ন রকমের হয়রানির শিকার হয়েছে। ভোটের হিসেব নিকেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সব সময়ই রিসিভিং এন্ডে ছিল। রামু, প্রতি বছর দূর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনা সামাজিক ভাবে ততটা ধিকৃত হয়নি। সেদিক থেকে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার প্রশ্নে অনেক বেশি মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। কারণটা যদি সত্যিকার অর্থে মানবিক কারণে হয় সেটা প্রশংসাযোগ্য কিন্তু যদি সেটা হয় বর্তমান পশ্চিমা ট্রেন্ডের স্রোতে থাকার জন্য তাহলে আর যাই হোক সমস্যার সমাধান হবে না।

এর মধ্যে শুনলাম সরকার এক কমিশন গঠন করেছে। সীতার ভূমিকায় অভিনয় করছে শরীফা। সরকার রামের ভূমিকায়। কথিত আছে রাম কোন এক মাতালের অভিযোগে সীতাকে অগ্নি পরীক্ষা দিতে বলেন। এখন মাতালের ভূমিকায় ধর্মীয় মাতালরা।

যতদূর জানি শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের পরে, বিভিন্ন মহলের অনুসন্ধান মূলক কাজের পরে। তাই যদি হয় সরকারের উচিত ছিল শক্ত হাতে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা। সেটা না করে সমাজের এক অংশের, যারা সত্যিকার অর্থেই আধুনিক শিক্ষা থেকে অনেক দূরে, কথায় এর পুনর্বিবেচনা করা ন্যাক্কারজনক। যে সরকার বিরোধী দলের অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি এড়িয়ে যায় তাদের পক্ষে একটা সংবিধান বিরোধী দাবির প্রতি নমনীয়তা প্রকাশ খুবই সন্দেহজনক।

ধর্মীয় মৌলবাদ একটা অসুখ। সুস্থ ও আধুনিক শিক্ষা দিয়ে সেটা নিরাময় করতে হয়, তার সাথে আপোষ করতে হয় না। তবে আমাদের সব সরকারেরই এক অদ্ভুত দক্ষতা আছে - ডাক্তারের পরামর্শ এড়িয়ে রোগের সাথে সন্ধি করা।

দুবনা, ২৬ জানুয়ারি ২০২৪

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা