Posts

Showing posts from September, 2019

মহালয়া

Image
গতকাল থেকেই একের পর এক মহালয়ার শুভেচ্ছা বার্তা আসতে শুরু করেছে বন্ধুদের কাছ থেকে। এসব বার্তা মনে করিয়ে দিচ্ছে ফেলে আসা শৈশব আর কৈশোরের কথা। পূজার শুরু আর প্রায় সপ্তাহ খানেক পরে হলেও মহালয়াই নিয়ে আসে মায়ের আগমনী বার্তা। বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই বাড়িতে শুরু হত মহালয়ার প্রস্তুতি, সবাই অপেক্ষা করত বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে মা দুর্গার আগমন বানী শোনার জন্য। মস্কো আসার পরে এটাকে আমার অনেক সময়ই মনে হত লেভিতানের দরাজ গলায় জার্মানির সাথে সোভিয়েত ইউনিয়নের যুদ্ধ ঘোষণা করার মত। খুব ছোট বেলায় আমাদের ঘরে একটা বিশাল রেডিও ছিল, সবাই সেটাকে ঘিরে বসেই আমরা মহালয়া শুনতাম। আগের রাতে সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়তাম, যাতে খুব ভোরে উঠতে পারি। মহালয়ার পরে অনেক সময় ধরে আলোচনা চলত এবারের মহালয়া নিয়ে। ঠিক সময়টা মনে নেই, তবে একবার মানবেন্দ্র তার মহাসিন্ধুর ওপার থেকে গেয়ে সবার মন জয় করেছিলেন। ছোটবেলায় দেবদেবীদের প্রতি ভয় বা ভক্তি থাকলেও সময়ের সাথে সাথে তাঁদের নিজেদের অসহায়ত্ব দেখে নিজের উপরই আস্থা রাখতে শিখতে শুরু করি। আর এক সময় এসব দেবদেবীরা কালের গর্ভে হারিয়ে যান। তবে ফেসবুকের কল্যাণে চাই বা না চাই, দেবদেবীরা আবার এস

শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান

Image
বিংশ শতাব্দীর আশির দশকে পেরেস্ত্রইকা আর গ্লাসনস্তের পাশাপাশি আর একটি বহুল প্রচলিত শব্দ ছিল শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। পশ্চিমা বিশ্বের নেতাদের কাছে তেমন পাত্তা না পাওয়ায় সেখানে এটা কখনোই খুব বেশি প্রচার পায়নি। আর সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বে যখন আমেরিকার একচ্ছত্র আধিপত্য তখন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আইডিয়াটা খরচের খাতায় চলে যায়। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য প্রথম যে শর্ত সেটা হল পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ , কম্প্রোমাইজ করার মানসিকতা। এটা মনে হয় পৃথিবী থেকে দিন দিন উঠে যাচ্ছে। মানবতার কথা বললেও , অন্যকে মানবিক হতে বললেও আমরা নিজেরাই আর মানুষ থাকতে পারছি না। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন চারিদিকে শুধু হিন্দু আর মুসলমান - মানুষ কোথায় ? এখন আমরা সবাই হয় নারী , না হয় পুরুষ , হয় হিন্দু না হয় মুসলমান বা বৌদ্ধ , খৃস্টান , আস্তিক বা নাস্তিক ইত্যাদি। মানুষের বৃহৎ পরিচয় ত্যাগ করে আজ আমরা সবাই কোন না কোন দল , গোষ্ঠী , ধর্ম বা অন্য কোন পরিচয়ে পরিচিত - যেখানে অন্য কোন চিন্তার স্থান নেই। মৌলবাদকে ঘৃণা করলেও কাজে-কর্মে , চিন্তা-চেতনায় , চলনে-বলনে আমরা সবাই মৌলবাদী। “ বৈচিত্রের মধ্যেই ঐক্য” এ কথাটি

ঈশ্বর

Image
"তোমাকে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে" কথাটি মহামায়া বলেছিলেন কংসকে উদ্দেশ্য করে । এর একটা অর্থ হতে পারে "সবকিছুর ধ্বংসের চাবিকাঠি তার ভেতরেই থাকে । " কোন কিছু বদলাতে হলে ভেতর থেকেই সেটা করতে হয়, শুধু বাইরে থেকে কোন কিছু পরিবর্তন করতে গেলে প্রচণ্ড বিরোধের মুখোমুখি হতে হয় যা অতিক্রম করা অনেক সময়ের ব্যাপার ।   ঘরের শত্রু বিভীষণের সাহায্য ছাড়া রামও সহজে লঙ্কা জয় করতে পারে না । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে এ কথাই বারবার মনে পড়ছে । শুধুমাত্র শাস্ত্রের সাহায্য নিয়েই তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়েছিল সামাজিক বাঁধাগুলো পেরিয়ে সমাজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা । বিধবা বিবাহ প্রচলন বা সতীদাহ রোধ - এগুলো শুধু সামাজিক নয়, মানসিকতার পরিবর্তনও বটে । এসব পরিবর্তন মানতে গিয়ে ব্যক্তি মানুষকে শুধু নয়, পুরো সমাজকে একটা বিশাল মানসিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে । আর বিধবা বিবাহ প্রচলন সফল ভাবে তিনি করতে পেরেছেন, মানুষের সমর্থন লাভ করতে পেরেছেন শুধুমাত্র যে শাস্ত্র মানুষ বিশ্বাস করে সেই শাস্ত্রকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করে বা শাস্ত্রের মধ্যে তাঁর এই কর্মকাণ্ডের যুক্তি খুঁজে বের করে । আ