Posts

Showing posts from June, 2021

পাপপুণ্য ন্যায় অন্যায়

Image
আমরা প্রায়ই উপমহাদেশের শিক্ষা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করি। এর পেছনে যথার্থ কারণ আছে। আমরা মাদ্রাসা শিক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এসব নিয়ে বলি, তবে পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে তেমন কিছু বলি কি? আমার মনে হয় শুরুটা এখানেই করা উচিৎ আর সেটা করা উচিৎ এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। কী সেটা? পাপ আর পুণ্য বা গুনাহ আর ফরজ। শিশু স্কুলের গণ্ডীতে পা দেবার অনেক আগে থেকেই পাপ পুণ্যের কথা শোনে। পাপ পুণ্যের কথা বলা খারাপ কিছু নয় যদি না সেটা প্রচলিত সামাজিক বা মানবিক আইনকে চ্যালেঞ্জ করে। পাপ পুণ্য আর ন্যায় অন্যায়ের মধ্যে এর ফলে এক বিশাল ফারাক দেখা দেয়। পরবর্তীতে অনেকেই এই ফারাক হয় ঠিকমত বুঝতে পারে না আর পারলেও ঠিক কোন পক্ষে যেতে হবে সেটা ঠিক করতে পারেনা। যেমন ধরুন প্রায় সকল শিক্ষিত মানুষই জানে বর্ণাশ্রম একটা অন্যায় প্রথা তারপরও সামজিক কারণে অনেকেই সেটা ভাঙ্গতে পারে না। খুন বা লুট করা অন্যায় জেনেও বিধর্মীকে খুন করা বা তার বাড়ি লুট করা অনেকেই পুণ্য বলে মনে করে। বিচারের একটা প্রধান উদ্দেশ্য অপরাধীকে আইনের পথে আনা, তাকে সংশোধন করা। কিন্তু সে যদি তার অপরাধকে অপরাধ বলেই মনে না করে, সেটা বুঝতে না পারে - তাকে ঠিক পথে ফির

ভাইরাস

Image
  করোনার করুণায় বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় শব্দ হচ্ছে ভাইরাস। তবে এটা সাময়িক। ভ্যাকসিনের আবিষ্কারে আজ হোক, কাল হোক আমরা এই ভাইরাসকে জয় করব তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এতেই ভাইরাসের উপস্থিতি আমাদের জীবনে শেষ হয়ে যাবে না। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা, আমরা সবাই বিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত। না, এটা শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসের ভাইরাস নয়, আমরা যে যা বিশ্বাস করি সে বিশ্বাসের ভাইরাস অনবরত সমাজকে দূষিত করে চলছে।। আমরা সবাই ধরেই নিই, যে যা কিছু বিশ্বাস করি সেটাই শেষ কথা। কোত্থেকে আসে এই বিশ্বাস? জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে। নিজেদের সাফল্যের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে যে বিশ্বাস আমরা তৈরি করি সেটাকেই একমাত্র পথ বলে মনে করে পথে পথে তা ফেরি করে বেড়াই। আর ব্যর্থতার উপর ভিত্তি করে যে অভিজ্ঞতা সেটা ভুল এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা হয় তাকে দূরে ছুঁড়ে ফেলি নয়তো তার বিরুদ্ধে লড়াই করি। কিন্তু এটা করতে গিয়ে আমরা কখনই ভাবি না এই সাফল্য বা ব্যর্থতার পেছনে নিজের কতটুকু অবদান, কতটুকু সমাজ বা সিস্টেমের। সাফল্য অবশ্য আমাদের একান্তই নিজের, ব্যর্থতা? হতেই পারে না। এ জন্যে শুধু সিস্টেম দায়ী। এই যে নিজের ক্ষমতা, নিজের সঠিকটা সম্পর্কে আ

কাজ ও আনন্দ

Image
  অনেক দিন থেকেই আমি বিশ্বাস করি কাজ থেকে পাওয়া আনন্দই আসল, আর ফলাফল, তা সে বেতন হোক আর যাই হোক সেটা বোনাস। তার মানে এই নয় একজন ছাত্র পাশ করার জন্য পড়বে না। কথা হল পরীক্ষার নম্বরটাই যেন লক্ষ্য না হয়, পড়াশুনার আসল লক্ষ্যে যেন হয় জ্ঞান অর্জন করা। একই ভাবে চাকরির ক্ষেত্রেও বেতনই যেন শেষ কথা না হয়, আসল হয় কাজটা সুষ্ঠু ভাবে করার আনন্দ। আমরা যখন কাজ করে আনন্দ পাই, তখন কাজটা সত্যিকার অর্থেই ঠিকঠাক ভাবে করা হয়। সেটা না হলে হয়তো বেতন আসে, পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া যায়, কিন্তু কাজ হয় না, জ্ঞান অর্জন হয় না। জীবনে অনেক লোককে দেখেছি এই সহজ সত্যটুকু উপলব্ধি করতে না পেরে কষ্ট পেয়েছেন। ফেসবুকেও এরকম ইতিহাস কম নয়। অনেক বাবা মা সন্তানদের নিয়ে কষ্ট পান। অনেকে আবার অন্যের বাবা মার কষ্ট নিয়ে গল্প লেখে। কিন্তু কোন বাবা মা যদি সন্তানকে মানুষ করার আনন্দ থেকেই ওদের বড় করেন, ওরা বড় হয়ে এক সময় দেখাশুনা করবে এটা না ভেবে শুধু মাত্র নিজের আনন্দ থেকেই সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করেন তাহলে তাঁদের কখনই এমন অসুখী হতে হবে না। সমাজে প্রতিষ্ঠিত সন্তানদের মনে হবে না তারা অমানুষ হিসেবে গড়ে উঠেছে। আবার অনেককে দেখি, যারা

প্রশ্ন নিয়ে প্রশ্ন

Image
  কথা হচ্ছিল "'শুধু অসাম্প্রদায়িক না, পুরোপুরি অধার্মিক না হয়ে কী করে কেউ বিজ্ঞানমনস্ক হন, মুক্তচিন্তক হন, কমিউনিস্ট হন সেটা এই অশিক্ষিত অভাজনের মাথায় ঢোকে না।" একজন স্কুল কলেজে গেলেই তেমন শিক্ষিত হয়ে যায় না, ঠিক তেমনি একজন মন্দির মসজিদে গেলেই ধার্মিক হয়ে যায় না। আসলে ধর্ম আর আর বিজ্ঞানমনস্কতা দুই ভিন্ন জগতের বাসিন্দা। ধর্ম - এটা বিশ্বাস, বিজ্ঞানমনস্কতা - এটা সন্দেহ, অবিশ্বাস। এমনকি কেউ যদি অন্ধভাবে মার্ক্সবাদে বিশ্বাস করে সেও সেই ধর্মের পথেই যায়। তবে অধার্মিক শব্দটা ব্যবহার করা ঠিক হবে না, কেননা অবিশ্বাসী আর অধার্মিক সমার্থক নয়। যেখানে ধার্মিক কারণ জানতে না চেয়ে কোন টেক্সট মেনে নেয়, বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ কারণ জানতে চায়, জানতে চায় সেটাই কি একমাত্র সত্য নাকি আরও কোন সত্য আছে। আমরা অনেক কিছুই করি যতটা না যুক্তি দিয়ে, তার চেয়ে বেশি আবেগ দিয়ে। যেমন যুক্তি দিয়ে আমি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতাম, সবাই সেটাই চেয়েছিল, কিন্তু আবেগ দিয়ে আমি ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ফিজিক্সে চলে এসেছি। আবার এটাও তো ঠিক অনেক সময় আমাদের নিজেদের উপরেও বিশ্বাস রাখতে হয়। ধরুন বাবা মা মনে করেন আপনার ডাক্তার হওয়া উ

ভ্যাক্সিন সমাচার

Image
  আমাদের দেশে লোকজন ভ্যাক্সিন পাচ্ছে না, এখানে নিচ্ছে না। সরকার বিভিন্ন পুরস্কার ঘোষণা করছে, কিন্তু মানুষ খুব একটা গায়ে মাখছে না। অনেকে বলছে ইসরাইলের মত ব্যবস্থা নিতে, মানে তুমি ভ্যাক্সিন না নিতে পার সমস্যা নেই, কিন্তু তাহলে তোমার জন্য সিনেমা, থিয়েটার, সিনাগগ, সুপার মার্কেট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান -মানে যেখানেই জন সমাগম - সব কিছুর দরজা বন্ধ। এখনও পর্যন্ত পুতিন এর বিরোধিতা করছেন, তাই হচ্ছে না। আমাদের ইনস্টিটিউটে অনেক দিন থেকেই ভ্যাক্সিন নিতে বলছে। শুরু হয়েছে গত নভেম্বর থেকে। এখন পর্যন্ত মাত্র ২০% ভ্যাক্সিন নিয়েছে। ফলে কাজকর্ম মূলত চলছে অনলাইনে। কর্তৃপক্ষ বলছে মিনিমাম ৫০% ভ্যাক্সিন না নিলে ইনস্টিটিউট পুরোপুরি ওপেন করবে না। কয়েকদিন আগে সার্কুলার এলো, যারা সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভ্যাক্সিন নেবে তাদের ৪ হাজার রুবল করে দেওয়া হবে। টাকাটা খুব বড় নয়, তবুও যদি আকর্ষণ করা যায়। বিভিন্ন শহরে গাড়ি, বাড়ি লটারি হচ্ছে। জানুয়ারিতে অসুস্থ ছিলাম বলে এখনও ভ্যাক্সিন নেইনি। তাই ভাবছি নিয়েই নিই, যদিও তিনটা ভ্যাক্সিনের কোনটা নেব - সেটা ঠিক করতে পারছি না। কেউ স্পুতনিক ৫ এর কথা বলছে, কেউ কভি-ভ্যাক নিতে বলছে, কেউ বা এপিভ্য

মূল্যায়ন

Image
  করোনা কালে যেহেতু অনেক সময় ঘরে থাকা হয়, তাই প্রায়ই বিভিন্ন টিভি প্রোগ্রাম দেখি। এদের একটা রাশিয়া ১ এ বরিস করচেবনিকভের মানুষের ভাগ্য। এখানে ও বিভিন্ন জনপ্রিয় মানুষদের ডেকে তাঁদের জীবন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। করে সেটা খুব অন্তরঙ্গ পরিবেশে। সেদিন এমন এক প্রোগ্রামে ও এক ফিল্ম ডাইরেক্টরকে জিজ্ঞেস করল ভিসোতস্কির সাথে এত বন্ধুত্বের পরেও ও কেন তাকে নিয়ে ছবি করল না। উত্তর, "তখন বোকা ছিলাম।" ওটা শুনে আমার মনে পড়ল এক বন্ধুর কথা যে ভিসোতস্কির গান পছন্দ করত না। আমরা একই বছরে মস্কো এসেছি। বিভিন্ন বিষয়ে ওর আগ্রহ। তাই ওর কথা মনে পড়ল। এটা আশ্চর্যের কিছু নয়। বরং ভাবলাম আমরা কেন তখন ভিসোতস্কিকে খুব একটা পছন্দ করতাম না যদিও সোভিয়েত জনগণের মাঝে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। যেহেতু সোভিয়েত সরকার বা পার্টির সাথে তাঁর সম্পর্ক খুব ভালো ছিল না তাই সরকারি ভাবে তাঁর গানের রেকর্ড খুব একটা বের হত না। বন্ধুরা বাসায় তাঁর গান ক্যাসেটে ধারণ করে সেসব প্রচার করত আর মানুষ প্রচণ্ড রিস্ক নিয়ে হলেও সেসব কিনত। তিনি তাগানকা থিয়েটারে অভিনয় করতেন, অভিনয় করতেন বিভিন্ন সিনেমায় - ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা। তারপরেও আমাদের