Posts

Showing posts from March, 2022

পরিচয়

Image
- বিজন, আমি পিওতর নমোকনোভ। বলে হাত ধরে ঝাকাতে লাগল আমার চেয়ে এক মাথা লম্বা এক ভদ্রলোক। আমি অনেকটা যান্ত্রিক ভাবেই উত্তর দিলাম - বিজন। - আমি জানি। আমরা ফেসবুক বন্ধু। - ও আচ্ছা। - আমি তোমার ছবির ফ্যান। খুব ভাল লাগে তোমার ছবি। - ধন্যবাদ। আসলে আমি এতটাই অপ্রস্তুত হয়ে গেছি যে কি বলব তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমাদের দেখা ভিসোতস্কি ক্যাফেতে। ওখানে গেছি বন্ধুদের সাথে ইউরি তুমানভকে স্মরণ করতে। ইউরি তুমানভ জেআইএনআর মানে আমি যে ইনস্টিটিউটে কাজ করি তার নিজস্ব ফটোগ্রাফার। ছিলেন ২০১৪ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত। আজ তাঁর ৯০ বছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষ্যেই বেশ কিছুদিন হয় আমাদের স্থানীয় কালচারাল সেন্টারে তাঁর ছবির প্রদর্শনী হচ্ছে। তাঁর ছবি মানে আমাদের ইনস্টিটিউটের ইতিহাস, একই সাথে দুবনার ইতিহাস। অনেক দিন যাই যাই করেও যাওয়া হয়নি। আজ তাই ভাবলাম যাই প্রদর্শনী দেখতে। ওখানেই বন্ধুদের সাথে (এরা সবাই ফটোগ্রাফার, কোন না কোন সময় তুমানভের সাথে জড়িত ছিলেন) দেখা। আসলে দুবনার প্রায় সব ফটোগ্রাফার, অন্তত যাদের বয়স ৪০ পার হয়েছে, কোন না কোন ভাবে তুমানভের সাথে জড়িত। আমি নিজেও বিভিন্ন সময়ে তাঁর উপদেশের জন্য গেছি। যদিও ১৯৯৪ সালে দ

চৌকিদারের ভাইপোঁ

Image
২০০৬ সালে আমরা কয়েকজন মিলে ফটো ক্লাব ফোকাস তৈরি করি। শুরু থেকে যারা ছিলাম, আজ তাদের দুজন মাত্র এর সাথে জড়িত আছি - ভাসিলি আর আমি। এটা আমাদের অ্যামেচার ফটোগ্রাফারদের ক্লাব। অ্যামেচার - মানে খারাপ ফটোগ্রাফার নয়, আমরা ছবি তুলি মনের সুখে, এ থেকে জীবিকা অর্জন করি না। অনেক ছেলেমেয়ে আমাদের এখানে ছবি তোলা শিখেছে, বর্তমানে সেটাকে পেশা হিসেবে নিয়ে ভাল আছে। তবে কথাটা সেখানে নয়। একবার এক মেয়ে এলো আমাদের ক্লাবে। আমরা সাধারণত বসে গল্প গুজব করি, চা খাই, কেউ ছবি দেখাতে চাইলে সেটা দেখি, নিজেদের মতামত জানাই। খারাপ হলে খারাপ, ভাল হলে ভাল বলি। এক কথায় প্রত্যেকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলি কীভাবে ছবিটা আরও ভাল করা যেত। ভাল ছবির প্রশংসা করি, তেমন ভাল না হলে চেষ্টা করি বলার কীভাবে আরও ভাল করা যেত। কোন জোর জবরদস্তি নেই, শুধু মতামত জানান। ফটোগ্রাফার নিজেই ঠিক করে সে সে সমস্ত রিকমেন্ডেশন গ্রহণ করবে কি না। যাহোক, সেই মেয়ে এসে ছবি দেখালো। সেই প্রথম মনে হয় আমাদের কারোই কোন ছবি পছন্দ হল না। কিন্তু সে সেগুলো না শুনে তার বিভিন্ন সার্টিফিকেট দেখাতে শুরু করল, সে কোথায় কোথায় ছবি তোলা শিখেছে সেসব জানালো। যাহোক, আমাদের সা

কানা

Image
ছোটবেলাকার একটা গল্প মনে পড়ছে। এক লোক অনেকগুলো কামলা (যারা দিন চুক্তিতে কাজ করে) রেখেছে জমিতে কাজ করার জন্য। কামলাদের মধ্যে একজন ছিল কানা। বেশ কয়েকদিন পরে সেই লোক জমিতে এসেছে কাজকর্ম কেমন চলছে সেটা দেখার জন্য - এখানে জমিটা ঠিকঠাক চাষ করা হয়নি। এটা কে করেছে? - কানা। - আর এই জায়গায় এত আগাছা, এটা কে রেখেছে? - কানা। সেই লোক যাই জিজ্ঞেস করে, এক উত্তর কানা। - আছা, সবই যদি কানা করে তাহলে তোমাদের আমি পয়সা দিচ্ছি কী করতে? গল্পটা মনে পড়ল বিশ্বের বর্তমান অবস্থা দেখে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটার পর একটা স্যাঙ্কশন দিয়েই যাচ্ছে বিভিন্ন দেশ আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জিনিসের দাম। এখানেও বাড়ছে, তবে বাইরে থেকে যে খবর পাই সে তুলনায় ততটা নয়। না, সে খবর রুশ টিভির নয়, বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া যাদের অনেকেই অরগ্যানিকালি আন্টিরুশ। তাই অবিশ্বাস করার কারণ নেই। আবার কেউ কেউ আন্টিরুশ না হলেও পুতিন বিরোধী। এই তো সেদিন ইউরোপ থেকে এক বন্ধু লিখলেন - কেমন আছ? - ভাল। আমি এমনিতেই সব সময় ভাল থাকি। আসলে আমি আর্থিক দিক থেকে কখনই যাকে বলে স্বচ্ছল ছিলাম না (ছোটবেলায় বাবার হোটেলের সময় বাদ দিয়ে)। সে চেষ্টাও ছিল না। চলে গেলেই হয়।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

Image
হঠাৎ করেই ফোনটা বেজে উঠলো। আমি অনেক রাতে ঘুমুতে যাই, তাই উঠি পরে। দেখি ভারতীয় নম্বর, অপরিচিত। ভাবলাম স্বপন দার নতুন নম্বর কিনা। তাই কলটা রিসিভ করলাম। - আমি কোলকাতা থেকে বলছি। মিঃ বিজন সাহার সাথে একটু কথা বলতে চাইছি। - বলুন। - খবর আসছে যে ইউক্রেনে এক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আক্রমণ হয়েছে। ওটা কি চেরনোবিলের মত কিছু হতে পারে? আপনি কিছু বলবেন? - দেখুন আমি এখনও ঘুম থেকে উঠিনি। আমাকে খোঁজ খবর নিতে হবে, তারপর কথা বলতে পারব। ঘণ্টা তিন চার পরে ফ্রি হয়ে জানাব। - অনেক ধন্যবাদ। আমি আপনাকে আপাতত কিছু লিংক পাঠাচ্ছি। লিংকগুলো দেখে বুঝলাম তাতে খবরের চেয়ে প্রোপ্যাগান্ডা বেশি। কি করা? রিয়া নভোস্তির সাইটে জাপারোঝিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিঙে আগুন লাগার কথা লিখেছে, তবে ইতিমধ্যে আগুন নিবিয়ে ফেলেছে। এ থেকে খুব বেশি কিছু জানা যাচ্ছে না। কী করা? এ ক্ষেত্রে কাজ করে বইপত্তর। খুঁজতে লাগলাম সোভিয়েত ইউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে সেফটি ব্যাপারটা কতখানি ছিল। এসব সেন্টার হাই রিস্কি, তাই সেই সময়ের সবচেয়ে নিরাপদ ব্যবস্থা যে অবলম্বন করা হয়েছিল তাতে সন্দেহ নেই। বিশেষ করে তখন আমেরিকা আর সোভিয়েত