Posts

Showing posts from June, 2016

বিশেষজ্ঞ

Image
বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে বাড়ছে গবেষণার ক্ষেত্র আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিশেষজ্ঞের দল। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে সংখ্যাটা গাণিতিক হারে বাড়লেও সমাজবিজ্ঞান ও রাজনীতিতে তাদের সংখ্যা বাড়ছে জ্যামিতিক হারে, মানে ব্যাঙের ছাতার মতো। যার ফলে আজকাল কেটলির সুইচ অন করতে বা জামা কাপড় আয়রন করতেও ভয় পাই, পাছে কেটলি বা আয়রন থেকে বিশেষজ্ঞরা বেরিয়ে জ্ঞান দিতে শুরু করে। যাকগে বিশেষজ্ঞের কথায় আসা যাক। এর একটা পোশাকী সংজ্ঞা আছে - বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী। আমি অনেক আগেই নিজের জন্য একটা সংজ্ঞা ঠিক করেছি - বিশেষ ভাবে অজ্ঞ। যেহেতু আমি গবেষনা করি, তাই ছেলে মেয়েরা অনেক সময় জিজ্ঞেস করে - "পাপা, তুমি কি অনেক জানো?" আমি বলি, "আমি জানি যে আমি যত জানি, তার চেয়ে অনেক বেশী জানিনা।" "তা কি করে হয়?" আমি ওদের বিভিন্ন গল্প বলি। "এই ধর, আমাদের ঘর। আমরা কখনো এর থেকে বাইরে যাইনি। একটু চেষ্টা করলে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ঘরের কোথায় কি আছে, আমরা জানতে পারবো। এরপর বাইরে গেলে দেখবো আমাদের ফ্লোরে আরো কয়েকটা ঘর আছে। যদিও আমরা জানি ঐ ঘরগুলো একই রকম, তার কোথায় কি আছে আমরা ঠিক বলতে পা

"বাবা দিবসের" খিচুড়ি

Image
বাবা দিবস (не бойся, это не по-русский) ভালোই কাটলো। অনেক দিন পরে কি একটা স্বপ্ন দেখছিলাম, তখন মনিকার ডাকে ঘুম ভাঙলো। "পাপা, একটু চা দেবে?" "নিজেই একটু ঢেলে নে।" "ঠিক আছে।" বুঝলাম, ও আর চা টা  ঢালবে না। তাই বললাম কেটলিটা অন  করতে। চা ঢেলে জিজ্ঞেস করলাম "কয়টা বাজে?" "ছয়টা।" "এতো সকালে? কোথায় যাবি ?" "মস্কো, কাজ আছে।" তারপর ওকে ট্যাক্সি ডেকে দিলাম। ও চলে গেলে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। যখন ঘুম ভাঙলো, দেখি প্রায় এগারোটা বাজে। অন্য ঘরে দেখি সেভা কম্পিউটার গেইমে  ব্যস্ত। "আবার খেলা " "আমি এই মাত্র উঠলাম।" "খাবি?" "হ্যা।" পনির দিয়ে রুটি সেকে দিলাম, সাথে চা। আমিও খেলাম। করেক দিন পা ব্যাথা, তাই ঘরে বসে ছবি তোলা, বই পড়া, সেই সাথে দেখলাম "আমার রবীন্দ্রনাথ"। কিছু ছবিও এডিট করলাম, গতকালের তোলা, স্টিল লাইফ। পরে ভাবলাম, রান্না করা দরকার।  "কিরে, কি খাবি? খিচুড়ি?" "কর।" তারপর পেঁয়াজ, গাজর, আলু, টার্কি, চাল - সব এক সাথে সেদ্ধ করে হয়ে গেলো "বাবা দিবসে

হাতের পাঁচ আঙ্গুল

Image
১৯৮৯ সাল। মাস্টার্স শেষে করে দেশে বেড়াতে গেছি। ছিলাম প্রায় সাড়ে তিন মাস। রাশিয়ায় আসার আগেই ছাত্র ইউনিয়ন আর খেলাঘর আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলাম। তাই ছুটিতে এসেই খেলাঘর, ছাত্র ইউনিয়ন, সিপিবি, ক্ষেতমজুর সমিতি, কৃষক সমিতির বিভিন্ন প্রোগ্রামে প্রায়ই যেতাম। গল্প-গুজব আড্ডা সব কিছুর কেন্দ্রে ছিল রাজনীতি - বাম রাজনীতি আর সোভিয়েত দেশ। এই সময়ই একদিন বাড়িতে এলেন সামসু চাচা - খুব ভালো মানুষ। বললেন, "আচ্ছা বাবা, এইযে তোমরা সব সময় সমাজতন্ত্র সমাজতন্ত্র বলো, তা মানুষ কি কখনো সব সমান হয়? এইযে হাতের পাঁচ আঙ্গুল - এরা তো কখনো এক সমান হয় না, তাহলে তোমরা সব মানুষকে সমান করতে চাও কেন? এটা কি কখনো সম্ভব?" "সমান মানে তো আর কেটে কেটে সমান করা নয়, সমান মানে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা। এই যে আপনার কয়েক জন ছেলে মেয়ে। আপনি তো তাদের সমান ভাবেই ভালোবাসেন, সবার জন্যই সমান সুযোগ তৈরির চেষ্টা করেন, যাতে তারা সফল মানুষ হতে পারেন। তার পরেও কেউ বেশি সফল হয়, কেউ কম। কাউকে নিয়ে আপনি বেশি গর্ব বোধ করেন, কাউকে নিয়ে কম। কিন্তু ভালোবাসেনতো সবাইকে একই রকম। তাইনা?" "তাহলে তোমাদের রাশিয়ায় ঈশ্বর বি

জিপি ৫ ও কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা

Image
গত কয়েক দিন হলো ফেইসবুকে ঝড় বইছে, ঘূর্ণি ঝড় - ঘূর্ণি ঝড় কেননা চারিদিক থেকে হাজার রকম মতামত উছলে পড়ছে। সবাই যেখানে বলছে - আমিই বা কেন চুপ করে বসে থাকি - তাই এই লেখা। আর অপ্রাসঙ্গিক - কেননা অনেক কথায় আসবে যেটা ঘটনাটার সাথে সরাসরি যুক্ত নয়। অনেক পড়ে একটু বিরক্ত হয়েই ভিডিও টা দেখালাম। অবাক হলাম, একটু দুখ:ও পেলাম। সন্দেহ নেই - দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করা দরকার - আর সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই ছিল এই প্রতিবেদন। কিন্তু তার সাথে সাথে এইযে কিছু ছাত্র-ছাত্রীকে যার পর নাই লজ্জ্যা দেয়া হলো, তা কি ঠিক? ওরা কিন্তু পড়াশুনা করেই জিপি ৫ পেয়েছে - যদি যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আসে তবে সেটা ওদের কাছে নয়। কিন্তু রিপোর্ট দেখে মনে হবে কিছু অজ্ঞ আর মুর্খ ছেলে মেয়ে জিপি ৫ পেয়েছে যা পাবার যোগ্যতা তাদের ছিল না। আর তাদের এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী তারা নিজেরা আর শিক্ষা মন্ত্রী, সরকারসহ সবাই, কিন্তু এই যে আমাদের সন্তানরা এমনটা হচ্ছে তাতে যেন আমাদের কোনই দায়-দায়িত্ব নেই।   এক লেখায় দেখালাম, এক জন সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, তাদের মুখগুলো ব্লার করা উচিত ছিল কিনা? একশ বার ছিল। কেননা জিপি ৫ পেয়ে ওরা দোষ করেনি