Posts

Showing posts from September, 2023

গাছ কাটা

Image
১৯৮৬ সালের গ্রীষ্মে সাইবেরিয়া যাই ছাত্র নির্মাণ দলে। ছিলাম বনের ভেতর এক ক্যাম্পে। আসলে এটা ছিল গুলাগ। মানে এক সময় সেখানে ভিন্ন মতাবলম্বীদের রাখা হত। প্রথম দিনই আমাদের টয়লেটে, বাথরুম এসব তৈরি করতে গাছ কাটতে হল। এখনও মনে পড়ে করাত দিয়ে গাছ কাটার সময় দড়ি দিয়ে টানছিলাম যাতে গাছটা খুশি মত না পরে যায়। দলের প্রধান বলেছিল গাছ শুধু কাটলেই হবে না, সেটা পরার সময় যাতে ক্ষতি না করে আর আমাদের কাজে আসে সেটাও দেখতে হবে। এখন দেশে সরকার ফেলানোর তোড়জোড় দেখে আমার সেই গাছ কাটার কথা মনে পড়ে গেল। বিরোধী দল সরকার ফেলতে চাইবে এটা স্বাভাবিক। তবে তার আগে ভাবতে হবে এই পরিবর্তন নির্দিষ্ট দলের জন্য কতটুকু সুফল বয়ে আনবে আর তাদের সাহায্যে সরকার ফেলে আরও বেশি প্রতিক্রিয়াশীল কেউ ক্ষমতায় আসবে না তো? অন্যের ঘরে ফসল তোলা কি আমাদের জন্য এতটাই জরুরি? দুবনা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

গল্প

Image
সামাজিক মাধ্যমের যুগে, যখন খুব সহজেই নিজেকে অন্যদের সামনে তুলে ধরা যায়, অধিকাংশ মানুষ চায় অপেক্ষাকৃত পরিচিত মানুষের সাথে ছবি তুলে সেসব পোস্ট করে সেই লোকের পরিচয়ে নিজেও একটু পরিচিত হতে। এরা প্রায়ই বোঝে না যে, নিজে পরিচিত হতে গিয়ে তারা আসলে সেই লোকটার পরিচিতি বা জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ এসব ছবিতে শুধু সেলিব্রিটির দিকেই তাকায়, তার আশেপাশের চ্যালা চামুন্ডার দিকে ভ্রূক্ষেপ পর্যন্ত করে না। ফলে এসব করে তেল মাথায় আরও তেল মাখা হয়, নিজের মাথায় ছিটেফোঁটাও পরে না। ছোটবেলায় ছেলেমেয়েরা বৃদ্ধদের মুখে বিভিন্ন গল্প শুনতে ভালবাসে। সবাই তাঁকে ঘিরে বসে থাকে, হা করে গল্প শুনে। শুধু কিছু কিছু দুষ্ট ছেলেমেয়ে, যারা সেই গল্পের মাঝে হইচই করতে পারে, তারা কিছুটা হলেও ফ্লোর পায়, বাকীরা সবার অগোচরেই থেকে যায়। পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা যখন এরকম আড্ডায় বসেন আর বাইডেন দাদু যখন তাদের পুতিন অসুরের গল্প শোনান, তখন তারাও মন্ত্রমুগ্ধের মত সেসব গল্প শোনে আর মাঝে মধে দুষ্ট ছেলে জেলেনস্কি অভিনয় গুণে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। তবে এখনও পর্যন্ত জেলেনস্কিকে ভিক্ষুর ভূমিকায় অভিনয় করতেই দেখা যায়, নায়ক নয়।

ভাবনা

Image
শুনেছি, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের কেউ কেউ ক্যানাডায় বাস করে। এখন আসুন এরকম একটি দৃশ্য কল্পনা করি যা মোটেই অসম্ভব নয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেগম জিয়া গেছেন ক্যানাডায় রাষ্ট্রীয় সফরে। মিঃ ট্রুডো ক্যানাডার পার্লামেন্টে তাঁর সম্মানে বিশেষ আয়োজন করেছেন এবং কোন কারণ বশতঃ বর্তমানে ক্যানাডার সম্মানিত নাগরিক বঙ্গবন্ধুর সেই খুনীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সেই লোক এক দলীয় শাসন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে ইত্যাদি বলে তার প্রতি সম্মান জানিয়েছে। পরে স্থানীয় বাংলাদেশী অভিবাসীরা এর প্রতিবাদ করলে মিঃ ট্রুডো তাদের অজ্ঞতার কারণে এরকম এক অস্বস্তিকর পরিবেশে ফেলার জন্য বেগম জিয়ার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অভিবাসী বাংলাদেশীরা এ নিয়ে রাজনীতি করছে বলেও এক হাত নিয়েছেন। ক্যানাডার পার্লামেন্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির আগমন উপলক্ষ্যে ঠিক এমনটাই ঘটেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হিটলার, মুসোলিনির অনুরাগী আর সেই সূত্র ধরেই যুদ্ধ শেষ অনেক নাৎসি, বিশেষ করে ইউক্রেনের বান্দেরাপন্থীরা সেদেশে আশ্রয় প

আত্মত্যাগ

Image
আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এই দিনে নর্থ স্ট্রীম ধ্বংস করা হয়েছিল। প্রথমে সমস্ত কমন সেন্সের বিরুদ্ধে গিয়ে আমেরিকা সহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার উপর এর দায় চাপায়। পরবর্তীতে পুলিৎসার পুরস্কার প্রাপ্ত আমেরিকান সাংবাদিক সেইমুর হের্শ প্রমাণ করেন যে এর পেছনে আমেরিকার হাত আছে। তবে আমেরিকা তার প্রথম ভার্সন থেকে সরে এসে এই ঘটনার পেছনে ইউক্রেন দায়ী বলে প্রচার চালায়। এরপরেও যে দেশ এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সেই জার্মানিও আমেরিকান ভার্সনে বিশ্বাস করে বা করতে বাধ্য হয়। বার বার আহ্বান করা সত্ত্বেও তারা রাশিয়ার সাথে যৌথ ভাবে তদন্ত চালাতে রাজী হয়নি। ফেসবুকে এরকম একটা পোস্ট প্রায়ই চোখে পড়ে “আগে মানুষ মিথ্যা বলতে ভয় পেত পাপ হবে বলে, এখন সত্য বলতে ভয় পায় বিপদে পড়বে বলে।” জার্মানি মনে হয় সেই বিপদে পড়ার আশঙ্কায় সত্য বলছে না যদিও তার শিল্পের ও অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে আর কত বিপদ হতে পারে সেটা ভাবনার বিষয়। এই বিস্ফোরণের ফলে শুধু রাশিয়া ও জার্মানির অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়নি, পরিবেশও প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে পরিবেশবাদীদের উচ্চবাচ্য নেই। কারণ কথায় আছে “যে পয়সা দেয় সেই নাচায়।” এরকম এক

ভিসা

Image
আমেরিকা ভিসা দেবে না বলে চারিদিকে কান্নার রোল। আমাদের জীবনে মার্কিন ভিসা কি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ? আমার তো মনে হয় বরং আমরা নিজেরাই আমেরিকার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সস্তা শ্রমিক, বিনে খরচে বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী হাজার হাজার বিশেষজ্ঞ। যদি আমেরিকায় অভিবাসী তৃতীয় বিশ্বের লোকজন কয়েক দিনের জন্য ধর্মঘটে যায় কল্পনা করতে পারেন দেশটার কি হাল হবে? কান্নাকাটি বাদ দিয়ে বয়কটের হুমকি দিন দেখবেন ওরা নিজেরাই ডেকে নেবে। নিজের দেশকে নিয়ে গর্ব করতে শিখুন। মেরুদণ্ড খুঁজে বের করার এই তো সময়। দুবনার পথে, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নাক

Image
অনেকেই এরকম অভিযোগ করে যে কাছের মানুষই সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয়। আসলে কাছের মানুষ কষ্ট দিলে ব্যথাটা আমাদের বেশি লাগে। তাই দেয় না পাই এ বিষয়ে ঐক্যমতে না এলে এই সমস্যা অমীমাংসিত থেকে যাবে। তাছাড়া অপরিচিত কেউ যদি গুন্ডা পান্ডা বা পাগল বা অভদ্র না হয় তাহলে পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া লাগাবেই বা কেন? কাছের মানুষের সাথে ইচ্ছা অনিচ্ছায় ওঠা বসা করতে হয়, অনেক কিছুই ভাগাভাগি করে নিতে হয় বিধায় মনোমালিন্য তথা মনোকষ্ট পাবার সম্ভাবনা থেকেই যায়। একই কথা প্রতিবেশী দেশের ক্ষেত্রে। এখানে ও ঐ একই রসায়ন কাজ করে। আমেরিকার কথা ভিন্ন। ও গুন্ডাদের মত সবার ব্যাপারেই নাক গলায়। মস্কোর পথে, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উন্নয়ন

Image
ছাত্রজীবনে যেসব বন্ধু আমেরিকায় বেড়াতে গেছে বা যাদের আত্মীয় স্বজন সেদেশে থাকত, ওদের মুখে শুনেছি সেখানে ক্রেডিট কার্ডের স্বাস্থ্য দিয়ে বিবেচনা করা হয় কে সফল আর কে ব্যর্থ এই জীবনে। এখন সেখানে কীভবে সাফল্য আর ব্যর্থতা মাপা হয় সেটা জানি না। তবে দেশে এখন যে অর্থই একমাত্র অর্থময় সেটা বুঝতে পারি। উন্নয়নের মূল কথাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। কারা সেই রিজার্ভকে খাইয়ে পরিয়ে মোটা তাজা করে? অল্প শিক্ষিত বা লেখাপড়া না জানা সেই সব মানুষ যারা আরব দেশগুলোতে কাজ করে আর একই ধরণের নারীরা যারা গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করে। অর্থাৎ দেশে যে উন্নয়নের মহোৎসব চলছে তার জ্বালানি থেকে শুরু করে চাল ডাল সব কিছু যোগান দিচ্ছে এই অল্প শিক্ষিত মানুষেরা। পক্ষান্তরে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করা মেধাবী তরুণ তরুণীরা হয় বিদেশে গিয়ে ক্যারিয়ার গড়ছে নয়তো দেশে চাকরি করে টাকা পয়সা, ছেলেমেয়ে সব বিদেশে পাচার করছে। এটা বাংলাদেশের ওভার অল চিত্র। তাই ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষায়তন না করে টাঁকশাল করতে চাইবেন তাতে অবাক হবার কী আছে? দল মত নির্বিশেষে আজ দেশের রাজনীতির ভেক্টরের দিক পুরোটাই অর্থ দিয়ে নির্ধারিত। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা রাজনৈতিক ভাবে এ

প্রশ্নোত্তর

Image
গত ১৬ সেপ্টেম্বর একটা এক্সকারশনে গিয়েছিলাম রোমানভ-বারিসোগ্লেবস্ক বা তুতায়েভ নামে ভোলগা তীরের এক ছোট্ট শহরে। বিভিন্ন গির্জা ঘুরিয়ে গাইড বললেন গির্জার দেয়ালগুলো প্রায় দেড় মিটার পুরু। কে বলতে পারবে কেন? যাতে ঈশ্বর পালিয়ে যেতে না পারে। - উত্তর দিলাম। না। যাতে শয়তান বা অপবিত্র শক্তি ঢুকতে না পারে। তাহলে তো শয়তানকে চার দেয়ালের মধ্যে আটকে রাখাই যৌক্তিক ছিল। শয়তানের হাত থেকে ঈশ্বরকে বাঁচাতে তাঁকেই বন্দী করলেন?  যদি বিজ্ঞানীর কাছে ঈশ্বরের পালিয়ে যাওয়া আর শয়তানের ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি হয়, ধার্মিক ঈশ্বরের পালিয়ে যাবার সম্ভাবনা ধর্তব্যের মধ্যেই নেয় না। তাছাড়া সাধারণ ভাবে সবাই নিজেকে চার দেয়ালের মধ্যে আটকে রাখার চেয়ে মুক্ত বাতাসে ঘোরাফেরা করাই বেশি পছন্দ করে যদি না সে নেট এডিক্টেড হয়। পরে বাসে বসে মনে হল এ জন্যেই হয়তো ভালো ও মুক্তচিন্তার মানুষদের জেলে ঢুকিয়ে খারাপদের হাত থেকে রক্ষা করতে চায় বিভিন্ন দেশের সরকার। ভালো মানুষ যদি অবাধ্য মানুষদের বুঝিয়ে পথে আনার চেষ্টা না করে সে ভালো থাকে কি করে? ঈশ্বর যদি শয়তানকে বুঝিয়ে তার দেবত্ব রক্ষা করার চেষ্টা না করেন তাহলে তিন

এশিয়া কাপ

Image
ভারতে ক্রিকেটারদের দেবতার আসনে বসানো হয়। কে শিবের ভক্ত আর কে বিষ্ণুর এই নিয়ে ভক্তদের মধ্যে রেষারেষি থাকলেও শিব, বিষ্ণু বা অন্যান্য দেবতারা মনে হয় একে অপরের বন্ধুই। একই ব্যাপার দেখি ক্রিকেটেও। ফ্যানরা কোহলি বড় না রোহিত বড় এসব নিয়ে বিতর্ক করলেও দলের মধ্যে পরিবেশ মনে হয় বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। রোহিত চাইলে আজ ওপেন করতে পারত, জয়ের রান তুলতে পারত, নিজের দশ হাজার রানের সাথে আরও কিছু রান যোগ করতেই পারত। কিন্তু সে দুই তরুণের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিল। ভারতের জয়ের পাশাপাশি এদের যে আত্মবিশ্বাস এর মধ্যে গড়ে উঠল সেটা সুদূরপ্রসারী। বাংলাদেশ দল এসব বিষয় থেকে শিক্ষা নিতে পারে। বিশেষ করে দলের ভেতরে দল না পাকানোর শিক্ষা। অশ্বিনের মত বোলার যখন দলে স্থান না পেয়েও সতীর্থ খেলোয়াড়দের বিজয় কামনা করে আমাদের অনেকেই কিন্তু সেটা পারেনি।  মস্কোর পথে, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রতিনিধি

Image
খেলোয়াড় হোক, কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, অভিনেতা, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ বা আমলা যেই হোক - কেউ যখন দেশের প্রতিনিধিত্ব করে তখন তাকে শুধু নিজের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হলেই হয় না সবদিক থেকেই ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হয়। ভালো খেলে একটা খেলায় জিতিয়ে দিলেও নারীবিদ্বেষী কথাবার্তা বলে দীর্ঘদিনের জন্য পুরো দলকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপাঙ্ক্তেয় করে তোলা যায়। এখনই সময় কঠোর ব্যবস্থা নেবার। তাতে দল ও খেলোয়াড় সবাই উপকৃত হবে। দুবনা, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভাবনা

Image
কোরবানির জন্য প্রস্তুত নাদুসনুদুস গরুটির চোখে অশ্রু দেখে ওকে শান্তনা দিয়ে একজন বলল, আনন্দ কর। দেখিস না কত লোক অধীর অপেক্ষা করছে তোর জন্যে? ক জন নিজের মরণে এত এত মানুষকে এত আনন্দ দিতে পারে? ওটা ওর আনন্দাশ্রু। - পাশ থেকে বলল আরেক জন প্রথম জনকে শান্তনা দিয়ে।  তোমরা চাইলেই নিজেদের পুরুষ বা মহিলা বা যেকোন লিঙ্গের ভাবতে পার। আর আমাদের বলছ মরণ যন্ত্রনা আনন্দ হিসেবে নিতে। চালাকি? মনে মনে ভাববে গরুটি। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওর সহযাত্রী গরুটি বলবে - এত ভাবিস না তো। পৃথিবীটাই এখন এরকম। তুই কি আর কি ভাবিস তাতে কি? তোকে কী ভাবতে বলা হচ্ছে সেটাই সুখের চাবিকাঠি। নিজেকে সংখ্যালঘু ভাববি না, শোষিত ভাববি না, উপরয়ালা আর উপরয়ালাদের কৃপা ধন্য ভাববি তাহলেই দেখবি জীবনটা আনন্দময় হয়ে যাবে, সুখের হয়ে যাবে। বাস্তবতা নয়, ভাবনাই আসল, স্বপ্নটাই আসল। দুবনা, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ছবি

বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন রকম শখ বা হবি থাকে। কারও কারও থাকে একাধিক শখ। পদার্থবিদ্যা আমার পেশা হলেও সেটাও সেই শখের মত। কেননা সেটা করে আনন্দ পাই আর বোনাস হিসেবে পাই বেতন। এর বাইরে আরও কয়েকটি শখের একটি হল ছবি তোলা। ছবি তোলার আনন্দে ছবি তুলি। বোনাস - অনেক বন্ধু আর অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী যাদের আমার ছবি ভালো লাগে। ভালভাষা পত্রিকার সম্পাদক শ্যামলেষ ঘোষ শ্যামল শুধু আমার লেখাতেই নয়, অন্য লেখাতেও আমার ছবি ব্যবহার করেন, সেটাও একটা বিশেষ পাওয়া। গতকাল তিনি একটি ভিডিও পাঠালেন সতীদাহ নিয়ে। ওটা দেখতে গিয়ে নিজের কয়েকটা ছবি আবিষ্কার করে খুব ভালো লাগল। বেশ তথ্যবহুল একটা ভিডিও। আপনারাও দেখতে পারেন। https://youtu.be/AuUPCedc0do?si=1spvAI44dXel-6NT

রূপ

Image
ছোটবেলায় কোথায় যেন পড়েছিলাম ঈশ্বরের আকার নেই বলে তিনি নিরাকার নন, তিনি ভক্তের সামনে যেকোন আকার ধারণ করতে পারেন বলে নিরাকার। এই একই কথা যে কোন আদর্শের ক্ষেত্রেও সত্য। একই জল যেমন পুকুরে, নদীতে বা সাগরে ভিন্ন রূপে ভিন্ন নামে প্রকাশ পায়, আদর্শ তেমনি উপস্থাপকের কারণে ভিন্ন ভাবে আসে মানুষের কাছে। ধর্ম হোক আর অন্য কোন আদর্শ হোক তার প্রকাশ মানুষ বা মানুষের তৈরি সংগঠনের মাধ্যমে। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র বা ধর্মের কথা বলে যেমন লিংকন, লেনিন বা যীশু আসে, তেমনি আসে জিয়া, পলপট বা মোল্লা ওমর। এসব উপস্থাপকই নির্ধারণ করে ধর্ম বা তন্ত্রের রূপ। সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা সমাজতন্ত্রকে ঠেকাতে গিয়ে পশ্চিমা পুঁজিবাদী ব্যবস্থা যে মানবিক রূপ নেয় সোভিয়েতের পতনের সাথে সাথে তাদের কাছে সেটার প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যায়। আজ বিশ্ব জুড়ে যে অরাজকতা, অস্থিরতা সেটা পুঁজিবাদের সেই আসল রূপে ফিরে যাবার কারণেই। এজন্যেই মনে হয় বিকল্প পথের কথা ভাবতে হবে যার ভিত্তি হতে পারে সোভিয়েত ব্যবস্থা মাইনাস তার আমলাতন্ত্র।  দুবনা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মানুষ

Image
বক রূপী ধর্মের "সবচেয়ে আশ্চর্যের কী?" এই প্রশ্নের উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেছিলেন "প্রতিদিন চারিদিকে এত লোককে মরতে দেখেও মানুষ নিজেকে অমর ভাবে এটাই সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের কথা।" ঠিক একই ভাবে অনেকেই প্রায় অন্ধের মত বিশ্বাস করে শুধু সোভিয়েত ইউনিয়নে আর এখন রাশিয়ায় প্রোপাগান্ডা আছে, পশ্চিমা বিশ্ব তথা আমেরিকায় কোন প্রপাগান্ডা নেই, সেখানে শুধুই সত্যের ছড়াছড়ি। তবে মালয়েশিয়ার বিমান, বুচা, ২০১৪ থেকে পশ্চিমা বিশ্বের ইউক্রেনকে অস্ত্র সজ্জিত করা রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য, নর্ড স্ট্রীম বিস্ফোরণ - এসব বার বার প্রমাণ করে কোনটা প্রপাগান্ডা আর কোনটা নয়, কাদের মগজ মিথ্যা তথ্যে ধোলাই করা হচ্ছে আর কারা কিছুটা হলেও মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারছে। রাশিয়ায় বসে এখনও ইউরোপ আমেরিকার খবর দেখা যায়, ওসব দেশে যতদূর জানি রুশ মিডিয়া নিষিদ্ধ। তবে যারা আমাদের রাশিয়ার মিথ্যাচারে হাবুডুবু খাওয়া মানুষ মনে করে তারা কবে যে নিজেরাই পশ্চিমা মিথ্যাচারে তলিয়ে গেছে সেটা বুঝতেই পারে না। এমনকি তাদের প্রিয় ও অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় নেতা কাম গুরুদের আলমারি থেকে একটার পর একটা কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ার পর

সতর্কতা

Image
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর এবার বাংলাদেশে আসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। মাঝে নয়া দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বাইডেনের সেলফি ও সুনাকের কথোপকথন। এসবের একটাই অর্থ - বিভিন্ন প্রশ্নে অপেক্ষাকৃত স্বাধীন মত ও পথ গ্রহণ ও প্রকাশকারী বাংলাদেশকে পশ্চিমা বিশ্বের নিজ বলয়ে নিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টা। তারা এখন সর্বশক্তি দিয়ে সেটা করার চেষ্টা করবে। চেষ্টা করবে দেশের অভ্যন্তরে অরাজকতা সৃষ্টি করতে যা তাদের সাহায্য করবে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার। তাই বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারে এমন কর্মসূচি কোন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের পক্ষে কতটুকু সঠিক সেটা ভাবা দরকার। কিছু কিছু প্রশ্নে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শক্তির অনমনীয় মনোভাব এই সাম্রাজ্যবাদের প্রবেশের পথ খুলে দিতে পারে। ছোট যুদ্ধে জিততে গিয়ে বড় যুদ্ধের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। মস্কো, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দায়

Image
সোভিয়েত ইউনিয়নে ভূমি ছিল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম আইন করা হয়। সেসব আইনে বিদেশিদের কাছে ভূমি বিক্রির ব্যাপারে বাধানিষেধ ছিল। ইউক্রেনও ব্যতিক্রম নয়। তবে জেলেনস্কির শাসনামলে তাড়াহুড়ো করে সেই আইন পরিবর্তন করা হয়। আর এই আইনের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ইউক্রেনের জমি কিনতে শুরু করে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে ইউক্রেনের মাটি, বিশেষ করে তার উর্বর ভূমির বেশিরভাগ পশ্চিমা কোম্পানিগুলো কিনে নিয়েছে। তাই ইউক্রেনের মানুষ তাদের দরকার নেই, দরকার জমির, মানে নিজেদের সম্পত্তির উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এর অর্থ ইউক্রেনের মানুষ প্রাণ দিচ্ছে নিজেদের জন্যে নয়, বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ভূমি উদ্ধার করার জন্য। তাই ইউক্রেনে যে শত শত বিলিয়ন ডলার খরচ করে পশ্চিমা বিশ্ব যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সেটা না ইউক্রেনের, না পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ মানুষের স্বার্থে - সারা বিশ্বের মানুষ এই যুদ্ধের ব্যয় বহন করছে টাকার পাহাড়ে বসে থাকা অল্প কিছু মানুষের সম্পদ রক্ষা ও বাড়ানোর জন্যে। তাই মানবাধিকার, গণতন্ত্র এসব মিষ্টি বুলিতে ভুলে পশ্চিমা সম্প

কেন

Image
ঘুম থেকে উঠেই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই লাভরভের  বাংলাদেশ সফরের খবর দেখলাম। রাশিয়ার বিভিন্ন চ্যানেলে লাভরভের শেখা হাসিনার সাথে সাক্ষাতের খবর, ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্প অর্পণ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাংদাবিক সম্মেলনের খবরও উঠে এল। যদি ভুল না করি সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ার এত উঁচু পর্যায়ের কোন কর্মকর্তার এটাই প্রথম বাংলাদেশ ভ্রমণ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তী উন্নয়নে এমনকি এখনও পর্যন্ত রাশিয়া যেভাবে আমাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় সেই বিবেচনায় এই সফর নিঃসন্দেহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।   এই খবর যখন দেখছিলাম তখন আমার মনে পড়েছিল মহাভারতের কথা। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ঠিক আগের মুহূর্তে কৌরব আর পাণ্ডব পক্ষ থেকে একের পর এক দূত যাচ্ছিল ভারতের বিভিন্ন রাজন্যবর্গের কাছে আসন্ন যুদ্ধে সমর্থন লাভের জন্য। তবে তখন অধিকাংশ রাজ্যই স্বাধীন ছিল এবং তারা নিজের খুশি মত পক্ষ বা বিপক্ষে যোগ দিতে পারত।  বর্তমানে অধিকাংশ দেশেরই সেই স্বাধীনতা নেই ফলে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় অনেককেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। তাহলে এই যে এত গণতন্ত্র, এত স্বাধীনতার কথা আমরা ব

বিচক্ষণতা

Image
আমরা এক্সিবিশনের জন্য প্রায় সারা বছর জুড়েই ছবি বাছাই করি। যখন কেউ তার সাম্প্রতিক কালের কাজগুলো দেখায় তখন পছন্দের ছবিগুলো একটা ফোল্ডারে রাখি। এরপর যখন এক্সিবিশনের ছবি বাছাইয়ের সময় আসে সেই ফোল্ডার থেকে বেস্ট অব দ্য বেস্ট বেছে নেই। এটাই যেকোন ক্ষেত্রে বাছাইয়ের স্বাভাবিক নিয়ম। তবে বর্তমানে রাজনীতিতে বাছতে হয় বেটার অব দ্য ওরস্ট বা মন্দের ভালো। আর এটাই যে কোন রাজনীতি সচেতন ও বিবেকবান মানুষের জন্য বড় সমস্যা। কারণ এখানে শুধু ব্যক্তি মানুষের নয়, দলের চরিত্রও মাথায় রাখতে হয়। আর বাছাই করতে হয় দুর্নীতি (সেটা কমবেশি প্রায় সবাই), স্বৈরাচার, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, স্বাধীনতা বিরোধিতা বা এসবের বিভিন্ন কম্বিনেশন ইত্যাদির মধ্য থেকে একটা। যদিও এদের কোনটাই গ্রহণযোগ্য নয় তবুও একটা বেছে না নিলে এদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ কম্বিনেশনের পাল্লায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এক মন্দকে না বলে এর চেয়ে বড় মন্দের খপ্পরে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, দুষ্ট গরুকে তাড়াতে গিয়ে মানুষখেকো বাঘকে আমন্ত্রণ জানানোর সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ নিজেদের ক্ষমতা বা সমর্থন নেই ক্ষমতা দখলের, অন্যদিকে ক্ষমতার নিজেরও ক্ষমতা নেই স্বাধীনভাবে