Posts

Showing posts from August, 2022

আমরা

Image
দিনের শেষ আমরা সবাই পুঁজিবাদী। পুঁজিবাদী যেমন সব কিছুতেই লাভ খোঁজে আমরাও তাই। তাই আমাদের কাছে মানুষ মরে না, মরে রুশ অথবা ইউক্রেনিয়ান, মরে দাশা দুগিন, ২৯ বছর বয়সী কোন প্রাণবন্ত নারী নয়। আর যখনই এই ভাগাভাগির প্রশ্ন আসে তখন মানবতা, সহমর্মিতা, বাক স্বাধীনতা এ সবই তুচ্ছ হয়ে যায়।  অনেক আগে একটা গল্প শুনেছিলাম বন্ধু ফিওদরের মুখে। শয়তান এক ছেলেকে বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখায় তার নিজের দলে আনার জন্য। ও কিছুতেই রাজী না। শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে একদিন ঐ ছেলের সামনেই ওর বান্ধবীকে হত্যা করে। ও ভেবেছিল এতে ক্রুদ্ধ হয়ে হয়তো ছেলেটি রেগে ওকে আঘাত করবে, মারতে চাইবে আর এভাবেই অন্যায় করে ও নিজেও শয়তান হবে। ঐ ছেলেটা নিজেকে সংযত রাখতে পেরেছিল আর পুরস্কার হিসেবে বান্ধবীকে ফিরে পেয়েছিল। আমরা সাধারণ মানুষ। এসব পারি না। তাই মুখে যতই বড় বড় বুলি ছাড়ি না কেন বস্তুত নিজের লক্ষ্য অর্জনে নির্দ্বিধায় নিজেদের আদর্শ জলাঞ্জলি দিতে পারি। আসলে গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, মানবতা এসব অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ নয়, অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কিছু শ্লোগান যা দিয়ে আমরা অন্যদের বিভ্রান্ত করি।  মস্কো, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২

স্বাধীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতা

Image
আমেরিকায় শুনলাম কোন এক স্কুলে স্যাটানিক টেম্পল তাদের কর্মকাণ্ড চালাবে। সমান অধিকারের অজুহাতে যে কেউ নিজের আদর্শ প্রচার করতেই পারে। সে ক্ষেত্রে আরটি কি দোষ করল? তার মানে সমান অধিকারের দেশে সবাই সমান নয়। অন্যদিকে পৃথিবীতে মত ও পথের শেষ নেই। তবে অনেক মত ও পথ সামাজিক ভাবে ক্ষতিকর। এসব আইডিয়ার অধিকাংশই যুগ যুগ ধরে ছিল, থাকবে। তবে সেগুলো ছিল আত্মগোপনে। সমাজের বিবর্তনে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কোন কোন আইডিয়া সামনে এসেছে, কোন আইডিয়া হারিয়ে গেছে। এসবই যাকে বলে ন্যাচারাল সিলেকশন। কিন্তু স্যাটানিক টেম্পল বা এ ধরনের যেকোন আইডিয়া যেমন বিস্টিয়ালিটি, পেডোফিলিয়া ইত্যাদি জোর করে চাপিয়ে দেয়া, কোন মতেই ন্যাচারাল সিলেকশন নয়। তাই দিনের শেষে এসব কতটুকু সুফল আর কতটুকু কুফল বয়ে আনবে মানব সভ্যতার জন্য এটা শুধু ভবিষ্যতই বলতে পারবে। স্বাধীনতা আর স্বেচ্ছাচারিতার সীমানা খুবই সুক্ষ্ম। চিনতে ভুল করলে উচ্চ মূল্য দিতে হবে সমাজকে। মস্কো, ৩১ আগস্ট ২০২২

রাজনৈতিক ভ্যাকসিন

Image
ইউরোপের শিল্প বিপ্লব সাফল্য পেয়েছিল এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার কাঁচা মাল আর সস্তা শ্রমের কাঁধে ভর করে আর তাদের আধুনিক সংস্কৃতিও গড়ে উঠেছিল অনেকাংশে এই সাফল্যের উপর ভিত্তি করেই। আবার এই ইউরোপেই জন্ম নিয়েছিল ফ্যাসিবাদ, নাৎসিবাদ, আধুনিক দাসপ্রথা ইত্যাদি। একই সাথে মার্ক্সবাদ থেকে শুরু করে অনেক প্রগতিশীল মতবাদের জন্মস্থানও এই ইউরোপ। যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস খেয়াল করি তাহলে দেখব ইউরোপীয় সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র ফ্রান্স বলতে গেলে প্রায় বিনাযুদ্ধে হিটলারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। শুধু ফ্রান্স কেন ইউরোপের সমস্ত দেশই হিটলারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বিনা যুদ্ধেই। বিভিন্ন দেশে যেটুকু প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল সেটা হয়েছিল মূলত কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে। ফ্রান্সের জেনারেল দ্য গল যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন সেখানেও জাতিগত ভাবে যারা ফ্রেঞ্চ তারা খুব একটা সাড়া দেয় নি। সেদিক থেকে বলা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপের জনগণের এক বিরাট অংশ এবং পুঁজিপতিরা কোন না কোন ভাবে ফ্যাসিবাদের সমর্থক ছিল। শুধু ইউরোপ কেন আমেরিকার অনেক শিল্পপতি হিটলারকে সাহায্য করেছে। সত্যি বলতে আমেরিকাও জার্মানি ও সোভিয়েত ইউন

ভাঙাগড়া

Image
ছোটবেলা থেকেই মিশর যাবার ইচ্ছা ছিল। কেন? পিরামিড দেখতে, স্ফিংস দেখতে। এটা মনে হয় আমার একার নয়, সবারই। এখনও মানুষ যখন গ্রীস বা ইটালি যায়, তারা প্রথমেই ভাবে গ্রীক ও রোমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শনের কথা। কেন? কারণ ইতিহাস মানুষকে ডাকে। মানুষ শুধু ভবিষ্যৎ নয় অতীতও জানতে চায়। অতীতকে জেনেই সে ভবিষ্যতের পথে হাঁটে। সে শুধু তার নিজের সভ্যতার ইতিহাসই জানতে চায় না, জানতে চায় মহাবিশ্বের ইতিহাস। তাইতো সে ভয়েজার, চন্দ্র, প্ল্যাঙ্ক, জেমস ওয়েব - এসব পাঠায় মহাকাশে। এই পৃথিবীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। কিন্তু আমরা শুধু তাদের সম্পর্কেই জানি যাদের কোন লিপি বা স্থাপত্য এখনও রয়ে গেছে। সেটা মায়া বা ইনকা সভ্যতাই হোক, সিন্ধু সভ্যতা বা অন্য কিছুই হোক। তাই কোন কারণে কেউ সেই প্রাচীন নিদর্শন ভেঙ্গে ফেললে আমরা তার নিন্দা করি। একারণেই তালেবানরা যখন বামিয়ানে বুদ্ধের মূর্তি ভাঙ্গে বা ইসলামিক স্টেট আলেপ্পায় আসিরীয় সভ্যতার নিদর্শন ধ্বংস করে আমরা প্রতিবাদী হই, ক্ষুব্ধ হই। আজ যে স্ট্যাচু আমাদের কাছে সেদিনের মনে হচ্ছে পাঁচ শ বছর পরে সে সবই অতীত হবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বয়ে নিয়ে যাবে আমাদের বাণী।

খেলা খেলা সারা বেলা

Image
  ইউরোপ আমেরিকার অনেক রাজনৈতিক পর্যালোচকরা বলছে যদি জাপারঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রে আক্রমণ হয় তাতে ইউরোপ ক্ষতিগ্রস্থ হবে আর সেক্ষেত্রে ন্যাটো পঞ্চম আরটিকেল ব্যবহার করবে অর্থাৎ এটা ন্যাটোর উপর আক্রমণ বলে সবাই যুদ্ধে নামবে। কিন্তু কার বিরুদ্ধে? ওখানে আক্রমণ করছে ইউক্রেন। এটা বুঝতে মাথায় মুরগির ব্রেনই যথেষ্ট। কিন্তু ওরা বুঝবে না। কারণ রাশিয়া আগে থেকেই দায়ী। এতে কি হচ্ছে? ইউক্রেন তো সেটাই চাইছে। ন্যাটোকে যুদ্ধে নামাতে আর ইউক্রেনের জন্য ন্যাটোকে মরতে। কেননা ভাবার কারণ নেই যে এমন যুদ্ধ লাগলে কেউ রেহাই পাবে। আসলে শেষ পর্যন্ত যেটা দাঁড়াবে তা হল ইউক্রেন হবে ন্যাটোর জন্য ট্রয়ের ঘোড়া, একিলিসের গোড়ালি - সব। ইতিমধ্যে ব্রিটেনের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বলেছে তাদের সৈন্যদের প্রস্তুত হতে আর পরিবার থেকে বিদায় নিতে। এতদিন যে ব্রিটেনের সৈন্যরা ইউক্রেনে ছিল না তা নয়, তবে যুদ্ধ করেছে বেনামে। এখন তারা স্বনামে আসতে চাইছে। কুরস্ক পারমাণবিক কেন্দ্রের পাশে যে সন্ত্রাসী কাজ করা হয় তাতে মি ৫ এর চিহ্ন পাওয়া যায়। আলেক্সান্দর দুগিনের মেয়ে দারিয়ার মৃত্যুতে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার হাত আছে, গাড়িতে বোমা বসিয়েছে ইউক্রেনের

ভুল

Image
আমাদের ছাত্র জীবনে অনেকেই গ্রীষ্মের ছুটিতে ইংল্যান্ড যেত কাজ করতে। ওখানে দু মাস কাজ করে যে আয় হত তা দিয়ে অনেক দিন সোভিয়েত ইউনিয়নে রাজার হালে চলা যেত। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা সাধারণত ভারতীয় রেস্তোরাঁয় কাজ করত, যদিও বস্তুত তা ছিল সিলেটি। একবার বিপ্লব নামে আমাদের ভার্সিটির এক ছেলে লন্ডন থেকে ফিরল হতাশ হয়ে। মালিক ওকে বলেছে তুমি বাংলা বলতে পার না, ইংরেজি বলতে পার না কাজ করবে কীভাবে? ওর দুঃখ সিলেটি না বলায় ওর বাংলা মাঠে মারা গেছে।  আমি এক আধটু লেখালেখি করি। আগে প্রচুর ভুল করতাম, এখনও করি, তবে কম। কিন্তু চেষ্টা করি ভুল না করতে। কখনও হঠাৎ ভুল হলে (অনেক সময় গুগল নিজে থেকেও ভুল ভার্সন বেছে নেয়) পরে চোখে পড়লে ঠিক করি। অনেক সময় অন্যদের লেখায় ভুল দেখি। অনেকে অনেক সময় বানান দেখে দিতে বলে। আগে করতাম। এখন করি না। কারণ কেন যেন মনে হয় অধিকাংশ মানুষ লিখতে গিয়ে এত ভুল করে যে ভুলটা তারা অনায়াসেই শুদ্ধ ভাবে পড়ে। তাই কোন শব্দে ন না ণ, শ, ষ না স, র, ড় না ঢ় এ নিয়ে তারা মাথা ঘামায় না। সাধারণ মানুষ তো আর শৈল্পিক লেখা লেখে না, তারা নিজেদের আবেগ অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে চায়। মানুষ যদি ভুল বানান

যুদ্ধ ও শান্তি

Image
ইউক্রেন সৈন্যরা রুশ সৈন্যদের উপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। অনেকেই হাসপাতালে। জানি না পশ্চিমা বিশ্ব এ নিয়ে কোন কথা বলবে কি না। কী এখানে, কী দেশে - অনেকের মনেই প্রশ্ন কেন রুশরা কিয়েভ বা লভভ আক্রমণ করে না। বিশেষ করে ওরা যখন জাপারঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রমণ করছে, কাখভ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রমণ করছে যা জাপারঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রভাব ফেলতে পারে। আক্রমণ করছে কুরস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আসলে এরা যুদ্ধ করছে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যাদের মধ্যে মানবতা বলে কিছু নেই। জীবন, বিশেষ করে রুশদের জীবন তাদের কাছে মূল্যহীন। কিন্তু রুশরা তো শুধু ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ করছে না, যুদ্ধ করছে গোটা বিশ্বের সাথে। কিভাবে? পশ্চিমা বিশ্ব, মানে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড তো আছেই। এছাড়া পশ্চিমা বিশ্ব ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে অন্যান্য দেশগুলোকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাড় করাতে। পারছে না। আর তাই ইউক্রেন চাইছে যেকোন ভাবেই হোক এদের প্রভোক করতে যেন এরা কিয়েভ বা অন্যান্য শহরে যাকে বলে কার্পেট বোম্বিং শুরু করে। তাহলেই আমেরিকা অন্যান্য দেশের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে রাশিয়ার

সম্প্রীতি না স্বজন প্রীতি

Image
  সমস্যা ততটা সত্য বলায় নয় যতটা কেন এ ধরণের কথা সত্য হয় তাতে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছেন। তিনি মুখ খুলে না বললেও দেশের অধিকাংশ মানুষ এটা বিশ্বাস করে। প্রশ্নটা সত্য মিথ্যার নয়, প্রশ্ন হল একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র কেন অন্য রাষ্ট্রকে নিজের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে বলবে। এখানে মন্ত্রীর অপ্রিয় সত্য না বলার চেয়ে বেশি প্রয়োজন দেশের রাজনীতিকে অন্য যেকোনো রাষ্ট্রের প্রভাব বলয় থেকে যতদূর সম্ভব বের করে আনা। তবে এজন্যে শুধু সরকার নয় সব দলকেই সক্রিয় হতে হবে। আমাদের দেশে প্রায় সমস্ত বড় বড় দলই যে ক্ষমতায় আসার জন্য আমেরিকা, ইংল্যান্ড, চীন, ভারত, সৌদি আরব এসব দেশের দরগায় ধর্না দেয় সেটা কে না জানে। প্রথম শ্রেণিতে পড়া এক শিশু বলেছে সে ক্রিকেটার সৌম্য সরকারের সাথে দেখা করতে চায় না কারণ সৌম্য হিন্দু। ছেলেটার দোষ নেই। হিন্দু বিদ্বেষ বা সঠিক ভাবে বললে ভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতি ঘৃণা আজ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। সেই শিশু পরিবারে, স্কুলে, রাস্তাঘাটে যা দেখে বা শোনে সেটাই বলে। আশির দশকে মস্কোয় আমার এক ইয়ার মেট ছিল। প্রগতিশীল। তারপরেও কখনো সখ

মৃত্যুর খোঁজে

Image
ইউক্রেন জাপারোঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রমণ করেই যাচ্ছে। গতকাল কুরস্কের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাপ্লাই লাইনের কতগুলো পিলার উপড়ে ফেলেছে কিয়েভের সন্ত্রাসবাদীরা। ফলে পারমাণবিক বিপর্যয় আজ আর কল্পনা নয়, এটার অবয়ব ক্রমশ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।   পশ্চিম ফ্রন্ট নিশ্চুপ। এরমধ্যেই পশ্চিমের অনেক বিশেষজ্ঞ পারমাণবিক যুদ্ধের লাভ লোকসানের হিসাব নিকাশ শুরু করেছে। এক হিসেবে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে অল আউট যুদ্ধে মারা যাবে পাঁচশ কোটি মানুষ। আবার কেউ বলছে যুদ্ধটা হবে লোকাল। তাতে মারা যাবে দেড় কোটির মত মানুষ। ইউরোপে। এরপর ইউরোপ অনেক দিনের জন্য হবে বসবাসের অযোগ্য। এসবের পরেও ইউরোপের দেশগুলো মন্ত্রমুগ্ধের মত যুদ্ধের যজ্ঞে ঘি ঢেলে যাচ্ছে। আমরা কি মানবতার মৃত্যু দেখতে যাচ্ছি?  দুবনা, ১৭ আগস্ট ২০২২

বিশ্ব জিয়া

Image
জিয়াউর রহমান দু'টো সাঙ্ঘাতিক কথা বলেছিলেন ১) আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিক্যাল্ট; ২) মানি ইজ নো প্রবলেম।  এর পর চার দশকের বেশি পার হয়ে গেছে কিন্তু প্রতিটি সরকার দলমত নির্বিশেষে দেশের রাজনীতি কঠিন করে তুলছে। আর প্রতিটি সরকারই তাদের ছাত্র সংগঠনের জন্য টাকার সমস্যা দূর করেছে।  কথা হল এখন বিশ্ব রাজনীতিও কঠিন হয়ে পড়েছে। হেনরি কিসিঞ্জার নিজে সে কথা বলছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের সরকারের অনুগত ছাত্র সংগঠনের মত যেসব দেশ আমেরিকার অনুগত তাদের জন্য ডলার এখন ছাপাখানা থেকে সোজা পকেটে চলে আসছে।  জিয়াউর রহমান ছিলেন আমেরিকা, চীন, পাকিস্তান, সৌদি আরব এসব দেশের আশির্বাদ পুষ্ট। স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠের মত এ দুটি ঘোষণাও কি অন্যের (আমেরিকার) লেখা ছিল নাকি জিয়াউর রহমানের ভূত বাইডেন সহ বিভিন্ন পশ্চিমা নেতাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে?  কে এই বিশ্ব জিয়া?  দুবনা, ১৬ আগস্ট ২০২২

শোক হোক শক্তি

Image
  বাংলাদেশ আজ জাতীয় শোক দিবস পালন করছে। এ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। কিন্তু এবার যে প্রশ্ন আমার মাথায় বার বার ঘুরছে তা হল জাতি কি আজ সত্যিই শোকাচ্ছন্ন? হলে জাতির কতটা এই শোক বহন করছে? স্পষ্ট মনে পড়ছে ১৯৭৫ সালের এই দিনটির কথা। প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিলাম। বাজারে দেখি সবাই গম্ভীর। এক অজানা আশঙ্কা সবার চোখে মুখে। মাত্র সাড়ে তিন বছর আগে এই মানুষগুলো ঘরবাড়ি সব হারিয়ে পালিয়ে জীবন কাটিয়েছে। কেউ ভারতে কেউ বা দেশে অন্য কোন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল। একমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের উপর ভরসা করে এরা আবার নতুন করে জীবন শুরু করেছে। আবার কি সব নতুন করে শুরু করতে হবে? নাকি এবার চিরতরে বিদায় জানাতে হবে প্রিয় জন্মভূমিকে? বাড়িতে সবাই আকাশবাণী আর বিবিসি ধরতে ব্যস্ত। ওরাই শেষ ভরসা সত্য জানার জন্য। বাংলাদেশ বেতার ইতিমধ্যে রেডিও বাংলাদেশ হয়ে গেছে, জয় বাংলা হয়েছে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। যদিও শেখ মুজিবের হত্যার খবরে সারা বিশ্ব স্তম্ভিত, হতবাক তবে ঢাকার এলিট শ্রেণীর একটা বিরাট অংশ মনে হয় খুশিই। রেডিও বাংলাদেশ থেকে খুশির খবর প্রচার করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় নাকি মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। জেনারে

মরণ ফাঁদ

Image
ইউক্রেন জাপারোঝিয়ার পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। আজ পাশের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রমণ করেছে যা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ভয়াবহ হতে পারে কেননা সেক্ষেত্রে তার কুলিং সিস্টেম অকেজো হয়ে যাবে। অবস্থা দেখে মনে হয় ইউক্রেন একা মরতে চায় না, সারা পৃথিবী নিয়েই ধ্বংস হতে চায়। প্রথমত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিপর্যয় ইউরোপকে আঘাত করবে আর এতে যদি পরবর্তী ঘটনা কন্ট্রোলের বাইরে চলে যায় তবে অংশ আউট পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। ধারণা করা যায় যে বর্তমান আক্রমণ আমেরিকা, ইউকে আর পোল্যান্ডের সামরিক উপদেষ্টাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে হচ্ছে। তবে ইউক্রেনের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব যে কোন সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আর সেটা হলে ইউক্রেন ভাগ্য পশ্চিমা বিশ্বের হাতে নয় পশ্চিমা বিশ্ব তো বটেই বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করবে ইউক্রেন। এজন্যেই বলে হনুমানের হাত কুড়াল দিতে নেই।  দুবনা, ১৩ আগস্ট ২০২২

অসহিষ্ণু সময়

Image
আমাদের দেশে অনেক নেতাই যেকোনো দুর্ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের কোয়ান্টাম বাস্তবতায় সবই ডিস্ক্রেট বা বিচ্ছিন্ন। জীবন কিন্তু তা নয়, সেখানে সব ঘটনা পরস্পরের সাথে সংযুক্ত। তাই এড়িয়ে যেতে চাইলেই যাওয়া যায় না। স্যাটানিক ভার্সেস লেখার পর যখন সালমান রুশদির মস্তকের জন্য তিন মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয় সেই পৃথিবীতে এটা অকল্পনীয় না হলেও ছিল বিরল ঘটনা। এরপর থেকে সভ্যতা যতই অগ্রসর ও সহজলভ্য হচ্ছে আরও বেশি বেশি লেখক নিষিদ্ধ হচ্ছেন, হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন, নিষিদ্ধ হচ্ছে পুরো দেশ, পুরো জাতি। কারণ একটাই - নিজের বিশ্বাসের কাছে অন্ধ আত্মসমর্পণ, পরমতের প্রতি অসহিষ্ণুতা। যে অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে তথাকথিত সিভিলাইজড ওয়ার্ল্ড একসময় লড়াই করেছে আজ তারাই বিভিন্ন ধরণের অন্ধবিশ্বাস দ্বারা আক্রান্ত। কেন? আসলে যখনই কেউ নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করে তখন ইচ্ছায় হোক, অনিচ্ছায় হোক তাকে নিজের বিশ্বাসের প্রতি অন্ধ হতে হয়। সেটা না হলে গনিতের ভাষায় যাকে বলা যায় - সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে অথবা জ্ঞানের পরিধি বাড়ার সাথে সাথে এক সময় এমন এক সভ্যতার দেখা আমরা পাব যা বর্তমান সভ্যতার চ

যুদ্ধ ও ব্যবসা

Image
  আপনাদের ক্লারা ডেল পন্টের কথা মনে আছে? তিনি ছিলেন সার্বিয়ার নেতাদের বিরুদ্ধে হেগের আন্তর্জাতিক কোর্টে প্রধান প্রসিকিউটর। পরে একসময় তিনি কসোবার নেতাদের বিরুদ্ধে মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ তুলে পশ্চিমা বিশ্বের বিরাগ ভাজন হন। এর আগেই অবশ্য সার্বিয়া ও রাশিয়া এই অভিযোগ তোলে। অনেক দিন থেকেই দনবাসের নেতারা ইউক্রেনীয় সৈন্য বাহিনী ও আজভ ব্যাটেলিয়নের এক অংশ মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিক্রির সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে। ক্রেতারা হল নেদারল্যান্ড, ইসরাইল, আমেরিকা, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ বিভিন্ন দেশের ড্রাগস কোম্পানি। গত আট বছরে দনবাসের অনেক লোক হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে ইউক্রেনের অনেক ভিন্ন মতাবলম্বী মানুষ। এখন যুদ্ধের সময় এমনকি সদ্য মৃত বা আহত সৈন্যদের হৃৎপিণ্ড, কিডনি, লিভার, চোখ সহ অনেক অঙ্গ নাকি বিক্রি হচ্ছে। ঘটনা সত্য হলে দেখা যাবে যুদ্ধ দীর্ঘ দিন চলুক এটা শুধু অস্ত্র কোম্পানিগুলোই চায় না, ড্রাগস কোম্পানিও চায়। পশ্চিমা বিশ্ব বলে শেষ ইউক্রেনিয়ান পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবার কথা কিন্তু কেউ বলে না শেষ ব্রিটন, শেষ আমেরিকান, শেষ জার্মান পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। কেন? কারণ অন্যের মৃত্যুর

অপরাধ

Image
কালেক্টিভ পাপ - এটা ফ্যাসিবাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এর উপর ভিত্তি করেই নাৎসি জার্মানি ইহুদি, জিপসি, রুশ ও অন্যান্য অনেক জাতির মানুষ নির্বিচারে হত্যা করেছে। তুমি কোন দোষ করেছ কি-না সেটা বড় কথা নয়, তুমি ইহুদি এটাই তোমার অপরাধ। আজকাল বাংলাদেশেও এমনটা দেখা যায়। তুমি ধর্ম অবমাননা করেছ কি-না সেটা বড় কথা নয় তুমি হিন্দু এটাই তোমার দোষ। একই ভাবে আজ পশ্চিমা বিশ্ব রুশদের উপর এই কালেক্টিভ দোষ চাপায়, এদের খেলোয়াড়, শিল্পী থেকে শুরু করে সংস্কৃতি, সাহিত্য, কুকুর, বিড়াল পর্যন্ত ক্যান্সেল করার চেষ্টা করে। তুমি পুতিনের রাজনীতি সমর্থন কর কি-না সেটা প্রশ্ন হয়, তুমি রাশিয়ার নাগরিক এটাই তোমার অপরাধ। আর এটাই হচ্ছে বর্ণবাদ, ফ্যাসিবাদ। ইউক্রেন যুদ্ধে শরণার্থী ও রুশ প্রশ্নে ইউরোপীয়ানরা যে মনোভাব দেখিয়েছে সেটা নতুন করে তাদের বর্ণবাদী ও ফ্যাসিবাদী চরিত্র বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে।  দুবনা, ১০ আগস্ট ২০২২

হরিবোল

Image
  মজার ব্যাপার কি জানেন? বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষ ইউক্রেনের জনগণের কথা ভাবছে, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের কথা ভেবে জেলেনস্কিকে সমর্থন করছে, কিন্তু ইউক্রেনের নেতৃত্ব সেখানে বিরোধী দলীয় নেতাদের গ্রেফতার করে ও ভিন্ন মতের মানুষকে হত্যা করে গণতন্ত্রের গলা টিপে মারছে, ইতালির চেয়ে বড় এলাকা চাষ যোগ্য জমি বিদেশি কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেশের কৃষি ও কৃষকদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে, যে সমস্ত এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে সেখানে স্কুল, কলেজ, কলকারখানা, এমনকি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রমণ করছে। প্রশ্ন জাগে জেলেনস্কি ও তার অনুসারীরা কি ইউক্রেনের মানুষের জন্য কিছু করছে, নাকি বিদেশি সাহায্যে পাওয়া অস্ত্র কালোবাজারে বিক্রি করে (যে ব্যাপারে সিবিএস রিপোর্ট করেছে), জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলছে, স্কুল কলেজ ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অস্ত্র মোতায়েন করে সাধারণ মানুষের জীবন বিপদ সংকুল করছে (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট) আর পশ্চিমা প্রভুদের (জনগণ নয়) রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্য করছে? যে শ্রমিক কাপড় তৈরি করে তার পরনে কাপড় নেই, যে কৃষক ফসল ফলায় তার ঘরে খাবার থাকে না, যে দুধওয়া

নিয়ম

Image
মানুষ যতই বলুক সে স্বাধীন, সে আসলে পরাধীন। হ্যাঁ, পরাধীন নিজের তৈরি বিভিন্ন নিয়মের কাছে। শুধু মানুষ কেন, সবাই। জীব জগতেও যখন লড়াই শুরু হয় তখন এক পক্ষ হার মেনে নিলে যুদ্ধ থেমে যায়। মানুষের ক্ষেত্রেও তাই। ব্যতিক্রম, যখন একজন হয় অন্যের খাবার। তাই বাঘ আর হরিণের লড়াই (যদি সেটাকে লড়াই বলা চলে) হয় আমরণ। প্রাচীন রোমে এ রকম কিছু লড়াই চালু ছিল। এখন যুদ্ধ হয় এক পক্ষের পরাজয় পর্যন্ত। আর তাই যুদ্ধে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা হয়। আর সেটা করা হয় যুদ্ধে যেন সেনারা মানবিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে না ফেলে সেজন্যে। ব্যতিক্রম (বলছি বর্তমান সময়ের কথা) নাৎসি বাহিনী, ফলে তারা যুদ্ধবন্দী তো বটেই, সাধারণ মানুষকে পর্যন্ত হত্যা করত। জয় নয়, হত্যাই ছিল তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। ইউক্রেনে আমরা সেটাই দেখছি। ইউক্রেনের সেনারা যুদ্ধে হেরে যখন পালিয়ে যাচ্ছে তখন নতুন করে প্রকাশ পাচ্ছে তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্র। ইউক্রেন সেনারা বিভিন্ন জায়গা থেকে পালিয়ে গিয়ে নিরাপদ দূরত্ব থেকে সেসব জনপদ আক্রমণ করে ধ্বংস করছে সিভিল ইনফ্রাস্ট্রাকচার আর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে রাশিয়ার ঘাড়ে। অনেকেই সেটা বিশ্বাস করে। কেউ এই প্রশ্ন করে না রাশিয়া যদি নিজের

টানাটানি

Image
গতকাল দানিয়েৎস্কে নিহত স্থানীয় এক মহিলা কম্যান্ডার অল্গা কাচুরার, যাকে পরবর্তীতে রাশিয়ার বীর বলে ঘোষণা করা হয়েছে, শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ইউক্রেনের বোমা হামলায় অনেকেই নিহত ও আহত হয়েছে। যদিও ইউক্রেন বলছে যে রাশিয়া নিজেই নিজের উপর আক্রমণ করেছে - তবে সেটা যে পাগলের প্রলাপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সন্দেহ নেই যে আমেরিকা আর ইংল্যান্ড এ ব্যাপারে অবহিত ছিল। এর আগে অনেক বার ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা বিয়ে, শেষকৃত্য সহ বিভিন্ন বেসামরিক জমায়েতে আক্রমণ করেছে, তাই এ কাজ যে তাদের অনুভূতিতে আঘাত করে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের দেশে ধর্মীয় অনুভূতির মত পশ্চিমা বিশ্বে মানবিক অনুভুতিও একচোখা। ইতিমধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কিয়েভের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার অভিযোগ এনেছে স্কুল, কলেজ, বাসস্থানে ইত্যাদি এলেকায় ভারী অস্ত্র মোতায়েন করার জন্য। এতে কিয়েভের শাসকেরা ক্ষেপে গিয়ে অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। আসলে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলে শেষ পর্যন্ত নিজেদেরই যে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় সেটার প্রমাণ ইউরোপ এখন বার বার পাচ্ছে। আর এর ফলে ইউক্রেনকে ইউরোপে পরিণত করার পরিবর্তে ইউরোপ আর আমেরিকায়

কুইনর গেস্ট

Image
  কাকু (দ্বিজেন শর্মা) প্রায়ই কুইনের গেস্টদের গল্প করতেন (কাকু বলতেন কুইনর গেস্ট)। বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবী ইংল্যান্ডে বসবাস করেন। সাধারণত তাঁরা দেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। অনেকেই আবার সাহিত্য চর্চা করতেন। প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর তাঁদের ইমিগ্রেশন অফিসে দেখা করতে হত। তাঁরা যথারীতি সেখানে হাজিরা দিতেন আর ইমিগ্রেশন অফিসারের "চাকরি খুঁজছেন?" এই প্রশ্নের উত্তরে খুঁজছি বলে আগামী ছয় মাসের ভাতা নিশ্চিত করে বাসায় ফিরতেন। দুই পক্ষই খুশি। একপক্ষ ভাতা দিয়ে, অন্য পক্ষ ভাতা পেয়ে। এটা বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধি চর্চার পথ কিছু দিনের জন্য হলেও কন্টকমুক্ত করত। এখন ইংল্যান্ড সহ সারা বিশ্বে বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বে সব কিছুর দাম বাড়ছে সাধারণ মানুষের জীবন ছাড়া। শুনলাম ভাতার উপর নির্ভরশীল মানুষেরা নাকি সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাবে। এখন কী হবে এসব মহারানীর অতিথিদের? দুবনা, ০৪ আগস্ট ২০২২

জাহাজে বিদ্রোহ

Image
কয়েক দিন আগে দনবাসে জেল আক্রমণের কথা লিখেছিলাম যেখানে শতাধিক ইউক্রেন যুদ্ধবন্দী নিহত ও আহত হয়েছে। লিখেছিলাম যে আক্রমণ করেছিল ইউক্রেন। এদের ওই জেলে রাখা হয় ইউক্রেনের অনুরোধে। এই আক্রমণের কারণ এরা ইতিমধ্যে তাদের জবানবন্দীতে এমন কিছু তথ্য প্রকাশ করে যেখানে ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেকের যুদ্ধাপরাধ প্রমানিত হয়।  ইউক্রেন তখন সেটা অস্বীকার করে আর এই আক্রমণের দায় রাশিয়ার কাঁধে চাপাতে চায়। কিন্তু আক্রমনে যে হাইমারস ব্যবহার করা হয় তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের অবশেষ থেকে। পরে আমেরিকা আক্রমণের কথা স্বীকার করলেও বলে যে ইউক্রেন এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে করেনি।  এর ফলে দুটো প্রশ্ন তোলে এ দেশের বিশেষজ্ঞরা - ১) হাইমারস যতটা নিখুঁত ভাবে লক্ষ্য ভেদ করতে পারে বলে দাবি করা হয় বাস্তবে তা নয়।  এই অভিযোগ আমেরিকার পক্ষে গেলা কঠিন, কারণ তাতে তাদের অস্ত্রের সুনাম নষ্ট হয়।  ২) ইউক্রেনের সেনারা এই অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়। সেটা যদি হয় তাহলে এদের এই মারাত্মক অস্ত্র সরবরাহ করে আমেরিকা সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করছে।  এটা মেনে নিয়ে মেনে নিতে হয় যে রাশিয়া প্রায় প্রতিদিন দনবাসে হাইমারস ব্যবহার করে আবাস

নিষিদ্ধ নিষেধাজ্ঞা

Image
পুতিনের বন্ধু বান্ধবী সবার উপর একের পর এক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন এরপর কে? পুতিন, কমরেড সি, এরদোগান, মোদী, ওরবান এরা অনেকেই পরস্পরকে বন্ধু বলে সম্বোধন করেন। তারপর? কয়েক মাস আগেও মাক্রোন, জনসন, বাইডেন, শোলজ সহ সব নেতারাই পুতিনের বন্ধু ছিলেন, এভাবেই তারা একে অন্যকে সম্বোধন করতেন। এমনকি জুনিয়র বুশ, কিসিঞ্জার, আরও অনেকেই এই তালিকায় পড়েন। এরাও আসতে পারে হারামীর তালিকায়। বিশ্বাস হয় না? এতদিন পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার তেল গ্যাসের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, এখন জনগনকে পাঁচ মিনিটের বেশি স্নান না করতে, যখন তখন এসি ব্যবহার না করতে বলছে। এটা কি নিজ দেশের জনগণের উপর নিষেধাজ্ঞা নয়? তাই যদি হয় তাহলে পুতিনের এই ছদ্মবেশী বন্ধুদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে সমস্যা কোথায়? তাছাড়া শত্রুবেশী বন্ধুদের কথা ভুললেই বা চলবে কিভাবে? ন্যুল্যান্ডের বিস্কুট রাশিয়াকে ক্রিমিয়া উপহার দিয়েছে আর মার্কিন কংগ্রেস আর ইউরো পার্লামেন্ট প্রায় পুরো ইউক্রেন। তাই ওরা যদি প্রতিদিন একটা করেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বছর দশকের শো গ্যারান্টেড। দুবনা,০৩ আগস্ট ২০২২

পড়াশুনা

Image
কথায় বলে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। সারাদিন আমার মাথা থেকে যত রকমের কুবুদ্ধি বেরোয় তাতে মনে হয় আমি সত্যিই অলস, অন্তত আমার মাথা। কিন্তু মাথা যদি অলস হয় সারাদিন সে ভাবে কীভাবে? এসব ভাবতে ভাবতে যখন ভোলগার দিকে যাচ্ছি চোখ আটকে গেল আকাশের মেঘে। হ্যাঁ, মেঘেরা আকাশের গায়ে কি যেন লিখে রেখেছে। কি? সেটা পড়ার চেষ্টা করেই দেখলাম মেঘেদের ভাষা এখনও শেখা হয়নি। শিক্ষা। হ্যাঁ শিক্ষা অন্তহীন। রুশরা বলে শত বর্ষ বাঁচ, শত বর্ষ শেখ।    শিক্ষার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কিছু শব্দ হল পড়াশুনা, লেখাপড়া, পড়ালেখা ইত্যাদি। ছোটবেলায় আমাদের জিজ্ঞেন করত পড়াশুনা কোথায় করি। খেয়াল করলে দেখব পড়াশুনা - এটা পড়া আর শোনা। দুটোই গ্রহণ করা। আমরা শুনছি অন্যের কাছা থেকে। পড়ছি অন্যের লেখা। অর্থাৎ পড়াশুনা করা মানে অর্জন। এরপর আসে পড়ালেখা। পড়া যদি গ্রহণ হয় লেখা হল নিজের মনোভাব প্রকাশ করা। অর্থাৎ এখন আমরা পড়ে শুধু জ্ঞান অর্জন করি না, অর্জিত জ্ঞান নিজের ভাষায় প্রকাশ করি, নিজেও কিছু দেই। লেখাপড়া চলে উল্টো পথে। নিজের কথাটা বেশি বলি আবার অন্যেরটাও শুনি। দান ও গ্রহণ দুটোই চলে সমান তালে। এরপর কেউ হই পাঠক। অন্যের লেখা পড়ি, কিন্তু প্রায়ই পড়ি

ভগবান মারা গেছে

Image
 রাত দুপুরে হিন্দু পাড়ায় কে যেন চিৎকার করে উঠল ভগবান মারা গেছে। চারিদিকে কান্নার রোল শোনা গেল। কাঁদছে আর বিলাপ করে বলছে ভগবান মারা গেছে।  কথাটা গিয়ে পৌঁছেছে মুসলমান পাড়ায়। জড়ো হয়েছে কিছু লোক। জল্পনা চলছে এটা নাস্তিকতা কি-না। কেউ বলছে নাস্তিকতা, কেউ বলছে না। ভগবান বলে কেউ নেই। এটাকে যদি নাস্তিকতা বলে স্বীকার করা হয় তাহলে ভগবানের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়। আর এটা ইসলাম বিরোধী। কিন্তু এমন একটা সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে? এই উপলক্ষ্যে একটু ভাঙচুর, একটু মারধর, একটু লুটপাট। শেষ পর্যন্ত লোভের জয় হোল। ওরা নাস্তিক মার স্লোগান দিয়ে হিন্দু পাড়ায় হাজির। এসে দেখে সত্যি সত্যি একজন মারা গেছে আর ওর নাম ভগবান। এবার ওরা পুলিশের কাছে দাবি করল যেন আইন করে মানুষের নাম ঈশ্বর, ভগবান এসব রাখা বন্ধ করা হয়। মানুষের নাম ঈশ্বর বা ভগবান রাখা যেন ব্লাসফেমি বলে গণ্য করা হয়। বেচারা বিদ্যাসাগর। দুবনা, ০১ আগস্ট ২০২২