নিয়ম

মানুষ যতই বলুক সে স্বাধীন, সে আসলে পরাধীন। হ্যাঁ, পরাধীন নিজের তৈরি বিভিন্ন নিয়মের কাছে। শুধু মানুষ কেন, সবাই। জীব জগতেও যখন লড়াই শুরু হয় তখন এক পক্ষ হার মেনে নিলে যুদ্ধ থেমে যায়। মানুষের ক্ষেত্রেও তাই। ব্যতিক্রম, যখন একজন হয় অন্যের খাবার। তাই বাঘ আর হরিণের লড়াই (যদি সেটাকে লড়াই বলা চলে) হয় আমরণ। প্রাচীন রোমে এ রকম কিছু লড়াই চালু ছিল। এখন যুদ্ধ হয় এক পক্ষের পরাজয় পর্যন্ত। আর তাই যুদ্ধে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা হয়। আর সেটা করা হয় যুদ্ধে যেন সেনারা মানবিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে না ফেলে সেজন্যে। ব্যতিক্রম (বলছি বর্তমান সময়ের কথা) নাৎসি বাহিনী, ফলে তারা যুদ্ধবন্দী তো বটেই, সাধারণ মানুষকে পর্যন্ত হত্যা করত। জয় নয়, হত্যাই ছিল তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। ইউক্রেনে আমরা সেটাই দেখছি। ইউক্রেনের সেনারা যুদ্ধে হেরে যখন পালিয়ে যাচ্ছে তখন নতুন করে প্রকাশ পাচ্ছে তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্র।

ইউক্রেন সেনারা বিভিন্ন জায়গা থেকে পালিয়ে গিয়ে নিরাপদ দূরত্ব থেকে সেসব জনপদ আক্রমণ করে ধ্বংস করছে সিভিল ইনফ্রাস্ট্রাকচার আর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে রাশিয়ার ঘাড়ে। অনেকেই সেটা বিশ্বাস করে। কেউ এই প্রশ্ন করে না রাশিয়া যদি নিজের অধিকৃত এলাকার এবং রুশদের প্রতি সহানুভূতিশীল সাধারণ মানুষের উপর হামলা করবে তাহলে তারা কিয়েভ, লভভ এসব জায়গার সিভিল ইনফ্রাস্ট্রাকচারের উপর হামলা করে না কেন?
এমনকি আমন্যাস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যদিও এ জন্যে টাইম ম্যাগাজিন তাদের পুতিনের দালাল বলতে দ্বিধা করছে না। পশ্চিমা বিভিন্ন সংস্থার কারও কারও অন্যায়ের প্রতি চোখ বন্ধ করে রাখা, রাশিয়ার বিপক্ষে যেকোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া দিনের শেষে এসব সংস্থার সততা ও যোগ্যতা সম্পর্কেই শুধু প্রশ্ন তুলছে না, পশ্চিমা সভ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন করার সুযোগ করে দিচ্ছে।
দুবনা, ০৮ আগস্ট ২০২২




Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা