আমরা

দিনের শেষ আমরা সবাই পুঁজিবাদী। পুঁজিবাদী যেমন সব কিছুতেই লাভ খোঁজে আমরাও তাই। তাই আমাদের কাছে মানুষ মরে না, মরে রুশ অথবা ইউক্রেনিয়ান, মরে দাশা দুগিন, ২৯ বছর বয়সী কোন প্রাণবন্ত নারী নয়। আর যখনই এই ভাগাভাগির প্রশ্ন আসে তখন মানবতা, সহমর্মিতা, বাক স্বাধীনতা এ সবই তুচ্ছ হয়ে যায়। 

অনেক আগে একটা গল্প শুনেছিলাম বন্ধু ফিওদরের মুখে। শয়তান এক ছেলেকে বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখায় তার নিজের দলে আনার জন্য। ও কিছুতেই রাজী না। শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে একদিন ঐ ছেলের সামনেই ওর বান্ধবীকে হত্যা করে। ও ভেবেছিল এতে ক্রুদ্ধ হয়ে হয়তো ছেলেটি রেগে ওকে আঘাত করবে, মারতে চাইবে আর এভাবেই অন্যায় করে ও নিজেও শয়তান হবে। ঐ ছেলেটা নিজেকে সংযত রাখতে পেরেছিল আর পুরস্কার হিসেবে বান্ধবীকে ফিরে পেয়েছিল।

আমরা সাধারণ মানুষ। এসব পারি না। তাই মুখে যতই বড় বড় বুলি ছাড়ি না কেন বস্তুত নিজের লক্ষ্য অর্জনে নির্দ্বিধায় নিজেদের আদর্শ জলাঞ্জলি দিতে পারি। আসলে গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, মানবতা এসব অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ নয়, অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কিছু শ্লোগান যা দিয়ে আমরা অন্যদের বিভ্রান্ত করি। 

মস্কো, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২


Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা