Posts

Showing posts from January, 2018

বুড়ো মানুষের দাঁত

Image
আমি প্রায়ই চোখ বন্ধ করে হাঁটি। আগে রাস্তাটা ভালো করে দেখে নেই, লোকজন না থাকলে বা রাস্তা ফাঁকা থাকলে চোখ বন্ধ করে চলতে থাকি। দুবনায় লোকজন কম বিধায় কোন ঝামেলায় পড়তে হয় না। তবে সেভার সাথে ঘুরতে গেলে ও বিরক্ত বোধ করে। রাস্তায় হাঁটছি চোখ বন্ধ করে। হঠাৎ   চোখ খুলে মনে হলে যেন ভুমিকম্প হচ্ছে। হ্যাঁ, সামনে যে লোকটা আসছিলো। ওর গতিবিধি দেখে মনে হচ্ছিলো ভূমিকম্পে যেন দালানকোঠা নড়ছে। রাস্তার পাশে গাছের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, পৃথিবী নয়, ঐ ব্যাটাই টালমাটাল। -        প্রিভিয়েত (শুভেচ্ছা)! -        প্রিভিয়েত! -        তুমি না ডক্টর। আচ্ছা বলতো বুড়ো হলে মানুষের দাঁত পড়ে কেন? এই সেরেছে। কেমনে বোঝাবো আমি সেই ডক্টর নই। করার কিছু নেই। তাই বললাম -          এ তো খুব সোজা হিসাব। স্বর্গে বা নরকে সব খাবার তরল, দাঁতের দরকার হয় না। তাই মিতব্যায়ী যমরাজ আগে থেকেই এর একটা সুরাহা করে নেয়। -        ভালো। তা কি খাওয়ায় ঐ স্বর্গে আর নরকে। -        যতদূর জানি স্বর্গে অমৃত সুধা। এই যে তুমি ভোদকা ভোদকা কর, ভোদকা ওর কাছে কিছুই না। এতো সুস্বাদু মদ পৃথিবীতে হয় না।   সাথে বিভিন্ন ফলের রস। -        আর নরকে?

চিন্তা

Image
রাতে ভালো ঘুম হয়নি। এমনটি প্রায়ই হয়। তবে আজকের কারণ ছিল ভিন্ন। কয়েকদিন আগে শুভ ফোন করল - দাদা, আপনি যদি কসমোলজির উপর সহজ ভাষায় একটা বই লিখতেন খুব ভালো হতো। এদিক থেকে যে ধরণের সাহায্য দরকার আমি করবো। - শুভ বই লেখা তো খুব কঠিন কাজ। তাছাড়া আমি দেশে থাকি না, ঠিক কী ধরণের বই লিখলে সহজপাঠ্য হবে সেটাও জানি না। সময় একটা ফ্যাক্টর। - দাদা, আপনি একটু ভেবে দেখেন। - ঠিক আছে। একটু সময় দাও। তোমাদের ওখানে গত বছর এর উপর আমি একটা টক দিয়েছিলাম। আরও কিছু লেখা পাঠাচ্ছি। তুমি এসব পড়ে ভেবে দেখ। আমিও ভাবি। গতরাতে আবার নক করল শুভ । বলল   -         আপনি শুরু করেন, ইংরেজি বা রাশানে লেখেন, আমি অনুবাদ করবো। কী করা। ভাবলাম, যদি লিখতে হয় বাংলায়ই লিখি। প্রত্যেকের লেখার নিজস্ব স্টাইল আছে। তাই দেরি না করে শুরু করলাম। এর সুবিধা একটাই। বই লেখা না হলেও এ উপলক্ষ্যে কিছু নতুন বই পড়া হবে, কিছু নতুন জ্ঞান লাভ হবে। আর যদি শুভ বইটা বের করে তো পোয়া বার। যাকে বলে উইন উইন সিচুয়েশন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে দেখা হয়, কথা হয়। স্বাভাবিকভাবেই অনেকে জিজ্ঞেস করে আমার কাজকর্মের কথা। অনেক সময় আমাদের ক

মৃত্যুর রং

Image
মৃত্যু ব্যাপারটাই রহস্যজনক। কারণ একটাই, আমরা জানি না মৃত্যুর পর কি? তাই এ নিয়ে নানা মত, নানা পথ আর সেই সাথে ভয়। তবে এটা ঠিক মৃত্যু পার্থিব জীবনের শেষ, যার পরে থেকে যায় শুধু স্মৃতি, কিছু দীর্ঘশ্বাস আর “যদি ও বেঁচে থাকতো তবে...” এ রকম অনেক ধরণের উক্তি। কোন মৃত্যুতে আমরা কষ্ট পাই, কোন মৃত্যুতে হই খুশি। আর সেটা নির্ভর করে যে মারা গেলো তার সামাজিক অবস্থান আর প্রতি আমাদের মনভাবের উপরে।   মৃত্যু অনেকটা ডার্ক এনার্জির মত। ডার্ক এনার্জি আমাদের পরিচিত কোন কিছুর সাথে সরাসরি ইন্টারঅ্যাক্ট করে না, তাই তা সম্পর্কে আমরা যাই জানি সেটা তত্ত্বীয়, বিভিন্নভাবে ভাবে তার প্যাসিভ উপস্থিতি থেকে আমরা অস্তিত্ব প্রমান করি কারণ আমরা জানি এই ঘটনা ঘটার জন্য এই উপাদান দরকার। কিন্তু সেটা আমরা দেখছি না, তবে ঘটনাই প্রমান করে তার উপস্থিতি। এটা অনেকটা অদৃশ্য শক্তির কালো হাতের মত। সেভাবে বলতে গেলে অনেক মানুষ যারা বহু আগে গত হয়েছেন তারাও আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করেন, প্রভাবিত করেন আমাদের জীবন। সেটা হবে পারে ধর্মীয় নেতা, দার্শনিক, লেখক, কবি বা অন্য কেউ। তবে আজকের কথা সে বিষয়ে নয়। ছোট বেলায় আমার ঠাকুরমা মারা য

বাসা বদল

Image
বাসা বদল বর্তমান জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষ বাসা বদলায় বিভিন্ন কারণে, কেউ চাকরি নিয়ে অন্য কোথাও চলে যায়, কেউ বা  অর্থনৈতিক কারণে বাসা বদলায়, কেউ ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার সুযোগ সুবিধা মাথায় রেখে এটা করে। এক কথায় মানুষ যখন গ্রাম কেন্দ্রীক ছিল তখন পৈতৃক ভিটে শব্দটার যতটা আবেদন ছিল, শহুরে মানুষের বাড়ি ঘরের প্রতি সে আবেগ নেই। সে হিসেবী মানুষ। বাড়ি যতটা না ঐতিহ্য তার চেয়ে বেশী জীবন যুদ্ধে সাপ্লাই প্লেস যা নাকি শুধু মাথা গোঁজার ঠাই দেয় না, জীবনে উন্নতির জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। তাই জীবনের উন্নতি অবনতির সাথে তাল মিলিয়ে শহুরে মানুষ অনায়াসে বাড়ি বদলায়। তবে এটা ঠিক, বাড়ি বদলানো সব সময় ঝক্কিঝামেলার কাজ। রুশীরা বলে, দু বার বাড়ি বদলানো আর একবার বাড়িতে আগুন লেগে সর্বস্বান্ত হওয়া অনেকটা একই রকম। আমার জীবনে বাসা বদল হয়েছে অনেকবার। তবে তখন জিনিষপত্র বলতে কিছু জামাকাপড়, অনেক বই, ক্যামেরা আর টুকিটাকি বাসনকোসন। তাই ঝামেলা হলেও সেটা ছিল ছোট্ট ঝামেলা। তাছাড়া সেটা ছিল ছোট থেকে বড় হওয়ার পথ, ছাত্র থেকে চাকুরীজীবী হওয়ার সোপান। তাই সে পরিবর্তনগুলো ছিল অভিপ্রেত। দুবনায় আসার পর যে দু’একবার বাসা পরিবর্তন