ভাব সম্প্রসারণ
গতকাল একটা পোস্টে
লিখেছিলাম 
“শান্তিই অশান্তির কারণ।“
এ নিয়ে দু একটা মন্তব্য
ছিল এরকম –
১) কঠিন; ২) খুব কঠিন
করে ফেললে হে 
সত্যিই কী কঠিন? দেখা
যাক। 
শান্তির বিভিন্ন সংজ্ঞা
দেয়া যায়। সাধারণ অর্থে শান্তি বলতে যুদ্ধের বিপরীতটাকে বোঝায়। রাশানে এ নিয়ে একটা
কথা আছে – Хочешь мира - готовься к войне. যাকে ল্যাটিনে বলে Si vis pacem,
para bellum. বাংলায় “শান্তি চাও – যুদ্ধের জন্য তৈরি হউ।“
এটা
অবশ্য গেল রাজা মহারাজাদের ব্যাপার। আমরা যারা সাধারণ মানুষ, যারা জীবনে শান্তি
চাই – কী বুঝি শান্তি বলতে? এখানেও মানুষভেদে বিভিন্ন সংজ্ঞা আসতে পারে। তবে আমি
যেটা বুঝি, তা হল নিজের মত করে থাকার স্বাধীনতা (অবশ্যই এ জন্যে অন্যের স্বাধীনতা
খর্ব না করা)। তবে যেখানে হিলিয়াম, আর্গন ইত্যাদি কিছু নিষ্ক্রিয় মানুষ গ্যাস জগতে
স্বাধীন থাকতে পারলেও মানব সভ্যতার পাল্লায় পড়ে দিন শেষে পরাধীন হয়ে যায়, মানুষ
সেখানে কোন ছার? স্কুলে যে ছেলেটা ঠিকমত পড়াশুনা করে, কারো সাতেপাঁচে নেই তার
পেছনেই সবাই লাগে বেশী করে। সমাজেও তাই। যে লোক কারো কোন ক্ষতি না করে নিজের মত
করে থাকতে চায় তারই যত সমস্যা। অন্যের সুখ দেখলে আমাদের ভুতে কিলায়। তখন দেখা যায়
ঐ লোকের শান্তি আশেপাশের হাজারো লোকের অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন দেশের
ক্ষেত্রেও তাই। শান্তি শব্দটাই যেন নিজের ভেতরে অশান্তি বহন করে। চেষ্টা করুক কোন
দেশ নিজেদের মত থাকতে, নিজেদের ক্ষমতায় চলতে, নিজেদের মত করে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহন
করতে? দেখবেন চারিদিক থেকে মোড়লরা সব ঝাপিয়ে পড়েছে অশান্তির ঝুলি নিয়ে। চেষ্টা করে
দেখুন বাসায় শান্তিতে একটু ঘুমুতে। দেখবেন প্রিয়জনেরা কিভাবে আপনাকে টেনে তুলে 
-   আরে, এখন ঘুমাচ্ছ কেন? দেখনা
চারিদিকে কত কিছু ঘটে যাচ্ছে। ব্লা ব্লা ব্লা 
আসলে
শান্তি হলো মৃত্যুর মত – যখন মিনিমাম শক্তি ব্যয় করে ম্যাক্সিমাম স্থিতিশীল
অবস্থায় থাকা যায়। জীবন মানেই গতি, মানে এই স্থিতি শক্তিকে গতি শক্তিতে পরিণত করা,
শান্ত জীবনকে (মরণকে) অশান্তি দিয়ে ভরিয়ে তোলা। 
ইদানীং
কালে নোবেল কমিটিও অবশ্য এটাকে প্রমানিত করেছে, করছে। গরবাচভের শান্তি পুরষ্কার কত
লোকের যে চোখের ঘুম কেঁড়ে নিয়েছে তার খবর কে রাখে? শান্তির দুত ওবামা যুদ্ধ দেবতার
রূপ নিয়ে কত প্রান কেঁড়ে নিয়েছে তার কি হিসেব আছে? সুচিও তো পিছিয়ে নেই।   
ধর্মের
কথা নাই বা বললাম। অসময়ে বেজায়গায় “ওম শান্তি” বলার চেষ্টা করুন, দেখবেন কোত্থেকে
শান্তির দুত এসে কিরীচ দিয়ে আপনার ধড় থেকে মাথা আলাদা করে আপনাকে চির শান্তিতে ঘুম
পাড়িয়ে দিয়েছে। তাই তো বলছিলাম “শান্তিই অশান্তির মুল”।                 
এর
সাথে আপনাকে একমত যে হতেই হবে তার কোন মানে নেই। তাতে যদি আপনার মনের শান্তি বজায়
থাকে তবে তাই হোক। 
দুবনা,
১১ জানুয়ারী ২০১৮

Comments
Post a Comment