বেবি ক্রিম
গতকাল সকালে সেভা ফোন করলো।
-
পাপা, তুমি আসার সময় একটা বেবী ক্রিম নিয়ে এসো তো?
-
ঠিক আছে। মনিকা আছে? দে ওকে।
-
এই নাও।
-
মিউ, তুই কি খাবি দুপুরে?
-
আলু।
-
কি দিয়ে? মাংস আনব না মুরগী?
-
মাংসই এনো।
আমি গুলিয়াকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে গেলাম দোকানে। প্রথমে সেভার
ক্রিম কিনতে ওষুধের দোকানে। প্রথম দোকানে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, দেখা পাশের বাসার
ভদ্রমহিলার সাথে। এ বছর এই প্রথম।
-
শুভ নববর্ষ!
-
শুভ নববর্ষ!
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে যখন ক্রিম চাইলাম, বিক্রেতা বললেন
-
বাচ্চাদের ক্রিম নেই। তবে এটা নিতে পারেন।
এই বলে উনি জনসন্স অ্যান্ড বেবী ক্রিম ধরিয়ে দিলেন।
বুঝলাম এটা নিলে সেভা মাইন্ড করবে। তাই চললাম পরের দোকানে। ওখানে লাইনে না
দাঁড়িয়েই জিজ্ঞেস করলাম ক্রিমের কথা।
-
নেই।
এবার পরের দোকান।
-
আছে।
সামনে দু জন লোক ছিল। এবার আমার পালা।
-
২১ রুবল।
-
দুটো দিন।
বলে একশ’ রুবলের নোট বের করে দিলাম।
-
ঠিক আছে তিনটে দিন। ঘরে থাকুক।
এরপর অন্য দুটো দোকান থেকে মাংস, দুধ, ছানা (পরের দুটো চোখের
দেখায় কেনা, প্ল্যান মাফিক নয়), আলু, রুটি এসব নিয়ে বাসায় ফিরলাম। মনিকা একটা
ক্রিম নিলো, সেভাকে আরেকটা দিলাম। তৃতীয়টা ড্রয়ারে রাখলাম। এসব দুপুরবেলার কথা।
মনিকা এর মধ্যে চলে গেলো বান্ধবীর বাসায়।
সন্ধ্যে সাতটার দিকে খেতে ডাকলাম সেভাকে। দুপুরে এটাসেটা
খেয়েই সময় চলে গেছে। ছুটির এই বিড়ম্বনা। দিনরাত সব ওলটপালট হয়ে যায়। তাকিয়ে দেখি
সেভার চিবুকের ওখানে কী যেন একটা লেগে আছে।
-
তোর মুখে কি?
-
ক্রিম?
-
কি হোল তোর?
ভাবলাম এটা নতুন ফ্যাশন, মুখে পুরু করে ক্রিম মাখানো।
-
শেভ করতে গিয়ে একটু ঘা মত হয়েছে।
ভালো করে তাকিয়ে দেখি ওর গোঁফ নেই, ক্লিন শেভ করা। যাঃ।
মনে পড়লো নিজের ছোটবেলার কথা। যতদূর মনে পড়ে স্কুল লাইফে
শেভ করিনি, করলেও সেলুনে গিয়ে শুধু দাঁড়ি কাটাতাম। গোঁফ কাটি মস্কো এসে, তাও বছর
দুয়েক পরে বড় ভাইদের দেখাদেখি। এখানে কেউ গোঁফ খুব একটা রাখত না। বাড়িতে অবশ্য কেউ
গোঁফ কাটতো না, মানে ক্লিন শেভ হতো না। সে জন্যেই হয়তো মনে হয়নি। এখানে আমি, আন্তন
কেউ গোঁফ রাখি না। সেভা হয়তো তাই ধরেই নিয়েছে ওটা কাটাই দরকার।
-
তোর রেজার আছে?
-
দুটো।
-
শেভিং ক্রিম?
-
সেটা কি? জানি না তো।
-
ঠিক আছে কিনে দেবো আর দেখাবো কেমনে ইউজ করতে হয়।
-
দিও।
সেভাটাও বড় হয়ে গেলো।
দুবনা, ০৯ জানুয়ারী ২০১৮
Comments
Post a Comment