Posts

Showing posts from November, 2019

জনতার ঐক্য

Image
কয়েক দিন আগে ফেসবুকে দেখলাম অনেকেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ভাষণ শেয়ার করছে। সময়াভাবে তখন সেটা পড়া বা দেখা হয়নি, পরে আর পাইনি। তবে সেটার মূল কথা হল দেশে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে একতা আছে, ব্যবসায়ীদের মধ্যে একতা আছে, শুধু জনগণের মধ্যে কোন একতা নেই। আমাদের রাষ্ট্রপতি মাঝে মাঝেই এমন অপ্রিয় সত্য কথা বলে ফেলেন। কিন্তু এটা শুধু নতুন প্রশ্নেরই জন্ম দেয়। আমার জানতে ইচ্ছে করে কেন আজ জনতা ঐক্যবদ্ধ নয় অথবা আমাদের দেশে আদৌ কি জনগণ আছে? জনতা, জনগণ খুবই বিমূর্ত আইডিয়া, রাস্তায় বা প্রতিবাদ মিছিলে যে জনতা বাড়িতে ফিরে সেই শিক্ষক, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কৃষক, পিতা বা সন্তান। তাই যদি হয় তাহলে কি এমন ঘটলো যে এই শ্রমিক বা কৃষক বা ব্যবসায়ী জনগণের অংশ হয়েও জনগণের সাথে রইলো না, হঠাৎ করে তারা কিভাবে জনতার বিরুদ্ধে চলে গেল? আসলে জনগণের ঐক্য কি সব সময়ই দেখা যায়? এই যারা কিছুক্ষন আগেই একসাথে মিছিল করল কোন এক ইস্যুতে, বাড়িতে ফিরে দেখা গেল তারাই অন্য ইস্যুতে একে অন্যের মাথা ভাংতে পিছ পা হচ্ছে না। আসলে একক মানুষগুলো সমষ্টি হয়ে ওঠে, জনতা হয়ে ওঠে কোন বিশেষ মুহূর্তে। দেশ, গোষ্ঠী বা জাতির কোন বৃহত্তর স্বার্থ আদায় কর

আন্দোলন

Image
মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না, আমিও নিই না। এটাই প্রমান করে যে আমিও মানুষ। যদি কাঁধে ব্যাগ নিলে পিঠ ব্যথা করে, সবার মত আমিও জানি সেটা মিনিমাম তিনটে কারণে হতে পারেঃ ১) ব্যাগটা ভারী; ২) পিঠ দুর্বল; ৩) পিঠও দুর্বল, ব্যাগও ভারী। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ তখন পিঠটাকে সবল করার জন্যে উঠেপড়ে লাগে। আমার মত অলস মানুষ ভাবে ব্যাগ বদলালেই সব ঠিক হয়ে যাবে। তাই জীবনে এই প্রথম এত দাম দিয়ে একটা ব্যাগ কিনলাম, যেটা শুধু কাঁধেই ঝুলে থাকবে না, কোমর আর বুক জড়িয়ে থাকবে।  মানে অজগরের মত আমাকে প্রায় পেচিয়ে ঘাড়ে চড়ে ঘুরে বেড়াবে। মস্কো যাওয়ার জন্য আগের ব্যাগ থেকে জিনিসপত্র যখন নতুন ঘরে ওঠালাম, দেখি তার সিংহ ভাগই শুধু ওষুধ। সেদিন ক্লিনিকে গিয়ে দেখলাম আমার রোগের ইতিহাস খাতাটা এরই মধ্যে আমার চেয়েও মোটাসোটা হয়ে গেছে। যতদূর সম্ভব খালি করে ব্যাগটা কাঁধে নিতেই পিঠটা ঘোঁত ঘোঁত করতে শুরু করল।  বলল "বোঝা কমাও। বুঝেছ, বোঝা কমাও। তুমি আজকাল আমাকে একদম বুঝতে পারনা।" আমি বললাম, "ব্যাগ খালি। ওখানে শুধুই বাতাস। বুঝলে - ভারী বাতাস। এ যুগে বাতাসও এত ভারী যে খালি ব্যাগও তোমার ভারী মনে হয়।" ভাবছি হালকা,

মানুষ

Image
অনেক দিন আগে, যখন ভিডিও ক্যাসেটের যুগ রমরমা এক বন্ধু আমাকে একটা ভিডিও দিয়েছিলেন দেখার জন্য। ওখানে ছিল রাশান চার্চের এক ফাদারের সাক্ষাৎকার। ফাদার আলেক্সান্দর, তিনি ব্রিটেনে এক রাশান চার্চের প্রধান। উনি বলছিলেন বিপ্লব পরবর্তী রাশিয়ায় চার্চের কথা। এক জায়গায় বললেন বলশেভিকদের হাতে কিভাবে ঈশ্বর ঘরছাড়া, গৃহহারা হলেন। আজ অযোধ্যার রাম মন্দির - বাবরী মসজিদের রায় বেরুলো। মার একটি প্রিয় গান ছিল রঘুপতি রাঘব রাজা রাম পতিত পাবন সীতা রাম ঈশ্বর আল্লাহ তেরে নাম সব কে সুমতি দে ভগবান এই গানের উপর সেতার, সারোদ, সানাই ইত্যাদি অনেক শুনেছি, তবে কথা কখনও পড়িনি। মায়ের গাওয়া (আমাদের ছোটবেলায় সাথে সাথে আমরাও গাইতাম প্রায় প্রতি সন্ধ্যায়) কথাগুলো যেভাবে মনে আছে সেভাবেই লিখলাম। ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। তবে সেটা আসল কথা নয়। আসল হল রাম, ঈশ্বর, আল্লাহ সবাই এক। এ নিয়ে ছোটবেলায় আমাদের কখনও কোন প্রশ্ন ছিল না। সেই সময় স্কুলে ধর্ম বলে এক বিষয় ছিল আমাদের। সেখানে ঈশ্বর সম্পর্কে বলা হত তিনি সর্বশক্তিমান (omnipotent), সর্বভূতে বিরাজমান (omnipresent)। তাঁর নামও অনেক। শ্রী

অক্টোবর বিপ্লব

Image
আজ মহান অক্টোবর বিপ্লবের ১০২ তম বার্ষিকী। অনেকটা অগোচরেই চলে গেল দিনটা, যদিও ইদানীং কালে আবার আজকের দিনে রেড স্কয়ারে অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যায়। আমাদের ছাত্র জীবনে মিলিটারি প্যারেড হত না, তবে বিশাল জনসমাবেশ হত। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মিছিল করে মানুষ চলে যেত রেড স্কয়ারের বুকে হেঁটে হেঁটে। আমি নিজেও বেশ কয়েক বার গেছি এসব ডেমনস্ট্রেশনে ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে। জুবভস্কি বুলভারে শুরু হত, সেখান থেকে পায়ে হেঁটে রেড স্কয়ার পর্যন্ত। চেরনেঙ্কো, গরবাচেভ হাত নাড়িয়ে আমাদের স্বাগত জানাতেন। এখন অবশ্য অক্টোবর বিপ্লব দিবস উপলক্ষ্যে প্যারেড হয় না, প্যারেড হয় ১৯৪১ সালের ৭ নভেম্বরের প্যারেডকে স্মরণ করে। এখান থেকেই শুরু হয়েছিল হিটলারের নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে রেড আর্মির জয়যাত্রা। “পিছানোর জায়গা নেই, পেছনে মস্কো” এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে রেড আর্মি বেরিয়ে পড়েছিল বিজয় মার্চে যার শেষ ১৯৪৫ সালের মে মাসে বার্লিনে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর কমিউনিস্ট আন্দোলনে স্থবিরতা এসেছে। এই পতনকে সমাজতন্ত্রের পরাজয় বলে ধারণা করা হয়। নিঃসন্দেহে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক ভুল ত্রুটি ছিল, তবে সেটা কি তত্ত্বের নাকি প্রয়োগের সেই

একজন মুক্তিযোদ্ধা

Image
সাদেক হোসেন খোকা নিউ ইয়র্কে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছেন । ওনাকে আমি জানতাম ঢাকার মেয়র এবং বিএনপি নেতা হিসেবে । হয়তো এ কারণেই ওনার অন্য পরিচয় এতদিন চাপা পড়ে ছিল । রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যতদিন বেঁচে থাকেন , তারা কারও পথের দিশারী , কারও প্রতিদ্বন্দ্বী , তাই তাদের সম্পর্কে জীবদ্দশায় নিরপেক্ষ কথাবার্তা তেমন শোনা যায় না । মৃত্যুর পরে অবশ্য অন্য কথা । তখন সবাই পরিমিতভাবে ভালোটা বলারই চেষ্টা করেন , বলেন । সেই সুত্র ধরে নতুন অনেক কিছু জানলাম সাদেক হোসেন খোকা সম্পর্কে । যেমন তিনি পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ - সভাপতি ছিলেন , দুর্ধর্ষ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, ছিলেন সত্তরের দশকের আবাহনী-মোহামেডানের বাইরের তৃতীয় শক্তি ব্রাদার্স ইউনিয়নের সংগঠক ইত্যাদি ইত্যাদি । তবে পরে বিএনপিতে যোগদান করায় তার এসব পরিচয় আড়ালে চলে যায় , উনি হয়ে ওঠেন শুধুই বিএনপি নেতা । অনেকেই তাঁর এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারেননি । ফলে তাঁর একাত্তর বা একাত্তর পূর্ববর্তী পরিচয় ঢাকা পড়ে গেছে । অন্তত আমার এসব জানা ছিল না , সেটা অবশ্য আমার দুর্বলতা , আমার অজ্ঞতা । আমার বরাবরই মনে হয়েছে স্বাধীনতা , মু