Posts

Showing posts from July, 2018

ছেলেধরা

Image
ইদানীং কালে পত্রপত্রিকা, সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে বিদেশে বাংলাদেশের কর্মজীবী মানুষদের দুর্দশার কথা শোনা যায়। আর এসব পড়ে আমার মনে পড়ে ছোটবেলার বিভিন্ন গল্প।   আমাদের ছোটবেলায় চারিদিক ছিল বিপদসংকুল । রাতের বেলায় বাঁশ ঝাড় আর তেতুল গাছে নাচত ভুত-পেত্নীরা । বর্ষায় খালবিল গিজগিজ করত চুলপেচানীতে । আর পাড়ার বাইরে যেসব রাস্তাঘাট ছিল সেখানে আড়ি পেতে থাকতো ছেলেধরা । শহরে চার দেয়ালের মাঝে বা ছোট পরিসরে বড় হওয়া বাচ্চাদের হয়তো এত ভৌতিক পরিবেশ দেখতে হয়নি , তবে আদিগন্ত বিস্তৃত মাঠেঘাটে বড় হওয়া গ্রামের ছেলেমেয়েদের ইচ্ছে করেই এটুকু ভয়ভীতি ধরিয়ে দেওয়া হত যাতে তারা সবার অগোচরে বাড়ি থেকে দূরে কোথাও চলে না যায় । শুনেছি ছেলে ধরারা নাকি ছোট বাচ্চাদের ধরে শহরে তাদের দিয়ে ভিক্ষে করাতো বা তাদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে দিত । বড় হয়ে অবশ্য এসব বিশ্বাস করা বাদ দিয়েছিলাম । বুঝতাম চুলপেচানী অক্টোপাসের গ্রামীন সংস্করণ । ভুতেরাও পালিয়েছিল শিক্ষার আলোয় । ছেলেধরাও মনে হত নিছকই বাচ্চাদের ভয় দেখানোর গল্প । পরে বুঝলাম আক্ষরিক অর্থে না হলেও ব্যাপারটা ফেলে দেওয়ার মত নয় । কসোবাসহ বিভিন্ন যুদ

পিকনিক

Image
গত ১৪ জুলাই প্রায় আট মাস পরে আমরা সবাই একত্র হলাম ।   হ্যাঁ, বাড়ির সবাই । ফ্যামিলি গেট টুগেদার আর কি? ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে গেলে এই এক ঝামেলা । সবাইকে কিছুতেই একসাথে পাওয়া যায় না । ডিসেম্বরে নতুন বাসায় ওঠার পর কয়েকবার চেষ্টা করেও সবাইকে জড় করা যায়নি । এবার আর উপায় ছিল না । কিছু অফিসিয়াল কাজ ছিল যেখানে সবার উপস্থিতি দরকার । তাই বললাম, কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও চলে এস । শনিবার সকালে চার ভাইবোন ট্রেনে উঠে ছবি পোস্ট করলে নিশ্চিত হলাম যে ওরা আসছে। এদিক থেকে গুলিয়া সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে চলে গেল। আমি রইলাম বাসায়। কাজ শেষে ক্রিস্টিনা ফোন করে জানতে চাইল নেক্সট গাড়ি কয়টায়। বললাম -        চল্লিশ মিনিট পরে। তাহলে আর বাসার আসার দরকার নেই। ওখান থেকেই চলে যা। -        না, আমি বাসায় আসছি। তুমি খাবার রেডি কর। -        ঠিক আছে। আমরা এরপরে সাস্লিকে (বারবিকিউ) যাব, সব রেডি। যদি পারিস থেকে যা। -        না আমার কাজ আছে। আজই ফিরতে হবে। -        দেখ যেটা ভালো মনে করিস। এর মধ্য আমি দোকান থেকে রেডিমেড কিছু খাবার নিয়ে এলাম আর সাস্লিকের সরঞ্জাম। সেভাকে বললাম আমাকে মিট করতে। বাসায় ফিরে দেখি ওরা চল

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার

Image
বিজ্ঞানের কল্যাণে আজকাল প্রায়ই বাড়িতে কথা বলা হয়। আশির দশকের প্রথম দিকে যখন দেশ ছাড়ি তখন চিঠিই ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। টেলিফোন তখন ঢাকাতেই সবার ছিল না, গ্রামে তো দূরের কথা। এখন সময় বদলে গেছে। দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন মেসেঞ্জারের প্রবেশের ফলে দূরদূরান্তের বাড়িঘর, আত্মীয়স্বজন নাগালের মধ্যে চলে এসেছে। চাইলেই রিং করে বলা যায় “দিদি, কেমন আছিস?” পৃথিবীটা সত্যিকার অর্থেই ছোট হয়ে এসেছে। দিদি কিছুদিন আগেও স্কুলে শিক্ষকতা করত, তাই সাধারণত শুক্রবার ওকে ফোন করতাম। ওই অভ্যেস এখনও রয়ে গেছে। তাই গত শুক্রবার ফোন করে জানতে চাইলাম -        বাড়িতে নতুন মুখ এল? -        নারে ভাই। ডেট পিছিয়ে নিয়েছে। আজ সূর্যগ্রহণ কি না! -        তার উপর ১৩ তারিখ, শুক্রবার। - হেসে বললাম আমি। আমার জন্ম ১৯৬৪ সালে। আমাদের একান্নবর্তী পরিবারে ১২ ভাই আর পাঁচ বোনের মধ্যে আমি সবার ছোট। এভাবেই কাটে এগারো বছর। ১৯৭৫ সালে সুধীরদার মেয়ে ভ্রমরের জন্মের পর আমি একটু হলেও বড় হওয়ার সুযোগ পাই। যদিও ভ্রমরের আগে বাপি আর মিঠুর জন্ম, তবে ওসব হয়েছে ইন্ডিয়ায়। দেশ বিভাগের এই এক ফল। আমরা কখনই সব ভাইবোন এক সাথে হতে প

গণতন্ত্র

Image
কয়েক দিন আগে রবীন আক্ষেপ করে লিখেছিল “ ৯০এর গনঅভ্যুথানের সময়টা রাজনীতির ময়দানে বেশ সক্রিয় ছিলাম। রাস্তায় দাড়িয়ে একগাদা পুলিশ, বিডিআর এর সামনেই গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলতাম, স্বৈরাচারী এরশাদ! সেই সময়টা এখন নস্টালজিয়ার মতো মনে হয়, আহা! স্বৈরাচারকে স্বৈরাচার বলার মত গনতন্ত্রটুকু তো ছিল! ” অনেকদিন দেশের বাইরে, ঠিক কি ঘটছে সেটা জানি পত্রপত্রিকা থেকে আর ফেসবুকে। তবে এটা ঠিক, সামরিক জান্তার সময়েও আমরা মিটিং মিছিল করেছি। বাধানিষেধ যেমন ছিল, আইন অমান্য করার সুযোগও তেমনই ছিল। এক দিকে মিটিং বা মিছিলে গুলি চলেছে, ট্রাক উঠেছে, অন্য দিকে এসব বাধাবিপত্তিকে অগ্রাহ্য করে সংগ্রামী ছাত্র জনতা আন্দোলন করেছে, স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। তাই আজ যখন বিভিন্ন আন্দোলনের উপর বাধা আসে, স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব নিয়ে, গণতন্ত্রের রূপ নিয়ে।     ইতিহাস থেকে যেটুকু জানা যায়, বাঙ্গালি বীরের জাতি। যদিও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানই এই জাতিকে সর্বপ্রথম একটা স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন, কী প্রাক ইসলামিক যুগে, কী সুলতানী আমলে বাঙ্গালি বারবার বিদ্রোহ করেছে। ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাস তো বাঙ্গালির বিদ্রোহ