স্বাভাবিক জন্মের অধিকার


আমি আমার জন্ম দেখিনি, তবে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি সেটা হয়েছিল আঁতুড় ঘরে বা কুড়ে ঘরে। সে সময় গ্রাম এলাকায় সবাই এভাবেই জন্মাত। পাড়াপড়শিদের ছেলেমেয়েরাও এভাবেই হত। সিজারিয়ান পদ্ধতি ব্যবহৃত হত কালেভদ্রে, স্বাভাবিক জন্মের ক্ষেত্রে কোন জটিলতা দেখা দিলে। এরপর আমি চলে আসি রাশিয়ায়। এখানেই বিয়ে, এখানেই থেকে যাওয়া। নিজের ছেলেমেয়েদের জন্ম এ দেশেই। স্বাভাবিক ভাবে। আমরা যেটাকে উন্নত বিশ্ব বলে জানি ও মানি, সেসব জায়গাতেও শিশুরা স্বাভাবিক ভাবেই জন্মায়। বলতে পারেন এটা মা ও শিশুর অধিকার। ইদানিংকালে দেশে আমাদের পরের জেনারেশনের অনেকেই বিয়েথা করেছে, তাদের ছেলেমেয়ে হচ্ছে। তখনই আমি জানলাম ওদের ছেয়েমেয়ে হচ্ছে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে। আমি তো অবাক। ভাব্লাম শারীরিক সমস্যা। জিজ্ঞেস করায় বলল, শরীর ঠিক আছে, তবে ডাক্তাররা সে পরামর্শই দেয়। বললাম, দরকারে ডাক্তারদের ফি দিয়ে দে, জন্মটা স্বাভাবিকভাবেই হতে দে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এখন দেখছি এটা আমাদের দেশে ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। জন্ম মানেই সিজারিয়ান। জানি না এই ঢালাও ভাবে সিজারিয়ান পদ্ধতি ব্যবহার করায় শিশুদের কোন মানসিক বৈকল্য তৈরি হচ্ছে কি না? ফেসবুকে এ নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। এ নিয়ে দেশে বিদেশে নিশ্চয়ই কাজকর্ম হয়েছে। সেসব মাথায় রেখে সরকার ও চিকিৎসকরা এ ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন সাধারণ মানুষ সেটাই আশা করতে পারে। একমাত্র আশাই তাদের সম্বল, এর বাইরে আর কিই বা করার আছে তাদের!
              
দুবনা, ১০ জুলাই ২০১৮                        



Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি