Posts

Showing posts from September, 2022

অ মানুষ

Image
দানিয়েৎস্ক, লুগানস্ক, হেরসন ও জাপারঝিয়ার মানুষ তাদের আদি ভূমি রুশ দেশে ফিরে এলো, এলো লড়াই করে, এলো ভোটের মাধ্যমে নিজেদের মতামত প্রকাশ করে। অনেকেই বলবে এই ভোট নিরপেক্ষ নয়। আচ্ছা কোন ভোট আজকাল নিরপেক্ষ? তারপরেও এটুকু বলতে পারি এসব এলাকায়, আর সত্য বলতে গেলে খারকভ থেকে ওডেসা পর্যন্ত পুরো দক্ষিণ পূর্ব ইউক্রেনের মানুষ ৭০-৯০% রাশিয়ার পক্ষে ছিল বরাবরই এবং ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গনের পরে সমস্ত নির্বাচনে এভাবেই তারা নিজেদের মতামত দিয়েছে রুশপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোট দিয়ে। তাই এখানে যে অন্য কোন রকম ফলাফল হত না সে ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। দুই জার্মানি যখন এক হয় তখন কেউ ভোটের প্রশ্ন তোলেনি। তখন যারা লেজ তুলে সেই মিলনে আনন্দ প্রকাশ করেছিল আজ তাদের অনেকেই রুশ জনগণের মিলনে ছিঃ ছিঃ করছে। এরপরেও এরা নিজেদের মহা মানবিক, মুক্তমনা, গণতন্ত্রী ইত্যাদি বলে মনে করে।     দুবনা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ 

লোভ

Image
নর্থ স্ট্রীম ১ ও ২ এর উপর আঘাত এসেছে। এটা যে সন্ত্রাসবাদী কাজ সে ব্যাপারে কারোই সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কে এই আঘাতের পেছনে। ওডেসায় অর্ধ শতাধিক রুশ পন্থীদের ট্রেড ইউনিয়নের বিল্ডিঙে পুড়িয়ে মেরে ইউক্রেন বলেছিল ওরা নিজেরা নিজেদের গায়ে আগুন দিয়েছে, এমনকি ওদের উদ্ধার করতে গেলে গুলি ছুঁড়েছে। কয়েক শ বছর আগে রাজপুত রমণীদের সম্পর্কে এ রকমটা বলা হলে বিশ্বাস হত। কিন্তু এখন? তারপরের পশ্চিমা বিশ্বের মানুষ সেটা বিশ্বাস করেছে। বার বার দনবাসের আবাসিক এলাকায় অথবা জাপারঝিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আঘাত হেনে ইউক্রেন বলে রুশরা নিজেরা নিজেদের উপর বোমা ফেলছে। সেটাও পশ্চিমা বিশ্ব বিশ্বাস করে। অথচ কেউ প্রশ্ন করে না রাশিয়া যদি তাদের প্রতি লয়াল মানুষের উপর বোমা ফেলবে তাহলে কিয়েভ বা লভভ এসব শহরের আবাসিক এলাকায় বোমা ফেলছে না কেন? সঠিক প্রশ্ন করলে সঠিক কিন্তু অপ্রিয় সত্য বেরিয়ে আসে তাই এই প্রশ্ন কেউ করবে না।  ইউক্রেন যুদ্ধের অনেকগুলো কারণের একটি নর্থ স্ট্রীম ২। সেটা চালু করতে দেয়নি। যুদ্ধ শুরু হবার অনেক আগেই জোসেফ বাইডেন বলেছেন আমরা কোন অবস্থাতেই ওটা চালু করতে দেব না। এরপর পশ্চিমা বিভিন্ন মাধ্যমের সংবাদ

মূল্যায়ন

Image
অনেক দিন পরে এক বন্ধু ফোন করল। জিজ্ঞেস করল কেমন আছি। "খারাপ থাকতে অনেক পয়সা লাগে। এত টাকা পাব কোথায়?" বরাবরের মত হেসে উত্তর দিলাম আমি। প্রতিক্রিয়া থেকে বুঝলাম আমার ঠাট্টা সে বুঝতে পারেনি। আমি মেয়ের সাথে বাজার করতে এসেছি জেনে সে পরে ফোন করবে বলে লাইন কেটে দিল। আমি একটু অস্বস্তি বোধ করলাম এই ভেবে যে ও ভাববে রাশিয়ায় আমাদের অবস্থা যার পর নাই খারাপ। শত হলেও আমেরিকায় বসে ও আমাদের সম্পর্কে ভালো কিছু শোনে না। কথা মত আধা ঘন্টা পরে ও আবার ফোন করল। আমরা ইতিমধ্যে বাসায় কিছু জিনিসপত্র রেখে আবার বেরিয়েছি। ও পরে ফোন করতে চাইছিল, বললাম, অসুবিধা নেই। অনেকক্ষণ কথা হল, অনেক বন্ধুদের পিন্ডি চটকানো হল, অনেকের হাড্ডি কচলাতেও ভুললাম না। আসলে কমন বন্ধু না থাকলে আর তাদের দোষ না থাকলে মানুষ যে কি নিয়ে একে অন্যের সাথে কথা বলত সেটা ভাবলেই চোখে অন্ধকার দেখি। সমস্যা শুধু দূরেই ঠেলে দেয় না, সমস্যা মানুষকে কাছেও নিয়ে আসে, বিশেষ করে অন্যদের সমস্যা। আপনি যদি এখানে আসতেন আপনার টাকা রাখাবার জায়গা থাকত না। ভাল ভাল ভার্সিটিতে চাকরি করতে পারতেন। তাই? টাকা কোথায় রাখবো সেই সমস্যার সমাধান পেলাম না বলেই তো আর আ

রাজনীতি

Image
  আমরা অনেকেই যারা বাম রাজনীতি করি তারা যতটা না নিজের জন্য করি তারচেয়ে বেশি করে করি নিপীড়িত মানুষের জন্য। ফলে আমরা যতটা না রাজনৈতিক কর্মী অনেক ক্ষেত্রে তারচেয়ে বেশি স্বেচ্ছাসেবক। যেহেতু আমাদের জীবন ও জীবিকা এর উপর নির্ভরশীল নয় তাই একসময় এসব ছেড়ে দেবার প্রবণতা দেখা দেয়। এটা ভালো বা মন্দ নয়। এটা জীবনের বাস্তবতা। তাই এই রাজনীতি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অপরিহার্য অংশ নয়। যারা অন্য দল করে তারা এটাকে জীবিকা মনে করে, ফলে রাজনীতি তাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ। তাই তাদের সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি। যদিও বাম দলের নেতা কর্মীদের ত্যাগ নিয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই তারপরেও তারা সব সময় নিজেকে সংযত রাখে। হ্যাঁ, এরা বিভিন্ন দলের নেতা কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়, জেল খাটে কিন্তু খুব কমই দেখা যায় যে এরা বেপারয়া ভাবে কিছু করে কারো উপর আক্রমণ করে সে জন্যে জেল খাটছে। মানে এসব দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী সচেতন ভাবেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যায়, আবেগের বশে তেমন কিছু করে বসে না। অন্য দিকে এদের প্রতিপক্ষরা কাউকে মারতে কাটতে পর্যন্ত দ্বিধা বোধ করে না। সেটা আগেবের বশেই হোক, আর সুক্ষ হিসেবই হোক। কারণ তারা বিশ্বাস

আশা

Image
দনেৎস্ক, লুগানস্ক, হেরসন আর জাপারোঝিয়ায় গণভোট হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মতামত থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। আমার মনে পড়ছে একাত্তর। তখন পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানপন্থী অনেকেই ছিল। আবার যারা সত্তরে পাকিস্তানের মধ্যে থেকেই স্বায়ত্তশাসন চেয়েছিল পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতার পরে তারাও অনেকেই স্বাধীনতার জন্যে লড়েছে। ইউক্রেনের নাৎসিদের আক্রমণে একই ঘটনা ঘটছে সেখানেও। রাশিয়ার সাথে কেন? দনবাসে ইউক্রেনের আট বছরের বর্বরতা তাদের সামনে অন্য কোন পথই খোলা রাখেনি। তারা জানে পশ্চিমা বিশ্ব তাদের মতামতের কোন মূল্য দেবে না, মানবাধিকার সংগঠনগুলো তাদের মানুষ হিসেবে মর্যাদা দেবে না। কিন্তু অন্যের স্বীকৃতির চেয়ে নিজের জীবন ও মানসিক শান্তি অনেক অনেক দামী। আশা করি এই মানুষগুলো একদিন সত্যিকারের মানুষের মত বাঁচতে পারবে। দুবনা, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

আমাদের মেয়েরা

Image
  আমার সুধীর দা অন্তত আমি দেশে থাকাকালীন সক্রিয় রাজনীতি করতেন না। পড়তে ভালবাসতেন আর পড়াতে। স্কুলে, কলেজে পড়িয়েছেন আর প্রাইভেট। পড়া আর পড়ানো ছিল নেশার মত, তাই কেউ টাকা দিল কি দিল না সেটা বড় কথা ছিল না, এমনকি অনেক সময় নিজে গরীব ছাত্রদের বই খাতা কিনে দিতেন। আমরা নিজেরা বিভিন্ন সংগঠন করতাম, সমাজ বদলের স্লোগান দিতাম। আমি নিজে সমাজের জন্য কিছু করতে পেরেছি বলে মনে হয় না। তবে বিভিন্ন সময়ে দেশে গিয়ে দেখেছি সুধীরদার ছাত্ররা প্রতিষ্ঠিত, অনেকেই নিজেদের মত করে অন্যদের সাহায্য করেন, এভাবেই দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি নিজের দায়িত্ব পালন করেন। আসলে মানুষের জন্য কিছু করার জন্য নিজের কাজটা ভাল ভাবে করলে অনেকটাই দেওয়া হয়। এরপরে যদি সংঘবদ্ধ ভাবে কিছু করা যায় ভাল, তবে সেটা আসল নয়। আমাদের মেয়েরা সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন। এই যে চ্যাম্পিয়ন তারা হয়েছে, লাখ লাখ মানুষের ভালবাসা পেয়েছে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে, হাজার হাজার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেছে - এ সবই ফুটবল খেলে। এই খেলেটাই তাদের প্রধান ও একমাত্র অস্ত্র। তারা দেখিয়েছে কঠিন সামাজিক পরিবেশে বড় হয়ে, অনেক বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে শুধু নিজে

পথে এবার নাম সখা

Image
বাংলাদেশের নারীদের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ জয়। বিমান বন্দরে লাগেজের তালা ভেঙে বিজয়ীদের টাকা চুরি, সাংবাদিক সম্মেলনে বিজয়ী দলের কোচ ও ক্যাপ্টেনের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা, বাফুফের সভাপতির নারী ফুটবলারদের বিয়ের খরচ বহন করার অঙ্গীকার, ...............  অনেকেই হতাশ। কিন্তু এটাই তো আমাদের চিরপরিচিত বাংলাদেশ। যদি অবস্থার পরিবর্তন চান শুধু বিজয়ীদের অভিনন্দন জানালেই চলবে না, তারা যেভাবে বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে স্বপ্নকে বাস্তব করেছে নিজেদেরও সেভাবেই লড়াই করে এগিয়ে যেতে হবে, নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে দেশ, জাতি ও সমাজকে। মেয়েরা পথ দেখিয়েছে। বাকিটা আপনাদের হাতে।  দুবনা, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ 

ভাবনা

Image
  বিদেশে খুব কম লোকই বাংলা সহিত্য পড়ে , বাংলায় যারা লেখে তাদের কথা জানে। এমনকি সাহিত্যিক মহলেও রবীন্দ্রনাথের বাইরে আর কেউ তেমন একটা পরিচিত নয়। মাইকেল মধুসূদন দত্ত হয়তো এ কারণেই ইংরেজি দিয়েই শুরু করেছিলেন। এখনও ভারতীয় উপমহাদেশে যারাই বিশ্ব সাহিত্যে নিজেদের স্থান করে নিয়েছেন সবাই ইংরেজিতে লেখেন তা তিনি সালমান রুশদি হোন , অরুন্ধুতী রায় হোন আর যেই হোন। এমনকি ইংরেজিতে অনুবাদ না হলে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পেতেন কিনা বা তাঁর কথাও কেউ জানত কিনা সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। আমরা ইংরেজি সাহিত্যের কথা জানি ইংরেজি পড়তে পারি বলে। ফ্রেঞ্চ , জার্মান , স্প্যানিশ , রুশ বা অন্যান্য ভাষার লেখকদের জানি অনুবাদের সুবাদে। আর অনুবাদ হয় প্রতিষ্ঠিত লেখকদের লেখা। তাছাড়া ইউরোপ ও আমেরিকার মানুষের মধ্যে সামাজিক , সাংস্কৃতিক , ঐতিহ্যগত ও ঐতিহাসিক মিল থাকায় তারা একে অন্যকে সহজেই বুঝতে পারে , ফ্রান্সের পাঠক ইংরেজ বা জার্মান বা স্প্যানিস লেখকের লেখার সামাজিক প্রেক্ষাপটে অনায়াসে হাঁটতে পারে , কিন্তু আমাদ