Posts

Showing posts from June, 2018

অশ্রুভেজা আনন্দ

Image
আচ্ছা বলতো তোমাদের দেশের মানুষ পালাক্রমে দুই দলকে ক্ষমতায় বসায় কেন ? মানুষ ভাবে দেশ চালনা - ক্রিকেট খেলা। তাই দুই দলই এক ইনিংস করে খেলবে এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো সেটা বোঝে ? মনে তো হয় না। অন্তত তারা মনেই করে না যে ফিল্ডিং করাও খেলার একটা অংশ। এটাকে এরা ব্যাট সর্বস্ব খেলা বলেই ধরে নেয়। মানে অন্য দল ওয়াক ওভার দেয় ? ঠিক তাও নয়। এরা বাজে হিট করা বল ধরার চেয়ে ব্যাটারদের পা ধরে টানতে ভালবাসে। হা-ডু-ডু খেলে অভ্যস্ত কি না! তাই কি এখন কাউকে মাঠে দেথছি না? কারণটা অবশ্য ভিন্ন। ব্যাটাররা এত জোরে ছক্কা মেরেছে যে বল মাঠ পেরিয়ে বনবাদাড়ে হারিয়ে গেছে। ফিল্ডিং পার্টি ওই বলই খুঁজে বেড়াচ্ছে হন্যে হয়ে। আর জনগন ? জনগন আবার কি ? তারা তো দর্শক। পয়সা দিয়ে টিকেট কেটে খেলা দেখে। জিন্দাবাদ মুর্দাবাদ দেয়। গরীব জনতার তো রিক্রিয়েশনের জায়গা নেই , তাই অল্প পয়সায় রাজনৈতিক দলগুলোর আয়োজিত প্রহসন দেখে। আনন্দ বলে কথা! হ্যাঁ , অশ্রুভেজা আনন্দ! দুবনা, ২৮ জুন ২০১৮  ছবিঃ ক্রিস্টিনার ছোটবেলায় আঁকা  

নতুন করে শুরু

Image
গতকাল সেভা চলে গেল, মস্কো। অনেক দিন পরে দুবনা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল। ২০০৯ সালে ওরা সবাই যখন মস্কো চলে যায়, অনেকটা সে রকম। তখন প্রথম দিকে খারাপ লাগলেও আমি প্রায় প্রতি উইকএন্ডে মস্কো যেতাম। অভ্যেস হয়ে গেছিল এই কাছে না থাকাটা। ছোট বেলা থেকেই ও আমার ন্যাওটা। সব সময় সাথে সাথে থাকবে। আমি ওকে নিয়ে ঘুরতে যেতাম ভল্গার তীরে বা পাশের বনে। ছবি তুলতাম। ছবি তুলছি, হঠাৎ পেছন থেকে কে যেন ঘাড়ে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ল আর কিছু বলার আগেই খুশিতে গদগদ হয়ে পালিয়ে গেল দূরে। এই আমার সেভা। আমার মত ও সবার ছোট, তাই হয়তো এত ভালবাসা ওর প্রতি। ও কখনই কথা শুনত না, বাড়িতে কেউই শোনে না। আমি নিজেও ছিলাম দুষ্টের শিরোমণি। তাই ওদের কথা না শোনা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথা নেই। নিজের ফেলে আসা অতীতকেই ওদের মাঝে দেখতে পাই। ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত একটানা মস্কো থাকার পর গত গ্রীষ্মে সেভা দুবনা আসে আমার এখানে। এতদিন আমার ঘরে ফেরার ঠিক ছিল না। অফিস যেতাম যখন খুশি, কখনও ১০ টায়, কখনও ১২ টায় আবার কখনও বা বেলা ২ টায়। ফিরতামও সেভাবেই, রাত ৮ টা, ১০ টা বা ১২ টায়। যখন খিদে পেত। তাও আবার সব সময় রান্না করা হত না আলসেমি করে। সেভা আসার পর থ

গতকালের রেড স্কয়ার আর আজকের খেলা

Image
গতকাল বিকেলে গেলাম রেড স্কয়ারে। পরীক্ষা ছিল ছাত্রদের দিনের বেলায়, আর আজ আমার একটা মিটিং ছিল কলিগের সাথে। তাই মস্কোয় থেকে যাওয়া। ভাবলাম, রয়েই গেলাম, ঘুরে আসি বিশ্বকাপের মস্কো। ক্যামেরা নিয়ে বেরুলাম। লুঝনিকি আমার বাসার সাথে, তবুও ওদিকেই গেলাম। ইউনস্ত হোটেলের সামনে বিভিন্ন দেশের ফ্যানরা বিয়ার নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। তাই মেট্রোতে ঢুকলাম রেড স্কয়ারের উদ্দেশ্যে। লোকে লোকারণ্য। প্রায় সবাই বিদেশী। চিৎকার চেচামিচি। পেরু, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের লোকেরা। মে ক্সিকোও কম নয়। প্রায় সবাই উপস্থিত, নেই শুধু রাশান ফ্যান। সব দলের লোকেরা যেখানে ঢাক ঢোল বাজিয়ে নিজেদের দেশের সমর্থনে শ্লোগান দিচ্ছে, রাশানরা নীরব। শুধু এক পাবলিক দেখলাম একটা রাশান ফ্ল্যাগ নিয়ে রেড স্কয়ারে হাঁটছে। কে জানে? জাপান আর কোরিয়ার বিশ্বকাপের সময় রাশান ন্যাশনালিস্টদের হাঙ্গামার করার পর এই কড়াকড়ি কিনা। ভার্সিটিতে খেলা নিয়ে সবাই কথা বললেও সৌদির বিরুদ্ধে জয় অনেকটা আকস্মিক বলে ধরে নিয়েছে। আজ খেলার সময় মস্কো থেকে ফিরছিলাম সেভাকে নিয়ে। ও নিজেও খেলা দেখছে না। বাসায় ফেরার পথে পাশের বাড়ি থেকে চিৎকারে বুঝলাম রাশিয়া গোল করল। বাসায় ফিরে দেখি ৩-০। সেভ

দ্বৈত সত্ত্বা

Image
চেন্নাই। এক নামকরা হাসপাতালের আউট ডোরে মধ্য বয়সী এক বাঙ্গালী ভদ্রলোক পায়চারি করছেন। হাতে সর্বশেষ মডেলের আইফোন। পোশাক দেখেই বোঝা যায় উনি শুধু বিত্তশালী নন, ইউরোপ অ্যামেরিকার সর্বশেষ ফ্যাশন সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। কয়েক মাস আগে ওনার মা ছিলেন এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। তাই এসেছেন ডাক্তারকে ধন্যবাদ জানাতে। প্রচণ্ড কাজের চাপ, তাই চাইলেও ডাক্তার দেখা দিতে পারেন না। এতো ডাক্তার দর্শন নয়, খোদ ভগবান দর্শন। তবুও ডঃ সেন দুই অপারেশনের মাঝে একটু সময় করে নেমে এলেন নিচে। -        স্যরি মিঃ চৌধুরী, একটু দেরী হয়ে গেলো। তা আপনার মা এখন কেমন আছেন? -        ঈশ্বরের কৃপায় মা আমার ভালোই আছেন ডঃ সেন। চেন্নাই একটা কাজে এসেছিলাম। ভাবলাম দেখা করে যাই। এরপর ভদ্রলোক কাকে যেন ফোন করলেন। এক ব্যাগ ভর্তি বিভিন্ন উপঢৌকন নিয়ে সামনে এলো এক লোক। -        ডঃ সেন আমি যে আপনার কাছে কতটা কৃতজ্ঞ বলে শেষ করতে পারব না। এখানে খুব সামান্য উপহার। জানি এসব দিয়ে আপনার ঋণ আমি শোধ করতে পারব না। তবুও... -        মিঃ চৌধুরী, আমি তো নিমিত্ত মাত্র, জীবন মরণ ঈশ্বরের হাতে। উনিই আপনার মাকে সুস্থ করে তুলেছেন। আ