Posts

Showing posts from January, 2024

সংসারে স্বাধীনতা

Image
গতকাল আমার এক বন্ধু "সংসারে স্বাধীনতা" নিয়ে একটি পুরানো লেখা নতুন করে পোস্ট করেছে। সেটা পড়ে কতগুলো ভাবনা আমার মাথায় এলো। দেশে নির্বাচন শেষ। শেষের বিভিন্ন অর্থ আছে। এই শেষ বিভিন্ন অর্থ বহন করে। আবার এই অর্থের একটি অর্থ মামুলি টাকা, বাকিগুলো অর্থহীন। তবে শেষ শুধু এবারের নির্বাচন শেষ নয়, ব্যাপক অর্থে নির্বাচনী ব্যবস্থার মৃত্যু। এবং শুধু আমাদের দেশেই নয়। ভেবেছিলাম নির্বিরোধ নির্বাচন হবে নিরামিষ। দেখলাম আমিষ ছাড়া আমাদের কিছুতেই চলে না। তাই বিভিন্ন প্রতীকধারী আওয়ামী লীগের কর্মীদের ভ্রাতৃঘাতী লড়াইয়ে অনেক সাধারণ মানুষ অসাধারণ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে। অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়। আমাদের পরিবারগুলোই তো একেকটা যুদ্ধক্ষেত্র। পরিবার হল রাষ্ট্রের পারমাণবিক রূপ আর সেই রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখলের জন্য স্বামী, স্ত্রী, সন্তান সবাই অসম কিন্তু অবিরাম যুদ্ধে রত। বিশেষ করে তার অর্থমন্ত্রীর পদ পাওয়ার জন্য। মৌলানা আজাদ ইন্ডিয়া উইন্স ফ্রিডম-এ লিখেছেন সর্দার প্যাটেল অনেক দর কষাকষি করে কংগ্রেসের জন্য অবিভক্ত ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ নেয়। কিন্তু পরে দেখা গেল অর্থমন্ত্রী লিয়াকত আলি খ

অধিকার

Image
দেশে এখন তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে বিতর্ক চলছে। সংবিধান জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, পেশা, শিক্ষা নির্বিশেষে সব নাগরিককে সমান অধিকার দেয়। তাহলে নতুন করে অধিকারের প্রশ্ন আসে কেন? আসে, কারণ রাষ্ট্র সব সময়ই ব্যর্থ হয়েছে সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের সংখ্যালঘু বিভিন্ন রকমের হয়রানির শিকার হয়েছে। ভোটের হিসেব নিকেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সব সময়ই রিসিভিং এন্ডে ছিল। রামু, প্রতি বছর দূর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনা সামাজিক ভাবে ততটা ধিকৃত হয়নি। সেদিক থেকে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার প্রশ্নে অনেক বেশি মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। কারণটা যদি সত্যিকার অর্থে মানবিক কারণে হয় সেটা প্রশংসাযোগ্য কিন্তু যদি সেটা হয় বর্তমান পশ্চিমা ট্রেন্ডের স্রোতে থাকার জন্য তাহলে আর যাই হোক সমস্যার সমাধান হবে না। এর মধ্যে শুনলাম সরকার এক কমিশন গঠন করেছে। সীতার ভূমিকায় অভিনয় করছে শরীফা। সরকার রামের ভূমিকায়। কথিত আছে রাম কোন এক মাতালের অভিযোগে সীতাকে অগ্নি পরীক্ষা দিতে বলেন। এখন মাতালের ভূমিকায় ধর্মীয় মাতালরা। যতদূর জানি শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের পরে,

আনফ্রেন্ড

Image
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সামাজিক বা জাতীয় ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফেসবুক বিতর্কের পর অনেকেই ঘোষণা দিয়ে কিছু লোককে আনফ্রেন্ড করে। আমি ফেসবুকের বন্ধুদের সাধারণত আনফ্রেন্ড করি না। একবার এক জনকে করেছিলাম অযথা বার বার যাকে বলে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার জন্য। আমি বিদেশে বসে কেন দেশ নিয়ে লিখি সেটাই ছিল তার সমস্যা। আরেকজনকে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে আমার স্ট্যাটাসের প্রশংসা করার জন্য। এরা দু'জনেই ব্যক্তিগত ভাবে আমার পরিচিত। অনেক বন্ধুর মৃত্যুর পরও আনফ্রেন্ড করিনি কারণ তাদের জন্মদিনে নরকে (আমার ধারণা শুধুমাত্র আমার সাথে বন্ধুত্বের কারণেই তাদের স্বর্গের দ্বার বন্ধ হয়ে গেছে) শুভেচ্ছা বিনিময়ের এটাই একমাত্র পথ। তবে ইদানিং কালে কিছু কিছু ডেড সোলকে আনফ্রেন্ড করছি জীবিতদের স্থান সংকুলানের জন্য।  প্রায়ই দেখি লোকজন বিভিন্ন কারণে অনেককে আনফ্রেন্ড করে ফেসবুকে ঘোষণা দেয়। বিশেষ করে বলে মূর্খ লোকদের আনফ্রেন্ড করার কথা। আমি একটু অবাক হই।  বহুল আলোচিত একটা কথা আছে -"বল তোমার বন্ধু কে, আমি বলব তুমি কে?" এই যে একদল মানুষ আমার ফ্রেন্ড লিস্টে ছিল, তারা তো আমার অনুমোদনক্রমেই ছিল। তাহলে? তাদের মূর্খ ব

ইতিহাস

Image
ছোটবেলায় পড়েছি "অনেক দিন আগের কথা। তখন আরবের লোকেরা বর্বর ছিল।" এভাবেই ইসলামের ইতিহাসে প্রাক- ইসলামী আরবের উত্তরাধিকার অস্বীকার করে যদিও আল্লাহ প্রাক-ইসলামী যুগের অন্যতম প্রধান দেবতা। এছাড়া সে সময় আরব সাহিত্য সংস্কৃতি বেশ উন্নত ছিল বলেও অনেকে দাবি করেন। আমেরিকার ইতিহাসে ফাউন্ডিং ফাদারদের আগের যুগ নিয়ে তেমন কিছু বলা হয় না। সেখানকার ইন্ডিয়ানদের ইতিহাস এড়িয়ে যাওয়া হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাসে দেখি অত্যাচারী জারের গল্প যা থেকে মুক্তির উপায় সোভিয়েত ব্যবস্থা। তবে শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, শিল্পের ভিত্তি সেই জারের আমলেই গড়া।  এক্ষেত্রে রাম সেনারা অতীতকে নয় ইতিহাসের মাঝের কিছু চ্যাপ্টার মুছে ফেলতে চায়, বিশেষ করে সুলতানি ও মুঘল আমল।  নতুন রাশিয়ায় প্রথম দিকে এ ধরণের চেষ্টা হয়েছে সোভিয়েত আমলকে অস্বীকার করে। এখন বুঝছে ইতিহাস পাথরে খোদাই করা, এটা পেন্সিলে লেখা নয় যে চাইলের রাবার দিয়ে মুছে ফেলা যাবে। তাই সোভিয়েত আমলের অনেক কিছুই নতুন করে ফিরে আসছে। আসলে সবাই শুধু সেটুকু রাখতে চায় যা বর্তমান রাজনৈতিক মতাদর্শকে শক্ত ভিত্তি দেয়। তবে একটা সময় সবাই বুঝতে পারে সমাজ,

জন্মদিনের প্রশ্ন

Image
আজ নেতাজী সুভাষ বোসের জন্মদিন। আমার অন্যতম প্রিয় নেতাদের একজন। ছোটবেলা থেকে মায়ের কাছে গল্প শুনে শুনে কখন যে সেই স্থান দখল করেছেন সেটা টেরই পাইনি। আজ হঠাৎ করেই একটি প্রশ্ন মাথায় এল। তাঁর লেখায়, কাজে, বক্তৃতায় তিনি যে ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখতেন, যে ভারতবর্ষের কথা বলতেন নেতাজীর সেই ভারতবর্ষ মোদির ভারতের চেয়ে নেহেরুর ভারতের অনেক কাছে। অথচ নেহেরুর ভারতে তিনি ততটা স্বীকৃতি পাননি যতটা পেয়েছেন মোদির ভারতে। তবে এটা বিজেপির রাজনৈতিক কৌশল বই কিছু নয়। কিন্তু যে প্রশ্নটা মাথায় এলো সেটা হল "কী হত যদি নেতাজী গান্ধীর উপর অভিমান না করে কংগ্রেসে থেকে যেতেন, নিজের মত প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করতেন?" হ্যাঁ, তিনি লড়াই করেছেন আজাদ হিন্দ ফৌজের মাধ্যমে। কিন্তু কথা হচ্ছে এই লড়াইটা যদি তিনি ভেতর থেকে করতেন। একই কথা বলা যায় বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম নক্ষত্র তাজউদ্দীন আহমদের ক্ষেত্রে। কারণ কোন কাজই একবার শুরু করলে উদ্যোক্তাদের সরে যাওয়ার সাথে সাথে সেটা শেষ হয়ে যায় না। তার রেশ থাকে। তাই শুরু করা কাজের ভালোমন্দের দায় তাঁদেরও। বর্তমানে ভারতে বা বাংলাদেশে যা ঘটছে নেতাজী সুভাষ বা তাজউদ্দীন আহমদ

অন্ধত্ব

Image
গতকাল দানিয়েৎস্কের বাজারে ইউক্রেনের হামলায় ২৮ জন বেসামরিক লোক নিহত। আহত ২৫। জেনেনস্কি স্বাভাবিক ভাবেই বলেছে এটা রুশরা নিজেদের উপর নিজেরাই আক্রমণ করেছে। এর আগে পশ্চিমা বিশ্বও এসব আক্রমণকে নিজেদের উপর রুশ আক্রমণ বলে চালানোর চেষ্টা করত। এবার সমালোচনা না করলেও আক্রমণ যে ইউক্রেনের সেটা স্বীকার করেছে। বেসামরিক স্থাপনায় আক্রমণ যুদ্ধাপরাধ। কিন্তু যারা নিজেদের বিচারকের আসনে বসায়, যারা একসময় এসব আইন তৈরি করেছে তারা নিশ্চুপ। বরং কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছে যে ইউক্রেন সেনারা রুশদের সাথে সরাসরি যুদ্ধে পেরে না উঠে বাধ্য হয়ে বেসামরিক লোকদের উপর আক্রমণ করছে। হামাসের আক্রমণের সমালোচনা করলেও এখন পশ্চিমা বিশ্ব বরং কিয়েভের পক্ষে যুক্তি খোঁজার চেষ্টায় ব্যস্ত। যতদিন পর্যন্ত ন্যায় অন্যায় নির্ধারণ করা হবে কে করল তার পরিচয় দেখে ততদিন পর্যন্ত এসব চলতেই থাকবে। থেমিসের চোখ বাঁধা হয়েছিল নিরপেক্ষতার জন্য কিন্তু কালের আবর্তনে তিনি অন্ধ হয়ে গেছেন। মস্কোর পথে, ২২ জানুয়ারি ২০২৪

লেনিন

Image
আজ লেনিনের মৃত্যু শত বার্ষিকী। ২১ জানুয়ারি ১৯২৪ সালে তাঁর মৃত্যু সংবাদ সোভিয়েত জনগণকে জানানো হয়েছিল। ৩০ আগস্ট ১৯১৮ ফান্নি কাপলানের হাতে গুলিবিদ্ধ হবার পর থেকেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর শেষ জীবন কাটে মস্কোর অদূরে গোর্কি লেনিনস্কি নামে এক গ্রামে। লেনিন নিঃসন্দেহে শুধু বিংশ শতকের নয় মানব ইতিহাসের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যিনি বলতে গেলে স্বল্প সংখ্যক অনুসারী নিয়ে ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক দেশ। তাঁর রাজনৈতিক ভাবনায় একদিকে ছিল সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসা, অন্যদিকে শাসক শ্রেণীর প্রতি প্রচন্ড ঘৃণা। ফলে এক দলের কাছে তিনি হিরো, অন্যদের কাছে ঘৃণার পাত্র। তবে যেটা দেখা যায় এই ভক্তি ও ঘৃণা প্রায়ই অন্ধ। অথচ লেনিন আর দশ জনের মতই রক্ত মাংসের মানুষ যার যেমন সাফল্য আছে তেমনি আছে ব্যর্থতা, আছে গুণ, আছে দোষ। আজ সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই কিন্তু তার লিগেসি এখনও ঠিকই রয়ে গেছে। আজ সাবেক সোভিয়েত ভূমিতে বিশেষ করে ইউক্রেনে যে যুদ্ধ চলছ সেটাও লেনিনের রাজনীতির ফসল। তাই বিশেষ করে যারা বামপন্থায় বিশ্বাসী, যারা শোষণ মুক্ত সমাজ গড়ার সৈনিক

ধর্ম অধর্ম

Image
গতকাল মানে ১৯ জানুয়ারি ছিল অর্থডক্স খৃষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব। এই দিন জর্ডান নদীতে যীশুকে খৃষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করা হয়। সেটাকে স্মরণ করে রাশিয়ার খৃষ্টানরা এই শীতের মধ্যেও নদীতে ডুব দিয়ে স্নান করে।  স্কুলে পড়ার সময় মনিকা স্নান করত। মাইনাস ১৫ বা ২০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় এটা সহজ নয়। তখন অবশ্য আমার কখনই মনে হয়নি ওর সাথে গিয়ে ডুব দিতে। এটা যতটা না ভয় তারচেয়ে বেশি ধর্মীয় উৎসব বলে। ২০২১ সালে করোনার পরে আমি অনেক কাজ করি যা আগে করতে সাহসে কুলাতো না। তাই কখনো কখনো ইচ্ছে হয় এরকম ঠান্ডায় ডুব দিতে। অন্য সময়ও সেটা করা যায়। তবে উৎসবে করলে রিস্ক কম। প্রচুর লোক সেটা করে। পাশেই জামাকাপড় বদলানো, চা এসব থাকে আর থাকে ডাক্তার, যদি কারো সমস্যা হয়। অনেকটা আমি ঘুষ খাই না, তবে কেউ ঘুষের টাকায় খেতে ডাকলে আপত্তি করি না।  গতকাল ক্লাবে কথাটা বলতেই সবাই রা রা করে উঠলো। ভাসিলি বলল জলের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রী। তুই বরং গ্রীষ্মে ককেসাস গিয়ে পাহাড়ি ঝর্নায় স্নান করিস। এসব ধর্মীয় জায়গা থেকে যত দূরে থাকিস তত ভালো। তুই যে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে গির্জার ছবি তুলিস সেটাও সন্দেহজনক। আমি ওসব জায়গা

প্রশ্ন

Image
সঠিক বলতে পারব না, তবে অনেকের কাছে গল্প শুনে, বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে আমেরিকার অধিকাংশ মানুষের অন্য দেশ সম্পর্কে জ্ঞান খুবই কম অথবা বলা যায় অন্য দেশ সম্পর্কে তাদের আগ্রহ কম। তাই হঠাৎ করেই মনে প্রশ্ন জাগল এটা কি মানুষের সহজাত অনীহা নাকি সরকারের রাজনৈতিক কৌশল? কারণ যখন মানুষ বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে জানে, সেসব দেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত হয় তখন তাদের মধ্যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা জাগতে পারে। ধর্ম কিন্তু এভাবেই কাজ করে। কোন একটা গ্রন্থে বিশ্বাস, অন্য গ্রন্থ অগ্রাহ্য করা - এটা এক ধরণের বর্ম। কারণ মানুষ যত জানে তত প্রশ্ন করে, তত পরিবর্তন চায়। আমেরিকার নিজেদের এক্সক্লুসিভ ঘোষণা করার পেছনে হয়তো সেই সিস্টেমের বিভিন্ন দুর্বলতা থেকে রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে। তাদের আগ্রাসী মনোভাবের পেছনেও আছে এই এক্সক্লুসিভনেস। ধর্মে তার উদাহরণ আমরা প্রায়ই দেখি। কারও শ্রেষ্ঠত্ব যখন শক্তি নির্ভর হয় তখন তা অন্যদের জন্য হুমকি স্বরূপ। আর নিজে শ্রেষ্ঠ বিধায় সে নিজের অন্যায় কার্যকলাপ ন্যায় বলে চালিয়ে দিতে পারে, দেয়। এটাও হয়তো ধর্মকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহারের আরও

সমস্যা

Image
হান্টার বাইডেনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যো বাইডেনের শক্তিতে তার অগাধ বিশ্বাস। তার বিশ্বাস, সে যাই করুক না কেন পিতার প্রতি তার আনুগত্য, তার বিশ্বাস সব বিপদ থেকে তাকে ঠিকই রক্ষা করবে। এটা অনেকটা ধর্মান্ধদের মত যারা ভাবে ঈশ্বরের প্রতি শর্তহীন বিশ্বাস তাদের সাত খুন মাফ করে দেবে, তাদের স্বর্গবাসী করবে (অবশ্য ঈশ্বর যদি সত্যি থেকে থাকেন আর এদের দ্রুত স্বর্গে নিয়ে যান তাতে সবাই বরং খুশি হবে, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বাঁচবে)। সাধারণ মানুষের সমস্যা হল যে সে নিজেকে সৃষ্টির সেরা জীব বলে মনে করে। কঠিন পরিশ্রম ও সাধনা নয় জন্ম সূত্রে অর্জিত এই শ্রেষ্ঠত্ব তার সত্যিকারের মানুষ হবার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। দুবনা, ১৬ জানুয়ারি ২০২৪

তৃপ্তি

Image
মস্কোয় আমার এক বন্ধু চোখে চশমা পরত। একটু কালো শেড থাকায় ওর চোখ বাইরে থেকে দেখা যেত না। এটা ছিল ছাত্র জীবন, ভরা যৌবন। প্রায়ই একসাথে ঘুরতে যেতাম। একদিন বাসায় ফেরার পথে বলল আজ অনেক মেয়েকে চোখ মেরে দিলাম। তা তোর চোখই তো দেখা যায় না। কেউ তো টেরই পায়নি। কী হল চোখ মেরে?  দেখুক আর নাই দেখুক, আমি তো তৃপ্তি পেয়েছি।  অনেক দিন পরে এ কথা মনে পড়ে গেল। এবার বাংলাদেশে কিছু কিছু দল ভোট বয়কট করল। আমার ধারণা এটা কেউই টের পায়নি। তবে এরা তৃপ্ত কিনা সেটা জানা হয়নি। দুবনা, ১৫ জানুয়ারি ২০২৪

সামান্য ঘটনা

Image
বড় ঘটনায় নয়, ছোট ছোট ঘটনায় জানা যায় কোন ব্যক্তি, সমাজ বা দেশের চরিত্র। বড় কিছু কেউ করে সচেতন ভাবে, ছোট ছোট কাজ অবচেতন মনে, অনেকটা অভ্যাস বশত। তাই কোন সামান্য কাজ অনেকের অগোচরে থেকে গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ বহন করে।  অনেক দিন বন্দী অবস্থায় থাকার পর সেদিন আমেরিকান সাংবাদিক গনসালো লিরা মারা গেলেন ইউক্রেনের জেলে। তাঁর অপরাধ ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের অফিসিয়াল ভার্সনের সাথে যায় না এমন খবর প্রকাশ করা ইউক্রেনের যুদ্ধ সম্পর্কে।  আমেরিকা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে তার নাগরিকদের রক্ষায় বদ্ধপরিকর - এত দিন পর্যন্ত এই বিশ্বাস ছিল অটল। ইলন মাস্ক, টাকের কার্লসন সহ অনেকের আবেদন সত্ত্বেও মার্কিন প্রশাসন লিরাকে মুক্ত করার জন্য ন্যুনতম চেষ্টা পর্যন্ত করেনি। ইউক্রেনের জেলে নিজ দেশের নাগরিকের মৃত্যুর পরও শুধুমাত্র মাত্র লিরার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব সেরেছে। মেইন স্ট্রীম মিডিয়াও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। এ ঘটনা আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক বিশাল পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এখন আর আমেরিকান নাগরিক বলে কেউ নেই, আছে এলিট শ্রেণীর স্বার্থ। তবে পশ্চিমা বিশ্বের প্রা

সরকার

Image
বর্তমান বিশ্বের দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে সর্বত্র সরকারি দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, কারচুপি ইত্যাদির অভিযোগ। আর উন্নয়নশীল দেশের মন্ত্রীদের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের কেচ্ছা কাহিনী। ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে ক্ষমতাসীন ও দুর্নীতিপরায়ণ প্রায় সমার্থক হয়ে গেছে। এর থেকে মুক্তির উপায় কি? সরকারি দল বাতিল করা। কিন্তু সরকার থাকলে সরকারি দল এমনিতেই গজাবে। তাহলে? তাহলে আর কি? সরকার বাতিল করতে হবে। দেশ চলবে কেমনে? দেশ কবে কোথায় সরকারের দেখানো পথে চলেছে? উল্টো সব সরকারই জনগণের কাঁধে চেপে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছে। তাই বলে সরকার ছাড়া দেশ চলবে? বিদেশের সরকারের সাথে আলোচনায় বসবে কে? আরে সরকার কি এক দেশে বাতিল হবে? সব দেশ থেকেই সরকারি ব্যবস্থা উঠিয়ে দিতে হবে। সরকারি মাল না থাকলে দরিয়ায় সেটা ঢালার প্রশ্ন আসবে না। অন্তত চেষ্টা করে দেখতে সমস্যা কোথায়? দুবনা, ১০ জানুয়ারি ২০২৪

অসুস্থ গণতন্ত্র

Image
রাশিয়ার কোন অঞ্চলে পশুদের মধ্যে সংক্রামক রোগ দেখা দিলে জন স্বাস্থ্য ও পশুদের সুস্থ ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেই এলাকার সব পশুদের হত্যা করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এতে সরকার ও ফার্মের মালিকরা সমান ভাবে অংশগ্রহণ করে। সরকার অবশ্য কৃষকদের ক্ষতি পূরণ দেয়।  বাংলাদেশে সরকারি দল, বিরোধী দল, জনগণ সবাই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে। এবং অন্তত সরকারি ও বিরোধী দলগুলো সমান উদ্দীপনায় অসুস্থ গণতন্ত্রকে হত্যা করে।  দেশের গণতন্ত্র মনে হয় রাশিয়ার পশুদের চেয়েও অধম। তাই এখানে স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন ও সুস্থ পশুতে খামার ভরে গেলেও দেশে গণতন্ত্র প্রাণ ফিরে পায় না। দুবনা, ০৮ জানুয়ারি ২০২৪

স্বাধীনতা

Image
কথিত আছে যে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর একবার এক ইংরেজের কাছে কোন এক কাজে গেলে তিনি টেবিলের উপর পা তুলে বিদ্যাসাগরকে সম্বর্ধনা জানান। পরবর্তীতে সেই সাহেব বিদ্যাসাগরের কাছে এলে তিনিও একই ভাবে সাহেবকে সম্বর্ধনা জানান। এটা সাহেবের পছন্দ হয়নি। ওরা চায় না ওরা যা করে আমরা তাই করি কারণ এটা করতে পারে স্বাধীন মানুষ। ওরা চায় ওরা যা বলে আমরা তাই করি, ওদের অধীনস্থ থাকি।  আমেরিকা এখনও ২০২১ সালের জানুয়ারির ঘটনার জন্য অনেককে গ্রেফতার করছে যদিও সেই ঘটনার অনেক কিছুই এখনও অস্পষ্ট। অন্যদিকে আমাদের দেশে যখন এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গাড়ি পোড়ানো হয়, ট্রেনে আগুন দেয়া হয়, নির্বাচনের আগে ও পরে মানুষ হত্যা করা হয় তখন এই আমেরিকাই এটাকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বলে শোরগোল তোলে, ভয় দেখায়। আর প্রচুর ডিগ্রিধারী লোক এসব অসামাজিক কার্যকলাপ বিভিন্ন অজুহাতে সমর্থন করে মার্কিন স্বর্গে নিজেদের সীট কনফার্ম করে। স্বাধীনতা - অন্যের দয়া নয়, নিজেদের মত করে চলার অধিকার - নিজের ও জাতি ধর্ম বর্ণ ও রাজনৈতিক আদর্শ নির্বিশেষে দেশের সব মানুষের। দুবনা, ০৭ জানুয়ারি ২০২৪