Posts

Showing posts from October, 2023

ওজন

Image
আমি সোমবার সকালে ক্লাসে যাবার আগে স্নান করার সময় ওজনটা দেখি। না অন্য কারণ নেই, ওখানে সেভার ওয়েট মেশিন আর নিজের শরীরে পোশাকের বালাই নেই, তাই ওজন নেয়া। তাছাড়া ওজন নিলে শরীরে আর কতগুলো নতুন অসুখ বাসা বাধাল তার একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় আর সেভাবে ওদের খাবারের বন্দোবস্ত করা যায়। গতকালও তাই করলাম। অবাক হয়ে দেখলাম ৬২.৫ থেকে কমে ওজন হয়েছে ৪৯। একটুখানি ভড়কে গেলাম। এক সপ্তাহে এতটা ওজন নাই হয়ে গেল? টের পেলাম না। এতগুলো ব্যাক্টেরিয়া বিদায় না নিয়েই আমার দেহত্যাগ করল! মনে পড়ল ডাক্তার আমাকে এক বিশেষ মোজা পরতে বলেছেন। ভাবলাম কোন ওষুধের দোকান থেকে কিনে নেব। কিনতে গিয়ে মহা ঝামেলা। গোড়ালির একটু উপরে, হাঁটুর নীচে আর এর দুইয়ের মধ্যবর্তী স্থান যা সবচেয়ে মোটা তার মাপ নিতে হবে। তাও সকালে ঘুম থেকে উঠে। পরের সকালে সেটা করে আবার গেলাম। সেদিন অন্য মহিলা ছিলেন। মাপ বললাম ১৯.৫, ৩৩.৫ আর ৩১ সেন্টিমিটার। ও, আপনি বাচ্চার জন্য নিচ্ছেন। না, নিজের জন্য। কিন্তু এত ছোট মাপের জিনিস তো আমাদের নেই। তাছাড়া আপনাকে জানতে হবে কি জন্যে এটা নিচ্ছেন। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। আমার ধারণা ছিল আর কিছু হোক না হো

আনন্দ

Image
গতকাল সকাল সকাল অফিসে যাবার তাড়া ছিল, তাই ব্রেকফাস্ট করতে করতেই ভাত আর মাংস বসিয়ে দিলাম। ব্রেকফাস্টের পরে স্নান করতে যাওয়ার সময় গুলিয়াকে বললাম ওগুলোর দিকে একটু খেয়াল রাখতে। স্নানের শেষ পর্যায়ে পোড়া গন্ধ নক না করেই বাথরুমে ঢুকে পড়ল। গরুটা মাঠে মারা গেল মনে করে মনটা একটু খারাপ হতে শুরু করল। তবে কিছুক্ষণ পরেই বুঝলাম আসলে ভাতের কপাল পুড়েছে। বাথরুম থেকে বেরুতেই গুলিয়া বলল কুকুরদের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় চুল্লীর কথা ভুলে গেছিল। আমার কিন্তু ভালই লাগলো। ভাত মাংস শুধু আমারই অবাধ্য নয়, আমার বউকেও এক হাত নিতে ভুলে না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল আমার কিছু পুড়লে নির্দ্বিধায় বলি যে আমি ইচ্ছে করেই এই স্পেশাল রেসিপিটা ইউজ করেছি। বেচেরা গুলিয়া এখনও অজুহাত খোঁজে। ভাত মাংসই জীবনের শেষ কথা নয়। দুবনা, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

প্রতীক

Image
আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতীকের ছড়াছড়ি। সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকেই মানুষ প্রতীক ব্যবহার করে আসছে তার জানা আর অজানা দু'টোকেই প্রকাশ করার জন্য। এই যে আমি লিখছি সেটাও সেই প্রতীক ব্যবহার করেই। প্রতিটি অক্ষর যা একেকটি প্রতীক তা আমাকে সাহায্য করেছে আমার ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে। এই ভাবনা বা কল্পনা যখন আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটায় সেটা হয় জীবনের গল্প। অপুর সংসার লেখকের কল্পনাপ্রসূত হলেও তাতে পাঠক নিজের পরিচিত বাস্তবতাই দেখতে পায়। তাই এখানে কল্পনা আর বাস্তব একাকার হয়ে যায়। অন্যদিকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে মানুষ তার কল্পনার ডানায় ভর করে ভবিষ্যতে পাড়ি জমায় যার অনেক কিছুই একদিন বাস্তবায়িত হবে বলে সে বিশ্বাস করে। আরও কিছু কল্পনা সে বিশ্বাস করে তার ধরা ছোঁয়ার বাইরে তবে সেই কল্পনার কুশীলবরা তার ভাগ্যই শুধু বদলাতে পারে না, তার পরলৌকিক ভালোমন্দ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এই ঈশ্বর ও দেবতাদের ঘিরে তৈরি হয় ধর্ম যা তার কল্পনাকে অন্ধবিশ্বাসে পরিণত করে। তবে সব কিছুর মূলে রয়েছে প্রতীক। আর প্রতীককে বোঝার ও গ্রহণ করার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে কেউ হয় ভক্তিবাদী আর কেউ যুক্তিবাদী। মহিষাসুরের বি

সময়

Image
সকাল থেকেই ফেসবুক ছেয়ে গেছে বিজয়ার শুভেচ্ছায়। বার্তা আসছে ইনবক্সে। শুভেচ্ছা, শুভকামনার জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে ফেসবুক সাগর। সাধ্যমত লাইক বা উত্তর দিচ্ছি। কিন্তু একটা বিষয় আমাকে একটু দ্বিধায় ফেলছে। সময়ের হিসেবে সবচেয়ে দূরে হচ্ছে মানুষের ছোটবেলা। এই ষাট ছুঁই ছুঁই বয়সে সময়টা একেবারেই কম নয়। কিন্তু ছোটবেলার ঘটনাগুলোই আমার সবচেয়ে স্পষ্ট মনে আছে। কেন? মনে হয় তখন ঘটনা কম ঘটে, ঘটে স্লো মোশনে। তাছাড়া তখন মন অনেকটা সাদা কাগজের মত। সামান্য আঁচড়ও দাগ কেটে যায়। একটু বড় হলে ঘটনার ভিড়ে অনেক কিছুই হারিয়ে যায় বা গুলিয়ে যায়। সেই সময় আমাদের বাড়িতেও দুর্গা পূজা হত। সেসবের বিস্তারিত বিবরণ বিভিন্ন সময়ে দিয়েছি। আজ অন্য কথা। সেই সময় নদী ছিল জলবতী, এমনকি আমাদের বড় খালে ভরা বর্ষা। রামার ভিটা থেকে প্রতিমা নৌকায় তুলে নদীতে যেতাম বিসর্জন দিতে। আমাদের বাড়িতে বিসর্জনের জন্য একটা বড় নৌকা পর্যন্ত ছিল। মাইকে বাজত ঝিম না না ঝিম নানা ঝিম নানা ঝিম নানারে গাঙ্গে ঢেউ খেলে যায় কন্যা মাছ ধরিতে আয় জাল ফেলিতে যাইয়া কন্যা ডুবিস না বিসর্জনের পরে গোমড়া মুখে সবার বাড়ি ফেরা, যেন পরম আত্নীয় কাউকে বাসে তুলে বিদায় দিয়ে এলাম। জান

কথা ও সুর

Image
আজ ভার্সিটি থেকে বাসায় ফেরার সময় লুঝনিকি স্টেশনের (স্পোর্তিভনায়ার সাথে) বাইরে খোলের আওয়াজ পেয়ে একটু অবাক হলাম। সামনে গিয়ে দেখি কৃষ্ণ ভক্তরা নেচে নেচে গান গাইছে। তবে লোকজন তেমন উৎসাহ দেখাচ্ছে না। কি মনে করে দাঁড়িয়ে ছোট্ট ভিডিও করলাম।‌ আমার কৃষ্ণ কান্তি দেখেই মনে হয় রাধার মত একজন এগিয়ে এল বই হাতে। আমি বাসার দিকে হাঁটতে হাঁটতে ভাবলাম কেন ঐ সুর আমাকে আকর্ষণ করল না? মনে পড়ল দেশের কথা। সেখানে হরে কৃষ্ণ গানটি বিভিন্ন সুরে গাওয়া হয়। একদিন মানিকগঞ্জের লক্ষ্মী মন্ডপের ওখানে হঠাৎ "এক সাগর রক্তের বিনিময়ে" শুনে থমকে দাঁড়ালাম। ওরা ঐ সুরে হরে কৃষ্ণ গাইছিল। আসলে পরিচিত গানের কথার আগে সুর আমাদের কানে ঢোকে। মনে হল এরা যদি জনপ্রিয় রুশ গানের সুরে কথাগুলো বসাতো তাতে হয়তোবা অনেকেই দু মিনিটের জন্য হলেও দাঁড়িয়ে শুনত কথাগুলো। দুবনার পথে, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

গণতন্ত্র

Image
অনেক পুরানো এক গল্প মনে পড়ল। এক অবস্থাপন্ন গৃহস্থের বাড়িতে অনেকেই কামলা। ঐ কামলাদের মধ্যে একজন ছিল কানা। একদিন গৃহস্থ মাঠে গেল কামলারা কেমন কাজ করছে সেটা দেখতে।  মইটা এ ভাবে কে রাখল?  কানা।  এখানে আগাছা কাটেনি কে?  কানা।  গৃহস্থ যেখানেই ভুল ধরে সবাই বলে এটা কানার কাজ।  শোন সব ভুল যদি কানাই করে তার মানে তো সে একাই কাজ করছে। তোমাদের বেতন দিয়ে রাখব কোন দুঃখে?  সামন্ততান্ত্রিক বিশ্বে জমির মালিক চাইলেই এদের ছাঁটাই করতে পারে। গণতান্ত্রিক বিশ্বে সংখ্যার জোরে মালিককেও দরোজা দেখানোর সুযোগ থাকে। পশ্চিমা নেতাদের কোন কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলে পুতিনের দোষ। তাহলে তাদের বেতন দিয়ে পুষে কার কী লাভ? তাছাড়া তারা যেভাবে পুতিনকে সরানোর জন্য আদা জল খেয়ে লেগেছে, তারা কি কখনও ভেবে দেখেছে পুতিন না থাকলে তারা দোষ দেবে কাকে? একেই বলে যে গাছে বসে আছ সেই গাছেরই গোঁড়া কাটা।  সমস্যা হল এখানে ওরা ফাঁকিবাজ কর্মী আর পুতিন কানার ভূমিকায়। মালিক নেই। তাহলে? এখানে যদি কোন ভাবে ঈশ্বরকে সেট করা যায় তাহলে খেলা জমে। ফাঁকিবাজ বিধায় তিনি পশ্চিমা নেতাদের চাকরিচ্যুত করতে পারেন অথবা ওরা সংখ্যার জোরে ঈশ্বরকে গদিচ্যুত করতে পারে। কানা

পূজা

Image
ঠাকুর দেবতার প্রতি যতই ঔদাসীন্য থাকুক না কেন এদের কারণেই বছরে একবার হলেও বন্ধুদের দর্শন দেয়া হয়, যদিও বিনা দর্শনীতে। ওদের দেখাও অবশ্য পাই। এই তো আজ গেছিলাম ইস্কন মন্দিরে, এবারই প্রথম। অনেক পরিচিত মুখের সাথে দেখা হল, কথা হল। ভালোই কাটল সন্ধ্যাটা। আরো এক বছর জন্য বাঙালিত্বের নবায়ণ হল। এই সুযোগটা করে দেবার জন্য অসুরকে ধন্যবাদ। ভুল শোনেন নি, অসুরটা বাঁদরামি না করলে এই যুদ্ধও হত না, বিজয়ও আসত না আর মানুষও বন্ধুদের সাথে দেখা করতে আসত না দূরদূরান্ত থেকে। মস্কো, ২২ অক্টোবর ২০২৩

প্রতিবেশী

Image
পৃথিবীতে সবচাইতে কঠিন মনে হয় সহজ কাজ করা।‌আর এই সহজ কাজ করার আমাদের অপারগতা থেকেই জন্ম নেয় যুদ্ধ বিগ্রহ। সবচেয়ে সহজ প্রতিবেশীকে ভালোবাসা, বিপদে আপদে তার পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু আমরা কয় জন সেটা করি বা পারি? উল্টো কিভাবে তাকে ঠকানো যায়, তার জমিটা বা বাড়িটা দখল করা যায় সেই চিন্তায় মগ্ন থাকি। আমাদের ইর্ষা, আমাদের লোভ এসব কাজে আমাদের উৎসাহিত করে। এভাবেই মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে, দেশে দেশে লাগে যুদ্ধ। কিছু মানুষের লোভের বলি হয় অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ। যতক্ষণ না আমরা ইসরাইল বা প্যালেস্টাইনের শিশুর পাশাপাশি জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল পাশের বাড়ির শিশুকে ভালোবাসতে শিখব, তাদের আনন্দে উল্লসিত, দুঃখে ব্যথিত হতে শিখব, হাজারো মিটিং মিছিল, হাজারো জ্বালাময়ী বক্তৃতা - এ সবই হবে নিতান্তই আত্মতুষ্টি, সমস্যার সমাধান হবে না। মস্কোর পথে, ২২ অক্টোবর ২০২৩

চরিত্র

Image
এমনকি ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের আগে থেকেই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়াত, তবে বর্তমানে দুর্গা পূজা এলে নিরাকার সাম্প্রদায়িকতা সাকার হয়। আমার বিশ্বাস এই সমস্যা বাংলাদেশে যতটা না সাম্প্রদায়িক তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক। বাংলাদেশের কোন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ই দেশ, জাতি বা সমাজের জন্য হুমকি নয়। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে যেকোন মুহূর্তে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। তারপরেও সেটা করে না একান্তই রাজনৈতিক বিবেচনায়। রাজনৈতিক দল বা এলিট শ্রেণী কিছু কিছু সমস্যা জিইয়ে রাখে প্রয়োজনে তুরুপের তাসের মত সেটা ব্যবহার করার জন্য, দরকষাকষি করার জন্য। এই যে চার দিনের পূজায় মাত্র একদিন ছুটি, তাও আবার দশমীর দিনে, সেটাও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে। ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের প্রতি চরম ক্ষমাশীল আমাদের সরকারগুলোকে বিভিন্ন ধরণের সংখ্যালঘুদের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়ে নিজেদের "শক্তের ভক্ত নরমের যম" উপাধির সার্থকতা প্রমাণ করতে হয়। সেটা হয়তো ভোটের বাক্সে দুটো ভোট বেশি এনে দেয় কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সততা নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগও করে দেয়। রোস্তভ ভেলিকির পথে, ২১ অক্টোবর ২০২৩

নকলে ফেল

Image
জীবনে কখনও নকল করিনি। আসলে ছাত্রও জীবনে নকল করাকে অনেকটা পাপ বলেই মনে করতাম। এই নকল না করা নিয়ে অবশ্য কখনও কোন আক্ষেপও ছিল না। তবে আজ মনে হল নকল করতে শেখাটাও জীবনে গুরুত্বপূর্ণ, সেদিক থেকে আমি অজ্ঞই রয়ে গেছি। প্রীতম যেদিন দেশ থেকে দুবনা আসে, ওর ওখানে গেছিলাম দেখা করতে। ও বলল স্যার, একটু খিচুড়ি বসাই, একসাথে খাই। আমি যে আত্মসমালোচনা করতে খুব একটা পছন্দ করি তা নয় তবে একটা বিষয়ে নিশ্চিত - পৃথিবীর যে কেউই আমার চেয়ে ভালো রান্না করে। তাই লোভ সামলাতে পারলাম না। তাছাড়া খিচুড়ি নিজেও করতে পারি না। আমার অনেক দোষের একটা - অমনোযোগিতা, মানে যেকোনো কিছু করতে গিয়ে, যেকোনো আড্ডায় বসে নিজের চিন্তায় ডুবে যেতে পারি আবার কোন জিনিস মনোযোগ দিয়ে দেখতে পারি। তাই আমি বেশ গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য করলাম খিচুড়ি রান্নার পদ্ধতি। যেহেতু খাবারটা ভালো লেগেছিল তাই তখনই ঠিক করলাম এটা বাসায় করব। আজ সেটাই করলাম। তবে রেজাল্ট দেখে মনে হল আমি নকল করাটাও ঠিক মত শিখতে পারিনি, নকল পরীক্ষায় ফেল করেছি। তবে এতে করে আমার আরেকটা থিওরি প্রমাণিত হল - যে কেউই আমার চেয়ে ভালো রান্না করে। দুবনা, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

আশা

Image
একসময় বিভিন্ন অনলাইন আড্ডা হত। আজকাল সেসব প্রায় প্রাগৈতিহাসিক। একসময় বিভিন্ন মাধ্যমে অনেকের সাথে যোগাযোগ হত। এখন সেটাও প্রায় শূন্যের কোঠায়। এতে অবশ্য ভালোই হয়েছে। একাকীত্বের ঘনত্ব ও গভীরতা দুটোই বাড়ছে।‌ সেদিন দেশ থেকে এক বন্ধু অনুযোগ করল আজকাল তুমি কী সব লেখ তাতে সবাই বিভ্রান্ত। তুমি বাম না ডান, ধার্মিক না নাস্তিক কেউ কিছু বুঝতে পারে না। অনেকেই তাই গালিগালাজ করে।  তাই? করে তো বললাম।  তার মানে ওরা আমার লেখা পড়ে। সেটা কিন্তু ভালো খবর। কিন্তু গালি দেয় যে।  দেখ আমি কিছু না বলার চেয়ে গালি দেয়া ভাল কারণ একমাত্র মৃতদের সম্পর্কে নাকি খারাপ বলতে নেই। আমি যে বেঁচে আছি এই গালি তো তার জ্বলন্ত প্রমাণ। তারমানে এসব নিয়ে তোমার মাথাব্যথা নেই, বন্ধুদের মতামতের কোন মূল্য নেই? যাই বল, দু'টো ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। কোন ব্যাপারে? এই হাড্ডির ব্যামো, চুলের ব্যথা, পাইকারি খুচরা হাজারটা অসুখ সমাধি এ সব এক পলকে সারিয়ে দেবে এ ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নেই। আর? এখন যারা সমালোচনা করে, গালি দেয় মরার পরে অনেক ভালো ভালো কথা বলবে। জান তো সব ভালো যার শেষ ভালো। তাই নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন উদ্বেগ নেই। মস্কো

পাল্লা

Image
ফেসবুকে এরকম একটা পোস্ট দেখেছিলাম - যে সবার আগে কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের খবর অন্যদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে সে বোনাস হিসেবে অনেক পুণ্য অর্জন করবে। পুণ্যের জন্য কিনা জানি না, তবে অনেকেই অনেক সময় অনেক খবর এখানে প্রকাশ করেন যা পরবর্তীতে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল অনেক সময় অনেকে অনেকের মৃত্যুর খবরও আগাম প্রকাশ করে। ফলে শুধু তাদের পরিবার পরিজন নয়, অনেক শুভানুধ্যায়ীরাও অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে। আজ এরকম এক খবর বেরিয়েছিল প্রফেসর অমর্ত্য সেনকে নিয়ে। পড়ে ওনার কন্যা সেটাকে খণ্ডিত করে ফেসবুকে লেখেন। আসলে এসব খবর শুধুমাত্র অতি আপন জন বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন সংগঠনের কাছ থেকে আসাই শ্রেয়। আমরা যারা শুভানুধ্যায়ী তারা সব সময়ই সে জন্য শোক প্রকাশের সুযোগ পাব। দুবনা, ১০ অক্টোবর ২০২৩

বিশ্বাস

Image
অনেককেই মাঝেমধ্যে এমনটা বলতে শুনি - আমি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি। - আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। - আমি ভগবানে বিশ্বাস করি না। আমার মনে তখন প্রশ্ন জাগে গণতন্ত্রে, সমাজতন্ত্রে বা ভগবানে বিশ্বাস করা বা না করার মধ্যে আদৌ কি কোন পার্থক্য আছে? এসবই তো শুধু কোন কিছুতে বিশ্বাস, যার আকার নেই বা যার আকার প্রত্যেকের নিজের নিজের মত করে গড়া। যেমন তেত্রিশ কোটি দেবদেবী! দুবনা, ১০ অক্টোবর ২০২৩

কথোপকথন

Image
সিমিওন আর আমি সেই সকালে থেকে হাঁটছি। ছবি তুলছি। কখনো রাস্তায় তবে বেশির ভাগ বনে জঙ্গলে। বিজন, তোমার সমস্যা হচ্ছে না তো? পায়ের ব্যথা বলেছিলে। এখন কী অবস্থা? সমাধিই একমাত্র ভরসা। - আমি হেসে উত্তর দিলাম। একসময় চলে এলাম একটা মনাস্তিরের কাছে। তবে পেছন দিক থেকে। দেয়ালের গায়ে একটা ভাঙা জায়গা পেয়ে ঢুকে পড়লাম। দেখি সমাধিক্ষেত্র। মরার জন্য ভালো জায়গা। কষ্ট করে দূরে যেতে হবে না।  এজন্যই তো তোমাকে এখানে নিয়ে এলাম। - এবার হেসে উত্তর দিল সিমিওন। মস্কোর পথে, ০৮ অক্টোবর ২০২৩

ভোগ রোগ

Image
আজকাল প্রায়ই শোনা যায় আওয়ামী লীগ ভরে গেছে লীগারে যারা মুজিব কোটের বুক পকেটে গুঁজে রাখে অদৃশ্য ধানের শীষ। কথাটা কমবেশি সব দলের জন্যই সত্য। দলের আদর্শ ধারণ করার চেয়ে নিজস্ব রাজনৈতিক অভিলাষ পূর্ণ করার তাগিদ থেকেই যখন বিভিন্ন দলে ভিড় করে, দল ভারি করে। এটাও মনে হয় ভোগবাদের বাই প্রোডাক্ট, ক্রেডিটে হলেও নিজের মনোবাসনা পূর্ণ করার সংস্কৃতি। সাধারণত মানুষ ব্যাংকের থেকে লোন নিয়ে সাধ্যের অতীত জিনিস কেনে, এক্ষেত্রে আদর্শ লোন করে রাজনীতি করে আর প্রথম সুযোগেই নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে হাত-পা ধুয়ে নতুন আডভাঞ্চারে নামে। ব্যাংক যেমন ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও দুই হাতে ঋণ বিলিয়ে যায়, রাজনৈতিক দলগুলোও ক্ষমতার লোভের বশবর্তী হয়ে সবাইকে নিজেদের দলে টেনে নেয়, যা যেকোন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ভরা গাঙে দলের নৌকাডুবির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুজদাল, ০৫ অক্টোবর ২০২৩

মূর্তি

Image
বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের ফেস্টিভ্যাল হয়, যেমন অটাম ফেস্ট, রক ফেস্ট ইত্যাদি। দেশে হয় মূর্তি ভাঙ্গন ফেস্ট।  ছোটবেলায় ঠাকুর দেবতার গল্প শুনে বড় হয়েছি। ওদের আর যাই হোক ভয়ঙ্কর কিছু মনে হয়নি। সেই রোলের জন্য অসুর আর রাক্ষসরা ছিল। পরে ওল্ড টেস্টামেন্ট পড়ে দেখলাম ঈশ্বরের রাগি রূপ যাকে ভয় করতে হয়।  দেশে যারা পূজা করে তারা মূলতঃ ঈশ্বরকে ভালোবেসে সেটা করে। যারা ভাঙে তারা ভয় থেকে ভাঙে। এই যে ভয়, এটাও কি এক ধরণের উপাসনা? ডিপ্লোম্যাসিতে সফ্ট ফোর্স রলে একটা কথা আছে। মূর্তি ভাঙ্গা মনে হয় সেই সফ্ট ফোর্স যা দিয়ে প্রাণে না মেরে ভয় দেখিয়ে দেশকে হিন্দু শূন্য করা যায়। মস্কো, ০২ অক্টোবর ২০২৩