ওজন

আমি সোমবার সকালে ক্লাসে যাবার আগে স্নান করার সময় ওজনটা দেখি। না অন্য কারণ নেই, ওখানে সেভার ওয়েট মেশিন আর নিজের শরীরে পোশাকের বালাই নেই, তাই ওজন নেয়া। তাছাড়া ওজন নিলে শরীরে আর কতগুলো নতুন অসুখ বাসা বাধাল তার একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় আর সেভাবে ওদের খাবারের বন্দোবস্ত করা যায়। গতকালও তাই করলাম। অবাক হয়ে দেখলাম ৬২.৫ থেকে কমে ওজন হয়েছে ৪৯। একটুখানি ভড়কে গেলাম। এক সপ্তাহে এতটা ওজন নাই হয়ে গেল? টের পেলাম না। এতগুলো ব্যাক্টেরিয়া বিদায় না নিয়েই আমার দেহত্যাগ করল!

মনে পড়ল ডাক্তার আমাকে এক বিশেষ মোজা পরতে বলেছেন। ভাবলাম কোন ওষুধের দোকান থেকে কিনে নেব। কিনতে গিয়ে মহা ঝামেলা। গোড়ালির একটু উপরে, হাঁটুর নীচে আর এর দুইয়ের মধ্যবর্তী স্থান যা সবচেয়ে মোটা তার মাপ নিতে হবে। তাও সকালে ঘুম থেকে উঠে। পরের সকালে সেটা করে আবার গেলাম। সেদিন অন্য মহিলা ছিলেন। মাপ বললাম ১৯.৫, ৩৩.৫ আর ৩১ সেন্টিমিটার।

ও, আপনি বাচ্চার জন্য নিচ্ছেন।
না, নিজের জন্য।
কিন্তু এত ছোট মাপের জিনিস তো আমাদের নেই। তাছাড়া আপনাকে জানতে হবে কি জন্যে এটা নিচ্ছেন।

মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। আমার ধারণা ছিল আর কিছু হোক না হোক আমি খুব ভালো রুগী, দেখা গেল সেটাও হতে পারিনি। ছাত্রদের বকি ওরা প্রশ্ন না করলে, এখন দেখছি আমিও ডাক্তারের কাছ থেকে অনেক কিছুই জেনে নিইনি। ফেল্টুস যাকে বলে।

যাকগে, আমি এত ওজন হারানোর কোন পথ খুঁজে পেলাম না। মানে যা নেই সেটা হারাব কেমনে? নাকি আজকাল ক্রেডিটেও ওজন কমানো যায়?
পরে খেয়াল করে দেখি মনিকা বাথরুমে কার্পেট পেতেছে। মেশিনটা সরিয়ে মেঝেতে রেখে ওর উপর দাঁড়ালাম আর ভেল্কিবাজির মত হারানো ১৩ কেজি ফিরে পেলাম।
হুম, অসুখেরা জানান না দিয়ে কোথাও পালায় না আর পায়ের নীচে শক্ত মাটি না থাকলে আক্ষরিক অর্থেই মানুষ ওজন হারায়।
দুবনা, ৩১ অক্টোবর ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা