জাহাজে বিদ্রোহ

কয়েক দিন আগে দনবাসে জেল আক্রমণের কথা লিখেছিলাম যেখানে শতাধিক ইউক্রেন যুদ্ধবন্দী নিহত ও আহত হয়েছে। লিখেছিলাম যে আক্রমণ করেছিল ইউক্রেন। এদের ওই জেলে রাখা হয় ইউক্রেনের অনুরোধে। এই আক্রমণের কারণ এরা ইতিমধ্যে তাদের জবানবন্দীতে এমন কিছু তথ্য প্রকাশ করে যেখানে ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেকের যুদ্ধাপরাধ প্রমানিত হয়। 
ইউক্রেন তখন সেটা অস্বীকার করে আর এই আক্রমণের দায় রাশিয়ার কাঁধে চাপাতে চায়। কিন্তু আক্রমনে যে হাইমারস ব্যবহার করা হয় তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের অবশেষ থেকে। পরে আমেরিকা আক্রমণের কথা স্বীকার করলেও বলে যে ইউক্রেন এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে করেনি। 

এর ফলে দুটো প্রশ্ন তোলে এ দেশের বিশেষজ্ঞরা -
১) হাইমারস যতটা নিখুঁত ভাবে লক্ষ্য ভেদ করতে পারে বলে দাবি করা হয় বাস্তবে তা নয়। 
এই অভিযোগ আমেরিকার পক্ষে গেলা কঠিন, কারণ তাতে তাদের অস্ত্রের সুনাম নষ্ট হয়। 
২) ইউক্রেনের সেনারা এই অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়। সেটা যদি হয় তাহলে এদের এই মারাত্মক অস্ত্র সরবরাহ করে আমেরিকা সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করছে। 
এটা মেনে নিয়ে মেনে নিতে হয় যে রাশিয়া প্রায় প্রতিদিন দনবাসে হাইমারস ব্যবহার করে আবাসিক এলাকা হামলার যে অভিযোগ তুলছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সেটা সত্য। 

শেষ পর্যন্ত মুঝ খুলেছে ইউক্রেনের গয়েন্দা সংস্থা গুরের প্রতিনিধি স্কিবিৎস্কি। তার ভাষ্য মতে হাইমারস ব্যবহার করা হয় পোল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও মার্কিন বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে, তাদের কাছ থেকে স্পুটনিক থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে জেল আক্রমণ হয়েছে সুপরিকল্পিত ভাবে এবং এই চার দেশের সক্রিয় অংশগ্রহণে। অর্থাৎ জেলহত্যা সহ অন্যান্য সব হত্যার দায় ইউক্রেনের একার নয়, তার মালিকদেরও। 

জেল হত্যা অবশ্য আমেরিকা আর ইংল্যান্ডের জন্য নতুন নয়। আবু গ্রেইব, গুয়ান্টানামা - এসব তো সেদিনের ঘটনা। অবশ্য এটা সবার চোখ এড়িয়ে যাবে। গণতন্ত্রের জন্য, একনায়কের বিরুদ্ধে এতটুকু আত্মত্যাগ আমাদের গণতন্ত্রের দালালরা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে বলেই আশা করা যায়।

দুবনা, ০৩ আগস্ট ২০২২

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা