পড়াশুনা

কথায় বলে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। সারাদিন আমার মাথা থেকে যত রকমের কুবুদ্ধি বেরোয় তাতে মনে হয় আমি সত্যিই অলস, অন্তত আমার মাথা। কিন্তু মাথা যদি অলস হয় সারাদিন সে ভাবে কীভাবে? এসব ভাবতে ভাবতে যখন ভোলগার দিকে যাচ্ছি চোখ আটকে গেল আকাশের মেঘে। হ্যাঁ, মেঘেরা আকাশের গায়ে কি যেন লিখে রেখেছে। কি? সেটা পড়ার চেষ্টা করেই দেখলাম মেঘেদের ভাষা এখনও শেখা হয়নি। শিক্ষা। হ্যাঁ শিক্ষা অন্তহীন। রুশরা বলে শত বর্ষ বাঁচ, শত বর্ষ শেখ। 
 
শিক্ষার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কিছু শব্দ হল পড়াশুনা, লেখাপড়া, পড়ালেখা ইত্যাদি। ছোটবেলায় আমাদের জিজ্ঞেন করত পড়াশুনা কোথায় করি। খেয়াল করলে দেখব পড়াশুনা - এটা পড়া আর শোনা। দুটোই গ্রহণ করা। আমরা শুনছি অন্যের কাছা থেকে। পড়ছি অন্যের লেখা। অর্থাৎ পড়াশুনা করা মানে অর্জন। এরপর আসে পড়ালেখা। পড়া যদি গ্রহণ হয় লেখা হল নিজের মনোভাব প্রকাশ করা। অর্থাৎ এখন আমরা পড়ে শুধু জ্ঞান অর্জন করি না, অর্জিত জ্ঞান নিজের ভাষায় প্রকাশ করি, নিজেও কিছু দেই। লেখাপড়া চলে উল্টো পথে। নিজের কথাটা বেশি বলি আবার অন্যেরটাও শুনি। দান ও গ্রহণ দুটোই চলে সমান তালে। এরপর কেউ হই পাঠক। অন্যের লেখা পড়ি, কিন্তু প্রায়ই পড়ি নিজের মত করে। নিজের মত করে ব্যাখ্যা করি অন্যের মনের কথা। আর আছে লেখক। যে মূলত নিজের কথাই বলে যায়। বলে অন্যের জন্য, অন্যের কাছে। ভালো লেখক শুধু লেখেই না, পড়েও প্রচুর। এটা স্রোত তৈরি করে। আসা যাওয়ার স্রোত। কিন্তু কিছু কিছু লেখক শুধু লিখেই যায়, পড়ে না। অন্যদের লেখা তো পড়েই না, নিজের লেখাও পড়ে না। এটাও এক ধরণের বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি করে। তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ শুধু লেখা নয়, অন্যদের কথা শোনা, অন্যদের লেখা পড়া।

দুবনা, ০২ আগস্ট ২০২২

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা