ভুল

আমাদের ছাত্র জীবনে অনেকেই গ্রীষ্মের ছুটিতে ইংল্যান্ড যেত কাজ করতে। ওখানে দু মাস কাজ করে যে আয় হত তা দিয়ে অনেক দিন সোভিয়েত ইউনিয়নে রাজার হালে চলা যেত। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা সাধারণত ভারতীয় রেস্তোরাঁয় কাজ করত, যদিও বস্তুত তা ছিল সিলেটি। একবার বিপ্লব নামে আমাদের ভার্সিটির এক ছেলে লন্ডন থেকে ফিরল হতাশ হয়ে। মালিক ওকে বলেছে তুমি বাংলা বলতে পার না, ইংরেজি বলতে পার না কাজ করবে কীভাবে? ওর দুঃখ সিলেটি না বলায় ওর বাংলা মাঠে মারা গেছে। 

আমি এক আধটু লেখালেখি করি। আগে প্রচুর ভুল করতাম, এখনও করি, তবে কম। কিন্তু চেষ্টা করি ভুল না করতে। কখনও হঠাৎ ভুল হলে (অনেক সময় গুগল নিজে থেকেও ভুল ভার্সন বেছে নেয়) পরে চোখে পড়লে ঠিক করি। অনেক সময় অন্যদের লেখায় ভুল দেখি। অনেকে অনেক সময় বানান দেখে দিতে বলে। আগে করতাম। এখন করি না। কারণ কেন যেন মনে হয় অধিকাংশ মানুষ লিখতে গিয়ে এত ভুল করে যে ভুলটা তারা অনায়াসেই শুদ্ধ ভাবে পড়ে। তাই কোন শব্দে ন না ণ, শ, ষ না স, র, ড় না ঢ় এ নিয়ে তারা মাথা ঘামায় না। সাধারণ মানুষ তো আর শৈল্পিক লেখা লেখে না, তারা নিজেদের আবেগ অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে চায়। মানুষ যদি ভুল বানানে সঠিক সংবাদ পায় কি দরকার ভুল ধরানোর চেষ্টা করে?

তবে এটা ঠিক শিক্ষিত মানুষ ভুল লিখলে তাদের সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হয়, তাদের শিক্ষা নিয়ে সন্দেহ জাগে। তাই নিজের থেকেই ভুল না করার চেষ্টা করা দরকার। সফল মানুষ তো সঠিক ভাবে কাজ করেই সফল হয়, তাই বানান শুদ্ধ করে লিখতে পারবে না এটা বিশ্বাস করব কেন? আসুন সব কিছুর মত ভাষায় ব্যাপারেও সচেতন হই। 

দুবনা, ২২ আগস্ট ২০২২

Comments

Popular posts from this blog

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

পরিমল

প্রশ্ন