নৈকট্য

ছোটবেলায় দুটি জমির সীমানা নির্ধারণকারী আল ছিল কিছুটা চওড়া। তার উপর দিয়ে দিব্যি হেঁটে যাওয়া যেত। সে সময় পা ছোট ছিল বলেই নয়, আসলে মানুষ তখন অন্যের প্রাইভেট স্পেসকে শ্রদ্ধা করত। পরে সেই আলগুলো সরু হতে হতে একেবারে মিশে যাবার অবস্থা। পাশাপাশি দুই জমির নৈকট্য বাড়ার সমান অনুপাতে বাড়ত জমির মালিকদের দূরত্ব। একই ঘটনা ঘটে শহরেও। দুই বাড়ির মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ দূরত্ব কমতে কমতে পরিণত হয় অস্বস্তিকর নৈকট্যে। আর এর ফল প্রকাশ পায় অগ্নিকাণ্ড সহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায়। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে প্রচুর মানুষ মারা গেছে। এ নিয়ে কথা হবে। সাধারণ মানুষ, সরকার সবাই দুঃখ প্রকাশ করবে। কিন্তু মনে হয় না সরকার আইন করে অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবেলায় দুই বাড়ির মধ্যে কতটুকু দূরত্ব থাকা উচিত সেটা ঠিক করবে অথবা বাড়ির মালিকেরা যারা এসব বাড়িতে থাকবে তারা নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নিজেরাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। মানুষ সব ভুলে আগের মতই দিন কাটাবে পরবর্তী অগ্নিকাণ্ডে নতুন করে ক্ষোভ প্রকাশের জন্য। শুধুমাত্র নিজের সুবিধা অসুবিধার কথা ভেবে মানুষ ভুলে যায় সে অনেকের একজনই, সমাজের একটা ইট মাত্র। সমাজ যখন বিপদে পড়ে সে নিজে তার ভাগ এড়াতে পারে না। লাভের লোভ আর লোভের লাভ এক সময়ে অসহনীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

দুবনা, ০১ মার্চ ২০২৪

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা