জ্ঞান

বিজ্ঞান মানেই জিজ্ঞাসা, বিজ্ঞান মানেই পুরাতনকে অস্বীকার করা নয়, পুরাতনের উপর দাঁড়িয়ে নতুন সত্যের সন্ধান করা। তাই তো নিউটন বলে তিনি অনেক দূর পর্যন্ত দেখেন, কারণ তিনি দৈত্যদের কাঁধের উপর দাঁড়িয়ে আছেন। একজন বিজ্ঞানী যখন নতুন কিছু সন্ধান করেন, তিনি তাঁর আগে কোন বিজ্ঞানীর কাজের উপর ভিত্তি করেই এসব করেন, অনেক সময় সেটাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে, অনেক সময় আগের ফলাফলের উৎকর্ষতা সাধনের মধ্য দিয়ে। সত্যিকারের বিজ্ঞানী তাই আগের কাজের সমালোচনা করলেও সেই বিজ্ঞানীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেন না। তবে সব গবেষক যে বিজ্ঞানী তা কিন্তু নয়। অনেকেই অনেক সফল মানুষকে হেয় করাটাই গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নেন। আর "আমি আইনস্টাইনকে সমালোচনা করলাম, রবীন্দ্রনাথকে নীচে নামালাম" ইত্যাদি বলে গর্ব বোধ করেন। এসব বলে হয়তো জনতার ভিড়ে বাহবা পাওয়া যায় কিন্তু জ্ঞানী হওয়া যায় না। আইনস্টাইন, রবীন্দ্রনাথ, শেক্সপিয়ার, পিকাসো এদের কাজের সমালোচনা করে থিসিস লেখা যায়, কিন্তু এদের নিয়ে সস্তা সমালোচনা করে যারা সাধারণ মানুষের হাততালি পেতে চায় তারা আসলে নিজেদের মূর্খতাই প্রকাশ করে। হাজারটা বই পড়লে বা কথায় কথায় কোন বই রেফার করলেই কেউ জ্ঞানী হয় না। জ্ঞান পুঁথিগত বিদ্যা নয়, জ্ঞান সেই বিদ্যার সঠিক ব্যবহার। এমনিতেই তো বলে না জ্ঞান মানুষকে বিনয়ী করে। বিনয়ী মানে সব কিছু মেনে নেয়া নয়, বিনয়ের সাথে প্রতিবাদও করা যায় আবার অনেক কিছু নীরবে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া যায়। যারা শুধু মাত্র প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য জ্ঞানীদের পা ধরে টেনে নামাতে সদা ব্যস্ত তাদের এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। পাগলের দাওয়াই তাকে পাগলামীর কথা মনে করিয়ে না দেয়া। তাহলে পাগলামি এমনিতেই কমে যায়। এসব দার্শনিকদের পাগলামিও কমতে বাধ্য।

দুবনা, ২৩ মার্চ ২০২৪

Comments

Popular posts from this blog

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

পরিমল

প্রশ্ন