মোদীর মদে মত্ত রাজনীতি

কয়েকদিন আগে দেখলাম মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে সিপিবি কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। যেকোনো দল যেকোনো দেশের নেতাদের আগমনের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল করতেই পারে। সেটা স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনের বিরুদ্ধে সিপিবির কর্মসূচী রাজনৈতিক ভাবে সুবুদ্ধির পরিচয় নয় বলেই আমার মনে হয়। ব্যক্তি মোদীর প্রতি আমাদের অনেক অভিযোগ, সেটা শুধু সিপিবি নয়, অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী বিশ্বের যেকোনো মানুষেরই নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই তিনি বাংলাদেশ সফরে এলে দেশের প্রগতিশীল মহল এর বিরোধিতা করবে সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তিনি আসছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে, আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, সেই ভারতের যাদের ঐকান্তিক সহযোগিতায় আমরা স্বাধীন হয়েছি। সেটা বঙ্গবন্ধু, মনি সিংসহ সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন। আজ মোদীর পরিবর্তে অন্য কেউ এলে কি আমরা তাঁর বিরোধিতা করতাম? আমার মনে হয় রাজনীতি করতে গেলে সব কিছুকে এক দৃষ্টিতে দেখলে চলে না, সময় ও পরিস্থিতি ভেদে একই ব্যক্তি কখনও বন্ধু, কখনও শত্রু হতে পারেন। এই আমরাই আওয়ামী লীগ, বিএনপির সাথে একযোগে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করেছি। আমরা বিরোধিতা করি আর নাই করি, মোদী আসবেন। বিরোধিতা করে আমরা আসলে ১৯৭১ সালে ভারতের ভুমিকাই প্রশ্নবিদ্ধ করব। বিষয়টা এই নয় যে আমরা সেটা চাই, কিন্তু এক সময় অন্যেরা এভাবেই সেটা ব্যবহার করবে। কয়েকদিন আগে সিপিবি তিয়াত্তর বছরে পা রাখল। মনে হয় সময় হয়েছে রাজনৈতিক ভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার, আবেগের বশবর্তী না হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় সুচিন্তিত কর্মসূচী গ্রহণ করার। বিরোধিতা করতে হবে বলেই যেন বিরোধিতা করা না হয়। অনেক সময় কিছু না করাও অনেক কিছু করার চেয়ে বেশি ফলপ্রসূ হয়।

দুবনা, ১৫ মার্চ ২০২১



Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা